Ajker Patrika

কেনিয়ায় চা-বাগান নিয়ে স্থানীয় ও বিদেশি এস্টেটগুলোর দ্বন্দ্ব, ক্ষতির মুখে শিল্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৪: ৪৯
২০২৩ সালে বাগানে ঢুকে চা পাতা তুলে নিয়ে যেতে শুরু করে স্থানীয়রা। ছবি: এনএমজি
২০২৩ সালে বাগানে ঢুকে চা পাতা তুলে নিয়ে যেতে শুরু করে স্থানীয়রা। ছবি: এনএমজি

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম চা উৎপাদক দেশ কেনিয়া। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের নান্দি কাউন্টির সিতোই এস্টেটের পাহাড়ি এলাকায় রয়েছে চা-শিল্প। ১৯৪৮ সালে এই নান্দিতে জমি অধিগ্রহণ করে চা-বাগান গড়ে তোলে ব্রিটিশ মালিকানাধীন চা উৎপাদনকারী কোম্পানি ইস্টার্ন প্রোডিউস কেনিয়া (ইপিকে)। বহু দশক ধরে নান্দিসহ কেনিয়ার অনেক অঞ্চলে চা-বাগান পরিচালনা করছে তারা।

লন্ডনের ক্যামেলিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের মালিকানাধীন এই কোম্পানির সঙ্গে সম্প্রতি জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে স্থানীয় একটি সম্প্রদায়ের। দ্বন্দ্বের কারণ উপহারের জমি।

১৯৮৬ সালে উপহার হিসেবে ইস্টার্ন প্রোডিউস কেনিয়া (ইপিকে) কিমাসাস সম্প্রদায়কে কিছু জমি উপহার দিয়েছিল। এখন ইপিকে দাবি করছে, তারা ২০২ একর জমি দিয়েছিল। এদিকে কিমাসাস কৃষক সমবায় সমিতির দাবি, তাদের ৫৫০ একর জমি উপহার দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তাদের দখলে আছে ৩৫০ একর।

চা-বাগানের মাঝে এই ৩৫০ একর জমিতে কিমাসাসের শ-খানেক স্থানীয় বাসিন্দার বাস। সেখানে কাদামাটি ও জংধরা টিনের ছাউনির কুটিরে বসবাস তাদের। চা-পাতা তুলে আর গবাদি পশু চরিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে তারা।

ইপিকে বলছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে কেনিয়ার আইন মেনে চা-বাগান পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি স্থানীয় সম্প্রদায়ের অসন্তোষ, জমি দখল ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়ছে। তারা এ পরিস্থিতিকে ‘বিপজ্জনক নজির’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে। স্থানীয়দের এ ধরনের কর্মকাণ্ড শিল্প খাতে দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি তৈরি করছে বলে অভিযোগ করে তারা।

ইপিকের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কিমাসাসের চেয়ারম্যান ড্যানিয়েল বিউয়ট বলেন, ‘১৯০৫ সালের দিকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকেরা এই জায়গা দখলে নেওয়ার আগে তাঁর দাদা এখানে বাস করতেন। বিরোধপূর্ণ ৩৫০ একর জমি ফেরত পাওয়া মানে হবে একটি ঐতিহাসিক অন্যায়কে সংশোধন করা।’

বিওট, তাঁর বাবা ও দাদা—তিন পুরুষই ইপিকের কর্মী ছিলেন। চা-বাগানে দাঁড়িয়ে বিওট বলতে থাকেন, ‘এই এত বছরে কিছুই হয়নি। এখনই সময়, এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’

এই বিরোধের পেছনে রয়েছে কেনিয়ার বিভিন্ন চা-বাগানে ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি সহিংস ঘটনা। কেনিয়ার চা উৎপাদকদের সমিতি (কেটিজিএ) এক বিবৃতিতে জানায়, গত জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার মালিকানাধীন ব্রাউন্স প্ল্যান্টেশনের একটি খামারে হামলা চালানো হয় এবং শতাধিক ইউক্যালিপটাস গাছ উপড়ে ফেলা হয়। রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা অপরাধী দলগুলো সিতোইতে এসব জমি দখল আক্রমণের পেছনে রয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এসব অস্থিরতার কারণে প্রতি মাসে ২ লাখ ডলারেরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ইপিকে। কেনিয়ার রপ্তানি আয়ের প্রায় এক-চতুর্থাংশ অংশ জুড়ে থাকা এই চা-শিল্পকে হুমকির মুখে ফেলছে। ৫ মিলিয়ন মানুষের জীবিকা নির্বাহের উৎস বিপদে পড়ছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ঔপনিবেশিক যুগের জমি দখলের সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতার প্রতি একটি বিস্তৃত হতাশার প্রতিফলন এসব হামলা।

আইনজীবী জোয়েল কিমুটাই বোসেক স্থানীয় সম্প্রদায়ের পক্ষে চা কোম্পানি এবং যুক্তরাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তবে মামলায় সফল হননি। তিনি বলেন, ‘আমি আইনি ব্যবস্থায় এগোতে অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু সফল হইনি। আমার মনে হয় নতুন বা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আরও আক্রমণাত্মক হবে।’

২০২১ সালের জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, উপনিবেশিক যুগে ১৮৯৫-১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশরা কেনিয়ায় বিশাল পরিমাণ জমি দখল করে, যার বেশির ভাগই চা-বাগানে পরিণত হয়।

এই ঔপনিবেশিক সমস্যার সমাধানে ২০১০ সালের দিকে সচেতন হয়ে ওঠে কেনিয়া। গড়ে তোলা হয় জাতীয় জমি কমিশন। কমিশনের সাবেক প্রধান স্যামুয়েল টোরোরেই বলছিলেন, “কমিশনের সীমিত ক্ষমতার কারণে এর কার্যকারিতা ব্যাহত হয়েছে। আর চা কোম্পানিগুলো এবং রাজনৈতিক অভিজাতদের মধ্যেকার ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ তো ছিলই। ”

কেনিয়ার ২০১০ সালের সংবিধান অনুযায়ী, চা কোম্পানিগুলোর পূর্বের ৯৯৯ বছরের জমির ইজারা মেয়াদ কমিয়ে ৯৯ বছরে নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু সরকার জমির মালিকানা ব্যবহার করে স্থানীয় জনগণের জন্য পর্যাপ্ত জমি বা আর্থিক সুবিধা আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অধিকারকর্মীরা অভিযোগ করেন।

২০২৩ সাল পর্যন্ত কেনিয়ায় ব্রিটেনের জেমস ফিনলে কোম্পানির চা-বাগান ছিল। এই কোম্পানিতে ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন গাই চেম্বার্স। তিনি বলেন, ‘এই উত্তেজনার মূল কারণ হলো বড় বড় চা-বাগানের মালিকানা রয়েছে বিদেশিদের হাতে—যেসব জমি একসময় স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছিল।’

এই অস্থিরতা প্রসঙ্গে কেনিয়া সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে কোম্পানিগুলো দাবি করছে, তারা কেনিয়ার আইন মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিছু রাজনীতিবিদ এই ঐতিহাসিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে তাদের জমির মালিকানা খর্ব করার চেষ্টা করছে। সেই সঙ্গে নিজেদের ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক স্বার্থও এগিয়ে নিচ্ছে।

তবে এতকিছুর পরও স্থানীয় সম্প্রদায়ের জমি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাগুলো খুব একটা সফল হয়নি। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, এসব জমির ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন, কারণ এতে সময়সীমা এবং সরকারি রক্ষা প্রথা (ইমিউনিটি) ইত্যাদি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

চেম্বার্স পরিচালিত প্রাইভেট ইক্যুইটি ফার্ম এবং কেরিচো জেলার চা-চাষি সম্প্রদায় গত বছর সিভিসি ক্যাপিটাল-মালিকানাধীন লিপটনের এস্টেটগুলোর জন্য যৌথভাবে দরপত্র দিয়েছিল এমন একটি পরিকল্পনার অধীনে যা আগামী দুই দশকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছে হস্তান্তর করত।

শেষ পর্যন্ত লিপটন কোম্পানি তাদের এস্টেট ব্রাউন্স কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়। লিপটনের একজন মুখপাত্র জানান, তারা এমন একজন ক্রেতাকে বেছে নিয়েছে, যিনি এই শিল্পের মানোন্নয়নে সহায়তা করতে পারবেন। তবে ব্রাউন্স কোম্পানি মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে কেনিয়ার জাতীয় ভূমি কমিশন ব্রিটিশ সরকারকে আহ্বান জানিয়েছিল কেরিচো অঞ্চলের সম্প্রদায়গুলোর কাছে ক্ষমা চাওয়ার এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য। তবে ব্রিটিশ সরকার এই আহ্বানের সরাসরি কোনো জবাব দেয়নি।

মন্তব্য চাওয়া হলে ব্রিটেনের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস জানায়, ‘আমরা নান্দি অঞ্চলের চা-খামারগুলোতে হামলায় উদ্বিগ্ন এবং আমরা কেনিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’

তবে ইপিকে দাবি করছে, চলমান বিরোধটি কোনো ঐতিহাসিক জমি-অবিচার নিয়ে নয়, বরং এটি ‘স্বেচ্ছায় দান ও গ্রহণের’ ভিত্তিতে দেওয়া একটি উপহার নিয়ে। কিন্তু ২০১৯ সালে কেনিয়ার জাতীয় ভূমি কমিশন জানায়, কিমাসাস সম্প্রদায় পুরো ৫৫০ একর জমির মালিক। ইপিকে এই দাবিকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করে বলে, কিমাসাস যেসব প্রমাণ দিয়েছে, সেগুলো জাল।

২০২৩ সালের ৩ আগস্ট আদালত মামলার শুনানি চলাকালে প্রায় ২০০ মানুষ ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে ঢুকে পড়ে এবং চা-পাতা তুলে নিয়ে যেতে শুরু করে, যাদের মধ্যে একজন সংসদ সদস্যও ছিলেন। পরদিন আদালত একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করে তাদের জমি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সে সময় অধিকাংশ লোক চলে গেলেও পরে আবার অনেকে ফিরে আসে। এমনকি ইপিকের গাড়ি ও কর্মীদের ওপর হামলা চালায়।

কোম্পানিটি জানায়, পুলিশ ওই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেনি। আর পাবলিক প্রসিকিউটরের অফিস জানিয়েছে, এ ঘটনায় কাউকে অভিযুক্ত করলে তা চলমান দেওয়ানি মামলায় হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

ইপিকের জেনারেল ম্যানেজার পিটার গোইন বলেন, ‘যদি আমরা এ ধরনের পরিস্থিতি মেনে নিই—যেখানে তরুণ প্রজন্ম বলতে শুরু করে যে তাদের যথেষ্ট নেই, তারা আরও চায়—তাহলে এটা একটা বিপজ্জনক নজির হয়ে দাঁড়াবে, যা যেকোনো মূল্যে ঠেকাতে হবে।’

পুলিশ বা প্রসিকিউটরের অফিস মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

অন্যদিকে কিমাসাস সম্প্রদায়ের নেতা বিউয়ট বলেন, তাদের পক্ষ থেকে জমি দখল করা যুক্তিসংগত, কারণ এ বিষয়ে এখনো আদালতের কোনো চূড়ান্ত রায় আসেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সমলিঙ্গ বিবাহ বৈধ করার রায় বাতিলের আবেদন খারিজ মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২০১৯ সালের অক্টোবরে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের সামনে এলজিবিটিকিউ সমর্থকেরা তাঁদের পতাকা উড়িয়েছিলেন। ছবি: এপির সৌজন্যে
২০১৯ সালের অক্টোবরে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের সামনে এলজিবিটিকিউ সমর্থকেরা তাঁদের পতাকা উড়িয়েছিলেন। ছবি: এপির সৌজন্যে

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট দেশজুড়ে সমলিঙ্গ বিবাহ বৈধ করার রায় বাতিলের একটি আহ্বান নাকচ করে দিয়েছেন। বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার আদালত কোনো মন্তব্য না করেই কেনটাকির সাবেক কোর্ট ক্লার্ক কিম ডেভিসের করা আবেদন খারিজ করে দেন।

‘ওবারফেল বনাম হজেস’ নামে পরিচিত ওই মামলার নথি থেকে জানা যায়, কেনটাকির সাবেক কোর্ট ক্লার্ক কিম ডেভিস ২০১৫ সালে এক সমলিঙ্গ দম্পতির বিবাহের লাইসেন্স দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে ওই দম্পতি মামলা করলে সুপ্রিম কোর্ট কিম ডেভিসকে ৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ ও আইনজীবীর ফি পরিশোধের নির্দেশ দেন। এর পাশাপাশি আদালতের আদেশ অবমাননার দায়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

হিউম্যান রাইটস ক্যাম্পেইনের সভাপতি কেলি রবিনসন আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আজ সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছেন, অন্যদের সাংবিধানিক অধিকার অস্বীকার করার পরিণতি ভোগ করতেই হবে।’

২০১৫ সালে কিম ডেভিস দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন কেনটাকির রোয়ান কাউন্টিতে সমলিঙ্গ দম্পতিদের বিবাহ লাইসেন্স দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে। তিনি দাবি করেন, তাঁর ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে তিনি আদালতের নির্দেশ মানতে পারছেন না।

ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তাঁকে আদালত অবমাননার দায়ে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তাঁর অফিসের অন্য কর্মীরা তাঁর অনুপস্থিতিতে লাইসেন্স দেওয়া শুরু করলে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।

এরপর কেনটাকি রাজ্য একটি আইন পাস করে, যাতে রাজ্যের সব কোর্ট ক্লার্কের নাম বিবাহ লাইসেন্স দেওয়ার কাজ থেকে বাদ দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লাল কেল্লায় তৃতীয়, ১৯৯৭ সালের পর দিল্লিতে সন্ত্রাসী হামলার ফিরিস্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লা। ছবি: সংগৃহীত
দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লা। ছবি: সংগৃহীত

দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লার কাছে একটি গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় ১৩ জন নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতই বেশি ছিল যে আশপাশের তিন থেকে চারটি গাড়িতেও আগুন ধরে যায়।

এটি ১৯৯৭ সালের পর থেকে লাল কেল্লা এলাকায় ঘটে যাওয়া তৃতীয় বিস্ফোরণ। ভারতের রাজধানী দিল্লি গত দুই দশকে বহুবার ভয়াবহ হামলার শিকার হয়েছে। কখনো জনাকীর্ণ বাজার, কখনো আদালত এলাকা—সব জায়গাতেই ভয় ছড়িয়েছে এসব বিস্ফোরণ।

নিচে দিল্লিতে ১৯৯৭ সালের পর থেকে ঘটে যাওয়া বড় বড় বিস্ফোরণের ঘটনার একটি সময়রেখা তুলে ধরা হলো—

৯ জানুয়ারি ১৯৯৭: দিল্লি পুলিশের সদর দপ্তরের বিপরীতে আইটিও এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে ৫০ জন আহত হয়।

১ অক্টোবর ১৯৯৭: সদর বাজার এলাকায় একটি শোভাযাত্রার কাছে দুটি বিস্ফোরণে ৩০ জন আহত হয়।

১০ অক্টোবর ১৯৯৭: শান্তিবন, কৌরিয়া পুল ও কিংসওয়ে ক্যাম্প এলাকায় তিন দফা বিস্ফোরণে ১ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়।

১৮ অক্টোবর ১৯৯৭: রানীবাগ বাজারে দুই দফা বিস্ফোরণে ১ জন নিহত এবং ২৩ জন আহত হয়।

২৬ অক্টোবর ১৯৯৭: করোলবাগ বাজারে দুই দফা বিস্ফোরণে ১ জন নিহত এবং ৩৪ জন আহত হয়।

৩০ নভেম্বর ১৯৯৭: লাল কেল্লা এলাকার দুই দফা বিস্ফোরণে ৩ জন নিহত এবং ৭০ জন আহত হয়।

৩০ ডিসেম্বর ১৯৯৭: পাঞ্জাবিবাগ এলাকায় একটি বাসে বোমা বিস্ফোরণে ৪ জন নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়।

২৬ জুলাই ১৯৯৮: কাশ্মীরি গেট আইএসবিটিতে (ইন্টার-স্টেট বাস টার্মিনাল) পার্ক করা বাসে বিস্ফোরণে ২ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়।

১৮ জুন ২০০০: লাল কেল্লার কাছে দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণে এক শিশুসহ ২ জন নিহত এবং এক ডজনের বেশি আহত হয়।

২২ মে ২০০৫: দিল্লির দুটি সিনেমা হলে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে ১ জন নিহত এবং ৬০ জন আহত হয়।

২৯ অক্টোবর ২০০৫: দিল্লির সরোজিনী নগর, পাহারগঞ্জ বাজার এবং গোবিন্দপুরীর একটি বাসে তিন দফা বিস্ফোরণে ৫৯ জন নিহত এবং ১০০ জনের বেশি আহত হয়। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন বিদেশিও ছিলেন।

১৪ এপ্রিল ২০০৬: পুরান দিল্লির জামা মসজিদ প্রাঙ্গণে দুটি বিস্ফোরণে ১৪ জন আহত হয়।

১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৮: রাজধানীর কনট প্লেস, করোলবাগের ঘাফফার মার্কেট এবং গ্রেটার কৈলাশ এলাকায় ৪৫ মিনিটের ব্যবধানে পাঁচ দফা ধারাবাহিক বিস্ফোরণে ২৫ জন নিহত এবং ১০০ জনের বেশি আহত হয়।

২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৮: মেহরাউলি ফুল মার্কেটে কম তীব্রতার বিস্ফোরণে ৩ জন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়।

২৫ মে ২০১১: দিল্লি হাইকোর্টের বাইরে গাড়ি পার্কিং এলাকায় ছোট আকারের একটি বিস্ফোরণ ঘটে, তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তুমুল হট্টগোলে পাকিস্তানের সংবিধান সংশোধন, সেনাপ্রধান আসিম মুনির আরো ক্ষমতাধর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

তুমুল হট্টগোল, স্লোগান, কাগজ ছোড়া ও ওয়াকআউটের মধ্যে পাকিস্তান সিনেটে সোমবার পাস হয়েছে বিতর্কিত ২৭তম সংবিধান সংশোধনী বিল। মোট ৯৬ সদস্যবিশিষ্ট উচ্চকক্ষে ৬৪ জন সিনেটর বিলটির পক্ষে ভোট দেন, ফলে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিলটি সহজেই গৃহীত হয়।

এই ভোটে সরকারের জোটসঙ্গীদের পাশাপাশি বিরোধী শিবিরের দুই সদস্য ভিন্নমত দিয়ে সরকারের পক্ষে ভোট দেন, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করে। ভোটাভুটির আগে বিরোধী বেঞ্চে প্রবল বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়; তারা বিলের কপি ছিঁড়ে আইনমন্ত্রীর টেবিলের দিকে ছুড়ে দেন এবং ‘গণতন্ত্র হত্যার প্রতিবাদে’ স্লোগান তুলতে থাকেন।

বিক্ষোভ শেষে বেশিরভাগ বিরোধী সদস্য সিনেট চেম্বার থেকে ওয়াকআউট করেন, ফলে বিলটি পাসে আর কোনো বাধা থাকেনি।

বিলটি সিনেটে উপস্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার, আর অধিবেশন পরিচালনা করেন সিনেট চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ রজা গিলানি। ধারা-ধারাভিত্তিক ভোটের পর প্রোটোকল অনুযায়ী সিনেটের প্রবেশদ্বার বন্ধ রেখে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়।

সংশোধনীর মূল বিষয়গুলো সংক্ষেপে—

‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্স’ নামে নতুন পদ সৃষ্টি হবে, কার্যকর ২০২৫ সালের ২৭ নভেম্বর থেকে।

সেনাপ্রধান একই সঙ্গে ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ পদে দায়িত্ব পালন করবেন।

ফিল্ড মার্শাল, মার্শাল অব দ্য এয়ারফোর্স, অ্যাডমিরাল অব দ্য ফ্লিট উপাধি আজীবন বহাল থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেসের’ সুপারিশে ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডার নিয়োগ দেবেন।

‘ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্ট’ নামে নতুন আদালত গঠন হবে।

আদালতে সব প্রদেশের সমান প্রতিনিধিত্ব থাকবে।

বিচারপতি নিয়োগে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা বাড়বে।

সুপ্রিম কোর্টের কিছু এখতিয়ার নতুন আদালতে স্থানান্তর হবে।

রাষ্ট্রপতি আজীবনের জন্য ফৌজদারি দায়মুক্তি পাবেন।

বিতর্কিত ধারাগুলো ও কমিটির প্রস্তাব

আইন ও বিচারবিষয়ক যৌথ সংসদীয় কমিটির (যা বিরোধী দল বয়কট করে) প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিলটিতে কয়েকটি ছোট সংশোধন আনা হয়। কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর ফারুক এইচ. নাইক জানান, প্রস্তাবিত বিল অনুযায়ী একটি ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত গঠনের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আদালতে সব প্রদেশের সমান প্রতিনিধিত্ব থাকবে এবং ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকেও একজন সদস্য যুক্ত হবেন।

কমিটি অন্যতম সিদ্ধান্ত ছিল, হাইকোর্টে পাঁচ বছর বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ব্যক্তিরাই এ আদালতে মনোনীত হতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্ট থেকে কেউ নিয়োগ পেলে তাঁর জ্যেষ্ঠতা অপরিবর্তিত থাকবে।

বিলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হলো— সংবিধানে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিল্ড মার্শাল পদ অন্তর্ভুক্ত করা। এর ফলে তিন বাহিনীর (সেনা, নৌ ও বিমান) জন্যই আনুষ্ঠানিকভাবে পাঁচ তারকা জেনারেলের পদ সৃষ্টির সাংবিধানিক ভিত্তি তৈরি হলে। সংশোধনীর ফলে সেনাপ্রধান আসিম মুনির সর্বেসর্বা ক্ষমতার অধিকারী হলেন।

পিটিআই থেকে সাইফুল্লাহ আবরোর নাটকীয় পদত্যাগ

বিল পাসের পরপরই পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের সিনেটর সাইফুল্লাহ আবরো নিজের আসন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। ভোট দেওয়ার পর তিনি বলেন, ‘আমি শুধু সৈয়দ জেনারেল আসিম মুনিরের জন্যই ভোট দিয়েছি। তিনি ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ জিতে জাতিকে গর্বিত করেছেন।’

তিনি দাবি করেন, ২৬তম সংশোধনের সময় তাঁর পরিবারের ১০ সদস্য অপহৃত হয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর দল কোনো সহায়তা দেয়নি। পদত্যাগের পর সিনেট চেয়ারম্যান গিলানি বলেন, ‘আমরা আপনাকে আবার সিনেটর করব।’

‘ঐতিহাসিক বিল’ বলে দাবি সরকারের

বিল পাস হওয়ার পর উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার একে ‘ঐতিহাসিক বিল’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘এটি ২০০৬ সালের চার্টার অব ডেমোক্রেসির অসমাপ্ত এজেন্ডা। বিচার বিভাগের ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে সাংবিধানিক আদালত গঠন অত্যন্ত জরুরি ছিল।’

দার আরও বলেন, ‘ফিল্ড মার্শালের পদ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সামরিক নেতৃত্বের কাঠামো এখন আরও স্পষ্ট হলো। এতে বর্তমান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সিনিয়রিটি বা প্রধান বিচারপতির অবস্থানে কোনো প্রভাব পড়বে না।’

বিরোধীদের ক্ষোভ

পিটিআই সিনেটর আলি জাফর গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা এই সংশোধনের বিরোধিতা করব, কারণ কেউই—যে-ই হোক—আইন থেকে দায়মুক্তি পেতে পারে না। যদি কেউ অপরাধ করে, সে প্রেসিডেন্ট হোক বা গভর্নর, তার বিচার হওয়া উচিত।’

তবে তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, ‘বিশ্বজুড়েই রাষ্ট্রপ্রধানরা নির্দিষ্ট পরিমাণ দায়মুক্তি ভোগ করেন। এটি কোনো ব্যতিক্রম নয়।’ তিনি আরও দাবি করেন, এই সংশোধনটি সুশাসন, প্রাদেশিক ভারসাম্য এবং প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে।

সাংবিধানিক আদালতের ক্ষমতা

বিল অনুযায়ী, নবগঠিত সাংবিধানিক আদালতও সুপ্রিম কোর্টের মতো সুয়োমোটো (নিজ উদ্যোগে মামলা নেওয়ার) ক্ষমতা রাখবে, তবে তা প্রয়োগের আগে আদালত যাচাই করবে যে আবেদনটি ন্যায্য ও প্রয়োজনীয় কিনা।

বিচারক বদলির নতুন নিয়ম

এখন থেকে একজন বিচারককে এক হাইকোর্ট থেকে অন্য হাইকোর্টে বদলি করা যাবে শুধুমাত্র জুডিশিয়াল কমিশন অব পাকিস্তানের (জেসিপে) মাধ্যমে, যেখানে নির্বাহী, বিচার বিভাগ, সংসদ ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি থাকবেন।

সাংবিধানিক সংশোধনের প্রেক্ষাপট

একটি সাংবিধানিক সংশোধন পাসের জন্য সিনেটে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন হবে। ৯৬ সদস্যের সিনেটে অন্তত ৬৪ ভোট লাগত, যা সরকার পেয়েছে। বিলটি এখন জাতীয় পরিষদে যাবে, যেখানে সরকারী জোটের মোট ২৩৩ আসন থাকায় এটি পাস হওয়া প্রায় নিশ্চিত।

বিলটি শনিবার মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর সিনেটে উত্থাপন করা হয়। এতে প্রধান দুটি লক্ষ্য ছিল — ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত গঠন এবং ফিল্ড মার্শালের পদকে সংবিধানিক মর্যাদা দেওয়া।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সিদ্ধান্ত

বিলে প্রধানমন্ত্রীকে দায়মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ নিজে তা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘একজন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে আইনের আদালত ও জনগণের আদালত উভয়ের কাছেই জবাবদিহি থাকতে হবে।’

তিনি জোটসঙ্গীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে দেশের স্বার্থে, প্রাদেশিক সম্প্রীতি ও সুশাসন নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধীরে ধীরে চলছিল গাড়িটি, ট্রাফিক সিগন্যালে থামতেই বিকট বিস্ফোরণ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: পিটিআই
ছবি: পিটিআই

দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লা ভারতের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকাগুলোর একটি। অন্যান্য দিনের মতো আজকেও অসংখ্য মানুষের ভিড় ছিল লালকেল্লার সামনে।

সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিট। লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের কাছে ট্রাফিক সিগন্যালে থেমে আছে অনেক গাড়ি। কিন্তু ছোট একটি গাড়ি ধীরে ধীরে এগোচ্ছিল। ওই গাড়িতেই ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ।

সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এই বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৩ জন নিহত ও অন্তত ২৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

দিল্লি পুলিশ কমিশনার সত্যেশ গোলচা সাংবাদিকদের জানান, বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং আশপাশের বেশ কয়েকটি গাড়ি এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ভাঙাচুড়া গাড়ি, ছিন্নভিন্ন লাশ এবং রাস্তাজুড়ে ছড়িয়ে আছে কাচের টুকরা।

গোলচা আরও জানান, ফরেনসিক দল, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি) ঘটনাস্থলে তদন্ত শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আমাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন এবং তাঁকে প্রতিনিয়ত আপডেট জানানো হচ্ছে।’

দিল্লি ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি চিফ এ কে মালিক সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, বিস্ফোরণের পর যে আগুন লেগেছিল, তা সন্ধ্যা ৭টা ২৯ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল।

ফায়ার সার্ভিসের আরও এক কর্মকর্তা পিটিআইকে জানান, আগুনে ছয়টি গাড়ি, দুটি ই-রিকশা ও একটি অটোরিকশা সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।

ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ৮০০ মিটার দূরে অবস্থিত চাঁদনি চক ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সঞ্জয় ভরগবের দোকান। তিনি বলেন, বিস্ফোরণের শব্দে পুরো ভবন কেঁপে উঠেছিল।

আরও এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘আমি গুরুদুয়ারায় ছিলাম, হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ শুনি। শব্দটা এতটাই জোরে ছিল, আমি বুঝতেই পারিনি কী ঘটেছে।’

এ ঘটনার পর দিল্লি, মহারাষ্ট্র ও উত্তর প্রদেশে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত