Ajker Patrika

এবার ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের জন্য রাস্তায় নামল নেপালের জেন-জি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮: ৩২
ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট
ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

নেপালে কয়েক দিনের সহিংস বিক্ষোভ ও তীব্র অস্থিরতার পর আবারও রাজধানী কাঠমান্ডুর রাস্তায় নেমেছে তরুণ প্রজন্ম। তাঁরা ঝাড়ু, ডাস্টবিন ও বস্তা হাতে নিয়ে ভাঙাচোরা ইট-পাথর সরাচ্ছে, দেয়ালে নতুন রং করছে এবং লুটপাট করা সামগ্রী ফেরত দিচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, তারা ভাঙা টাইলস মেরামত করছে এবং সরকারি ভবনের সামনে জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করছে।

এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে নেপালের জেনারেশন জেডের তরুণেরা। তাঁদের বিক্ষোভের মুখে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। গত সপ্তাহে নেপাল সরকার জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো বন্ধের চেষ্টা করলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। পরে দুর্নীতি ও বেকারত্ব ঘিরে জমে থাকা অসন্তোষও বিস্ফোরিত হয় এই ইস্যুতে।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, নেপালের সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ২১ জন বিক্ষোভকারী, ৯ জন বন্দী, ৩ জন পুলিশ এবং আরও ১৮ জন সাধারণ মানুষ।

বিক্ষোভের সময় কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও সেনারা টিয়ার গ্যাস, গুলি ও লাঠিচার্জ চালায়। তবে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আন্দোলন চালিয়ে যায়। একপর্যায়ে তাঁরা অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়, লুট করে এবং সরকারি ও ব্যক্তিগত ভবনে অগ্নিসংযোগ করে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় নেপাল সরকারের প্রধান কার্যালয় সিংহ দরবার। এ ছাড়া বিমানবন্দর ও একটি টিভি চ্যানেলের ভবনেও হামলার ঘটনা ঘটে।

এমন পরিস্থিতিতে গত ৯ সেপ্টেম্বর অলি ও তাঁর মন্ত্রিসভার চার সদস্য পদত্যাগ করেন। সেনারা রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে। পরদিন অল্প সময়ের জন্য কারফিউ শিথিল করে মানুষকে খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহের সুযোগ দেওয়া হয়।

বিক্ষোভের পর পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নেমে তরুণেরা জানায়, তাঁদের লক্ষ্য শুধু আন্দোলন নয়, বরং দেশকে নতুন করে গড়ে তোলা। আয়োজকদের ভাষ্য—এটি নাগরিক দায়িত্ববোধ প্রদর্শনের এক অংশ।

অলি পদত্যাগ করার পর নেপালে রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনে প্রেসিডেন্ট, সেনাবাহিনী ও আন্দোলনকারী নেতাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী করার বিষয়ে তরুণ আন্দোলনকারীদের মধ্যে জোর সমর্থন রয়েছে।

এদিকে নিহতদের স্বজনেরা কাঠমান্ডুর একটি হাসপাতালের সামনে মোমবাতি প্রজ্বলন করে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও বিচার দাবি করেন। কেউ কেউ এখনো প্রিয়জনের লাশ খুঁজে ফিরছেন। এক ভুক্তভোগীর স্বজন বলেন, ‘আমাদের পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে, অথচ কেউ খোঁজ নেয়নি। এখন ন্যায়ের জন্য আমাদের লড়তেই হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত