Ajker Patrika

ভারতীয় বিমানবাহিনীর এয়ারস্ট্রিপ বেচে দিয়েছিলেন মা-ছেলে, ২৮ বছর পর উদ্ধার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ফাত্তুওয়ালা গ্রাম। পাকিস্তান সীমান্তবর্তী একটি ভারতীয় গ্রাম। অবস্থিত পাঞ্জাব রাজ্যে। এই গ্রামে একটি পরিত্যক্ত এয়ারস্ট্রিপ বা বিমান অবতরণকেন্দ্র ছিল ভারতীয় বিমানবাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি নিয়মিতই ব্যবহৃত হতো। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হলে তা পরিত্যক্ত হয়। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত দেখে সেই এয়ারস্ট্রিপটির যাবতীয় নিশানা মিটিয়ে বিক্রি করে দিয়েছিলেন এক নারী ও তাঁর ছেলে। অবশ্য, বিক্রির ২৮ বছর পর এয়ারস্ট্রিপটির মালিকানা ফেরত পেয়েছে ভারতীয় বিমানবাহিনী।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার এই বিমান অবতরণকেন্দ্রটি ১৯৬২,১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতীয় বিমানবাহিনী ব্যবহার করেছে। এরপর আর সেটি ব্যবহৃত হয়নি। পরে ১৯৯৭ সালে মা-ছেলে মিলে স্থানীয় কিছু রাজস্ব কর্মকর্তার যোগসাজশে এটি বিক্রি করে দেয়।

অবশেষে বিক্রির ২৮ বছর পর এয়ারস্ট্রিপটি উদ্ধার করা হয়েছে এবং অভিযুক্ত ঊষা আনসাল ও তার ছেলে নবীন চাঁদের নামে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট পাঞ্জাব ভিজিল্যান্স ব্যুরোর (ভিবি) প্রধান পরিচালককে এই অভিযোগ তদন্ত করার নির্দেশ দেন এবং গত ২০ জুন দাখিল করা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই এফআইআর দায়ের করা হয়।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৯ (ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রতারণা), ৪২০ (প্রতারণা এবং অসৎভাবে সম্পত্তি হস্তক্ষেপে প্ররোচনা), ৪৬৫ (জালিয়াতি), ৪৬৭ (মূল্যবান নিরাপত্তা, উইল ইত্যাদির জালিয়াতি), ৪৭১ (জাল দলিল বা ইলেকট্রনিক রেকর্ডকে খাঁটি হিসাবে ব্যবহার করা) এবং ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। ডিএসপি করণ শর্মা কৌশলগত প্রতিরক্ষা জমি সংক্রান্ত এই দীর্ঘ-লুকানো কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত সকলকে শনাক্ত করার তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

এই বিমান অবতরণকেন্দ্রটি পাকিস্তান সীমান্তের খুব কাছে ফাত্তুওয়ালা গ্রামে অবস্থিত। হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে অবশেষে চলতি বছরের মে মাসে জমিটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় উদ্ধার করেছে। ভিবি তদন্তে নিশ্চিত হয়েছে যে, জমিটি আইএএফের। ১৯৪৫ সালের ১২ মার্চ ব্রিটিশ প্রশাসন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ব্যবহারের জন্য এটি অধিগ্রহণ করে এবং তখন থেকেই এটি আইএএফের দখলে ছিল এবং তিনটি যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে।

তদন্ত অনুসারে, দুমনিওয়ালা গ্রামের অভিযুক্ত ঊষা এবং নবীন প্রতারণামূলকভাবে জমির মালিকানা দাবি করে এবং রাজস্ব কর্মকর্তাদের একটি অংশের সঙ্গে যোগসাজশে রাজস্ব রেকর্ড জাল করে এটি বিক্রি করে দেয়। মূল অভিযোগটি দায়ের করেছিলেন নিশান সিং নামে এক অবসরপ্রাপ্ত রাজস্ব কর্মকর্তা। কিন্তু বছরের পর বছর কিছুই হয়নি। ২০২১ সালে, হালওয়ারা বিমানবাহিনী স্টেশনের কমান্ড্যান্ট ফিরোজপুরের ডেপুটি কমিশনারকে তদন্তের জন্য চিঠি লিখেছিলেন। তাতেও কিছুই হয়নি।

নিশান হাইকোর্টে সিং তদন্তের আবেদন করেন। আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, জমির মূল মালিক মদনমোহন লাল ১৯৯১ সালে মারা যান। তবে, ১৯৯৭ সালে বিক্রয় দলিল সম্পাদিত হয় এবং ২০০৯-১০ সালের জামাবন্দিতে সুরজিৎ কৌর, মঞ্জিত কৌর, মুখতিয়ার সিং, জাগির সিং, দারা সিং, রমেশ কান্ত এবং রাকেশ কান্তকে মালিক হিসাবে দেখানো হয়েছে, যদিও সামরিক বাহিনী কখনই তাদের কাছে জমি হস্তান্তর করেনি।

হাইকোর্ট ফিরোজপুরের ডেপুটি কমিশনারকে নিষ্ক্রিয়তার জন্য তিরস্কার করেন। পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টের বিচারপতি হরজিৎ সিং ব্রার তাঁর আদেশে পাঞ্জাব ভিজিল্যান্স ব্যুরোর প্রধান পরিচালককে ব্যক্তিগতভাবে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে বলেন। তাঁকে চার সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত