রাশেদ নিজাম, কলম্বো থেকে
বৃহস্পতিবার বিকেল। দেশের বাইরে কাজ করছি, স্বাভাবিকভাবেই পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে ক্যামেরা হাতে একটা ফুলবাবু ভাব। ওই দিন (২১ জুলাই) সকালে শপথ নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার নতুন রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে। তারপর থেকেই গণমাধ্যমকর্মীদের আগ্রহের বিষয় ছিল কী করবেন বিক্ষোভকারীরা। কলম্বোর বাইরে শহর লাগোয়া সংসদ হয়ে দ্বিতীয় দফায় গল ফেস এলাকায় পৌঁছাতে বিকেল হয়ে গেছে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেই বোঝা গেল, আন্দোলনকারীদের মধ্যে একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করছে। আগের মতো গণজমায়েত নেই। আন্দোলনকারী শীর্ষ নেতৃবৃন্দের অনেকেই স্পটে নেই। দু-তিনজন জানালেন, তাঁরা অনেক চাপে রয়েছেন, রাতে কী হয় বুঝতে পারছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে প্রচুর চাপ আসছে। কী করা যায় ভাবছেন তাঁরা।
হঠাৎ কারও ডাক শুনতে পেলাম। মনে হলো, আমাকে কেউ ডাকছেন। চেহারার কারণে শুরু থেকেই স্থানীয় মানুষ আমাকে শ্রীলঙ্কান বলেই মনে করেন। তিনিও হয়তো সেরকম ভেবেই স্থানীয় ভাষায় ডাকছেন আমাকে। তাঁর কথা বুঝতে না পারায় পাশে দাঁড়ানো এক কিশোরকে ইংরেজিতে জিজ্ঞেস করলাম, উনি কী বলছেন? কিশোরটি জানাল—আপনার ক্যামেরায় তাঁর ছবি তুলে দিতে অনুরোধ করেছেন।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের ঠিক সামনে নবজাতক শিশু, মায়ের কোলে শিশু এমন কয়েকটি পোস্টার নিয়ে বসে আছেন এক বৃদ্ধা। সেই বৃদ্ধাই আমাকে ডেকেছিলেন। বলেছিলেন তাঁর ছবি তুলে দিতে। পরে তিনি পোজ দিলেন, কয়েকটা ছবি তুললাম। তারপর বললেন ছবিগুলো তাঁর ফোনে দিতে। বলেই বের করলেন একটি বাটন ফোন। আমি সেই কিশোরের সাহায্য নিয়ে তাঁকে জানালাম, এই ফোনে তো ছবি দেওয়া যাবে না। পরে আমার ক্যামেরায় ছবিগুলো দেখে তিনি বললেন, ‘আমাকে প্রিন্ট করে দিও।’
আমিও এই সুযোগে জানতে চাইলাম, কেন এখানে এসেছেন, কী করেন, কোথায় থাকেন—এসব। তাঁর পুরো নাম পিয়াসিলি (৫৭)। বসবাস কলম্বোর নিকটবর্তী উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা কুরুনেগালার গিরুল্লা এলাকায়। গুগল জানাল, মাত্র ৫ হাজার লোকের বাস সেখানে।
পিয়ার চার ছেলেমেয়ে, স্বামী নেই। আন্দোলনে এসেছিলেন, এখানেই রাত কাটান। একজনের পরামর্শে এই পোস্টার বিক্রি শুরু। তাঁর এলাকায় খাওয়াদাওয়ার অনেক সমস্যা। তাই রাজধানীতে আসা। পরদিন তাঁকে ছবি প্রিন্ট করে দেব এই আশ্বাস দিলাম। শুনে বেশ খুশি হলেন তিনি। কিন্তু রাতেই খবর পেলাম সেখানে অভিযান চালিয়েছে শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৯ জনকে। পুরো এলাকা প্রশাসনের দখলে।
কোনোমতে রাতটা পার করেই সকালেই ছুটলাম গল ফেসে। তখন মাথায় শুধু কী একটাই ভাবনা—সেখানকার কী অবস্থা, পরিস্থিতি বোঝা। সকাল পেরিয়ে গেল ব্যস্ততায়। দুপুরের পর মনে পড়ল পিয়ার কথা। এখানে যেহেতু বিদ্যুৎ থাকে না, তাই সেদিন চেষ্টা করেও পিয়ার ছবিগুলো প্রিন্ট করা যায়নি।
কয়েকজনকে পিয়ার ছবি দেখালাম, কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারলেন না। যদিও বিক্ষোভকারী তেমন ছিলেন না ওই এলাকায়। রাতে আবারও খোঁজ নিলাম, কিন্তু ছবির আশায় থাকা সেই নারীর দেখা মেলেনি। দেওয়া হয়নি তাঁর আগ্রহের ছবিগুলো।
তাঁর মতো অপেক্ষায় আমিও। আশা করি সুস্থ আছেন তিনি। হয়তো শিগগিরই কোনো এক দারুণ সকালে সংকট কাটিয়ে ওঠা শ্রীলঙ্কার গল ফেসের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় আবারও দেখা হয়ে যাবে পিয়াসিলির সঙ্গে। তখনো কি পোস্টার বিক্রি করবেন তিনি? কিংবা আমার কাছে তখন কি থাকবে তাঁর সেই কাঙ্ক্ষিত ছবিগুলো?
বৃহস্পতিবার বিকেল। দেশের বাইরে কাজ করছি, স্বাভাবিকভাবেই পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে ক্যামেরা হাতে একটা ফুলবাবু ভাব। ওই দিন (২১ জুলাই) সকালে শপথ নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার নতুন রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে। তারপর থেকেই গণমাধ্যমকর্মীদের আগ্রহের বিষয় ছিল কী করবেন বিক্ষোভকারীরা। কলম্বোর বাইরে শহর লাগোয়া সংসদ হয়ে দ্বিতীয় দফায় গল ফেস এলাকায় পৌঁছাতে বিকেল হয়ে গেছে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেই বোঝা গেল, আন্দোলনকারীদের মধ্যে একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করছে। আগের মতো গণজমায়েত নেই। আন্দোলনকারী শীর্ষ নেতৃবৃন্দের অনেকেই স্পটে নেই। দু-তিনজন জানালেন, তাঁরা অনেক চাপে রয়েছেন, রাতে কী হয় বুঝতে পারছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে প্রচুর চাপ আসছে। কী করা যায় ভাবছেন তাঁরা।
হঠাৎ কারও ডাক শুনতে পেলাম। মনে হলো, আমাকে কেউ ডাকছেন। চেহারার কারণে শুরু থেকেই স্থানীয় মানুষ আমাকে শ্রীলঙ্কান বলেই মনে করেন। তিনিও হয়তো সেরকম ভেবেই স্থানীয় ভাষায় ডাকছেন আমাকে। তাঁর কথা বুঝতে না পারায় পাশে দাঁড়ানো এক কিশোরকে ইংরেজিতে জিজ্ঞেস করলাম, উনি কী বলছেন? কিশোরটি জানাল—আপনার ক্যামেরায় তাঁর ছবি তুলে দিতে অনুরোধ করেছেন।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের ঠিক সামনে নবজাতক শিশু, মায়ের কোলে শিশু এমন কয়েকটি পোস্টার নিয়ে বসে আছেন এক বৃদ্ধা। সেই বৃদ্ধাই আমাকে ডেকেছিলেন। বলেছিলেন তাঁর ছবি তুলে দিতে। পরে তিনি পোজ দিলেন, কয়েকটা ছবি তুললাম। তারপর বললেন ছবিগুলো তাঁর ফোনে দিতে। বলেই বের করলেন একটি বাটন ফোন। আমি সেই কিশোরের সাহায্য নিয়ে তাঁকে জানালাম, এই ফোনে তো ছবি দেওয়া যাবে না। পরে আমার ক্যামেরায় ছবিগুলো দেখে তিনি বললেন, ‘আমাকে প্রিন্ট করে দিও।’
আমিও এই সুযোগে জানতে চাইলাম, কেন এখানে এসেছেন, কী করেন, কোথায় থাকেন—এসব। তাঁর পুরো নাম পিয়াসিলি (৫৭)। বসবাস কলম্বোর নিকটবর্তী উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা কুরুনেগালার গিরুল্লা এলাকায়। গুগল জানাল, মাত্র ৫ হাজার লোকের বাস সেখানে।
পিয়ার চার ছেলেমেয়ে, স্বামী নেই। আন্দোলনে এসেছিলেন, এখানেই রাত কাটান। একজনের পরামর্শে এই পোস্টার বিক্রি শুরু। তাঁর এলাকায় খাওয়াদাওয়ার অনেক সমস্যা। তাই রাজধানীতে আসা। পরদিন তাঁকে ছবি প্রিন্ট করে দেব এই আশ্বাস দিলাম। শুনে বেশ খুশি হলেন তিনি। কিন্তু রাতেই খবর পেলাম সেখানে অভিযান চালিয়েছে শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৯ জনকে। পুরো এলাকা প্রশাসনের দখলে।
কোনোমতে রাতটা পার করেই সকালেই ছুটলাম গল ফেসে। তখন মাথায় শুধু কী একটাই ভাবনা—সেখানকার কী অবস্থা, পরিস্থিতি বোঝা। সকাল পেরিয়ে গেল ব্যস্ততায়। দুপুরের পর মনে পড়ল পিয়ার কথা। এখানে যেহেতু বিদ্যুৎ থাকে না, তাই সেদিন চেষ্টা করেও পিয়ার ছবিগুলো প্রিন্ট করা যায়নি।
কয়েকজনকে পিয়ার ছবি দেখালাম, কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারলেন না। যদিও বিক্ষোভকারী তেমন ছিলেন না ওই এলাকায়। রাতে আবারও খোঁজ নিলাম, কিন্তু ছবির আশায় থাকা সেই নারীর দেখা মেলেনি। দেওয়া হয়নি তাঁর আগ্রহের ছবিগুলো।
তাঁর মতো অপেক্ষায় আমিও। আশা করি সুস্থ আছেন তিনি। হয়তো শিগগিরই কোনো এক দারুণ সকালে সংকট কাটিয়ে ওঠা শ্রীলঙ্কার গল ফেসের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় আবারও দেখা হয়ে যাবে পিয়াসিলির সঙ্গে। তখনো কি পোস্টার বিক্রি করবেন তিনি? কিংবা আমার কাছে তখন কি থাকবে তাঁর সেই কাঙ্ক্ষিত ছবিগুলো?
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের জন্য ইসরায়েলের পশ্চিমতীর দখলের মডেল নিয়ে আলোচনা করেছে বলে জানা গেছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী—রাশিয়া ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চলগুলোর সামরিক ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নেবে, ঠিক যেভাবে ১৯৬৭ সালে জর্ডানের কাছ থেকে পশ্চিমতীর দখলের পর সেখানে শাসন কায়েম করেছে ইসরায়েল।
১ ঘণ্টা আগেট্রাম্প জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে ভালো আলোচনা করেছেন। তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি বাড়ি ফিরে দেখি, কোনো রকেট গিয়ে একটি নার্সিং হোম বা অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে আঘাত করেছে। আর রাস্তায় লাশ পড়ে আছে।’
২ ঘণ্টা আগেসৌরশক্তিচালিত বিমানে মানব অভিযাত্রীদের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন সুইজারল্যান্ডের অভিযাত্রী রাফায়েল ডমজান। দক্ষিণ-পশ্চিম সুইজারল্যান্ডের সিওন শহর থেকে উড্ডয়ন করে তিনি আল্পস পর্বতমালা অতিক্রম করেন এবং ৯ হাজার ৫২১ মিটার (৩১,২৩৪ ফুট) উচ্চতায় পৌঁছান।
৩ ঘণ্টা আগেইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টেলিফোন আলাপের পর দক্ষিণ ফ্রান্সে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ কথা বলেন মাখোঁ। এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা।
৪ ঘণ্টা আগে