মিয়ানমারে কয়েক বছর ধরে চলছে জান্তা শাসন। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে জান্তা যখন যা ইচ্ছে তাই করছে। সাধারণ নাগরিকেরা সব সময় উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে প্রায় পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধ চলছে। যাকে যখন ইচ্ছে আটক করছে, চালাচ্ছে নির্যাতন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের সৈন্যরা কো টুটের (ছদ্দ নাম) বন্ধু এবং তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছিল। কোনো কারণ ছাড়াই তখন তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন টুট। তিনি সিদ্ধান্ত নেন তাঁর আইটি দক্ষতা ব্যবহার করে সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালাবে।
কো টুট তাঁর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি অ্যাপ-ভিত্তিক মোবাইল গেম তৈরি করেন। যা দেশের ‘বাস্তব ঘটনার’ ওপর ভিত্তি করে তৈরি। এই গেম জান্তাকে চিন্তিত করেছে এবং জান্তা বিরোধী প্রতিরোধের জন্য তহবিল সংগ্রহ হচ্ছে।
গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকে সমর্থন করার জন্য আটক বন্ধু দম্পতির বিষয়ে কো টুট বলেন, ‘তাঁরা তাদের জীবনে কখনো একটি অপরাধমূলক কাজ করেনি।’
কো টুট জানতেন না তাদের কি হয়েছে। বিবিসি সম্প্রতি জানিয়েছে অন্তঃসত্ত্বা নারীটিকে একদিনের মধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, তবে পুরুষটিকে প্রায় দেড় বছর ধরে রাখা হয়েছিল।
এ ছাড়া, তাঁর বন্ধু দম্পতিকে গ্রেপ্তারের পর কো টুট জানতে পারেন সামরিক বাহিনী গণতন্ত্রপন্থী এক কর্মীর স্ত্রী এবং শিশুকন্যাকে আটক করেছে। তবে এটা শনাক্ত করা যায়নি।
কো টুট বলেন, ‘ভাবুন আপনি একটি ছোট শিশু এবং আপনি একটি নোংরা, চাপযুক্ত কারাগারের মধ্যে বেড়ে উঠছেন এবং আপনি জানেন না কী ঘটছে। এই ঘটনা আমাকে উত্তেজিত করেছিল।
এসব দেখার পর তিনি মনে করেন, একজন আইটি পেশাদার হিসাবে ‘নিষ্ঠুর এবং বিপজ্জনক’ সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনের অংশ হতে হবে। তাই তিনি গেম তৈরির কাজ শুরু করেন।
কো টুট একটি এনক্রিপ্ট করা অ্যাপে টেক্সট বার্তার মাধ্যমে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাঁর অবস্থান প্রকাশ করবেন না। তাই তাঁর নিরাপত্তার জন্য ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে।
পলিটিক্যাল প্রিজনার্স মনিটরিং অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের তথ্যানুসারে, এখন পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর হাতে ৪ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
এদিকে সৈন্যদের হতাহতের পরিমাপ করা কঠিন। সামরিক বাহিনী ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেছে কিন্তু পরিসংখ্যান দেয়নি। দেশটির নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকার বলছে, প্রতিরোধে ২০ হাজার সৈন্য নিহত হয়েছে। তবে, বিবিসি এই সংখ্যা যাচাই করেনি।
আইটি পেশাদার কো টুটের লক্ষ্য ছিল পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) নামে পরিচিত সামরিক বিরোধী বাহিনীর জন্য অস্ত্র এবং মানবিক সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহের পাশাপাশি দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
কো টুট বলেন, ‘আমি অনুভব করেছি যে আমাদের আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং সচেতনতা খুব সীমিত ছিল। মিয়ানমারের সংকটের কভারেজকে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের সঙ্গে প্রতিকূলভাবে তুলনা করে।’
‘প্রকৃত যুদ্ধে প্রকৃত মানুষ’
তাঁর গেমটি মূলত ২০২২ সালের প্রথম দিকে পিডিএফ গেম হিসাবে চালু হয়েছিল।
এটি বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যায়, কিন্তু খেলোয়াড়েরা অর্থ সংগ্রহের জন্য ইন-গেম বিজ্ঞাপন দেখে। কো টুট অনুমান করে বলেছেন, এখন পর্যন্ত মোট ৫০৪,০০০ ডলার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে।
তিনি অনুমান করেন যে, ‘এখন প্রতি মাসে ৭০ হাজার ডলার থেকে ৮০ হাজার ডলার উপার্জন করেন এবং দাবি করেন যে সংখ্যাটি প্রতি মাসে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
খেলোয়াড়েরা সামরিক সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত পিডিএফ সৈন্যদের ভূমিকা নেয় এবং মিয়ানমারে বাস্তবের মতো মিশনের মাধ্যমে কাজ করে।
কো টুট বলেছিলেন, তিনি ডাক্তার, মুসলমান এবং এলজিবিটি সম্প্রদায়ের সদস্যসহ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াইরত প্রকৃত লোকদের ওপর ভিত্তি করে চরিত্রগুলি তৈরি করেছেন।
এ বিষয়ে কো টুট বলেছিলেন যে তাদের নথিভুক্ত করার গুরুত্বপূর্ণ কারণ ‘তারা সত্যিকারের যুদ্ধে লড়াই করছে’।
কো টুট বলেছেন, গেমটি গুগল এবং অ্যাপল অ্যাপ স্টোর উভয়েই পাওয়া যায়, যদিও সংবেদনশীল ইভেন্টগুলোর আশপাশে কোম্পানিগুলোর নীতির কারণে এটি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল।
গুগল প্লেতে এর নাম পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে ‘ওয়ার অফ হিরোস-দ্য পিডিএফ গেম’। গুগল বলেছে যে এটি কোনো সংবেদনশীল অ্যাপকে অনুমতি দেয় না, তবে সেই বিষয়বস্তু সাধারণত অনুমোদিত হয় যদি এটি ইভেন্ট সম্পর্কে ‘ব্যবহারকারীদের সতর্ক বা সচেতনতা বাড়াতে’ চায়।
প্ল্যাটফর্ম থেকে সরানোর আগে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে নামটিকে ‘ওয়ার অফ হিরোস’-এ পরিবর্তন করতে হয়েছিল। এটি একটি ‘বিশাল আঘাত’ বলে জানিয়েছিলেন কো টুট।
অন্যদিকে, অ্যাপল বলেছে যে অ্যাপটি তার নির্দেশিকা লঙ্ঘন করেছে। কো টুট মূল আর্টওয়ার্কের পাশাপাশি কিছু সামরিক মিশন অপসারণসহ সংশোধন করার পরে এটি পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।
কো টুট বলেছে, ‘এটি অবশ্যই ভালো খবর এবং আমরা এখন আরও আয় করার আশা করি।’
গেমটি মিয়ানমারের জান্তার শাসককে বিচলিত করেছে। তারা গত এপ্রিল মাসে জনসাধারণের জন্য একটি নোটিশ জারি করে রাষ্ট্র-চালিত মিডিয়াতে প্রচার করে। তারা বলেছে, যারা পিডিএফ গেম খেলবে তারা আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে পারে।
এতে বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসী সংগঠন নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকার পিডিএফের জন্য তহবিল সংগ্রহের জন্য গেমটি তৈরি করেছে, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে “অবিশ্বাসের বীজ বপন করতে” এবং এইভাবে ‘তাদের সেনাবাহিনী বিরোধী বিপ্লবী বৃদ্ধি করেছে।’
কো টুট বলেছেন, ‘সেনাবাহিনীর হুমকিতে অস্বস্তি বোধ করছি। তবে তারা যাই বলুক না কেন আমার কিছু যায় আসে না।’
সামরিক বাহিনীকে পরাজিত করার অনলাইন প্রচেষ্টা সম্পর্কে কো টুট বলেছিলেন, তারা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার এটি বন্ধ করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু আমরা চালিয়ে যাব—ডিজিটাল আন্দোলন বন্ধ করার কোনো উপায় নেই।
কো টুট বলেছেন, গেমটি প্রায় এক মিলিয়ন বার ডাউনলোড করা হয়েছে। (গুগল প্লে বলে যে এটি ৫ লাখ বারের বেশি ডাউনলোড করা হয়েছে, যদিও অ্যাপল ডাউনলোডের সংখ্যা সম্পর্কে তথ্য দেয় না।) তবে তিনি মনে করেন যে এই পরিমাণ তাঁর অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে কারণ।
কো টুট জানিয়েছেন, এই তহবিলগুলো স্থানীয় পিডিএফ-এ পাঠানো হয়, এবং প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর জন্য খাদ্য ও অস্ত্রের পাশাপাশি মানবিক সহায়তার জন্য ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত শিশুদের জন্য তহবিল এবং সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধরত আহতদের জন্য।
কো টুট বলেছেন, ‘আমরা শুধু প্রতিরক্ষা গ্রুপগুলোতে তহবিল পাঠাই, কিন্তু কীভাবে সেগুলো ব্যবহার করব তা বলি না।’
২০২১ সালের অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়া হিসাবে গঠিত পিডিএফ জাতিগত লাইনে গঠিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, যেগুলি কয়েক দশক ধরে সীমান্ত এলাকায় কাজ করছে। তারা অনেকের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক শক্তিশালী শক্তি হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে এবং তাদের কাছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশের বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।
কো টুট বলেছিলেন, তিনি বেশ কয়েকবার এটা বাদ দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন, কিন্তু মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রতিদিন খারাপ হচ্ছে এবং তিনি সামরিক বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন চালিয়ে যেতে চান।
গেমটির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কো টুট। তিনি মনে করেন এই গেম থেকে মাসে ১ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা সম্ভব।
সবশেষ কো টুট বলেন, ‘আমি আশা করি এই অর্থ মিয়ানমারের জনগণকে সাহায্য করবে, যাদের এটার খুবই প্রয়োজন।’
বিবিসি থেকে অনুবাদ করেছেন গোলাম ওয়াদুদ
মিয়ানমারে কয়েক বছর ধরে চলছে জান্তা শাসন। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে জান্তা যখন যা ইচ্ছে তাই করছে। সাধারণ নাগরিকেরা সব সময় উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে প্রায় পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধ চলছে। যাকে যখন ইচ্ছে আটক করছে, চালাচ্ছে নির্যাতন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের সৈন্যরা কো টুটের (ছদ্দ নাম) বন্ধু এবং তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছিল। কোনো কারণ ছাড়াই তখন তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন টুট। তিনি সিদ্ধান্ত নেন তাঁর আইটি দক্ষতা ব্যবহার করে সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালাবে।
কো টুট তাঁর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি অ্যাপ-ভিত্তিক মোবাইল গেম তৈরি করেন। যা দেশের ‘বাস্তব ঘটনার’ ওপর ভিত্তি করে তৈরি। এই গেম জান্তাকে চিন্তিত করেছে এবং জান্তা বিরোধী প্রতিরোধের জন্য তহবিল সংগ্রহ হচ্ছে।
গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকে সমর্থন করার জন্য আটক বন্ধু দম্পতির বিষয়ে কো টুট বলেন, ‘তাঁরা তাদের জীবনে কখনো একটি অপরাধমূলক কাজ করেনি।’
কো টুট জানতেন না তাদের কি হয়েছে। বিবিসি সম্প্রতি জানিয়েছে অন্তঃসত্ত্বা নারীটিকে একদিনের মধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, তবে পুরুষটিকে প্রায় দেড় বছর ধরে রাখা হয়েছিল।
এ ছাড়া, তাঁর বন্ধু দম্পতিকে গ্রেপ্তারের পর কো টুট জানতে পারেন সামরিক বাহিনী গণতন্ত্রপন্থী এক কর্মীর স্ত্রী এবং শিশুকন্যাকে আটক করেছে। তবে এটা শনাক্ত করা যায়নি।
কো টুট বলেন, ‘ভাবুন আপনি একটি ছোট শিশু এবং আপনি একটি নোংরা, চাপযুক্ত কারাগারের মধ্যে বেড়ে উঠছেন এবং আপনি জানেন না কী ঘটছে। এই ঘটনা আমাকে উত্তেজিত করেছিল।
এসব দেখার পর তিনি মনে করেন, একজন আইটি পেশাদার হিসাবে ‘নিষ্ঠুর এবং বিপজ্জনক’ সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনের অংশ হতে হবে। তাই তিনি গেম তৈরির কাজ শুরু করেন।
কো টুট একটি এনক্রিপ্ট করা অ্যাপে টেক্সট বার্তার মাধ্যমে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাঁর অবস্থান প্রকাশ করবেন না। তাই তাঁর নিরাপত্তার জন্য ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে।
পলিটিক্যাল প্রিজনার্স মনিটরিং অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের তথ্যানুসারে, এখন পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর হাতে ৪ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
এদিকে সৈন্যদের হতাহতের পরিমাপ করা কঠিন। সামরিক বাহিনী ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেছে কিন্তু পরিসংখ্যান দেয়নি। দেশটির নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকার বলছে, প্রতিরোধে ২০ হাজার সৈন্য নিহত হয়েছে। তবে, বিবিসি এই সংখ্যা যাচাই করেনি।
আইটি পেশাদার কো টুটের লক্ষ্য ছিল পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) নামে পরিচিত সামরিক বিরোধী বাহিনীর জন্য অস্ত্র এবং মানবিক সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহের পাশাপাশি দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
কো টুট বলেন, ‘আমি অনুভব করেছি যে আমাদের আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং সচেতনতা খুব সীমিত ছিল। মিয়ানমারের সংকটের কভারেজকে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের সঙ্গে প্রতিকূলভাবে তুলনা করে।’
‘প্রকৃত যুদ্ধে প্রকৃত মানুষ’
তাঁর গেমটি মূলত ২০২২ সালের প্রথম দিকে পিডিএফ গেম হিসাবে চালু হয়েছিল।
এটি বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যায়, কিন্তু খেলোয়াড়েরা অর্থ সংগ্রহের জন্য ইন-গেম বিজ্ঞাপন দেখে। কো টুট অনুমান করে বলেছেন, এখন পর্যন্ত মোট ৫০৪,০০০ ডলার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে।
তিনি অনুমান করেন যে, ‘এখন প্রতি মাসে ৭০ হাজার ডলার থেকে ৮০ হাজার ডলার উপার্জন করেন এবং দাবি করেন যে সংখ্যাটি প্রতি মাসে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
খেলোয়াড়েরা সামরিক সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত পিডিএফ সৈন্যদের ভূমিকা নেয় এবং মিয়ানমারে বাস্তবের মতো মিশনের মাধ্যমে কাজ করে।
কো টুট বলেছিলেন, তিনি ডাক্তার, মুসলমান এবং এলজিবিটি সম্প্রদায়ের সদস্যসহ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াইরত প্রকৃত লোকদের ওপর ভিত্তি করে চরিত্রগুলি তৈরি করেছেন।
এ বিষয়ে কো টুট বলেছিলেন যে তাদের নথিভুক্ত করার গুরুত্বপূর্ণ কারণ ‘তারা সত্যিকারের যুদ্ধে লড়াই করছে’।
কো টুট বলেছেন, গেমটি গুগল এবং অ্যাপল অ্যাপ স্টোর উভয়েই পাওয়া যায়, যদিও সংবেদনশীল ইভেন্টগুলোর আশপাশে কোম্পানিগুলোর নীতির কারণে এটি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল।
গুগল প্লেতে এর নাম পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে ‘ওয়ার অফ হিরোস-দ্য পিডিএফ গেম’। গুগল বলেছে যে এটি কোনো সংবেদনশীল অ্যাপকে অনুমতি দেয় না, তবে সেই বিষয়বস্তু সাধারণত অনুমোদিত হয় যদি এটি ইভেন্ট সম্পর্কে ‘ব্যবহারকারীদের সতর্ক বা সচেতনতা বাড়াতে’ চায়।
প্ল্যাটফর্ম থেকে সরানোর আগে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে নামটিকে ‘ওয়ার অফ হিরোস’-এ পরিবর্তন করতে হয়েছিল। এটি একটি ‘বিশাল আঘাত’ বলে জানিয়েছিলেন কো টুট।
অন্যদিকে, অ্যাপল বলেছে যে অ্যাপটি তার নির্দেশিকা লঙ্ঘন করেছে। কো টুট মূল আর্টওয়ার্কের পাশাপাশি কিছু সামরিক মিশন অপসারণসহ সংশোধন করার পরে এটি পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।
কো টুট বলেছে, ‘এটি অবশ্যই ভালো খবর এবং আমরা এখন আরও আয় করার আশা করি।’
গেমটি মিয়ানমারের জান্তার শাসককে বিচলিত করেছে। তারা গত এপ্রিল মাসে জনসাধারণের জন্য একটি নোটিশ জারি করে রাষ্ট্র-চালিত মিডিয়াতে প্রচার করে। তারা বলেছে, যারা পিডিএফ গেম খেলবে তারা আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে পারে।
এতে বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসী সংগঠন নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকার পিডিএফের জন্য তহবিল সংগ্রহের জন্য গেমটি তৈরি করেছে, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে “অবিশ্বাসের বীজ বপন করতে” এবং এইভাবে ‘তাদের সেনাবাহিনী বিরোধী বিপ্লবী বৃদ্ধি করেছে।’
কো টুট বলেছেন, ‘সেনাবাহিনীর হুমকিতে অস্বস্তি বোধ করছি। তবে তারা যাই বলুক না কেন আমার কিছু যায় আসে না।’
সামরিক বাহিনীকে পরাজিত করার অনলাইন প্রচেষ্টা সম্পর্কে কো টুট বলেছিলেন, তারা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার এটি বন্ধ করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু আমরা চালিয়ে যাব—ডিজিটাল আন্দোলন বন্ধ করার কোনো উপায় নেই।
কো টুট বলেছেন, গেমটি প্রায় এক মিলিয়ন বার ডাউনলোড করা হয়েছে। (গুগল প্লে বলে যে এটি ৫ লাখ বারের বেশি ডাউনলোড করা হয়েছে, যদিও অ্যাপল ডাউনলোডের সংখ্যা সম্পর্কে তথ্য দেয় না।) তবে তিনি মনে করেন যে এই পরিমাণ তাঁর অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে কারণ।
কো টুট জানিয়েছেন, এই তহবিলগুলো স্থানীয় পিডিএফ-এ পাঠানো হয়, এবং প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর জন্য খাদ্য ও অস্ত্রের পাশাপাশি মানবিক সহায়তার জন্য ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত শিশুদের জন্য তহবিল এবং সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধরত আহতদের জন্য।
কো টুট বলেছেন, ‘আমরা শুধু প্রতিরক্ষা গ্রুপগুলোতে তহবিল পাঠাই, কিন্তু কীভাবে সেগুলো ব্যবহার করব তা বলি না।’
২০২১ সালের অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়া হিসাবে গঠিত পিডিএফ জাতিগত লাইনে গঠিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, যেগুলি কয়েক দশক ধরে সীমান্ত এলাকায় কাজ করছে। তারা অনেকের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক শক্তিশালী শক্তি হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে এবং তাদের কাছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশের বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।
কো টুট বলেছিলেন, তিনি বেশ কয়েকবার এটা বাদ দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন, কিন্তু মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রতিদিন খারাপ হচ্ছে এবং তিনি সামরিক বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন চালিয়ে যেতে চান।
গেমটির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কো টুট। তিনি মনে করেন এই গেম থেকে মাসে ১ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা সম্ভব।
সবশেষ কো টুট বলেন, ‘আমি আশা করি এই অর্থ মিয়ানমারের জনগণকে সাহায্য করবে, যাদের এটার খুবই প্রয়োজন।’
বিবিসি থেকে অনুবাদ করেছেন গোলাম ওয়াদুদ
গাজা যুদ্ধের অবসান ও ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের একটি পরিকল্পনা দিতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ মঙ্গলবার এ নিয়ে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন তিনি।
৪ ঘণ্টা আগেসারা বিশ্ব থেকে মেধাবী পেশাদারদের আকৃষ্ট করতে ভিসা ফি কমানোর প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে ব্রিটেন সরকার। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ভিসা ফি মওকুফ করার কথাও চিন্তা করা হচ্ছে। যখন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা ফি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, ঠিক সেই সময়ে যুক্তরাজ্যের এই পদক্ষেপ বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে১৭৮৯ সালের বিপ্লবের পর ফ্রান্সে সংবাদপত্র ও তথ্যপ্রবাহ রাজনৈতিক ক্ষমতার অন্যতম হাতিয়ারে পরিণত হয়। যদিও বিপ্লবীরা তখন ‘প্রেসের স্বাধীনতা’-কে অন্যতম বড় অর্জন হিসেবে প্রচার করেছিলেন, তবে বাস্তবে সাংবাদিকতার কোনো প্রকৃত স্বাধীনতা ছিল না। বরং, ক্ষমতাসীনরা সংবাদপত্রকে দমন ও নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে
৬ ঘণ্টা আগেরাতভর প্রবল বর্ষণে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে কলকাতা। টানা পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা ধরে মুষলধারে বৃষ্টির ফলে পুরো মহানগরী ডুবে গেছে। শহরের রাস্তাঘাটে কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর সমান পানি। এই জলাবদ্ধ অবস্থায় বিদ্যুতায়িত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন চারজন।
৭ ঘণ্টা আগে