Ajker Patrika

ব্রাহ্মণেরা মুনাফাখোর—ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টার মন্তব্যে ভারতে নিন্দার ঝড়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৭
ছবি: এএফপি
ছবি: এএফপি

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা সম্প্রতি একটি মন্তব্য করেছেন। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাভারো বলেছেন, ‘ব্রাহ্মণেরা মুনাফাখোর। তাঁরা সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে নিজেরা মুনাফায় মত্ত।’ তাঁর এ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ভারতে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। মূলত রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ন্যায্যতা প্রমাণের সময় এ মন্তব্য করেন নাভারো। তবে তাঁর এ মন্তব্যকে অনেকে জাতিগত বিদ্বেষপূর্ণ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি তাদের একটি প্রতিবেদনে বলেছে, নাভারোর এ মন্তব্যকে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যে চলমান কূটনৈতিক টানাপোড়েনের আরও একটি লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা ভেস্তে গেছে। এরপর ট্রাম্প ভারতের ওপর মোটা অঙ্কের শুল্ক আরোপ করেছেন। নাভারো অভিযোগ করেছেন, ভারতীয় শোধনাগারগুলো কম দামে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কিনছে, সেটিকে প্রক্রিয়াজাত করে চড়া দামে বিক্রি করছে। তিনি ভারতকে ‘ক্রেমলিনের অবৈধ অর্থ বৈধকরণ কেন্দ্র’ বলেও উল্লেখ করেছেন এবং দাবি করেছেন, দেশের অভিজাত শ্রেণি অর্থাৎ ব্রাহ্মণেরা ‘ভারতের সাধারণ জনগণের খরচে’ মুনাফা লুটছে।

এক্সে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সাগরিকা ঘোষের পোস্ট।
এক্সে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সাগরিকা ঘোষের পোস্ট।

তবে নাভারোর এ মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সঞ্জীব সান্যাল। তিনি বলেছেন, নাভারোর কথা প্রমাণ করে, আমেরিকায় কারা ভারত সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করছে। শিবসেনার প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এ মন্তব্যকে ‘লজ্জাজনক ও অশুভ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন ‘ভিত্তিহীন’ মন্তব্য করতে পারে না।

‘ব্রাহ্মণ’ শব্দটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ধনবান অভিজাত শ্রেণিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, তবে ভারতে এর একটি আলাদা ও জাতিগত পরিচয় রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সাগরিকা ঘোষ এ মার্কিন প্রেক্ষাপটটি ব্যাখ্যা করলেও অনেকে এর বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের মতে, যখন ভারতের উদ্দেশে নাভারো এ শব্দ ব্যবহার করেছেন, তখন এটি কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়, বরং এটি একটি ইচ্ছাকৃত আক্রমণ। এই বিতর্কের ফলে ভারতে নাভারোর মন্তব্যটি রাজনৈতিক ও সামাজিক—উভয় ক্ষেত্রে সমালোচনার মুখে পড়েছে।

অন্যদিকে নাভারোর এই আক্রমণ এমন এক সময়ে এল, যখন প্রধানমন্ত্রী মোদি চীনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সফরে ছিলেন। সেখানে তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। নাভারো অভিযোগ করেছেন, মস্কো ও বেইজিংয়ের সঙ্গে দিল্লির ঘনিষ্ঠতা বিশ্বশান্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত