Ajker Patrika

বিশ্বজুড়ে ইউএসএআইডির ১০ হাজার কর্মীর মধ্যে ২৯৪ জনকে রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্বজুড়ে ইউএসএআইডির ১০ হাজার কর্মীর মধ্যে ২৯৪ জনকে রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্বজুড়ে মার্কিন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডির ১০ হাজারেরও বেশি কর্মী কাজ করছেন বর্তমানে। তবে এসব কর্মীর মধ্যে মাত্র ২৯৪ জনকে রাখার পরিকল্পনা করছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত চারটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে এই তথ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মানবিক সহায়তা সংস্থা দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনিক পুনর্গঠনের লক্ষ্যে নেওয়া উদ্যোগের লক্ষ্যবস্তু ছিল। ব্যবসায়ী এবং ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইলন মাস্ক এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এই কার্যক্রম শুরু হয়। পরিকল্পনার সঙ্গে পরিচিত চারটি সূত্র জানিয়েছে, সংস্থার মাত্র ২৯৪ জন কর্মী তাঁদের চাকরিতে থাকবেন। যার মধ্যে আফ্রিকা ব্যুরোতে থাকবেন মাত্র ১২ জন এবং এশিয়া ব্যুরোতে মাত্র ৮ জন।

ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউএসএআইডির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ব্রায়ান অ্যাটউড বলেন, ‘এটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। বিপুলসংখ্যক কর্মী বরখাস্ত করা হলে এটি কার্যত বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মানুষের জীবন রক্ষায় সহায়তা করা একটি সংস্থার অবসান ঘটাবে।’ বর্তমানে ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়াটসন ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো অ্যাটউড আরও বলেন, ‘এর ফলে, অনেক মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে না।’

ট্রাম্প এবং বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্ক ইউএসএআইডির কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন যে তাঁরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। এর ফলে, বহু কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, শত শত অভ্যন্তরীণ ঠিকাদার চাকরি হারিয়েছেন এবং বিশ্বজুড়ে জীবন রক্ষাকারী কার্যক্রম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

মার্কিন সরকার মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে, তারা বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত সব কর্মীকে সাময়িক ছুটিতে পাঠাবে এবং বিদেশে কর্মরত হাজার হাজার কর্মীকে ফিরিয়ে আনবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, প্রশাসন নির্ধারণ করছে কোন কোন কর্মসূচি এই আদেশের আওতার বাইরে থাকবে। তবে এই সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী রোগ নিয়ন্ত্রণ, দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ এবং দারিদ্র্য বিমোচনের প্রচেষ্টাকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।

ইউএসএআইডির সহযোগী সংস্থাগুলো এই সিদ্ধান্তের ফলে আর্থিক সংকটে পড়েছে। কারণ, তারা পররাষ্ট্র দপ্তরের স্থগিতকরণের নির্দেশনার ফলে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছে না। এই সংস্কার উদ্যোগ হাজার হাজার কর্মী ও তাদের পরিবারের জীবনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।

কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ইউএসএআইডিতে বিশ্বব্যাপী ১০ হাজারের বেশি কর্মী রয়েছে। যার দুই-তৃতীয়াংশ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কর্মরত। ২০২৩ অর্থবছরে সংস্থাটি ৪০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বাজেট বরাদ্দ করেছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, কিছু কর্মী এরই মধ্যে চাকরি ছাঁটাইয়ের নোটিশ পেতে শুরু করেছেন।

ইউএসএআইডির ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, আজ শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ‘সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত সব ইউএসএআইডি কর্মীকে বিশ্বব্যাপী প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হবে, শুধু বিশেষভাবে মনোনীত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা ব্যতীত।’ সংস্থাটি জানিয়েছে, যাঁরা এই জরুরি কার্যক্রম পরিচালনা করবেন, তাঁদের গতকাল স্থানীয় সময় বেলা ৩টার মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ইউএসএআইডি ১৩০টি দেশে সহায়তা দিয়েছে, যার বেশির ভাগই সংঘাতে বিপর্যস্ত এবং চরম দারিদ্র্যের শিকার। কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, শীর্ষ সহায়তা গ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে ছিল—ইউক্রেন, ইথিওপিয়া, জর্ডান, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, সোমালিয়া, ইয়েমেন ও আফগানিস্তান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত