Ajker Patrika

রাশিয়ায় ঢুকে পড়ার দাবি করল ইউক্রেনভিত্তিক রুশ সশস্ত্র দল

আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৪, ২১: ৫৯
রাশিয়ায় ঢুকে পড়ার দাবি করল ইউক্রেনভিত্তিক রুশ সশস্ত্র দল

ইউক্রেনভিত্তিক তিনটি আধাসামরিক গোষ্ঠী দাবি করেছে, তারা রাশিয়ায় প্রবেশ করেছে এবং সেখানে সরকারি সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময় আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিবিসি জানিয়েছে, দ্য ফ্রিডম অব রাশিয়া লেজিয়ন (এফআরএল) এবং সাইবেরিয়ান ব্যাটালিয়ন (এসবি) নামে দুটি সশস্ত্র গ্রুপ ভিডিও পোস্ট করে রাশিয়ায় ঢুকে পড়ার দাবি করেছে। এসব ভিডিওতে যেসব স্থান দেখা যাচ্ছে সেগুলোকে রাশিয়ার বেলগোরোদ এবং কুরস্ক অঞ্চল বলেও দাবি করেছে তারা।

একটি ফুটেজে একজন সশস্ত্র এফআরএল সৈনিককে বলতে শোনা গেছে, ‘আমাদের সব নাগরিকের মতো আমরা পুতিনের স্বৈরাচারিতা থেকে মুক্ত রাশিয়ার স্বপ্ন দেখি। কিন্তু আমরা শুধু স্বপ্ন দেখি না—এই স্বপ্নগুলোকে সত্যি করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাই। আমরা আমাদের ভূমিকে এই শাসনের হাত থেকে অল্প অল্প করে দূরে সরিয়ে নেব।’

এদিকে প্রকাশিত আরেকটি ভিডিও ফুটেজে এসবি বলেছে—‘রাশিয়ান ফেডারেশনের ভূখণ্ডে ভয়ংকর লড়াই চলছে।’ ওই ফুটেজে যোদ্ধাদের রাশিয়ার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যেতেও দেখা গেছে। এসবি যোদ্ধারা আগামী ১৫ থেকে ১৭ মার্চ রাশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেরও নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলছে—এই ব্যালট এবং ভোটকেন্দ্রগুলো কাল্পনিক। আপনি সত্যিই আপনার জীবনকে আরও ভালো করার জন্য পরিবর্তন আনতে পারেন শুধুমাত্র আপনার হাতের অস্ত্র দিয়ে।

আরেকটি ইউক্রেন-ভিত্তিক রাশিয়ান গ্রুপ, রাশিয়ান ভলান্টিয়ার কর্পসও (আরডিকে) একটি ফুটেজ প্রকাশ করেছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, রাশিয়ার সরকারি বাহিনী যুদ্ধ না করেই অস্ত্র ফেলে পালিয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিডিওগুলো এখনো স্বাধীনভাবে যাচাই করা হয়নি। তবে রাশিয়ার নির্বাসিত একজন রাজনীতিবিদ দাবি করেছেন, রাশিয়ার দুটি গ্রাম এখন ‘মুক্তি বাহিনীর’ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আর রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্ত অতিক্রমের একটি চেষ্টা তারা ব্যর্থ করে দিয়েছে।

এদিকে ইউক্রেনের মূল সেনাবাহিনী আজ মঙ্গলবার রুশ সীমান্তে ঢুকে পড়ার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। দেশটির সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর মুখপাত্র আন্দ্রে ইউসোভ বলেছেন—ওই আধাসামরিক গোষ্ঠীগুলো আসলে রাশিয়ার নাগরিকদের দ্বারা গঠিত স্বাধীন সংস্থা। তারা নিজ দেশেই কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের সীমান্ত গ্রাম টেটকিনো মঙ্গলবারের অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে গত বছরের মে মাসেও বেলগোরোদ অঞ্চলে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো এ ধরনের হামলা চালিয়েছিল বলে জানিয়েছিল রুশ বাহিনী। সে সময় বিদ্রোহীরা পরাজিত হয় বলেও দাবি করা হয়েছিল।

এদিকে আরেকটি পৃথক ঘটনায় রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাশিয়ার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে অন্তত ২৫টি ড্রোন উৎক্ষেপণ করেছিল ইউক্রেনের বাহিনী। এই আক্রমণটিও তারা ব্যর্থ করে দিয়েছে। তবে বিভিন্ন ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, রাশিয়ার বেশ কয়েকটি তেল কারখানায় আগুন লেগেছে।

মস্কোর ঠিক পূর্বে রাশিয়ার ইভানোভো অঞ্চলে একটি সামরিক-পরিবহন বিমান আটজন ক্রু এবং সাত যাত্রী নিয়ে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই বিধ্বস্ত হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একটি ইঞ্জিনে আগুনের কারণে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তবে দুর্ঘটনায় হতাহতের বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দ্বারা শুরু করা ইউক্রেনের একটি পূর্ণ-স্কেল আগ্রাসন এখন তৃতীয় বছরে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ শিগগিরই শেষ হতে পারে এমন কোনো লক্ষণ নেই।

মঙ্গলবার, এফআরএল পোস্ট করেছে যা বলেছে এটি রাশিয়ান-ইউক্রেনীয় সীমান্তের একটি ভিডিও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত