Ajker Patrika

দক্ষিণ কোরিয়ায় ইংরেজি পরীক্ষা নিয়ে এত হইচই কেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কলেজে ভর্তির জন্য দীর্ঘ ৮ ঘণ্টার এই পরীক্ষাটি দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। ছবি: বিবিসি
কলেজে ভর্তির জন্য দীর্ঘ ৮ ঘণ্টার এই পরীক্ষাটি দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। ছবি: বিবিসি

দক্ষিণ কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী কলেজ ভর্তি পরীক্ষা ‘সুনুং’-এর ইংরেজি অংশ নিয়ে এবার ব্যাপক সমালোচনার জেরে পরীক্ষার প্রধান কর্মকর্তা ওহ সুং-গিওল পদত্যাগ করেছেন। প্রতিবছর কঠিন প্রশ্নের জন্য পরিচিত এই পরীক্ষার ইংরেজি অংশ এবার এমন মাত্রায় জটিল হয়ে ওঠে যে অনেক শিক্ষার্থী একে ‘প্রাচীন লিপি উদ্ধার করার মতো’ বা সরাসরি ‘পাগলাটে’ আখ্যা দিয়েছে। সমালোচনার ঝড় ওঠার পর ওহ সুং-গিওল জানান, প্রশ্ন প্রণয়নের প্রক্রিয়া বহুবার সম্পাদনার মধ্য দিয়ে গেলেও উপযুক্ত মান বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।

শুক্রবার বিবিসি জানিয়েছে, এবারের ইংরেজি অংশে দর্শন, গেমিং তত্ত্ব ও বিমূর্ত ধারণার ওপর ভিত্তি করে জটিল অনুচ্ছেদ থেকে বাক্য বসানোর মতো প্রশ্ন করা হয়। এর মধ্যে একটি প্রশ্নে ইমানুয়েল কান্টের আইনদর্শন নিয়ে দীর্ঘ পাঠ্য বিশ্লেষণ করতে হয়, আরেকটিতে ভিডিও গেমের বাস্তবতার ধারণা ব্যাখ্যা করে অনুচ্ছেদের সঠিক স্থানে বাক্যটি বসাতে বলা হয়। মাত্র তিন নম্বরের সেই প্রশ্নটি অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের কাছে অতি-দুর্বোধ্য বলে মনে হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রশ্নের ভাষা এতটাই জটিল ছিল যে একে কার্যকর শিক্ষার উপযোগী বলা কঠিন।

ইংরেজি পরীক্ষায় ৪৫টি প্রশ্ন সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীদের ৭০ মিনিট সময় দেওয়া হয়। গত বছর এই পরীক্ষায় যেখানে ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ গ্রেড পেয়েছিল, সেখানে এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩ শতাংশের কিছু বেশি। হানইয়ং হাই স্কুলের শিক্ষার্থী ইম না-হিয়ে জানান, বহু প্রশ্ন বুঝতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। এমনকি সম্ভাব্য উত্তরগুলো পরস্পরের সঙ্গে এত মিল ছিল যে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা দ্বিধায় ছিলেন।

প্রতি বছর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সুনুং দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় অনুষ্ঠান। প্রায় আট ঘণ্টার এই পরীক্ষা শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ বিশ্ববিদ্যালয়, চাকরি, এমনকি সামাজিক অবস্থান পর্যন্ত নির্ধারণ করে। পরীক্ষার দিনে দেশজুড়ে নির্মাণকাজ স্থগিত থাকে, বিমান ওঠানামা সীমিত হয় এবং সামরিক প্রশিক্ষণও বন্ধ থাকে যেন পরীক্ষার পরিবেশ নিখুঁত হয়।

১৯৯৩ সালে এই পরীক্ষা শুরুর পর থেকে ১২ জন সুনুং প্রধান কর্মকর্তার মধ্যে মাত্র চারজন পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পেরেছেন। তবে ওহ সুং-গিওলই প্রথম যিনি প্রশ্ন কঠিন করার জন্য সরে দাঁড়ালেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...