Ajker Patrika

নকশিকাঁথায় জড়ানো শিশুদের লাশ, ধ্বংসস্তূপেই মৃতদের গণকবর দিচ্ছেন আফগানরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪: ১২
ভূমিকম্পকবলিত এলাকায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: সংগৃহীত
ভূমিকম্পকবলিত এলাকায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: সংগৃহীত

‘নিজ হাতে তিনটি ফুটফুটে শিশুকে একটি কবরে দাফন করেছি। অন্য আরেকটি কবরে আরও দুজন তরুণকে।’—বলতে বলতে গলা ধরে আসে আফগান নাগরিক নাসরাল্লাহ খানের। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজে সহায়তা করতে দীর্ঘ ছয় ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে কুনারের দেওয়াগুল উপত্যকায় এসেছেন নাসরাল্লাহ।

রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘এখানে আসার পর প্রথম যে মানুষটির সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে তিনি তার পরিবারের ১৮ জনকে হারিয়েছেন। কবলিত এলাকাগুলোর বেশির ভাগ বাড়িতেই কেবল দুই থেকে তিনজন বেঁচে গেছে, বাকি সবাই মারা গেছেন। এবারই প্রথম আমি এত মরদেহ একসঙ্গে দেখলাম। সবগুলো বাড়িই ধ্বংস হয়ে গেছে।’

নাসরাল্লাহ আবেগাপ্লুত হয়ে জানান, তিনি অগণিত শিশুর মরদেহ দেখেছেন, যেগুলো নকশিকাঁথা দিয়ে মোড়ানো। পাশেই পুরুষেরা কোদাল দিয়ে কবর খুঁড়ছিল। জানান, ওই মুহূর্তে তাঁর মনে হচ্ছিল এই দৃশ্যের চেয়ে নির্মম আর কিছু হতে পারে না। নাসরাল্লাহ জানান, তিনটি গ্রামে গিয়ে প্রায় ৪১টি মরদেহ দাফনে সহায়তা করেছেন তিনি। তবে, সবগুলো মরদেহকে ভালোভাবে দাফন সম্ভব হয়নি। কারণ, আফটার শকের ভয়ে তাড়াহুড়ো করতে হচ্ছিল তাদের।

গত রোববার, ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চল। লন্ডভন্ড হয়ে যায় বেশ কয়েকটি গ্রাম। সবশেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত ভূমিকম্পে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে তিন হাজারের বেশি। তালিবান সরকারের এক মুখপাত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বাড়িঘর।

এ ভূমিকম্পের দুদিনের মাথায় আরও একটি বড় ভূমিকম্প হয় দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কুনারের তিনটি গ্রাম পুরোপুরি ধসে গেছে, নিহত হয়েছে ছয় শতাধিক মানুষ।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়া হেলিকপ্টারযোগে চলছে উদ্ধারকাজ। এখন পর্যন্ত ৪০টি ফ্লাইটে প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা আরও প্রত্যন্ত এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত