Ajker Patrika

মৃত্যুর পরও বিষ ছড়ায় পরিচিত কয়েক প্রজাতির সাপ, গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিষাক্ত ব্ল্যাক ক্রেইট বা কাল কেউটে সাপ। ছবি: সংগৃহীত
বিষাক্ত ব্ল্যাক ক্রেইট বা কাল কেউটে সাপ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় আসামে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু প্রাণঘাতী সাপ মৃত্যুর পরও বিষ ছড়িয়ে দিতে সক্ষম। বিশেষ করে, মনোকল কোবরা ও কালো ক্রেইট বা কাল কেউটে সাপ মৃত্যুর পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষের শরীরে বিষ ছড়িয়ে দিতে পারে। সম্প্রতি ‘ফ্রন্টেইনার্স ইন ট্রপিক্যাল ডিজিজ’ সাময়িকীতে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

এর আগে ধারণা করা হতো, মৃত্যুর পর বিষ ছড়ানোর ক্ষমতা কেবল কিছু নির্দিষ্ট প্রজাতির সাপের মধ্যেই সীমিত। যেমন—আমেরিকান র‍্যাটলস্ন্যাক, কপারহেড, এশীয় ও সাব-সাহারার স্পিটিং কোবরা এবং অস্ট্রেলিয়ার রেড-বেলিড ব্ল্যাক স্ন্যাক। কিন্তু নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, ভারতের গ্রামীণ অঞ্চলে প্রচলিত কোবরা ও কাল কেউটে একইভাবে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

বুধবার (২০ আগস্ট) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, এই গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন আসামের নামরূপ কলেজের বিজ্ঞানী সুস্মিতা ঠাকুর। তিনি ও তাঁর দল অন্তত তিনটি ঘটনার প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে দুটি ঘটনা মনোকল কোবরা এবং একটি কাল কেউটের সঙ্গে যুক্ত।

প্রথম ঘটনায়, বাড়ির মুরগি বাঁচাতে এক ব্যক্তি একটি কোবরার শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। পরে যখন তিনি সাপটিকে ফেলে দিতে যান, তখন ওই কাটা মাথাটি তাঁর ডান হাতের বুড়ো আঙুলে ছোবল মারে। এর ফলে তাঁর হাতে প্রচণ্ড ব্যথা ও বমি শুরু হয়। কালো হয়ে যায় ক্ষতস্থানটি। চিকিৎসকেরা ছবি দেখে কোবরা হিসেবে সাপটিকে শনাক্ত করেন এবং দ্রুত অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করে তাঁকে বাঁচাতে সক্ষম হন। ২০ দিন চিকিৎসার পর রোগী সম্পূর্ণ সেরে ওঠেন।

দ্বিতীয় ঘটনায়, এক কৃষক ধানখেতে ট্র্যাক্টরের চাপে একটি কোবরা মেরে ফেলেন। কাজ শেষে ট্রাক্টর থেকে নেমে আসার সময় সেই মৃত সাপের দাঁত তাঁর পায়ে বিঁধে যায়। এতে তাঁর শরীরে ফুলে যায় এবং প্রচণ্ড ব্যথার পাশাপাশি রং পরিবর্তনের মতো লক্ষণ দেখা দেয়। চিকিৎসা শেষে তিনি সুস্থ হলেও ক্ষতস্থানে আলসার তৈরি হয়েছে।

তৃতীয় ঘটনায়, একটি কাল কেউটে মেরে ফেলার পর বাড়ির আঙিনায় ফেলে রাখা হয়েছিল। কিন্তু এক প্রতিবেশী মৃত সাপটি হাতে নেওয়ার সময় আঙুলে এটির দাঁত বসে যায় এবং তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁর চোখের পাতা ঝুলে পড়ে ও গিলতে অসুবিধা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর জানা যায়, মৃত সাপটি অন্তত তিন ঘণ্টা আগেই মারা গিয়েছিল। আর ছোবল খাওয়া ব্যক্তিকে অ্যান্টিভেনমের ২০টি ডোজ দেওয়ার পরও তাঁর অবস্থা সংকটজনক থাকে। টানা ৪৩ ঘণ্টা কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের সহায়তা দেওয়ার পর ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

গবেষকেরা ব্যাখ্যা করেছেন, সামনের দন্তযুক্ত সাপের বিষ গ্রন্থি ও দাঁতের গঠন এমনভাবে তৈরি যে, মৃত্যুর পরও চাপ পড়লে এর বিষ বের হতে পারে। বিশেষ করে কাটা মাথা কিংবা দেহে চাপ লাগলে দাঁত দিয়ে বিষ বের হয়ে আসতে পারে এবং জীবন্ত সাপের দংশনের মতোই বিপজ্জনক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

এ কারণে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, কোনো কারণে যদি সাপকে মেরেও ফেলা হয়, তবে এর দেহ বা মাথা খালি হাতে নাড়াচাড়া করা উচিত নয়। মৃত সাপও জীবন্ত সাপের মতোই প্রাণঘাতী হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দাম্পত্যকলহের গুঞ্জন, মুখ খুললেন জাহিদ হাসান

গভর্নর আমাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়ার কে: বিএফআইইউর প্রধান শাহীনুল

সেই রুহুল আমিনের বসুন্ধরা, বনানী ও উত্তরার জমিসহ ৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

ছাত্রীকে তিন দিন আটকে রেখে ধর্ষণ, গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে বিয়ে

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাদের যৌন সহিংসতার প্রসঙ্গ জাতিসংঘে তুললেন ভারতীয় দূত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত