Ajker Patrika

নাগরিকত্ব নিয়ে গর্ব কমছে মার্কিনিদের মধ্যে: গ্যালাপ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৫, ১২: ৫৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গত এক দশকে মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে নাটকীয়ভাবে কমে এসেছে ‘জাতীয় গর্ব’। গ্যালাপের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্যালাপের সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৩৬ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলছেন যে মার্কিন হওয়া তারা ‘চরমভাবে’ বা ‘খুব বেশি’ গর্বিত।

জরিপ অনুযায়ী, ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে জাতীয় গর্বের পার্থক্য এখন ৫৬ শতাংশ, যা ২০০১ সালের পর সবচেয়ে বড় ব্যবধান—এমনকি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের চার বছরের প্রেসিডেন্সির সময়ের তুলনায়ও বেশি।

জেনারেশন জেডের (জেন জি—১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণকারী) মধ্যে মাত্র ৪ জনের মধ্যে ১ জন বলেছেন, তারা মার্কিন নাগরিক হিসেবে সর্বোচ্চ পর্যায়ের গর্ব অনুভব করেন। গত পাঁচ বছরে গ্যালাপের বিভিন্ন জরিপের গড় অনুযায়ী, এই হার মিলেনিয়ালদের (১৯৮০–১৯৯৬ সালে জন্মগ্রহণকারী) মধ্যে ৬ জনে ১ জন, আর তার চেয়ে পুরোনো প্রজন্মগুলোর মধ্যে অন্তত ৭ জনে ১ জন।

গ্যালাপের জ্যেষ্ঠ সম্পাদক জেফ্রি জোনস বলেন, ‘নাগরিকত্ব নিয়ে প্রত্যেক প্রজন্মই আগের প্রজন্মের চেয়ে কম অহংকারী। বর্তমানে এই অহমবোধের মাত্রা জেন জি-এর মধ্যে সবচেয়ে কম। এমনকি বয়স্ক প্রজন্মগুলোর মধ্যেও আমরা দেখছি তারা নাগরিকত্ব নিয়ে আগের চেয়ে কম গর্ববোধ করছে। আর এই পরিবর্তনের মূল চালক ডেমোক্র্যাটরা।’

২০০১ সালের জানুয়ারি থেকে নিয়মিত এই জরিপ চালাচ্ছে গ্যালাপ। ২০০১ সালে প্রায় ৯০ শতাংশ আমেরিকান যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়া চরমভাবে বা খুব বেশি গর্বিত বলে মনে করতেন। এমনকি ইরাক যুদ্ধের অশান্ত সূচনাতেও রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় পক্ষের মধ্যেই জাতীয় গর্ব ছিল প্রবল।

তবে ২০০৬ সাল নাগাদ গর্বের এই অনুভূতিতে প্রথম বড় পতন দেখা যায়। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমেই কমেছে সেই হার। সর্বশেষ জরিপ বলছে, এখন মাত্র ৫৮ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে খুব গর্বিত বোধ করেন।

এই পতনের জন্য দায়ী করা হচ্ছে ডেমোক্র্যাট ও স্বাধীন (ইন্ডিপেন্ডেন্ট) ভোটারদের ওপর। জরিপে দেখা গেছে, রিপাবলিকানদের মধ্যে এখনো জাতীয় গর্বের হার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

স্বাধীন ভোটারদের মধ্যে বর্তমানে জাতীয় গর্বের হার ৫৩ শতাংশ—যা ২০০১ সালের পর সবচেয়ে কম। আর ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে পতনের প্রবণতা শুরু হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের প্রেসিডেন্সির সময় থেকে। ২০১৭ সালে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার সময় দুই-তৃতীয়াংশ ডেমোক্র্যাট নিজেদের গর্বিত আমেরিকান মনে করতেন, কিন্তু ২০২০ সালের মধ্যে সেই হার কমে দাঁড়ায় মাত্র ৪২ শতাংশে।

২০২১ সালে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে জাতীয় গর্ব কিছুটা ফিরে এলেও তা ট্রাম্প-পূর্ব অবস্থায় ফেরেনি। গ্যালাপের জ্যেষ্ঠ সম্পাদক জেফ্রি জোনস বলেন, ‘এটা শুধু ট্রাম্পকে ঘিরে নয়। বিষয়টা আরও গভীর। সম্ভবত নতুন প্রজন্ম আগের তুলনায় কম দেশপ্রেমিক—এটাই বড় কারণ।’

তিনি আরও জানান, প্রতিটি নতুন প্রজন্ম আগের প্রজন্মের তুলনায় কম দেশপ্রেম দেখায়, এবং বর্তমানে জেনারেশন জেডের মধ্যে তা একেবারে স্পষ্ট।

জরিপে আরও উঠে এসেছে, দেশপ্রেম প্রকাশ করা জরুরি—এমন বিশ্বাস রিপাবলিকানদের মধ্যে ডেমোক্র্যাট ও স্বাধীন ভোটারদের তুলনায় অনেক বেশি। ২০২৪ সালে পরিচালিত এসএসআরএস-এর এক জরিপে প্রায় ৯০ শতাংশ রিপাবলিকান মনে করেন, দেশপ্রেম যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এ বিষয়ে মতভেদ বেশি—৪৫ শতাংশ বলেন দেশপ্রেম দেশকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে, আর ৩৭ শতাংশ মনে করেন এর প্রভাব নেতিবাচক।

তবে বছরের শুরুতে সিএনএন ও এসএসআরএস পরিচালিত আরেক জরিপে অনুযায়ী, রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের ১০ জনের মধ্যে ১ জনেরও কম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নয়ে গর্বিত। বরং অধিকাংশ আমেরিকানই দেশের রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ‘হতাশ’ কিংবা ‘ক্ষুব্ধ’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাকিব খানের নামের সঙ্গে ‘মেগাস্টার’ শব্দ নিয়ে জাহিদ হাসানের আপত্তি

হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত রাজশাহীর ৭ বন্দীর সাজা মওকুফ

স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু ‘বিষক্রিয়ায়’, কেয়ারটেকার চাচাকে সন্দেহ

দুদকের আতশ কাচের নিচে ছয় সাবেক মুখ্য সচিব

ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত