Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে সি চিন পিংয়ের মেয়েকে বহিষ্কারের দাবি, হঠাৎ কেন এই বিতর্ক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০১ জুন ২০২৫, ১৮: ৩৯
শি মিংজে ও প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং। ছবি: সংগৃহীত
শি মিংজে ও প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং। ছবি: সংগৃহীত

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের একমাত্র সন্তান সি মিং জে। যুক্তরাষ্ট্রে হঠাৎ করে তাঁকে বহিষ্কারের দাবি উঠেছে। তিনি নাকি এখন ম্যাসাচুসেটসে থাকেন। পড়াশোনা করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সি মিং জের বহিষ্কারের দাবিতে সরব হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কট্টর-ডানপন্থী ভাষ্যকার লরা লুমার। এই দাবি এমন এক সময়ে উঠেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বায়ত্তশাসন নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনি লড়াই চলছে।

লুমার এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘সি চিন পিংয়ের কন্যাকে বহিষ্কার করুন! তিনি ম্যাসাচুসেটসে থাকেন এবং হার্ভার্ডে পড়াশোনা করেছেন! সূত্র মারফত আমি জেনেছি, সিসিপির (চীনা কমিউনিস্ট পার্টি) পিএলএ (পিপলস লিবারেশন আর্মি) গার্ডরা ম্যাসাচুসেটসের মার্কিন মাটিতে তাঁকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দেয়!’

লুমার তাঁর এই দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করেননি বা তাঁর সূত্রের নামও উল্লেখ করেননি। তিনি পোস্টে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ট্যাগ করেছেন।

চীনা প্রেসিডেন্টের কন্যা সি মিং জে এখনো যুক্তরাষ্ট্রে আছেন—এমন কোনো প্রকাশ্য প্রমাণ নেই। ২০১৫ সালে দ্য নিউ ইয়র্কার পত্রিকা জানিয়েছিল, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর সি মিং জে চীনে ফিরে গেছেন। এর পর থেকে অনেকটাই নিভৃত জীবনযাপন করছেন তিনি।

লুমার এই ধরনের দাবি এমন এক সময়ে তুললেন, যখন ট্রাম্প প্রশাসন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে ইহুদি বিদ্বেষ প্রচার ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে সহযোগিতার অভিযোগ এনেছে। যেখানে হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের প্রায় ২০ শতাংশই চীনা নাগরিক।

বিতর্কের সূত্রপাত যেভাবে

লুমার তাঁর সমর্থকদের এই বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে ট্রেন্ডিং করার আহ্বান জানিয়েছেন। পোস্টে তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ, সীমান্তবিষয়ক প্রধান টম হোম্যান এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েমসহ প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের ট্যাগ করেছেন।

সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও ঘোষণা করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা শুরু করবে। তিনি এক্সে হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই সব চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা শুরু করবে, যাদের চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সংযোগ আছে বা যারা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পড়াশোনা করছে।’

ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের একটি গবেষণা অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি অর্জনকারী চীনা শিক্ষার্থীদের ৯২ শতাংশই স্নাতক হওয়ার পাঁচ বছর পরেও থেকে যান। দক্ষিণ কোরিয়ার পিএইচডি স্নাতকদের ক্ষেত্রে এই হার ৪১ শতাংশ। রিপাবলিকানরা কিছু নির্দিষ্ট শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার সুযোগ ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সিনেটর এরিক শ্মিট ‘প্রোটেক্টিং হায়ার এডুকেশন ফ্রম দ্য চায়নিজ কমিউনিস্ট পার্টি অ্যাক্ট’ বিল এনেছেন। এই বিলের লক্ষ্য চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য এবং তাঁদের আত্মীয়দের জন্য আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র ভিসা নিষিদ্ধ করা।

আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের সিনিয়র ফেলো অ্যারন রিখলিন-মেলনিক পূর্বে এক্সে লিখেছিলেন: ‘ট্রাম্পের শিক্ষার্থী ভিসার সাক্ষাৎকার স্থগিত করার সিদ্ধান্ত এনএএফএসএ (অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল এডুকেটরস)-এর মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক অবদান এবং ৩ লাখ ৭০ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান হুমকির মুখে ফেলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি শিক্ষার্থীদের গ্রহণ করা বন্ধ করলে এর অর্থনৈতিক প্রভাব হবে বিপর্যয়কর।

চীনের প্রতিক্রিয়া

চীন শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ব্যাঘাত না ঘটানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং গত ২৮ মে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চীন ‘সাধারণ শিক্ষা সহযোগিতা এবং একাডেমিক বিনিময়ে কোনো বাধা না দেওয়ার পক্ষে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করছি যেন তারা চীনা শিক্ষার্থীসহ সব আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর বৈধ অধিকার ও স্বার্থ কার্যকরভাবে রক্ষা করে।’

বাবা সি চিনপিংয়ের সঙ্গে ছোট্ট শি মিংজে। ছবি: সিনহুয়া
বাবা সি চিনপিংয়ের সঙ্গে ছোট্ট শি মিংজে। ছবি: সিনহুয়া

সি মিং জে ও তাঁর আমেরিকা ভ্রমণ

১৯৯২ সালে জন্ম নেওয়া সি মিং জে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং লোকসংগীতশিল্পী পেং লিউয়ানের একমাত্র সন্তান। তিনি ছদ্মনামে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তাঁর সম্পর্কে খুব কম তথ্যই পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে তাঁকে বাবা-মায়ের সঙ্গে জনসমক্ষে দেখা যায়। ২০০৮ সালের সিচুয়ান ভূমিকম্পের পর স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছিলেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৬ বছর।

দ্য নিউ ইয়র্কারে ২০১৫ সালের ৬ এপ্রিল প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের মে মাসের এক রৌদ্রোজ্জ্বল সকালে, হার্ভার্ডের স্নাতক শ্রেণির একজন সদস্য তাঁর ডিপ্লোমা সনদ গ্রহণ করেন। যেভাবে নীরবে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন, সেভাবেই নীরবে ক্যাম্পাস ত্যাগ করার প্রস্তুতি নেন। এই হার্ভার্ড গ্র্যাজুয়েটই হলেন সি মিং জে। তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং বিখ্যাত লোকসংগীতশিল্পী পেং লিউয়ানের একমাত্র সন্তান।

সি মিং জে থাকতেন অ্যাডামস হাউসে। এই অ্যাডামস হাউস ডরমিটরিতে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট এবং হেনরি কিসিঞ্জার। মিং জে মনোবিজ্ঞান ও ইংরেজি বিষয়ে হার্ভার্ডে পড়াশোনা করেন। তিনি পুরোটা সময় ছদ্মনামে ছিলেন। তাঁর পরিচয় কেবল সীমিতসংখ্যক অনুষদ সদস্য এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা জানত—সেই সংখ্যা ১০ জনের কম।

জাপানের সংবাদমাধ্যম আসাহি শিম্বুন-এর সংবাদদাতা কেনজি মিনেমিউরা হার্ভার্ডের ওই সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন। তিনি পরে আমেরিকায় সি মিং জের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে লিখেছিলেন।

অন্য রাষ্ট্রপ্রধানদের সন্তানদের মতোই কোনো ধরনের আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই সি মিং জেকে গণমাধ্যমের মনোযোগ থেকে সুরক্ষিত রাখা হয়েছিল। তবে, কিছু চীনা নেতার সন্তান বিদেশে মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। যেমন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক পলিটব্যুরো সদস্য বো শিলাই দুর্নীতির অপরাধে এবং তাঁর স্ত্রী গু কাইলাই হত্যা মামলায় কারারুদ্ধ হওয়ার আগে, তাঁদের ছেলে বো গুয়াগুয়া জ্যাকি চ্যানকে অক্সফোর্ডে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। জ্যাকির সঙ্গে মঞ্চে গান গেয়েছিলেন। হার্ভার্ডে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী থাকাকালীন তিনি বিলাসবহুল পোরশে গাড়ি চালাতেন। অন্যদিকে, সি মিং জে কেমব্রিজে অত্যন্ত ‘মিতব্যয়ী’ জীবনযাপন করতেন। তিনি সারাক্ষণ পড়াশোনা করতেন। এমনটাই জানিয়েছেন জাপানি সাংবাদিক কেনজি মিনেমিউরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনের আরও এক শহর দখল করবে রাশিয়া: কমান্ডার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রুশ আক্রমণের পর ভগ্নদশায় পতিত ইউক্রেনের কুপিয়ানস্ক শহরের একাংশ। রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছেন এক নারী ও এক কুকুর। ছবিটি ২০২৩ সালের প্রথম দিকে তোলা। ছবি: সংগৃহীত
রুশ আক্রমণের পর ভগ্নদশায় পতিত ইউক্রেনের কুপিয়ানস্ক শহরের একাংশ। রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছেন এক নারী ও এক কুকুর। ছবিটি ২০২৩ সালের প্রথম দিকে তোলা। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার সেনারা আশা করছে, তারা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের কুপিয়ানস্ক শহর সম্পূর্ণ দখল করতে পারবে। শহরটি দখলে অভিযান চালানো ইউনিটের কমান্ডার এমন তথ্য দিয়েছেন। তবে কিয়েভ এখনো জায়গায় পরিস্থিতির গুরুত্ব স্বীকার করছে না। রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কুপিয়ানস্কের কাছে ঘেরাও হওয়া ইউক্রেনীয় বাহিনীর অবস্থার অবনতি দ্রুত ঘটছে। রুশ সেনাদের কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া, এখান থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের পালানোর আর কোনো পথ নেই।

রুশ সেনাবাহিনীর ৬৮ তম মোটরাইজড রাইফেল ডিভিশনের ১২১ তম রেজিমেন্টের কমান্ডার, যার কল সাইন লাভরিক—বলেছেন, তাঁর ইউনিট কেবল বুধবারই শহরে ২৫টি ভবন ক্লিয়ার করেছে এবং ‘অগ্রগতি অব্যাহত।’ তিনি এক ভিডিওতে বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শহর সম্পূর্ণ মুক্ত হবে। আমাদের মনোবল খুবই ভালো, এবং আমরা আমাদের মিশন সফল করব।’

গত মাসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেছিলেন, খারকিভ অঞ্চলের কুপিয়ানস্ক এবং দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের ক্রাসনোআর্মেইস্ক শহর রুশ সেনারা ঘেরাও করেছে। তিনি ঘেরাও হওয়া সৈন্যদের সম্মানজনকভাবে আত্মসমর্পণ করতে অনুরোধ করেছিলেন।

মস্কোর হিসাব অনুযায়ী, দুই শহরে ১০ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় সেনা আটকা পড়েছে। কিয়েভ এখনো জানায়নি যে, তারা শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পেরেছে এবং রাশিয়ান সেনারা পিছিয়ে পড়ছে। তবে জার্মান সংবাদমাধ্যম বিল্ড মঙ্গলবার জানিয়েছে, ‘ভেতরের বিশ্লেষণ অন্য গল্প বলছে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা ও সেনা কমান্ডার জানিয়েছেন, ‘গুরুতর পরাজয়ের’ আশঙ্কা বাড়ছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আগে দাবি করেছিলেন, কুপিয়ানস্কের কাছে রাশিয়ান সেনার উপস্থিতি মাত্র ৬০ জন এবং ইউক্রেনীয় সেনারা ওই এলাকায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। বুধবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, জেলেনস্কি ‘বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন।’ তারা জানিয়েছে, ‘কিয়েভ রেজিমের প্রধান বাস্তবতা থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। ইউক্রেনীয় (সশস্ত্র বাহিনী প্রধান আলেকজান্দর) সিরস্কির ভুল রিপোর্ট শোনার পর, তার কাছে মাঠের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নেই।’

কুপিয়ানস্ক উত্তর–পূর্ব রণাঙ্গনে এক গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক হাব হিসেবে বিবেচিত। রাশিয়ার সেনারা আগে শহরের আংশিক নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছিল। সেপ্টেম্বরে তারা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিল, যেখানে শহরের কেন্দ্র, প্রশাসনিক ভবন, স্টেডিয়াম এবং টিভি টাওয়ারের কাছে তাদের সেনাদের দেখা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিউইয়র্কে ইতিহাস: পাঁচ নারী নিয়ে মেয়র মামদানির প্রশাসনের সূচনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাঁচ নারী সদস্য নিয়ে নতুন প্রশাসন গঠনের কাজ শুরু করেছেন জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত
পাঁচ নারী সদস্য নিয়ে নতুন প্রশাসন গঠনের কাজ শুরু করেছেন জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি বুধবার ঘোষণা করেছেন, তিনি তাঁর প্রশাসন গঠনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। নতুন প্রশাসন গঠনে যে ট্রানজিশন টিম গঠন করা হয়েছে, তাতে পাঁচজনই নারী। আগামী ১ জানুয়ারি দায়িত্ব নেওয়ার দিন থেকেই কাজ শুরু করার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, তাঁর নেতৃত্বে গড়ে উঠবে এক দক্ষ ও সহানুভূতিশীল সিটি হল, যা এই প্রচারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সক্ষম হবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ৩৪ বছর বয়সী এই নবনির্বাচিত মেয়র কুইন্সে সংবাদ সম্মেলনে পুরোপুরি নারী নেতৃত্বে গঠিত ট্রানজিশন টিম ঘোষণা করেন। এই টিমের নির্বাহী পরিচালক ইলানা লিওপোল্ড। ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকছেন সাবেক ফার্স্ট ডেপুটি মেয়র মারিয়া তোরেস-স্প্রিংগার, ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) সাবেক চেয়ারম্যান লিনা খান, ইউনাইটেড ওয়ের প্রেসিডেন্ট ও সিইও গ্রেস বোনিলা এবং সাবেক ডেপুটি মেয়র ফর হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস মেলানি হার্টজগ।

লিনা খানকে দলে নেওয়া মামদানির প্রশাসনে সংস্কারক নীতি প্রয়োগের ইঙ্গিত দেয়। জো বাইডেনের সময় এফটিসিতে আক্রমণাত্মক অ্যান্টি–ট্রাস্ট পদক্ষেপের জন্য খান জাতীয়ভাবে পরিচিত হন এবং প্রগতিশীল ও রক্ষণশীল উভয় মহলে প্রশংসিত।

অ্যান্ড্রু কুমো ও রিপাবলিকান কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করার পর প্রথম টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে মামদানি বলেন, ‘এই শহর আমাদের প্রস্তুত দেখতে চায়। আমাদের হাতে আছে ৫৭ দিন—এটাই কাজ শুরু করার সময়।’ তাঁর জয় নিউইয়র্কের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়—প্রথম মুসলিম মেয়র, প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত, প্রথম আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া এবং শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী মেয়র।

তবে তাঁর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি হুমকি দিয়েছেন, মামদানি দায়িত্ব নিলে ফেডারেল তহবিল বন্ধ করবেন। ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছিলেন, ‘যদি মামদানি জয়ী হন, নিউইয়র্কে আমি আইনে বাধ্য না হলে ফেডারেল ফান্ড দেব না।’ প্রায়ই তিনি মামদানিকে ‘কমিউনিস্ট’ বলে আখ্যা দেন।

২০২৬ অর্থবছরে নিউইয়র্কের বাজেটে ফেডারেল তহবিল প্রায় ৭৪০ কোটি ডলার, যা মোট ব্যয়ের ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। নির্বাচনের দিন ট্রাম্প আরও উসকানিমূলক পোস্টে লেখেন, ‘কোনো ইহুদি যদি জোহরান মামদানিকে ভোট দেয়, সে নির্বোধ।’ যদিও মামদানি বহুবার ইহুদিবিদ্বেষের নিন্দা করেছেন।

প্রচারণাজুড়ে তাঁকে ঘিরে চলেছে তীব্র ইসলামবিদ্বেষী হামলা। রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান র‍্যান্ডি ফাইন ও অ্যান্ডি ওগলস বিচার বিভাগকে আহ্বান জানান মামদানির নাগরিকত্ব বাতিল করতে। টেক্সাসের রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান চিপ রয় নির্বাচনের আগে লেখেন, মামদানি ‘আধুনিক ডেমোক্র্যাট দলের প্রতীক’ এবং তাঁর নেতৃত্বে ‘একটি ইসলামি সাংস্কৃতিক বিপ্লব’ ঘটছে।

সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বরে তুলনায় অক্টোবরে মামদানিকে নিয়ে ইসলামবিদ্বেষী পোস্ট বেড়েছে ৪৫০ শতাংশ। এক মাসে ১৭ হাজার অ্যাকাউন্ট থেকে ৩৬ হাজার পোস্ট হয়েছে, যা ৭৩ লাখের বেশি লাইক পেয়েছে।

তবে মামদানি আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘আমরা গত এক বছর যে নীতিগুলোর কথা বলেছি, আমি নিশ্চিত সেগুলো বাস্তবায়ন করতে পারব। রাজনীতি যাই হোক, নিউইয়র্কবাসীর সমস্যা একটাই—আমরা সবাই একই সংকটে ভুগছি।’

মামদানির প্রগতিশীল নীতিগুলোর মধ্যে আছে অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া স্থির করা, বাসে বিনা মূল্যে যাতায়াত, সর্বজনীন শিশুসেবা, শহর পরিচালিত মুদি দোকান ও ধনীদের ওপর বাড়তি কর। তাঁর প্রচার তহবিলে ২০ মিলিয়ন ডলার এসেছে সাধারণ দাতাদের কাছ থেকে, গড়ে প্রতি অনুদান প্রায় ৮০ ডলার।

মামদানির দপ্তর জানিয়েছে, শিগগিরই তাঁরা ডেপুটি মেয়র ও বিভিন্ন দপ্তরের কমিশনারদের নাম ঘোষণা করবেন। তিনি বলেন, ‘কিছু নাম পরিচিত হবে, কিছু নতুন। কিন্তু সবাই এক লক্ষ্যেই ঐক্যবদ্ধ—পুরোনো সমস্যার নতুন সমাধান।’ মামদানি বলেন, ‘১ জানুয়ারি যখন আমরা নতুন প্রশাসনের শপথ নেব, নিউইয়র্কবাসী তখন শুধু নতুন মেয়র নয়, নতুন এক যুগকেও স্বাগত জানাবে—যেখানে প্রত্যেকে নিজের অংশীদারত্ব অনুভব করবে, আর এই শহরের সাফল্য হবে আমাদের সবার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পুতিনের নির্দেশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৫৭
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত

ফের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই বিষয়ে প্রস্তাব তৈরি করতে ক্রেমলিনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘ বিরতির পর যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অবিলম্বে’ এমন পরীক্ষা শুরু করতে নির্দেশ দেওয়ার পর মস্কো এই সিদ্ধান্ত নিল।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, গতকাল বুধবার রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে পুতিন বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র বা বিস্তৃত পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তি (সিটিবিটি) স্বাক্ষরকারী কোনো দেশ পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়, ‘তাহলে রাশিয়া বাধ্য থাকবে সমান প্রতিক্রিয়া জানাতে।’

পুতিন বলেছেন, ‘এ কারণে আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, গোয়েন্দা সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট বেসামরিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিচ্ছি—বিষয়টি নিয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে, নিরাপত্তা পরিষদে বিশ্লেষণ উপস্থাপন করতে এবং পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি-সংক্রান্ত প্রাথমিক পদক্ষেপের প্রস্তাব দিতে।’

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার পর ১৯৯১ সাল থেকে রাশিয়া আর কোনো পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়নি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দুই পরাশক্তির মধ্যে উত্তেজনা আবার বেড়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার অনড় অবস্থায় পুতিনের ওপর ট্রাম্পের হতাশা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট গত অক্টোবর পুতিনের সঙ্গে হাঙ্গেরিতে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেন। পরদিন তিনি দুই বড় রুশ তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন।

এরপর গত ৩০ অক্টোবর ট্রাম্প বলেন, তিনি প্রতিরক্ষা বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন ‘অবিলম্বে’ পারমাণবিক পরীক্ষা শুরু করতে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রও ‘অন্য পরাশক্তিদের সমান অবস্থানে’ থাকে। এর কয়েক দিন আগে ট্রাম্প রাশিয়ার নতুন ‘বুরেভেস্তনিক’ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সমালোচনা করেন। পারমাণবিক শক্তিচালিত এই ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম।

ক্রেমলিন প্রকাশিত প্রতিবেদন বলা হয়েছে, পুতিন একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার সঙ্গে একটি পরিকল্পিত পরামর্শ বৈঠকে বসেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রে বেলোউসোভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ ‘রাশিয়ার প্রতি সামরিক হুমকির মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে।’ তাঁর ভাষায়, ‘আমাদের পারমাণবিক বাহিনীকে এমন প্রস্তুত অবস্থায় রাখতে হবে, যাতে শত্রুর অগ্রহণযোগ্য ক্ষতি ঘটানো যায়।’

বেলোউসোভ আরও জানান, রাশিয়ার আর্কটিক অঞ্চলের নোভাইয়া জেমলাইয়া ঘাঁটি অল্প সময়ের নোটিশেই পারমাণবিক পরীক্ষা চালাতে প্রস্তুত। রুশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ভ্যালেরি গেরাসিমভ সতর্ক করে বলেন, ‘আমরা যদি এখন যথাযথ পদক্ষেপ না নেই, যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রমের জবাব দেওয়ার সময় ও সুযোগ হারিয়ে ফেলব।’

বৈঠকের পর রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস জানায়, ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন—পুতিন কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা ঠিক করেননি। পেসকভ বলেন, ‘আমরা কবে প্রস্তুতি শুরু করব, তা নির্ভর করবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝতে কতটা সময় লাগে তার ওপর।’

বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের দিক থেকে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বড় শক্তি। সেন্টার ফর আর্মস কন্ট্রোল অ্যান্ড নন-প্রলিফারেশনের হিসাবে, রাশিয়ার কাছে বর্তমানে ৫ হাজার ৪৫৯টি পারমাণবিক ওয়ারহেড আছে, যার মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৬০০টি সক্রিয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ারহেড সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার ৫৫০ টি, এর মধ্যে সক্রিয় প্রায় ৩ হাজার ৮০০ টি। স্নায়ুযুদ্ধের সময়, ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রের মজুত ছিল ৩১ হাজারের বেশি ওয়ারহেড।

চীন অনেক পেছনে থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্রুত তার পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার বাড়িয়েছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, বর্তমানে চীনের ওয়ারহেড সংখ্যা প্রায় ৬০০ এবং ২০২৩ সাল থেকে প্রতিবছর গড়ে ১০০টি করে বাড়ছে। অন্য পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো হলো—ফ্রান্স, ব্রিটেন, ভারত, পাকিস্তান, ইসরায়েল ও উত্তর কোরিয়া।

যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ ১৯৯২ সালে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্ফোরণ ঘটায়। তখন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লিউ বুশ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর পারমাণবিক পরীক্ষা স্থগিতের নির্দেশ দেন। ১৯৯৬ সালে যখন বিস্তৃত পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তি (সিটিবিটি) স্বাক্ষরের জন্য উন্মুক্ত করা হয়, তখন থেকে মাত্র তিন দেশ পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে।

ভারত ও পাকিস্তান ১৯৯৮ সালে, আর উত্তর কোরিয়া ২০০৬ সালের পর থেকে পাঁচবার পরীক্ষা চালিয়েছে—সর্বশেষ ২০১৭ সালে। ২১শ শতকে এটি একমাত্র দেশ যারা এমন বিস্ফোরণ চালিয়েছে। ঠান্ডা যুদ্ধের সময় যেসব দেশ নিয়মিত এ ধরনের পরীক্ষা চালাত, সেসব বিস্ফোরণের পরিবেশগত ক্ষতি ছিল ভয়াবহ।

ট্রাম্প এখনো পরিষ্কার করে বলেননি, তিনি যে পরীক্ষার কথা বলেছেন, তা কি বিস্ফোরণভিত্তিক পারমাণবিক পরীক্ষা, নাকি পারমাণবিক শক্তিচালিত ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা। পরের ক্ষেত্রে ন্যাশনাল নিউক্লিয়ার সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষা করবে, বিস্ফোরণ লাগবে না।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা সতর্ক করেছেন, যে কোনো দেশের পারমাণবিক বিস্ফোরণ পরীক্ষা শুরু করলে তা অন্যদেরও একই পথে ঠেলে দেবে। এতে বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা আছে। জাতিসংঘের নিরস্ত্রীকরণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক আন্দ্রে বাকলিৎস্কি বলেন, ক্রেমলিনের প্রতিক্রিয়া আসলে ‘কর্ম-প্রতিকর্ম চক্রেরই’ উদাহরণ, যা নতুন পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা ডেকে আনতে পারে। তিনি এক্সে পোস্ট করে লেখেন, ‘কেউই এটা চায় না, কিন্তু হয়তো শেষ পর্যন্ত আমরা সেদিকেই যাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মামদানি সম্মানজনক আচরণ করলে তাঁকে সহায়তা করব: ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি মামদানিকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। তবে মামদানিকে ‘সম্মানজনক আচরণ’ করতে হবে। ছবি: সংগৃহীত
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি মামদানিকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। তবে মামদানিকে ‘সম্মানজনক আচরণ’ করতে হবে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানিকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। তবে সতর্ক করেছেন, সফল হতে হলে মামদানিকে ওয়াশিংটনের প্রতি ‘সম্মানজনক আচরণ’ করতে হবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার রাতে জোহরান মামদানি প্রথম কোনো মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত হিসেবে নিউইয়র্কের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন। ইতিহাস গড়ার পর মামদানি যখন তাঁর দায়িত্ব গ্রহণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দলের সদস্যদের নাম ঘোষণা করেছিলেন, তখনই ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন।

মামদানি তাঁর বিজয়ী ভাষণে ট্রাম্পের বিরোধিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘ওটা বিপজ্জনক মন্তব্য।’ ট্রাম্প ফক্স নিউজের ব্রেট বায়ারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ওয়াশিংটনের প্রতি তাঁকে কিছুটা শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। তা না হলে সফল হওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না।’ ওয়াশিংটন বলতে ট্রাম্প মূলত ফেডারেল সরকার এবং তাঁর প্রশাসনকেই বুঝিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই সে সফল হোক। আমি চাই শহরটা সফল হোক।’ এরপর দ্রুত স্পষ্ট করেন, তিনি আসলে নিউইয়র্ক শহরকে সফল দেখতে চান, মামদানিকে নয়। এর আগে, গতকাল বুধবার ট্রাম্প এক ভাষণে বলেন, তাঁর প্রশাসন নতুন মেয়রকে ‘সাহায্য করবে।’ তবে একই বক্তব্যে তিনি মামদানিকে ‘কমিউনিস্ট’ বলেও আখ্যা দেন।

ফ্লোরিডার মায়ামিতে আমেরিকান বিজনেস ফোরামের ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘কমিউনিস্ট, মার্কসবাদী আর গ্লোবালিস্টরা তাদের সুযোগ পেয়েছিল। তারা শুধু বিপর্যয় এনেছে। এবার দেখা যাক, নিউইয়র্কে এক কমিউনিস্ট কেমন করে। আমরা দেখব কী হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাঁকে সাহায্য করব, একটু হলেও করব। আমরা চাই নিউইয়র্ক সফল হোক।’

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনের আগে থেকেই ট্রাম্প মামদানির বিরুদ্ধে প্রচারণায় নেমেছিলেন। তিনি মামদানিকে ‘উন্মাদ কমিউনিস্ট’ আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, যদি মামদানি জেতে, তবে শহরের ফেডারেল অর্থায়ন বন্ধ করে দেবেন।

মামদানি নিজের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, তিনি কমিউনিস্ট নন, বরং একজন গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী। তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল বিনা মূল্যে সর্বজনীন শিশু যত্ন, ফ্রি বাস সার্ভিস এবং সরকারি পরিচালিত মুদি দোকান চালুর প্রতিশ্রুতি। প্রায় ৮৫ লাখ মানুষের শহর নিউইয়র্কের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন মামদানি। তার এই বিজয় সারা দেশে প্রতিধ্বনি তুলেছে। ডেমোক্র্যাট পার্টির মধ্যপন্থী ও প্রগতিশীল অংশের দ্বন্দ্বের মধ্যে এই জয়কে অনেকে জাতীয় রাজনীতির দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।

বিজয়ী ভাষণে মামদানি তাঁর জয়কে ট্রাম্পকে হারানোর এক উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেন। টেলিভিশন প্রিয় প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ভলিউমটা বাড়িয়ে দিন।’ বুধবার অগ্রাধিকারের বিষয় তুলে ধরে দেওয়া বক্তৃতায় মামদানি জানান, তিনি ট্রাম্পের বিরোধিতা অব্যাহত রাখবেন, তবে আলোচনার সুযোগও খোলা রাখবেন। মামদানি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্পর্কে আমি মুখ বন্ধ রাখব না। তাঁর কর্মকাণ্ড যেমন, আমি তেমনই বলব। তবে সেই সঙ্গে সংলাপের দরজাটাও খোলা রাখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত