দীর্ঘ ১৪ বছর পর স্যার কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বে ব্রিটেনের শাসনক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে লেবার পার্টি। দেশটির সংবাদমাধ্যম বিবিসির দেওয়া তথ্যানুসারে, ৬৫০ আসনের ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টি এখন পর্যন্ত ৪১২টি আসন পেয়েছে। বিপরীতে এখনো ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে মাত্র ১২১টি।
এখনো অবশ্য ২টি আসনের ফলাফল ঘোষণা বাকি। তবে তা লেবার পার্টিকে ক্ষমতার থেকে দূরে রাখার জন্য মোটেও যথেষ্ট নয়। কারণ সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় ৩২৬ আসনের চেয়ে লেবার পার্টি প্রায় ৯০টি আসন বেশি পেয়েছে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টি বাজে ফল করার পর দলটির নেতা নির্বাচিত হন কিয়ার স্টারমার। তাঁর আগে অবশ্য তিনি আইন পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
কিয়ার স্টারমারের বর্তমান বয়স ৬১ বছর। তিনি লন্ডনের উপকণ্ঠে অবস্থিত সারে শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মা দেশটির ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে কাজ করেছেন। আর বাবা পেশায় ছিলেন টুলমেকার বা যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক। তাঁর মা আজীবন বাতের অসুস্থতায় ভুগেছেন। বাবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো ছিল না।
এক অর্থে বলা যায়, কিয়ার স্টারমার একপ্রকার শূন্য থেকেই উঠে আসা। তিনিই তাঁর পরিবারের প্রথম ব্যক্তি যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিতে পা রেখেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কিয়ার স্টারমার বাম ঘরানার একটি ম্যাগাজিন সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ব্রিটেনের লিডস ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শুরুর আগে তিনি রিগেট গ্রামার স্কুলে এবং পরে অক্সফোর্ডের সেন্ট এডমন্ড হলে পড়াশোনা করেন।
পরে তিনি একজন ব্যারিস্টার হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। দ্রুতই তিনি নিজেকে মানবাধিকার সংক্রান্ত আইনের ক্ষেত্রে এক শক্তিশালী আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আইন বিষয়ে তাঁর প্রজ্ঞা ও নিষ্ঠা তাঁকে ২০০৮ সালে ব্রিটেনের পাবলিক প্রসিকিউশন বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দেয়। এই পদে তিনি ২০১৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এর পরের বছর ব্রিটিশ রাজ পরিবারের তরফ থেকে তাঁকে নাইটহুড তথা স্যার উপাধিতে ভূষিত করা হয়। এরপরই তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন।
কিয়ার স্টারমার পরে ২০১৫ সালে লেবার পার্টি থেকে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। তাঁর নির্বাচন জয়ের কয়েক সপ্তাহের মাথায় মা মারা যান। তাঁর বাবাও মারা যান বছর তিনেক পর। কিয়ার স্টারমার বাবার মৃত্যুর পর একাধিকবার আক্ষেপ করেছেন যে, তিনি তাঁর বাবাকে একবারও বলতে পারেননি যে, তিনি তাঁকে ভালোবাসেন।
২০১৫ সালের পর রাজনীতিতে কিয়ার স্টারমারকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৯ সালে লেবার পার্টির নির্বাচনে ভরাডুবির পর তাঁকে দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়। যদিও অনেকেই সমালোচনা করে বলেন, কিয়ার স্টারমারের মাঝে কোনো রাজনৈতিক ক্যারিশমা নেই। তারপরও তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি লেবার পার্টিকে খাদের কিনার থেকে টেনে তুলে ক্ষমতার মসনদে বসিয়েছেন।
আইন বিষয়ে দারুণ প্রাজ্ঞ হওয়ার পরও কিয়ার স্টারমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তিনি খুবই বিরক্তিকর একজন রাজনীতিবিদ। তাঁর কোনো ক্যারিশমা নেই। কিন্তু এসব সমালোচনা তাঁর রাজনৈতিক জীবনে খুব এক প্রভাব ফেলেনি। বরং তিনি আরও বেশি করে সেদিকে ঝুঁকে পড়েছেন।
এ বিষয়ে একবার ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম আইটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিয়ার স্টারমার বলেছিলেন, ‘যদি এমনটা কেউ বলে থাকে, তবে তা আসলে আমার চরিত্রের দিকে সামান্য কাঁদা ছুড়ে মারা এবং আমি এই বিষয়টির সঙ্গে খুবই পরিচিত।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘মনে রাখবেন, কেউ যদি আপনাকে বলে যে—আপনি বিরক্তি কর, তাহলে এটি মাথা রাখবেন যে, আপনিই আসলে জিততে যাচ্ছেন।
কিয়ার স্টারমার হয়তো তাঁর জায়গায় অটল ছিলেন বলেই সামান্য যন্ত্র প্রস্তুতকারীর ছেলে থেকে নাইটহুড উপাধি হাসিল করে আজ ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে চলেছেন। হয়তো তাঁর বিরক্তিকর রাজনৈতিক চরিত্রই তাঁকে জিততে সহায়তা করেছে; যেমনটা তিনি দাবি করেছিলেন।
তথ্যসূত্র: সিবিএস নিউজ
দীর্ঘ ১৪ বছর পর স্যার কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বে ব্রিটেনের শাসনক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে লেবার পার্টি। দেশটির সংবাদমাধ্যম বিবিসির দেওয়া তথ্যানুসারে, ৬৫০ আসনের ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টি এখন পর্যন্ত ৪১২টি আসন পেয়েছে। বিপরীতে এখনো ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে মাত্র ১২১টি।
এখনো অবশ্য ২টি আসনের ফলাফল ঘোষণা বাকি। তবে তা লেবার পার্টিকে ক্ষমতার থেকে দূরে রাখার জন্য মোটেও যথেষ্ট নয়। কারণ সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় ৩২৬ আসনের চেয়ে লেবার পার্টি প্রায় ৯০টি আসন বেশি পেয়েছে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টি বাজে ফল করার পর দলটির নেতা নির্বাচিত হন কিয়ার স্টারমার। তাঁর আগে অবশ্য তিনি আইন পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
কিয়ার স্টারমারের বর্তমান বয়স ৬১ বছর। তিনি লন্ডনের উপকণ্ঠে অবস্থিত সারে শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মা দেশটির ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে কাজ করেছেন। আর বাবা পেশায় ছিলেন টুলমেকার বা যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক। তাঁর মা আজীবন বাতের অসুস্থতায় ভুগেছেন। বাবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো ছিল না।
এক অর্থে বলা যায়, কিয়ার স্টারমার একপ্রকার শূন্য থেকেই উঠে আসা। তিনিই তাঁর পরিবারের প্রথম ব্যক্তি যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিতে পা রেখেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কিয়ার স্টারমার বাম ঘরানার একটি ম্যাগাজিন সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ব্রিটেনের লিডস ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শুরুর আগে তিনি রিগেট গ্রামার স্কুলে এবং পরে অক্সফোর্ডের সেন্ট এডমন্ড হলে পড়াশোনা করেন।
পরে তিনি একজন ব্যারিস্টার হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। দ্রুতই তিনি নিজেকে মানবাধিকার সংক্রান্ত আইনের ক্ষেত্রে এক শক্তিশালী আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আইন বিষয়ে তাঁর প্রজ্ঞা ও নিষ্ঠা তাঁকে ২০০৮ সালে ব্রিটেনের পাবলিক প্রসিকিউশন বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দেয়। এই পদে তিনি ২০১৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এর পরের বছর ব্রিটিশ রাজ পরিবারের তরফ থেকে তাঁকে নাইটহুড তথা স্যার উপাধিতে ভূষিত করা হয়। এরপরই তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন।
কিয়ার স্টারমার পরে ২০১৫ সালে লেবার পার্টি থেকে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। তাঁর নির্বাচন জয়ের কয়েক সপ্তাহের মাথায় মা মারা যান। তাঁর বাবাও মারা যান বছর তিনেক পর। কিয়ার স্টারমার বাবার মৃত্যুর পর একাধিকবার আক্ষেপ করেছেন যে, তিনি তাঁর বাবাকে একবারও বলতে পারেননি যে, তিনি তাঁকে ভালোবাসেন।
২০১৫ সালের পর রাজনীতিতে কিয়ার স্টারমারকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৯ সালে লেবার পার্টির নির্বাচনে ভরাডুবির পর তাঁকে দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়। যদিও অনেকেই সমালোচনা করে বলেন, কিয়ার স্টারমারের মাঝে কোনো রাজনৈতিক ক্যারিশমা নেই। তারপরও তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি লেবার পার্টিকে খাদের কিনার থেকে টেনে তুলে ক্ষমতার মসনদে বসিয়েছেন।
আইন বিষয়ে দারুণ প্রাজ্ঞ হওয়ার পরও কিয়ার স্টারমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তিনি খুবই বিরক্তিকর একজন রাজনীতিবিদ। তাঁর কোনো ক্যারিশমা নেই। কিন্তু এসব সমালোচনা তাঁর রাজনৈতিক জীবনে খুব এক প্রভাব ফেলেনি। বরং তিনি আরও বেশি করে সেদিকে ঝুঁকে পড়েছেন।
এ বিষয়ে একবার ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম আইটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিয়ার স্টারমার বলেছিলেন, ‘যদি এমনটা কেউ বলে থাকে, তবে তা আসলে আমার চরিত্রের দিকে সামান্য কাঁদা ছুড়ে মারা এবং আমি এই বিষয়টির সঙ্গে খুবই পরিচিত।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘মনে রাখবেন, কেউ যদি আপনাকে বলে যে—আপনি বিরক্তি কর, তাহলে এটি মাথা রাখবেন যে, আপনিই আসলে জিততে যাচ্ছেন।
কিয়ার স্টারমার হয়তো তাঁর জায়গায় অটল ছিলেন বলেই সামান্য যন্ত্র প্রস্তুতকারীর ছেলে থেকে নাইটহুড উপাধি হাসিল করে আজ ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে চলেছেন। হয়তো তাঁর বিরক্তিকর রাজনৈতিক চরিত্রই তাঁকে জিততে সহায়তা করেছে; যেমনটা তিনি দাবি করেছিলেন।
তথ্যসূত্র: সিবিএস নিউজ
ইরানে পরিচালিত মার্কিন বিমান হামলাকে ‘অসাধারণ এবং ব্যাপক সাফল্য’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ। তিনি জানিয়েছেন, এই হামলার মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ধ্বংস করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেবিশ্ব রাজনীতির উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমান এখন আলোচনার কেন্দ্রে। আকাশপথে নিঃশব্দ ও প্রায় অদৃশ্য এই যুদ্ধযান শুধু আধুনিক প্রযুক্তির বিস্ময় নয়, বরং এটি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত শক্তির প্রতীক।
২ ঘণ্টা আগেইরানে থাকা ‘বন্ধুদের’ তথ্যের অবিচ্ছিন্ন প্রবাহ নিশ্চিত করতে আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য দেশটিতে স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা বিনা মূল্যে চালু করার জন্য স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ককে আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত রিচার্ড গ্রেনেল।
৩ ঘণ্টা আগেএনডিটিভি জানিয়েছে, হামলায় বাংকার বাস্টার বোমা ও টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র মিলিয়ে অভিযান চালানো হয়, যা ছিল গত কয়েক বছরে ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ।
৩ ঘণ্টা আগে