Ajker Patrika

ইরানে ইসরায়েলের হামলার আশঙ্কা, মধ্যপ্রাচ্য থেকে সেনা প্রত্যাহার করছে যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ জুন ২০২৫, ২৩: ২১
ইরাকের আল কাইম এলাকায় মার্কিন সেনারা। ছবি: সংগৃহীত
ইরাকের আল কাইম এলাকায় মার্কিন সেনারা। ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির জেরে মার্কিন দূতাবাসের ও সেনা কর্মকর্তাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কোনোভাবেই ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রধারী হতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার (১২ জুন) এমনটি জানিয়েছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ‘বিপজ্জনক পরিস্থিতি’ তৈরি হতে পারে। এজন্য সেখানে থাকা মার্কিন সেনা কর্মকর্তাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা ইরানকে কখনোই পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হতে দেব না।’

এর আগে, রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইরাকে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে আংশিক সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ঘাঁটিতে থাকা মার্কিন সেনাদের পরিবারের সদস্যদেরও স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ৪ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। যদিও মার্কিন ও ইরাকি সূত্রগুলো সুনির্দিষ্ট করে বলেনি— এই সিদ্ধান্তের পেছনে কী ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘তাদের (মার্কিন সেনা কর্মকর্তা) সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে কারণ পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে। আমরা জানিয়ে দিয়েছি সরিয়ে নেওয়ার জন্য। আর তাঁরা (ইরান) পারমাণবিক অস্ত্র পেতে পারে না, একেবারে সাফ কথা।’

মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। এ অবস্থায় আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনার পরবর্তী রাউন্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইরানের ওপর হামলা হলে তারা মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন ঘাঁটিগুলিতে পাল্টা হামলা চালাবে।

ইরানের জাতিসংঘ মিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন আমাদের লক্ষ্য নয়। মার্কিন সামরিক আগ্রাসন কেবল অস্থিরতা সৃষ্টি করে।’

মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ বাহরাইন ও কুয়েতসহ কয়েকটি ঘাঁটি থেকে সেনা সদস্যদের পরিবারের সদস্যদের স্বেচ্ছায় চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে কাতারে অবস্থিত মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ‘আল-উদেইদে’ কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা।

ব্রিটেনের মেরিটাইম নিরাপত্তা সংস্থা বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় উপসাগর, ওমান উপসাগর এবং হরমুজ প্রণালীর মতো গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচলের এলাকাগুলোতে সতর্ক থাকতে হবে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং বাগদাদে তাঁদের দূতাবাস খোলা রাখা হবে কি না, তা পর্যালোচনায় রাখা হয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইরাকের অভ্যন্তরে ইরানঘনিষ্ঠ মিলিশিয়ারা মার্কিন ঘাঁটিগুলোর ওপর একাধিকবার হামলা চালিয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হামলার হার কিছুটা কমেছে।

ইসরায়েল গত বছর ইরানের সঙ্গে সরাসরি দুবার পাল্টাপাল্টি আকাশ হামলায় জড়িয়ে পড়ে, যা মধ্যপ্রাচ্যের জন্য নজিরবিহীন ঘটনা ছিল। ইরানঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীগুলোর ওপর ইসরায়েল সিরিয়া ও ইরাকের অভ্যন্তরেও হামলা চালিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন প্রশাসনের সামরিক উপস্থিতি পুনর্বিন্যাস ও মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক পদক্ষেপে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা, ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা এবং নিরাপত্তা হুমকির মুখে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি আবারো এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি বাসভবনে একাই থাকতেন শরীয়তপুরের ডিসি, পরিবার থাকত ঢাকায়

স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে ফাঁস দিলেন স্ত্রী

‘তোরা তো পুলিশ মারছিস, ফাঁড়ি জ্বালাইছিস’ বলেই জুলাই যোদ্ধাকে মারধর

ইরানে ভূমিকম্প নিয়ে পারমাণবিক পরীক্ষার জল্পনা, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

বুশেহরে হামলা হলে মধ্যপ্রাচ্যে ‘ফুকুশিমা’ ঘটতে পারে, বিশ্লেষকদের হুঁশিয়ারি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত