Ajker Patrika

পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন পেছাতে সিনেটে প্রস্তাব পাস

আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮: ২৩
পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন পেছাতে সিনেটে প্রস্তাব পাস

চলতি বছরের আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন। এর মাত্র এক মাস আগে নিরাপত্তাজনিত কারণে সাধারণ নির্বাচন পেছানোর একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে দেশটিতে। আজ শুক্রবার দেশটির সংসদের উচ্চকক্ষে এ প্রস্তাব পাস হয়। 

অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্যমন্ত্রী মুর্তজা সোলাঙ্গি এবং পিএমএলেন সিনেটর আফনান উল্লাহ খান উভয়েই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। স্বতন্ত্র সিনেটর দিলওয়ার খান মাত্র ১৪ জন আইনপ্রণেতার উপস্থিতির অধিবেশনে এই প্রস্তাবটি পেশ করেন। পাকিস্তানের সংসদের উচ্চকক্ষে মোট ১০০ জন সদস্য রয়েছেন। 

দিলওয়ার উচ্চ স্বরে প্রস্তাবটি পাঠের সময় বলেন, সংবিধান পাকিস্তানের প্রতিটি নাগরিকের ভোট দেওয়ার অধিকার রেখেছে। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন সব অঞ্চলের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিতপূর্বক অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বাধ্য। 

দিলওয়ার বলেন, পাকিস্তানের অত্যন্ত শীতপ্রবণ এলাকায় হালকা নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার সময়ে ভোটের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি থাকে। বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখাওয়ার বেশির ভাগ অঞ্চলে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি সবচেয়ে শীতলতম মাস। 

দিলওয়ার উল্লেখ করেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শীতলতম এলাকায় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাতে ও ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত নিয়ে আপত্তি প্রকাশ করেছে।

তিনি জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের (এফ) প্রধান ফজলুর রহমান, সাবেক আইনপ্রণেতা মহসিন দাওয়ার এবং অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ওপর হামলার সাম্প্রতিক প্রচেষ্টা নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন। 

দিলওয়ার বলেছেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশিষ্ট রাজনীতিবিদদের জীবননাশের গুরুতর হুমকির কথা জানিয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে।’ 

তিনি নিরাপত্তা বাহিনী ও সাধারণ নাগরিক, বিশেষ করে কেপি এবং বেলুচিস্তানে হামলার মাত্রা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলো উভয় প্রদেশে নির্বাচনী সমাবেশে জঙ্গি হামলার হুমকির বিষয়ে সতর্ক করেছে।’ 

সিনেটর বলেন, নির্বাচনী সমাবেশে জঙ্গি হামলার আসন্ন হুমকির ইঙ্গিত দিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সতর্কতা জারি করেছে; যা নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। 

পাকিস্তানে কোভিড-১৯ আবারও ছড়িয়ে পড়া এবং স্বাস্থ্য খাতের উদ্বেগ বিবেচনাপূর্বক নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সর্বোচ্চ সম্মানের সঙ্গে ধারণ করার সময় সিনেট ফেডারেট ইউনিটগুলোর সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত এবং ছোট প্রদেশগুলোর; বিশেষত দুর্বল ভৌগোলিক অঞ্চলগুলোর ভয় দূর করতে বাধ্য বলেও জানান দিলওয়ার। 

দিলওয়ার আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের সিনেট এর ফলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ন্যায়সংগত উদ্বেগের সুরাহা না করে নির্বাচন পরিচালনা করা, নির্বাচনী প্রচারণার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না দেওয়া এবং রাজনীতিবিদ ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘনের সমতুল্য।’ 

এমন পরিস্থিতিতে দিলওয়ার দাবি করেন, পাকিস্তানের সব অঞ্চল থেকে এবং সব রাজনৈতিক অঙ্গনের লোকদের কার্যকরী অংশগ্রহণের সুবিধার্থে নির্বাচনের সময়সূচি স্থগিত করা যেতে পারে। রাজনৈতিক অংশগ্রহণের সাংবিধানিক অধিকার সমুন্নত রাখাই বিলম্বের লক্ষ্য। ইসিপিকে অবিলম্বে নির্বাচন স্থগিতকরণ কার্যকর, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা এবং সংশোধিত তারিখের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। 

সংশোধিত নির্বাচনের সময়সূচি তত্ত্বাবধানে নির্বাচনী পর্যবেক্ষণকারীর ক্ষমতার প্রতি সিনেট আস্থাশীল জানিয়ে দিলওয়ার বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল এবং যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সংশোধিত বর্ধিত সময়সীমার সঙ্গে অব্যাহত থাকবে। ইসিপি প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডার, রাজনৈতিক দল ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে তাঁদের উদ্বেগের সমাধান করবে এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত