Ajker Patrika

গাজায় জিম্মিদের নিয়ে মন্তব্য করে বিপাকে নেতানিয়াহুর স্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর স্ত্রী সারা নেতানিয়াহু। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর স্ত্রী সারা নেতানিয়াহু। ছবি: এএফপি

সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর স্ত্রী সারা নেতানিয়াহু মাইকে কথা বলার সময় অসাবধানতাবশত বলে ফেলেছেন, গাজায় ‘২৪ জনের কম’ জিম্মি এখনো জীবিত রয়েছেন। তাঁর এই মন্তব্য জিম্মি পরিবারগুলোকে ক্ষুব্ধ করেছে। তারা বলছে, প্রিয়জনদের ভাগ্য সরকারের হাতে; অথচ তারা এমনভাবে সে তথ্য প্রকাশ করছে যে মনে হচ্ছে, জিম্মিদের সম্পর্কে তারা যা জানে, সেটি দেশের মানুষকে জানানো হয় না।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে (২৮ এপ্রিল) ছুটির দিনে জিম্মি পরিবারগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ সময় তিনি বলেন, ‘এ যুদ্ধে শুধু জয় লাভ করা আমাদের লক্ষ্য নয়, বরং জিম্মিদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনাও আমাদের দায়িত্ব। আজ পর্যন্ত আমরা ১৯৬ জিম্মিকে ফিরিয়ে এনেছি, যাদের মধ্যে ১৪৭ জন জীবিত ছিল। অন্যদের মধ্যে... সর্বোচ্চ ২৪ জন জীবিত রয়েছে। সর্বোচ্চ ২৪ জন।’ এ কথা বলার সময় স্বামীর ডান পাশে বসা সারা নেতানিয়াহুকে ধীরে ধীরে বলতে শোনা যায়, ‘এর চেয়েও কম হবে!’

এ সময় নেতানিয়াহু দ্রুত জবাব দিয়ে বলেন, ‘আমি বলেছি, সর্বোচ্চ ২৪ জন। আর অন্যরা, দুঃখজনক হলেও সত্য, তারা কেউ জীবিত নেই।’

সরকারি তথ্য অনুযায়ী গাজায় বর্তমানে ৫৯ জন জিম্মি রয়েছেন। ইসরায়েল সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে জানিয়েছে, তাদের ধারণা, এই ৫৯ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৪ জন এখনো জীবিত।

ওই বৈঠকের সংক্ষিপ্ত কথোপকথনটি ইঙ্গিত দেয়, ইসরায়েলের সরকারের কাছে হয়তো এমন তথ্য রয়েছে, ‘২৪ জনের মধ্যে কিছু জিম্মি মারা গেছেন।’ অর্থাৎ সঠিক কতজন জীবিত, এটা তাদের জানা নেই। আর জানা থাকলেও বিষয়টিকে তারা খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না।

গত সপ্তাহে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সিএনএনকে বলেছিলেন, তিন জিম্মিকে নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ রয়েছে। তবে ইসরায়েল নিশ্চিতভাবে জানায়নি, তারা মারা গেছেন নাকি বেঁচে আছেন।

এর আগে কয়েক মাস ধরে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা শেরি বিবাস ও তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে একই কথা বলছিল। শেরি বিবাস ও তাঁর সন্তানেরা জীবিত রয়েছেন। কিন্তু জিম্মি বিনিময়ের সময় দেখা গেছে, তাঁরা কেউই জীবিত নেই।

জিম্মি পরিবারগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী একটি সংগঠন নেতানিয়াহু ও তাঁর স্ত্রীর এমন কথোপকথনের পর ব্যাপক সমালোচনা করেছে। জিম্মি ও নিখোঁজ পরিবার ফোরাম এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এ ধরনের একটি অনুষ্ঠানে আপনারা জিম্মি পরিবারগুলোকে সান্ত্বনা না দিয়ে উল্টো আমাদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছেন; পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে।’

সংগঠনটি দাবি করেছে, ‘যদি আমাদের প্রিয়জনদের অবস্থা সম্পর্কে কোনো গোয়েন্দা তথ্য বা নতুন তথ্য আপনাদের কাছে থাকে, তা প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।’ তাঁরা আরও জানতে চেয়েছেন, কেন প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী তাঁদের প্রিয়জনদের সম্পর্কে এমন সংবেদনশীল তথ্য জানেন, যা তাঁরা জানেন না।

আইনাভ জাঙ্গাউকার নামের এক জিম্মির মা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, ‘যদি প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর কাছে জিম্মিদের সম্পর্কে কোনো নতুন তথ্য থাকে, আমি তাঁর কাছে জানতে চাই, আমার সন্তান এখনো জীবিত রয়েছে কি না বা তাঁকে বন্দী অবস্থায় হত্যা করা হয়েছে কি না। আপনার স্বামী যুদ্ধ শেষ করতে চান না। এর ফলে বিন্দবিনিময় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এখন আপনাদের পরিষ্কার করতে হবে, জিম্মিদের মধ্যে কতজন জীবিত আর কতজনকে হত্যা করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত