ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশ। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি সেখানে বিধানসভার ভোট। প্রচার এখন তুঙ্গে। এই শীতের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। তবে বিজেপির গোরক্ষা রাজনীতিই সেখানে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে আদিত্যনাথের সামনে।
মালিকবিহীন মুক্ত গরুর পাল নিয়ে উত্তর প্রদেশের মানুষ কতটা সন্ত্রস্ত, বিরক্ত সেটি কয়েকটি ঘটনা বর্ণনা করলেই বোঝা যাবে।
গত বছরের নভেম্বরের এক সন্ধ্যায় বাড়ির দাওয়ায় বসে চা পান করছিলেন উত্তর প্রদেশ রাজ্যের বাসিন্দা রাম রাজ (৫৫)। হঠাৎ এক পাগলা গরু তাঁকে আক্রমণ করে। নাতি-নাতনিরা সামান্য দূর থেকে সেই দৃশ্য দেখে ভয়ে সিঁটিয়ে গিয়েছিল। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান এই কৃষক।
পুত্রবধূ অনিতা কুমারী বিবিসিকে বলেন, ‘আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক একটা মৃত্যু সেটি। আমার শাশুড়ি সেই দিন থেকে আর ঠিকমতো খাবারও খান না।’
উত্তর প্রদেশে এ ধরনের আক্রমণ এখন সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। এখানে গরু জবাই নিষিদ্ধ। ফলে গবাদিপশুর সংখ্যা ব্যাপক বেড়েছে। গরুর সংখ্যা এবং এগুলোর দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়েছে যে গরুই এখন রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হিন্দুরা গরুকে পবিত্র মনে করে। কিন্তু বিজেপির নতুন আইন করার আগে পর্যন্ত কৃষকেরা তাঁদের বৃদ্ধ অনুৎপাদনশীল গরু কসাইখানায় বিক্রি করতেন। শিব পূজন নামে এক কৃষক বলেন, ‘দুধ দেওয়া বন্ধ করলে বা হালচাষের অনুপযুক্ত হয়ে পড়লে আমরা সেই গরু বেচে দিতাম। কঠিন সময়ের জন্য আমাদের একটা ব্যাকআপ পরিকল্পনা ছিল এটি।’
কিন্তু নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন সরকার হিন্দুত্ববাদী অ্যাজেন্ডা হিসেবে গোহত্যা কঠোরভাবে দমন করেছে। উত্তর প্রদেশসহ ১৮টি রাজ্যে এখন গোহত্যা অবৈধ।
কট্টরপন্থী বিজেপি নেতা মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর বেশ কয়েকটি কথিত অবৈধ কসাইখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। যদিও উত্তর প্রদেশে মাংসের বিশাল ব্যবসা। মহিষের মাংসের প্রধান রপ্তানিকারক রাজ্য এটি।
গবাদিপশু ব্যবসায়ীদের অনেকেই মুসলিম বা দলিত। গত কয়েক বছরে তাঁরাই বহুবার প্রায়ই বিজেপি বা স্থানীয় ডানপন্থী উগ্র গোষ্ঠীর গোরক্ষা বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়েছেন। বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। ভয়ে অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। কৃষকেরা এখন বুড়ো অনুৎপাদনশীল গরু মাঠে ঘাটে বা জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসে।
এমনি এক কৃষক পূজন। তিনি তাঁর বুড়ো গরু পাশের জঙ্গলে ছেড়ে দিয়েছেন। পূজন বলেন, ‘এখন কোনো ক্রেতা নেই, কেউই গরু বিক্রি করতে পারবে না।’ অন্যরাও তাঁর মতোই বুড়ো গরু জঙ্গলে ছেড়ে দেয় বলে জানান তিনি।
এই ছুটা গবাদিপশুদের প্রায়ই উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন শহর ও গ্রামে ইতস্তত ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। কৃষক ও স্থানীয়রা বলছেন, এই গরুগুলো সব সময় ক্ষুধার্ত থাকে। এ কারণে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। এমনই একটি গরু কৃষক রাম রাজের বাড়ির উঠানে ঢুকে পড়ে তাঁকে আক্রমণ করে মেরে ফেলে।
পূজন নিজেই সম্প্রতি ছুটা গরুর পালের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। ফসলের খেত থেকে তাড়াতে গিয়ে প্রায় মরতে বসেছিলেন তিনি। প্রাণ বাঁচাতে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে পালাতে গিয়ে হাত কেটে ফেলেছেন পূজন। সেই ব্যান্ডেজ করা হাত দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘পালের দুটি গরু আমাকে মাটিতে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। আমি জীবন হাতে দিয়ে দৌড় দিয়েছিলাম।’
পূজন নিজেও একজন হিন্দু ভক্ত। তিনি বিশ্বাস করেন গরু পবিত্র। কিন্তু মনে করেন, সব গরু রক্ষা করতে হবে সরকারের এমন আদেশ হতাশাজনক। তাঁর মতো কৃষকেরা বলেন, ছুটা গরুর পাল ফসল নষ্ট করে, সড়ক দুর্ঘটনা ঘটায় এবং কখনো কখনো মানুষ হত্যা করে।
এমন এক বিধবা পুনম দুবে। বলেন, ‘ছুটা গরুর কারণে আমার ছেলে এখন এতিম। কে দেখবে আমাদের?’ ভূপেন্দ্র দুবে (৩৬) ২০২০ সালে কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে লকডাউনের সময় চাকরি হারান। গ্রামে ফিরে আসেন তিনি। একদিন স্থানীয় বাজারে ছেলের জন্য মিঠাই কিনতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে গরুর আক্রমণে প্রাণ হারান।
গরুর আক্রমণে গুরুতর জখম হয়ে ২০১৯ সাল থেকে কোমায় ছিলেন ৮০ বছর বয়সী রাম কালী। তাঁর পরিবার বলছে, রাম কালী এখনো জানেন না গত বছর মহামারির শুরুর দিকে তাঁর একমাত্র ছেলে কোভিডে মারা গেছেন।
বিরোধী দলগুলো উত্তর প্রদেশে নির্বাচনী প্রচারে বিষয়টি জোরেশোরেই সামনে আনছে। যেখানে উত্তর প্রদেশ মূলত গ্রামভিত্তিক একটি রাজ্য। সেখানে কৃষকেরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভোট ব্যাংক।
এ ব্যাপারে শাসক বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র সমীর সিংয়ের কাছে জানতে চেয়েছিল বিবিসি। তিনি বলেন, এ সমস্যা মোকাবিলায় সরকার ‘নতুন কৌশল তৈরি করছে’। সমীর বলেন, ‘এগুলোকে ছুটা গরু বলা উচিত নয়। কারণ, গরু হিন্দু সংস্কৃতিরই অংশ। আমরা কখনোই কিন্তু আমাদের মুরব্বিদের বৃদ্ধ হওয়ার পর মরার জন্য বাড়ি থেকে বের করে দিই না। সেখানে আমরা কীভাবে গরুগুলোকে মরার জন্য রাস্তায় ছেড়ে দেব?’
সমীর সিং মূলত অনুৎপাদনশীল গরুগুলোকে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার কথাই বোঝাচ্ছেন। আদিত্যনাথের সরকার আরও গো-আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রচুর টাকা বরাদ্দ করেছে। সরকার পরিচালিত হাজার হাজার আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনার জন্য বিশেষ অ্যালকোহল ট্যাক্সও আরোপ করা হয়েছে।
কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি। সম্প্রতি অযোধ্যা জেলায় বিবিসি হিন্দি একটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করে। দেখা যায়, সেখানে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি গরু রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রটির তত্ত্বাবধায়ক শত্রুঘ্ন তিওয়ারি বলেন, ‘এখানে ২০০টি গরু আছে। এটাই আমাদের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা। ৭০০-১০০০ গরু এখনো এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
এদিকে প্রতিনিয়ত খেতখামারে ঢুকে পড়ছে ছুটা গরুর পাল। ফসল বাঁচাতে কৃষকেরা পালা করে খেত পাহারা দিচ্ছেন। প্রচণ্ড শীত আর সাপের ভয় উপেক্ষা করে দল গঠন করে রাতভর পালা করে মাঠ টহল দেন তাঁরা।
কৃষক বিমলা কুমারী (৬৪) বলেন, ‘আমাদের গ্রামজুড়ে কয়েকটি দল আছে, তারা পালা করে পাহারা দিচ্ছে। আমরা রাতে পাহারা দিই, সকালে একটি নতুন দল এলে আমরা বাড়ি গিয়ে বিশ্রাম নিই।’
দীনা নাথের মতো স্থানীয় অনেকেই বলছেন, গরু নিয়ে সরকারের এমন অবস্থানে তাঁরা বিরক্ত। এবার নির্বাচন বর্জনের কথাও ভাবছেন অনেকে। তাঁরা বলছেন, ‘আমাদের সমস্যার সমাধান না হলে ভোট দিয়ে কী লাভ!’
ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশ। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি সেখানে বিধানসভার ভোট। প্রচার এখন তুঙ্গে। এই শীতের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। তবে বিজেপির গোরক্ষা রাজনীতিই সেখানে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে আদিত্যনাথের সামনে।
মালিকবিহীন মুক্ত গরুর পাল নিয়ে উত্তর প্রদেশের মানুষ কতটা সন্ত্রস্ত, বিরক্ত সেটি কয়েকটি ঘটনা বর্ণনা করলেই বোঝা যাবে।
গত বছরের নভেম্বরের এক সন্ধ্যায় বাড়ির দাওয়ায় বসে চা পান করছিলেন উত্তর প্রদেশ রাজ্যের বাসিন্দা রাম রাজ (৫৫)। হঠাৎ এক পাগলা গরু তাঁকে আক্রমণ করে। নাতি-নাতনিরা সামান্য দূর থেকে সেই দৃশ্য দেখে ভয়ে সিঁটিয়ে গিয়েছিল। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান এই কৃষক।
পুত্রবধূ অনিতা কুমারী বিবিসিকে বলেন, ‘আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক একটা মৃত্যু সেটি। আমার শাশুড়ি সেই দিন থেকে আর ঠিকমতো খাবারও খান না।’
উত্তর প্রদেশে এ ধরনের আক্রমণ এখন সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। এখানে গরু জবাই নিষিদ্ধ। ফলে গবাদিপশুর সংখ্যা ব্যাপক বেড়েছে। গরুর সংখ্যা এবং এগুলোর দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়েছে যে গরুই এখন রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হিন্দুরা গরুকে পবিত্র মনে করে। কিন্তু বিজেপির নতুন আইন করার আগে পর্যন্ত কৃষকেরা তাঁদের বৃদ্ধ অনুৎপাদনশীল গরু কসাইখানায় বিক্রি করতেন। শিব পূজন নামে এক কৃষক বলেন, ‘দুধ দেওয়া বন্ধ করলে বা হালচাষের অনুপযুক্ত হয়ে পড়লে আমরা সেই গরু বেচে দিতাম। কঠিন সময়ের জন্য আমাদের একটা ব্যাকআপ পরিকল্পনা ছিল এটি।’
কিন্তু নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন সরকার হিন্দুত্ববাদী অ্যাজেন্ডা হিসেবে গোহত্যা কঠোরভাবে দমন করেছে। উত্তর প্রদেশসহ ১৮টি রাজ্যে এখন গোহত্যা অবৈধ।
কট্টরপন্থী বিজেপি নেতা মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর বেশ কয়েকটি কথিত অবৈধ কসাইখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। যদিও উত্তর প্রদেশে মাংসের বিশাল ব্যবসা। মহিষের মাংসের প্রধান রপ্তানিকারক রাজ্য এটি।
গবাদিপশু ব্যবসায়ীদের অনেকেই মুসলিম বা দলিত। গত কয়েক বছরে তাঁরাই বহুবার প্রায়ই বিজেপি বা স্থানীয় ডানপন্থী উগ্র গোষ্ঠীর গোরক্ষা বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়েছেন। বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। ভয়ে অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। কৃষকেরা এখন বুড়ো অনুৎপাদনশীল গরু মাঠে ঘাটে বা জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসে।
এমনি এক কৃষক পূজন। তিনি তাঁর বুড়ো গরু পাশের জঙ্গলে ছেড়ে দিয়েছেন। পূজন বলেন, ‘এখন কোনো ক্রেতা নেই, কেউই গরু বিক্রি করতে পারবে না।’ অন্যরাও তাঁর মতোই বুড়ো গরু জঙ্গলে ছেড়ে দেয় বলে জানান তিনি।
এই ছুটা গবাদিপশুদের প্রায়ই উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন শহর ও গ্রামে ইতস্তত ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। কৃষক ও স্থানীয়রা বলছেন, এই গরুগুলো সব সময় ক্ষুধার্ত থাকে। এ কারণে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। এমনই একটি গরু কৃষক রাম রাজের বাড়ির উঠানে ঢুকে পড়ে তাঁকে আক্রমণ করে মেরে ফেলে।
পূজন নিজেই সম্প্রতি ছুটা গরুর পালের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। ফসলের খেত থেকে তাড়াতে গিয়ে প্রায় মরতে বসেছিলেন তিনি। প্রাণ বাঁচাতে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে পালাতে গিয়ে হাত কেটে ফেলেছেন পূজন। সেই ব্যান্ডেজ করা হাত দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘পালের দুটি গরু আমাকে মাটিতে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। আমি জীবন হাতে দিয়ে দৌড় দিয়েছিলাম।’
পূজন নিজেও একজন হিন্দু ভক্ত। তিনি বিশ্বাস করেন গরু পবিত্র। কিন্তু মনে করেন, সব গরু রক্ষা করতে হবে সরকারের এমন আদেশ হতাশাজনক। তাঁর মতো কৃষকেরা বলেন, ছুটা গরুর পাল ফসল নষ্ট করে, সড়ক দুর্ঘটনা ঘটায় এবং কখনো কখনো মানুষ হত্যা করে।
এমন এক বিধবা পুনম দুবে। বলেন, ‘ছুটা গরুর কারণে আমার ছেলে এখন এতিম। কে দেখবে আমাদের?’ ভূপেন্দ্র দুবে (৩৬) ২০২০ সালে কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে লকডাউনের সময় চাকরি হারান। গ্রামে ফিরে আসেন তিনি। একদিন স্থানীয় বাজারে ছেলের জন্য মিঠাই কিনতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে গরুর আক্রমণে প্রাণ হারান।
গরুর আক্রমণে গুরুতর জখম হয়ে ২০১৯ সাল থেকে কোমায় ছিলেন ৮০ বছর বয়সী রাম কালী। তাঁর পরিবার বলছে, রাম কালী এখনো জানেন না গত বছর মহামারির শুরুর দিকে তাঁর একমাত্র ছেলে কোভিডে মারা গেছেন।
বিরোধী দলগুলো উত্তর প্রদেশে নির্বাচনী প্রচারে বিষয়টি জোরেশোরেই সামনে আনছে। যেখানে উত্তর প্রদেশ মূলত গ্রামভিত্তিক একটি রাজ্য। সেখানে কৃষকেরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভোট ব্যাংক।
এ ব্যাপারে শাসক বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র সমীর সিংয়ের কাছে জানতে চেয়েছিল বিবিসি। তিনি বলেন, এ সমস্যা মোকাবিলায় সরকার ‘নতুন কৌশল তৈরি করছে’। সমীর বলেন, ‘এগুলোকে ছুটা গরু বলা উচিত নয়। কারণ, গরু হিন্দু সংস্কৃতিরই অংশ। আমরা কখনোই কিন্তু আমাদের মুরব্বিদের বৃদ্ধ হওয়ার পর মরার জন্য বাড়ি থেকে বের করে দিই না। সেখানে আমরা কীভাবে গরুগুলোকে মরার জন্য রাস্তায় ছেড়ে দেব?’
সমীর সিং মূলত অনুৎপাদনশীল গরুগুলোকে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার কথাই বোঝাচ্ছেন। আদিত্যনাথের সরকার আরও গো-আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রচুর টাকা বরাদ্দ করেছে। সরকার পরিচালিত হাজার হাজার আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনার জন্য বিশেষ অ্যালকোহল ট্যাক্সও আরোপ করা হয়েছে।
কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি। সম্প্রতি অযোধ্যা জেলায় বিবিসি হিন্দি একটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করে। দেখা যায়, সেখানে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি গরু রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রটির তত্ত্বাবধায়ক শত্রুঘ্ন তিওয়ারি বলেন, ‘এখানে ২০০টি গরু আছে। এটাই আমাদের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা। ৭০০-১০০০ গরু এখনো এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
এদিকে প্রতিনিয়ত খেতখামারে ঢুকে পড়ছে ছুটা গরুর পাল। ফসল বাঁচাতে কৃষকেরা পালা করে খেত পাহারা দিচ্ছেন। প্রচণ্ড শীত আর সাপের ভয় উপেক্ষা করে দল গঠন করে রাতভর পালা করে মাঠ টহল দেন তাঁরা।
কৃষক বিমলা কুমারী (৬৪) বলেন, ‘আমাদের গ্রামজুড়ে কয়েকটি দল আছে, তারা পালা করে পাহারা দিচ্ছে। আমরা রাতে পাহারা দিই, সকালে একটি নতুন দল এলে আমরা বাড়ি গিয়ে বিশ্রাম নিই।’
দীনা নাথের মতো স্থানীয় অনেকেই বলছেন, গরু নিয়ে সরকারের এমন অবস্থানে তাঁরা বিরক্ত। এবার নির্বাচন বর্জনের কথাও ভাবছেন অনেকে। তাঁরা বলছেন, ‘আমাদের সমস্যার সমাধান না হলে ভোট দিয়ে কী লাভ!’
‘অপারেশন সিন্দুর’ অভিযানে পাকিস্তানের নয়টি লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পাকিস্তান পাল্টা ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসৌস’ ঘোষণা করে। টানা চার দিনের উত্তেজনাপূর্ণ সামরিক সংঘাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বিলাসবহুল জাম্বো জেট উপহার দিচ্ছে কাতারের রাজপরিবার। আনুমানিক ৪০০ মিলিয়ন বা ৪০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের এই উড়োজাহাজটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্যই বরাদ্দ থাকবে। ২০২৯ সালে এটি ট্রাম্প প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরি ফাউন্ডেশনের অধীনে চলে যাবে।
২ ঘণ্টা আগেআগামী মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্যে পা রাখতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ঠিক আগে আগে ইসরায়েল-আমেরিকান জিম্মি ইদান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এই গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ধারণা করা
২ ঘণ্টা আগেভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পর জম্মু-কাশ্মীরের জনসাধারণের মধ্যে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। কাশ্মীরের শ্রীনগরে গতকাল রোববার বাজারঘাটে সাধারণ মানুষের আনাগোনা দেখা গেছে। তবে এখনো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে ভারত। কোনো আঘাত এলে তা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দেশটির সেনা
১৩ ঘণ্টা আগে