Ajker Patrika

পৃথিবীকে একসঙ্গে বিদায় জানালেন বিশ্বখ্যাত ২ যমজ বোন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
১৯৯৭ সালে জার্মানির বার্লিনে নাচ পরিবেশন করছেন কেসলার বোন দ্বয়। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
১৯৯৭ সালে জার্মানির বার্লিনে নাচ পরিবেশন করছেন কেসলার বোন দ্বয়। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

১৯৬০-এর দশকে বিশেষ করে ইতালিতে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন ‘কেসলার টুইন্স’ হিসেবে পরিচিত ইউরোপের বিখ্যাত পপ জুটি অ্যালিস ও অ্যালেন কেসলার। অবশেষে ৮৯ বছর বয়সে তাঁরা দুজন একসঙ্গে মৃত্যুবরণ করেছেন। গত সোমবার (১৭ নভেম্বর) জার্মানির মিউনিখের কাছাকাছি গ্রুইনভাল্ডে নিজেদের বাড়িতেই তাঁরা সহায়তার মাধ্যমে স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্লিনভিত্তিক ‘মৃত্যু সহায়ক সংস্থা’ ডিজিএইচএস-এর মুখপাত্র ভেগা ভেটজেল।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, জার্মানিতে সক্রিয় ইউথেনেশিয়া নিষিদ্ধ হলেও সংবিধানে বলা আছে—প্রত্যেক মানুষের নিজের মৃত্যু সম্পর্কে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে। এই আইনি কাঠামোর মধ্যেই কেসলার বোনেরা চিকিৎসক ও আইনজীবীর উপস্থিতিতে নিজেরাই জীবনাবসানের ওষুধ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে নিয়ম অনুযায়ী পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রক্রিয়াটি যাচাই করেছে।

গত বছর ইতালির পত্রিকা ‘কোরি দেল্লা সিরা’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দুই বোন জানিয়েছিলেন, তাঁদের দীর্ঘদিনের ইচ্ছা একসঙ্গে বিদায় নেওয়ার। কারণ তাঁরা মনে করেন, দুজনের একজন আগে চলে গেলে অন্যজনের পক্ষে তা সহ্য করা কঠিন হবে। মৃত্যুর আগে তাঁরা তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করে গেছেন। তাঁদের দেহভষ্মের ছাই একই কলসে রেখে মা ও প্রিয় কুকুর ইয়েলোর পাশে সমাহিত করা হবে।

১৯৩৬ সালে পূর্ব জার্মানির নেরচাউতে জন্ম নেওয়া কেসলার যমজ বোনেরা শৈশবেই লাইপজিগ অপেরায় ব্যালে নৃত্যশিল্পী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। পরবর্তীতে পরিবারটি পূর্ব জার্মানি থেকে পালিয়ে পশ্চিম জার্মানির ডুসেলডর্ফে চলে এলে ১৬ বছর বয়সে তাঁদের গান ও নৃত্যের ক্যারিয়ার আরও এগিয়ে যায়। ১৯৫৯ সালে তাঁরা পশ্চিম জার্মানির হয়ে ইউরোভিশন সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অষ্টম স্থান অর্জন করেন।

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের লিডোতে পারফর্ম করার সময় ১৯৫৯ সালে তাঁদের সঙ্গে পরিচয় হয় এলভিস প্রিসলির। ১৯৬১ সালে কোরিওগ্রাফার ডন লুরিওর হাত ধরে তাঁরা ইতালিতে যান এবং ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন। কঠোর রক্ষণশীল মানসিকতার যুগেও তাঁরা প্রতিভা, সৌন্দর্য ও নারীর স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে ওঠেন। তবে রাই টিভির কঠোর পোশাকবিধির কারণে তাঁদের অনেক সময় কালো স্টকিং পরতে বাধ্য করা হতো।

ক্যারিয়ারের পরবর্তী সময়ে তাঁরা চলচ্চিত্র ও মঞ্চে অভিনয় করেন এবং ফ্রাঙ্ক সিনাত্রা ও ফ্রেড অ্যাস্টেয়ারের মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রেও সাফল্য পান। দীর্ঘদিন ইতালিতে একসঙ্গে বসবাসের পর ১৯৮৬ সালে তাঁরা জার্মানিতে ফিরে গ্রুইনভাল্ডে স্থায়ী হন।

দুজনই প্রেমের সম্পর্কে জড়ালেও কখনো বিয়ে করেননি। তাঁরা জানিয়েছিলেন, গৃহ-সহিংসতায় ভরা মায়ের দাম্পত্য জীবন দেখেই তাঁরা স্বাধীন থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। দুই বোনে ভাষ্য, ‘আমরা নারীবাদী ছিলাম, যদিও তা ভেবেচিন্তে নয়। ১৫ বছর বয়স থেকেই আমরা নিজের উপার্জনে স্বাধীন ছিলাম। হয়তো শেষ পর্যন্ত আমরা একে অপরের ওপরই একটু নির্ভরশীল হয়ে উঠেছিলাম।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বিএনপির প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...