মনীষার বয়স ১৯। তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লির উপকণ্ঠে একটি বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা অবশ্য ঝাড়খন্ডে। স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর আগেই তাঁকে পড়াশোনা ছাড়তে হয়েছে। কারণ বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত গণপরিবহন ছিল না। তবে রাস্তাজুড়ে বখাটেদের উৎপাত আর যৌন হয়রানির ভয় পর্যাপ্তই ছিল।
মনীষা ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, তিনি পড়াশোনা ছেড়ে কাজের খোঁজে একসময় দিল্লিতে আসেন। একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেন। তবে এখানেও যাতায়াতের অসুবিধা ও নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। এসব কারণে তিনি খুব একটা ঘর থেকে বের হন না।
মনীষা বলেন, ‘আমি শুধু ঘরেই কাজ করি। খুব বেশি প্রয়োজন হলে মাসে একবার অথবা দুবার বাড়ির বাইরে যাই। রাস্তায় আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না।’
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (আইআইটি) গবেষক রাহুল গোয়েল বলেছেন, মনীষার এই গল্প মোটেও অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। আমি ২০১৯ সাল থেকে ভারতের বিভিন্ন শহরের ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষের ডেটা সংগ্রহ করেছি এবং জরিপ চালিয়েছি। সেই জরিপে দেখেছি, ৫৩ শতাংশেরও বেশি নারী বলেছেন, তাঁরা বেশির ভাগ সময় দিনে একবারও বাড়ির বাইরে যান না।
ওই জরিপের ফলাফলে আরও দেখা গেছে, বয়ঃসন্ধিকালে বিশেষ করে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় বাড়ির বাইরে কম যায়। তবে মেয়েরা মধ্য বয়সে পৌঁছালে তাঁদের বাড়ির বাইরে যাওয়া কিছুটা বাড়ে।
রাহুল গোয়েল বলেন, ‘ভারতীয় রক্ষণশীল সামাজিক নিয়ম মেয়েদের বাড়ির বাইরে যেতে ও কাজ করতে বাধা দেয়।’
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ২৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীরা প্রতিদিন গড়ে ৮ ঘণ্টা ঘরের কাজে ব্যয় করেন। একই বয়সী পুরুষেরা ঘরের কাজে এক ঘণ্টারও কম সময় ব্যয় করেন। অন্যদিকে ৮৮ শতাংশ পুরুষ বাড়ির বাইরে কাজ করেন। আর বাড়ির বাইরে কাজ করেন মাত্র ৩৮ শতাংশ নারী।
বিবাহিত নারীদের বাড়ির বাইরে যাওয়ার সংখ্যা কম। এ ছাড়া যেসব নারীর সন্তান রয়েছে, তাদের বাড়ির বাইরে যাওয়ার পরিমাণ আরও কম। এ থেকে বোঝা যায়, গৃহস্থালি কাজের দায়িত্ব অসমভাবে নারীদের ওপরেই পড়ে।
কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত নন এমন ৩০ শতাংশ নারী বলেছেন, তাঁরা অন্তত একবার বাড়ির বাইরে যান। অন্যদিকে ৮১ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, তাঁরা পড়াশোনার প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যান।
গবেষক রাহুল গোয়েল বলেছেন, ‘এসব পরিসংখ্যান কিছুটা বিভ্রান্তিকর। মনে হতে পারে অনেক নারী বাড়ির বাইরে যাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক নারীরই বাড়ির বাইরে যান না।’
অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক অশ্বিনী দেশপান্ডে এ ব্যাপারে কিছুটা দ্বিমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ভারতে স্কুল-কলেজে ভর্তি হওয়া মেয়ের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, ভারতীয় নারীদের শিকল দিয়ে ঘরে বেঁধে রাখা হয় না। পুনে শহরের রাস্তায় অনেক মেয়েকে দেখা যায়।’
রাহুল গোয়েল বলেছেন, ‘অবশ্যই আঞ্চলিক বৈচিত্র্য রয়েছে। বেশ কিছু রাজ্যে মেয়েদের বাইরে দেখা যায়। যেমন গোয়া রাজ্যে নারী-পুরুষের বাইরে চলাফেরা প্রায় সমান। তামিলনাড়ুতে ৪৩ শতাংশ নারী কারখানায় কাজ করেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার সেখানে মেয়েদের বিনা মূল্যে বাইসাইকেল সরবরাহ করেছে। ফলে সেখানেও অনেক মেয়েকে ঘরের বাইরে দেখা যায়।’
২০০৭ সালে ১৫টি ইউরোপীয় দেশ নিয়ে করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, লিথুয়ানিয়া ছাড়া প্রায় সব দেশেই নারীরা পুরুষের চেয়ে বেশি বাইরে যান। লন্ডনে নারী-পুরুষের বাইরে ঘোরার ব্যাপারে কোনো লিঙ্গ পার্থক্য নেই। ফ্রান্সে পুরুষের তুলনায় নারীরা বাইরে বেশি ভ্রমণ করেন।
রাহুল গোয়েলের গবেষণার একটি উল্লেখযোগ্য ফল হচ্ছে, ভারতে লিঙ্গবৈষম্যের হার অনেক বেশি। বাড়ির বাইরে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ মাত্র ২৭ শতাংশ। রাহুল গোয়েল বলেছেন, ‘নারীদের বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার একটি প্রধান অন্তরায় হচ্ছে রাস্তায় নিরাপত্তাহীনতা। আমাদের জনপরিসরগুলো অত্যন্ত পুরুষতান্ত্রিক। জনপরিসরগুলোকে (পাবলিক প্লেস) অবশ্যই নারীবান্ধব করতে হবে।’
মনীষার বয়স ১৯। তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লির উপকণ্ঠে একটি বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা অবশ্য ঝাড়খন্ডে। স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর আগেই তাঁকে পড়াশোনা ছাড়তে হয়েছে। কারণ বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত গণপরিবহন ছিল না। তবে রাস্তাজুড়ে বখাটেদের উৎপাত আর যৌন হয়রানির ভয় পর্যাপ্তই ছিল।
মনীষা ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, তিনি পড়াশোনা ছেড়ে কাজের খোঁজে একসময় দিল্লিতে আসেন। একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেন। তবে এখানেও যাতায়াতের অসুবিধা ও নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। এসব কারণে তিনি খুব একটা ঘর থেকে বের হন না।
মনীষা বলেন, ‘আমি শুধু ঘরেই কাজ করি। খুব বেশি প্রয়োজন হলে মাসে একবার অথবা দুবার বাড়ির বাইরে যাই। রাস্তায় আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না।’
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (আইআইটি) গবেষক রাহুল গোয়েল বলেছেন, মনীষার এই গল্প মোটেও অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। আমি ২০১৯ সাল থেকে ভারতের বিভিন্ন শহরের ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষের ডেটা সংগ্রহ করেছি এবং জরিপ চালিয়েছি। সেই জরিপে দেখেছি, ৫৩ শতাংশেরও বেশি নারী বলেছেন, তাঁরা বেশির ভাগ সময় দিনে একবারও বাড়ির বাইরে যান না।
ওই জরিপের ফলাফলে আরও দেখা গেছে, বয়ঃসন্ধিকালে বিশেষ করে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় বাড়ির বাইরে কম যায়। তবে মেয়েরা মধ্য বয়সে পৌঁছালে তাঁদের বাড়ির বাইরে যাওয়া কিছুটা বাড়ে।
রাহুল গোয়েল বলেন, ‘ভারতীয় রক্ষণশীল সামাজিক নিয়ম মেয়েদের বাড়ির বাইরে যেতে ও কাজ করতে বাধা দেয়।’
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ২৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীরা প্রতিদিন গড়ে ৮ ঘণ্টা ঘরের কাজে ব্যয় করেন। একই বয়সী পুরুষেরা ঘরের কাজে এক ঘণ্টারও কম সময় ব্যয় করেন। অন্যদিকে ৮৮ শতাংশ পুরুষ বাড়ির বাইরে কাজ করেন। আর বাড়ির বাইরে কাজ করেন মাত্র ৩৮ শতাংশ নারী।
বিবাহিত নারীদের বাড়ির বাইরে যাওয়ার সংখ্যা কম। এ ছাড়া যেসব নারীর সন্তান রয়েছে, তাদের বাড়ির বাইরে যাওয়ার পরিমাণ আরও কম। এ থেকে বোঝা যায়, গৃহস্থালি কাজের দায়িত্ব অসমভাবে নারীদের ওপরেই পড়ে।
কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত নন এমন ৩০ শতাংশ নারী বলেছেন, তাঁরা অন্তত একবার বাড়ির বাইরে যান। অন্যদিকে ৮১ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, তাঁরা পড়াশোনার প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যান।
গবেষক রাহুল গোয়েল বলেছেন, ‘এসব পরিসংখ্যান কিছুটা বিভ্রান্তিকর। মনে হতে পারে অনেক নারী বাড়ির বাইরে যাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক নারীরই বাড়ির বাইরে যান না।’
অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক অশ্বিনী দেশপান্ডে এ ব্যাপারে কিছুটা দ্বিমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ভারতে স্কুল-কলেজে ভর্তি হওয়া মেয়ের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, ভারতীয় নারীদের শিকল দিয়ে ঘরে বেঁধে রাখা হয় না। পুনে শহরের রাস্তায় অনেক মেয়েকে দেখা যায়।’
রাহুল গোয়েল বলেছেন, ‘অবশ্যই আঞ্চলিক বৈচিত্র্য রয়েছে। বেশ কিছু রাজ্যে মেয়েদের বাইরে দেখা যায়। যেমন গোয়া রাজ্যে নারী-পুরুষের বাইরে চলাফেরা প্রায় সমান। তামিলনাড়ুতে ৪৩ শতাংশ নারী কারখানায় কাজ করেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার সেখানে মেয়েদের বিনা মূল্যে বাইসাইকেল সরবরাহ করেছে। ফলে সেখানেও অনেক মেয়েকে ঘরের বাইরে দেখা যায়।’
২০০৭ সালে ১৫টি ইউরোপীয় দেশ নিয়ে করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, লিথুয়ানিয়া ছাড়া প্রায় সব দেশেই নারীরা পুরুষের চেয়ে বেশি বাইরে যান। লন্ডনে নারী-পুরুষের বাইরে ঘোরার ব্যাপারে কোনো লিঙ্গ পার্থক্য নেই। ফ্রান্সে পুরুষের তুলনায় নারীরা বাইরে বেশি ভ্রমণ করেন।
রাহুল গোয়েলের গবেষণার একটি উল্লেখযোগ্য ফল হচ্ছে, ভারতে লিঙ্গবৈষম্যের হার অনেক বেশি। বাড়ির বাইরে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ মাত্র ২৭ শতাংশ। রাহুল গোয়েল বলেছেন, ‘নারীদের বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার একটি প্রধান অন্তরায় হচ্ছে রাস্তায় নিরাপত্তাহীনতা। আমাদের জনপরিসরগুলো অত্যন্ত পুরুষতান্ত্রিক। জনপরিসরগুলোকে (পাবলিক প্লেস) অবশ্যই নারীবান্ধব করতে হবে।’
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের জন্য ইসরায়েলের পশ্চিমতীর দখলের মডেল নিয়ে আলোচনা করেছে বলে জানা গেছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী—রাশিয়া ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চলগুলোর সামরিক ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নেবে, ঠিক যেভাবে ১৯৬৭ সালে জর্ডানের কাছ থেকে পশ্চিমতীর দখলের পর সেখানে শাসন কায়েম করেছে ইসরায়েল।
১ ঘণ্টা আগেট্রাম্প জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে ভালো আলোচনা করেছেন। তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি বাড়ি ফিরে দেখি, কোনো রকেট গিয়ে একটি নার্সিং হোম বা অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে আঘাত করেছে। আর রাস্তায় লাশ পড়ে আছে।’
২ ঘণ্টা আগেসৌরশক্তিচালিত বিমানে মানব অভিযাত্রীদের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন সুইজারল্যান্ডের অভিযাত্রী রাফায়েল ডমজান। দক্ষিণ-পশ্চিম সুইজারল্যান্ডের সিওন শহর থেকে উড্ডয়ন করে তিনি আল্পস পর্বতমালা অতিক্রম করেন এবং ৯ হাজার ৫২১ মিটার (৩১,২৩৪ ফুট) উচ্চতায় পৌঁছান।
৩ ঘণ্টা আগেইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টেলিফোন আলাপের পর দক্ষিণ ফ্রান্সে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ কথা বলেন মাখোঁ। এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা।
৪ ঘণ্টা আগে