Ajker Patrika

দুই বছর পর কুকিদের সিদ্ধান্তে খুলল মণিপুরের জাতীয় সড়ক, সফরে যাচ্ছেন মোদি

কলকাতা প্রতিনিধি  
কুকি জো কাউন্সিল (কেজেডসি) দিল্লিতে কয়েক দফা আলোচনার পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ছবি: পিটিআই
কুকি জো কাউন্সিল (কেজেডসি) দিল্লিতে কয়েক দফা আলোচনার পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ছবি: পিটিআই

মণিপুরে দীর্ঘ দুই বছরের অচলাবস্থা কাটিয়ে অবশেষে খুলে দেওয়া হলো রাজ্যের প্রাণরেখা হিসেবে পরিচিত জাতীয় সড়ক-০২ (এনএইচ)। কুকি ও জোমি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন কুকি জো কাউন্সিল (কেজেডসি) দিল্লিতে কয়েক দফা আলোচনার পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এমএইচএ) আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে, শান্তি বজায় রাখতে কেজেডসি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সহযোগিতা করবে। সে সঙ্গে অবাধে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনের চলাচলেরও নিশ্চয়তা দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মে মাসে মণিপুরে মেইতেই ও কুকি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ভয়াবহ জাতিগত সংঘাত শুরু হয়। সহিংসতায় শত শত প্রাণহানি ঘটে, লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় এবং বহু স্থানে কুকি অধ্যুষিত পাহাড়ি এলাকা থেকে মেইতেই অধ্যুষিত উপত্যকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তখন থেকে এনএইচ-০২ কার্যত বন্ধ ছিল, ফলে রাজধানী ইম্ফলসহ পুরো রাজ্যের যোগাযোগ ও পণ্য সরবরাহে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ ঘোষণায় আরও জানানো হয়েছে, কুকি, জোমি ও হমার সম্প্রদায়ের দুই ডজনের বেশি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে অস্ত্রবিরতি চুক্তি বা সাসপেনশন অব অপারেশনস (এসওও) আবারও নবায়ন করা হয়েছে। তবে শর্ত হিসেবে স্পষ্ট করা হয়েছে, মণিপুরের ভৌগোলিক অখণ্ডতা অটুট থাকবে, কোনোভাবেই রাজ্যের সীমান্ত পরিবর্তন করা হবে না।

এসওও প্রথম স্বাক্ষরিত হয় ২০০৮ সালে। কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার ও কুকি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে স্বাক্ষরিত এ ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় বিদ্রোহীরা নির্দিষ্ট শিবিরে অবস্থান করবে, তাদের অস্ত্রভান্ডার তালাবদ্ধ থাকবে এবং যৌথ পর্যবেক্ষক দলের নজরদারিতে নিয়মিত পরিদর্শন হবে। এবারও একই শর্ত বহাল রেখে নবায়ন করা হলো চুক্তিটি।

বর্তমানে এ চুক্তির আওতায় থাকা গোষ্ঠীগুলোর বড় অংশ কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (কেএনও) ও ইউনাইটেড পিপলস ফ্রন্টের (ইউপিএফ) অধীনে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, জাতীয় সড়ক খোলার পদক্ষেপ মণিপুরের মানুষের কাছে বড় স্বস্তি নিয়ে এসেছে। কারণ, এ পথই ইম্ফলকে আসামের সঙ্গে যুক্ত করে এবং প্রতিদিন টনকে টন পণ্য সরবরাহ এ পথে হয়ে থাকে। তবে অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলা হচ্ছে, শুধু রাস্তা খোলা নয়, মূল সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান ছাড়া স্থায়ী শান্তি ফিরবে না। কেজেডসি তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে কতটা কার্যকরভাবে কাজ করে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

এদিকে রাজ্যের এই ইতিবাচক অগ্রগতি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মণিপুর সফরে যেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের অনেকে বলছেন, মোদি ১২ অথবা ১৩ সেপ্টেম্বর মণিপুর সফরে যেতে পারেন। ২০২৩ সালে জাতিগত সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এটিই হবে মণিপুরে তাঁর প্রথম সফর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত