Ajker Patrika

ইউক্রেনে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যা আছে, যা নেই

আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৯: ৫২
রাশিয়ার হামলায় বিধ্বস্ত ইউক্রেনীয় ভবন। ছবি: এএফপি
রাশিয়ার হামলায় বিধ্বস্ত ইউক্রেনীয় ভবন। ছবি: এএফপি

নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ইউক্রেন। তবে ৩০ দিনের সেই যুদ্ধবিরতি কেমন হবে? কী কী পাচ্ছে ইউক্রেন? তারা কী লাভবান হচ্ছে? না কি আবারও হতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের হাতের পুতুল? তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে নানা বিশ্লেষণ। চলুন একনজরে দেখে নেওয়া যাক খসড়া প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক।

যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন

যুক্তরাষ্ট্র উত্থাপিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অনুযায়ী, পুরোপুরি যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ পুনরায় চালু করবে যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে ওভাল অফিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর কিয়েভকে গোয়েন্দা তথ্য না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল ওয়াশিংটন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সব সামরিক সহায়তা।

পরে অবশ্য সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধবিরতিতে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার পর এই ইস্যুতে নরম হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আলোচনার পর দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, ওয়াশিংটন অবিলম্বে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের স্থগিতাদেশ তুলে নেবে এবং ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা সহায়তা পুনরায় চালু করবে।

ইউক্রেনের নিরাপত্তা

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রধান চাওয়া ছিল, ওয়াশিংটন কিয়েভের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে ইউক্রেনকে রক্ষা করবে। তবে, যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে দুই পক্ষের ঐকমত্যে পৌঁছানোর পরও ইউক্রেনের এই নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নিয়ে কোনো কথা শোনা যায়নি। বিষয়টি নজর এড়ায়নি ইউরোপীয় নেতাদের।

এরই মধ্যে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ইউক্রেনকে সতর্ক করে বলেছেন, কিয়েভের নিরাপত্তার বিষয়টিই সর্বাধিক গুরুত্ব পাওয়া উচিত। নিরাপত্তা নিশ্চয়তা না পেলে ইউক্রেনকে কোনো চুক্তিতে না যেতেই ইঙ্গিত দিয়েছেন এই নেতা। অবশ্য, এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি জানান, পরে আলোচনা সাপেক্ষে ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।

খনিজ চুক্তি

আলোচনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ ছিল ইউক্রেনের ভূগর্ভস্থ বিরল খনিজ ও অন্যান্য মূল্যবান আকরিক। দেশটির খনিজ সম্পদের লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র চায়। এ ইস্যুতেই গত সপ্তাহে ব্যাপক বাগ্‌বিতণ্ডা হয় দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে। তবে, জেদ্দায় সৌদির মধ্যস্থতায় যে বৈঠক হয়েছে, সে বৈঠকের পর এ নিয়ে আবার সমঝোতার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, জেদ্দা আলোচনা যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড় দিয়ে জেলেনস্কিকে সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে চাপ প্রয়োগ করতে পারে। কৌশলে এ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ আরও সময় চেয়ে নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বন্দী বিনিময়

যৌথ বিবৃতি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির মধ্যে থাকবে যুদ্ধবন্দিদের বিনিময়, আটককৃত বেসামরিক নাগরিকদের মুক্তি এবং জোরপূর্বক রাশিয়ায় স্থানান্তরিত ইউক্রেনীয় শিশুদের ফেরত পাঠানো।

আলোচনার পর জেলেনস্কি এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ইউক্রেন শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে, রাশিয়াকে একই পথে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব নিতে হবে। জেদ্দায় ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার পর ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘বল এখন রাশিয়ার কোর্টে।’

এখন ভ্লাদিমির পুতিনের সামনে দুটি পথ—তিনি হয় একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবেন, না হয় নতুন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটানোর ঝুঁকি নেবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত