অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘সেলফ লাভ’ বা নিজেকে ভালোবাসা বিষয়ে বিভিন্ন অনুপ্রেরণামূলক কথা ঘুরে বেড়ায়। আমাদের ‘আমিসর্বস্ব’ জীবন হওয়ার পরেও কেন আমরা দুঃখ, ভয়, রাগ, বেদনা, নিঃসঙ্গতা, প্রত্যাখ্যান, অসহায়ত্ব এবং তিক্ততায় ভুগি? তার মানে কি আমরা নিজেকে পর্যাপ্ত মনোযোগ দিই না? আর সেটাই প্রমাণ করে যে আমরা নিজেকে পর্যাপ্ত ভালোবাসি না।
জীবনের নেতিবাচক অতৃপ্তিগুলোই অবচেতনভাবে ইঙ্গিত করে যে আমরা নিজেদের সঠিক উপায়ে ভালোবাসতে শিখি না। পক্ষান্তরে আমাদের ছোটবেলা থেকে বেড়ে ওঠায় সমাজ তথাকথিত অনেক মূল্যবোধ আরোপ করে।
এই সমাজ লালিত নৈতিকতার জ্ঞান কখনো কখনো ভ্রান্তিরও জন্ম দেয় যে নিজেকে ভালোবাসা মানে স্বার্থপরতা। কিন্তু একটু ভালো করে ভেবে দেখুন তো, যদি নিজেই শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ না থাকেন কিংবা ভালো না থাকেন, তাহলে অন্যকে ভালোবাসবেন কী করে।
নিজের জন্য যা করবেন
পর্যাপ্ত ঘুম: ভালো ঘুম আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি। বয়স, শারীরিক সক্রিয়তা এবং স্বাস্থ্যের ধরন অনুযায়ী সবারই ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। তাই পর্যাপ্ত ঘুমের সঙ্গে আপস করবেন না।
ব্যায়াম: আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে খুব কম মানুষই দৈনিক ব্যায়াম করেন। ব্যায়াম বা শরীরচর্চা ফিটনেস ধরে রাখতে তো বটেই, ভালো হরমোন নিঃসরণ করতেও সহায়তা করে। হাঁটলে শরীরে এন্ডোরফিন হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন আমাদের মন প্রফুল্ল রাখে।
খাবারে নজর দিন: আমাদের দেশে মায়েরা পরিবারের অন্যদের পাতে ভালো খাবারটি বা মাছের বড় টুকরাটি তুলে দেন। কিন্তু প্রয়োজনের সময়ও নিজে পুষ্টিকর খাবারটি খান না। খাবারে প্রোটিন ও প্রয়োজনীয় খনিজ রাখা জরুরি। প্রতিদিনের খাবারে মাছ, ফল, শাকসবজি, ডিম, দুধ, বাদাম, কিশমিশ রাখতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। অন্যদিকে লাল মাংস, চিনি, শর্করা, ক্যাফেইন গ্রহণ কমাতে হবে।
বাউন্ডারি তৈরি করুন: সম্পর্ক সুস্থ রাখার জন্য বাউন্ডারি তৈরি করা বা রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাছের বন্ধু হলেও একটা সীমারেখা টেনে দেওয়া উচিত। প্রয়োজনে না বলতে শেখাও জরুরি। সময়বিশেষে নিজের কাজ শেষ করে অন্যকে সাহায্য করুন। মনে রাখুন, বিশেষ সময়ে নিজেকে গুরুত্ব দেওয়া দোষের নয় বা স্বার্থপরতা নয়।
নিজেকে বাহবা দিন: ভালো কাজ করার পর বা সাফল্য এলে পাশের মানুষটির মুখের দিকে চেয়ে থাকি উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে। অপেক্ষায় না থেকে নিজেকে বাহবা দিন। বিশ্বাস করুন, আপনি পারবেন, আপনাকে দিয়েই সম্ভব। নিজের পাশে থাকুন আর কাজের প্রতি আস্থা রাখুন। এর পাশাপাশি শেখার মানসিকতা রাখতে পারলে জয় তো আপনারই।
নিজের জন্য সময় রাখুন: ‘মি টাইম’ বলে একটা শব্দ খুব চর্চিত হচ্ছে ইদানীং। দিনে কিছু সময় হলেও মি টাইম বা নিজের সঙ্গে নিজে সময় কাটান। সে সময়টায় যা আনন্দ পান, তা-ই করুন। প্রডাকটিভ কিছুও করতে পারেন। নিজের শরীর ও মনের যত্নে নিজের জন্য এইটুকু সময় রাখাটা দোষের কিছু নয়।
নিজেকে বুঝতে শিখুন: আমরা অন্য মানুষের কাছে চিহ্নিত হই কীভাবে?
কোনো মানুষ বা ঘটনার সঙ্গে আমি কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছি, সেটি দিয়ে। এই প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে অনুভূতি, চিন্তা এবং আচরণ ইত্যাদি বিশেষভাবে যুক্ত থাকে। যখন আমরা পছন্দ, ভালোবাসা, মর্যাদা, বিশ্বাস—এই শব্দগুলো নিজের প্রতি উপলব্ধি করতে পারি না, তখনই নিজেকে তুচ্ছ, অপাঙ্ক্তেয় এবং খুবই অপ্রয়োজনীয় হিসেবে ভাবি। হীনম্মন্যতায় ভুগি। তখন আমাদের জীবনের অবস্থা হয় ‘আমি ঠিক নই, তুমি ঠিক’। অথবা আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে ‘আমি-তুমি
কেউই ঠিক নই’।
হয় আমি নিজেকে ‘পরিশুদ্ধ’ বানিয়ে ফেলি, ‘আমি খুব ভালো’ বলে অহংকার করি। অথবা নিজেকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বলে বিবেচনা করি। ‘আমি কী’, সেই আয়না নিজের চোখে ধরি না। এর ফলে কোনো সমতা থাকে না। আর ঠিক এই জায়গাটাতেই আত্মকেন্দ্রিক বনাম আত্মসম্মানের পার্থক্যটি তৈরি হয়।
চোখে আয়না ধরলেই আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারি যে কখন আমি আত্মসম্মানের কারণে এই আচরণ করছি, আর কখন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে সেই আচরণ করছি। তাই নিজের চাওয়া-পাওয়াকে বুঝতে হবে।
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া, চিকিৎসক ও কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা
সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘সেলফ লাভ’ বা নিজেকে ভালোবাসা বিষয়ে বিভিন্ন অনুপ্রেরণামূলক কথা ঘুরে বেড়ায়। আমাদের ‘আমিসর্বস্ব’ জীবন হওয়ার পরেও কেন আমরা দুঃখ, ভয়, রাগ, বেদনা, নিঃসঙ্গতা, প্রত্যাখ্যান, অসহায়ত্ব এবং তিক্ততায় ভুগি? তার মানে কি আমরা নিজেকে পর্যাপ্ত মনোযোগ দিই না? আর সেটাই প্রমাণ করে যে আমরা নিজেকে পর্যাপ্ত ভালোবাসি না।
জীবনের নেতিবাচক অতৃপ্তিগুলোই অবচেতনভাবে ইঙ্গিত করে যে আমরা নিজেদের সঠিক উপায়ে ভালোবাসতে শিখি না। পক্ষান্তরে আমাদের ছোটবেলা থেকে বেড়ে ওঠায় সমাজ তথাকথিত অনেক মূল্যবোধ আরোপ করে।
এই সমাজ লালিত নৈতিকতার জ্ঞান কখনো কখনো ভ্রান্তিরও জন্ম দেয় যে নিজেকে ভালোবাসা মানে স্বার্থপরতা। কিন্তু একটু ভালো করে ভেবে দেখুন তো, যদি নিজেই শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ না থাকেন কিংবা ভালো না থাকেন, তাহলে অন্যকে ভালোবাসবেন কী করে।
নিজের জন্য যা করবেন
পর্যাপ্ত ঘুম: ভালো ঘুম আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি। বয়স, শারীরিক সক্রিয়তা এবং স্বাস্থ্যের ধরন অনুযায়ী সবারই ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। তাই পর্যাপ্ত ঘুমের সঙ্গে আপস করবেন না।
ব্যায়াম: আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে খুব কম মানুষই দৈনিক ব্যায়াম করেন। ব্যায়াম বা শরীরচর্চা ফিটনেস ধরে রাখতে তো বটেই, ভালো হরমোন নিঃসরণ করতেও সহায়তা করে। হাঁটলে শরীরে এন্ডোরফিন হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন আমাদের মন প্রফুল্ল রাখে।
খাবারে নজর দিন: আমাদের দেশে মায়েরা পরিবারের অন্যদের পাতে ভালো খাবারটি বা মাছের বড় টুকরাটি তুলে দেন। কিন্তু প্রয়োজনের সময়ও নিজে পুষ্টিকর খাবারটি খান না। খাবারে প্রোটিন ও প্রয়োজনীয় খনিজ রাখা জরুরি। প্রতিদিনের খাবারে মাছ, ফল, শাকসবজি, ডিম, দুধ, বাদাম, কিশমিশ রাখতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। অন্যদিকে লাল মাংস, চিনি, শর্করা, ক্যাফেইন গ্রহণ কমাতে হবে।
বাউন্ডারি তৈরি করুন: সম্পর্ক সুস্থ রাখার জন্য বাউন্ডারি তৈরি করা বা রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাছের বন্ধু হলেও একটা সীমারেখা টেনে দেওয়া উচিত। প্রয়োজনে না বলতে শেখাও জরুরি। সময়বিশেষে নিজের কাজ শেষ করে অন্যকে সাহায্য করুন। মনে রাখুন, বিশেষ সময়ে নিজেকে গুরুত্ব দেওয়া দোষের নয় বা স্বার্থপরতা নয়।
নিজেকে বাহবা দিন: ভালো কাজ করার পর বা সাফল্য এলে পাশের মানুষটির মুখের দিকে চেয়ে থাকি উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে। অপেক্ষায় না থেকে নিজেকে বাহবা দিন। বিশ্বাস করুন, আপনি পারবেন, আপনাকে দিয়েই সম্ভব। নিজের পাশে থাকুন আর কাজের প্রতি আস্থা রাখুন। এর পাশাপাশি শেখার মানসিকতা রাখতে পারলে জয় তো আপনারই।
নিজের জন্য সময় রাখুন: ‘মি টাইম’ বলে একটা শব্দ খুব চর্চিত হচ্ছে ইদানীং। দিনে কিছু সময় হলেও মি টাইম বা নিজের সঙ্গে নিজে সময় কাটান। সে সময়টায় যা আনন্দ পান, তা-ই করুন। প্রডাকটিভ কিছুও করতে পারেন। নিজের শরীর ও মনের যত্নে নিজের জন্য এইটুকু সময় রাখাটা দোষের কিছু নয়।
নিজেকে বুঝতে শিখুন: আমরা অন্য মানুষের কাছে চিহ্নিত হই কীভাবে?
কোনো মানুষ বা ঘটনার সঙ্গে আমি কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছি, সেটি দিয়ে। এই প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে অনুভূতি, চিন্তা এবং আচরণ ইত্যাদি বিশেষভাবে যুক্ত থাকে। যখন আমরা পছন্দ, ভালোবাসা, মর্যাদা, বিশ্বাস—এই শব্দগুলো নিজের প্রতি উপলব্ধি করতে পারি না, তখনই নিজেকে তুচ্ছ, অপাঙ্ক্তেয় এবং খুবই অপ্রয়োজনীয় হিসেবে ভাবি। হীনম্মন্যতায় ভুগি। তখন আমাদের জীবনের অবস্থা হয় ‘আমি ঠিক নই, তুমি ঠিক’। অথবা আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে ‘আমি-তুমি
কেউই ঠিক নই’।
হয় আমি নিজেকে ‘পরিশুদ্ধ’ বানিয়ে ফেলি, ‘আমি খুব ভালো’ বলে অহংকার করি। অথবা নিজেকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বলে বিবেচনা করি। ‘আমি কী’, সেই আয়না নিজের চোখে ধরি না। এর ফলে কোনো সমতা থাকে না। আর ঠিক এই জায়গাটাতেই আত্মকেন্দ্রিক বনাম আত্মসম্মানের পার্থক্যটি তৈরি হয়।
চোখে আয়না ধরলেই আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারি যে কখন আমি আত্মসম্মানের কারণে এই আচরণ করছি, আর কখন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে সেই আচরণ করছি। তাই নিজের চাওয়া-পাওয়াকে বুঝতে হবে।
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া, চিকিৎসক ও কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা
পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের সিটি স্ক্যান মেশিনের ফিল্মসংকট দেখা দিয়েছে। এতে সিটি স্ক্যান করার প্রয়োজন এমন রোগী ও তাঁদের স্বজনদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে যাঁদের জরুরি ভিত্তিতে সিটি স্ক্যান করা প্রয়োজন, তাঁরা পড়ছেন সবচেয়ে বেশি...
১১ ঘণ্টা আগেআশার কথা হলো, পরিবর্তন আসছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক যুগান্তকারী পরীক্ষায় দেখা গেছে, তীব্রভাবে চিনাবাদামের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত দুই-তৃতীয়াংশ প্রাপ্তবয়স্ককে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে চিনাবাদাম খাইয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আনা সম্ভব হয়েছে।
২১ ঘণ্টা আগেঅতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার বা ‘আল্ট্রা প্রসেসড ফুড’ (ইউপিএফ) বেশি খাওয়ার কারণে শুধু স্থূলতা, হতাশা, ডায়াবেটিস কিংবা হৃদরোগই নয়, বাড়ছে অকালমৃত্যুর ঝুঁকিও। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু ঘটছে।
১ দিন আগেদেশের প্রায় পাঁচ লাখ শিশু সময়মতো টিকার সব ডোজ পাচ্ছে না। তাদের মধ্যে ৭০ হাজার শিশু কোনো টিকাই পায় না। টিকা না পাওয়ার হার শহরাঞ্চলে বেশি। টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও এসব তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)...
১ দিন আগে