Ajker Patrika

মিয়ানমারে তিন দিনে তিনটি ঘাঁটি ও এক ডজনের বেশি সৈন্য হারিয়েছে জান্তা

মিয়ানমারে তিন দিনে তিনটি ঘাঁটি ও এক ডজনের বেশি সৈন্য হারিয়েছে জান্তা

মিয়ানমারের বিদ্রোহী জাতিগত গোষ্ঠী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) এবং এথনিক আর্মড অর্গানাইজেশন্স (ইএও) দেশ জুড়ে জান্তার লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। এতে গত তিন দিনে মিয়ানমার জান্তা আরও তিনটি শক্তিশালী ঘাঁটি এবং এক ডজনেরও বেশি সৈন্য হারিয়েছে। মিয়ানমারের গণমাধ্যম দ্য ইরাবতী এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

সম্মুখ যুদ্ধে জান্তা বিরোধী কয়েকজন যোদ্ধাও প্রাণ হারিয়েছেন। কাচিন, রাখাইন রাজ্য এবং মান্দালয়, সাগাইং, ম্যাগওয়ে এবং তানিনথারি অঞ্চলে গত তিন দিনে এসব ঘটনা ঘটেছে। পিডিএফ এবং ইয়ও-এর বরাত দিয়ে এসব খবর দিয়েছে ইরাবতী। তবে তথ্যগুলোর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।

স্থানীয় কাচিন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, জাতিগত কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ) এবং কাচিন অঞ্চলের পিডিএফ গ্রুপ যৌথভাবে কাচিন রাজ্যের মানসি টাউনশিপে তিন দিনের হামলার পর মাজি গাং-এ জান্তার তিনটি সামরিক ঘাঁটি দখল করেছে।

কাছাকাছি অবস্থিত ঘাঁটিতে অবস্থান করছিল তিনটি জান্তা লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের সৈন্যরা। ঘাঁটি দখলের সময় একজন কেআইএ কর্মকর্তা নিহত এবং পাঁচজন পিডিএফ সদস্য আহত হন। গত জানুয়ারিতে কেআইএ এবং সহযোগী প্রতিরোধ গোষ্ঠী মানসীতে একটি পুলিশ স্টেশন এবং ফাঁড়িসহ জান্তার কমপক্ষে তিনটি সামরিক স্থাপনা দখল করে।

এদিকে জাতিগত আরাকান আর্মি (এএ) বলেছিল যে, তারা গত শনিবার রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তওয়ের কাছে পোন্নাগিউন শহরে জান্তার লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ৫৫০-এর ঘাঁটি দখলের লক্ষ্যে আক্রমণ জোরদার করেছে। পোন্নাগিউন শহরেই আছে জান্তার হাতে থাকা সর্বশেষ সামরিক ঘাঁটি। এএ সৈন্যরা বেশ কিছু দিন আগে সেই ঘাঁটিতে আক্রমণ শুরু করেছিল। সম্প্রতি এএ বলেছে যে, এটিও পুরোপুরি দখলের কাছাকাছি রয়েছে তারা।

এ ছাড়া, মংডু শহরের উত্তরে ইয়ান অং পাইনে জান্তার ঘাঁটিও দখল করার চেষ্টা করছিল এএ।

পিডিএফের দক্ষিণ সামরিক অঞ্চলের কমান্ড বলেছে যে, তানিনথারি পিডিএফের তিনটি গ্রুপ গত শনিবার অঞ্চলটির দাওয়েই টাউনশিপের ইয়ং মাও গ্রামের কাছে জান্তার একটি ক্যাম্পে অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানে জান্তার অন্তত এক ডজন সৈন্য নিহত হয় এবং প্রায় ১০টি অস্ত্র এবং কিছু গোলাবারুদ জব্দ করা হয়। পিডিএফ বাহিনীর ওপর বোমা ফেলতে জান্তা এমআই-২ হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছিল। এতে একজন প্রতিরোধ যোদ্ধা নিহত হন।

গত অক্টোবরের শেষ দিকে উত্তর মিয়ানমারের একটি অংশ জুড়ে আক্রমণ শুরু করে মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), আরাকান আর্মি (এএ) এবং তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) সমন্বয়ে গঠিত থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স। এরপর ধারাবাহিকভাবে চীনের সঙ্গে সীমান্তে বেশ কয়েকটি শহর এবং লাভজনক বাণিজ্য কেন্দ্র দখল করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর এই জোট।

মিয়ানমারে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে চলছে সংঘাত। গত তিন বছরে গৃহযুদ্ধ মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে দেশটির অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থায়।

এরই মধ্যে দেশের বহু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা সরকার। ক্রমেই বিদ্রোহী জোট শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ২০২৩ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য হলে যুদ্ধ গতি পায়। জান্তা বাহিনীর স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক পরাজয়ের স্বাদ পেতে থাকে। এতে জান্তা বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা ও মনোবল ভেঙে পড়েছে, অভিজাত বিভাগগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বিনষ্ট হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত