Ajker Patrika

শরীরে কোলাজেনের ঘাটতি পূরণে

নাহিদা আহমেদ
শরীরে কোলাজেনের ঘাটতি পূরণে

কোলাজেন হলো একটি প্রোটিন, যা শরীরের সংযোগকারী টিস্যুর স্বাস্থ্য এবং কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য।

এটি মানবশরীরের তৈরি প্রাকৃতিক প্রোটিন। আমাদের শরীরের হাড়, পেশি, অস্থিসন্ধি, চুল, নখ ও ত্বকের গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। কোলাজেন ছাড়া আপনার শরীরের গঠন-আকৃতিতে ভিন্নতা দেখা দিতে পারে।

ত্বকের জেল্লা বাড়ানো থেকে চুলের গোড়া মজবুত করা—সবকিছুতেই প্রয়োজন হয় এই প্রোটিনের।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে কোলাজেনের পরিমাণ কমতে শুরু হয়। তা ছাড়া অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, দূষণ, ধূমপানের অভ্যাস শরীরে এই প্রোটিন উৎপাদনের হার কমিয়ে দেয়। ফলে অকালেই চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ে, চামড়া ঝুলে যায়, ত্বকের জেল্লা কমে যাওয়াসহ চুলের নানা সমস্যা হয়। কোলাজেন ত্বককে অতিবেগুনি রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করে।

মানবদেহে প্রায় ৪০টি বিভিন্ন ধরনের কোলাজেন রয়েছে। আমরা যে প্রোটিন খাই, তা অ্যামিনো অ্যাসিডে ভেঙে আমাদের দেহ কোলাজেন তৈরি করে। ২০২২ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, খাদ্যে পর্যাপ্ত কোলাজেন পেলে ত্বকের বার্ধক্য দেরিতে আসে এবং এটি হাড়ের জয়েন্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। তাই স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্যের এই দিকগুলো বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রতিরোধই গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্যই নিয়মিত কোলাজেন জাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে শরীরে কোলাজেনের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। 

পুষ্টির জন্য শরীরে কোলাজেন বাড়াতে যা করতে হবে

  • নিয়মিত উচ্চ কোলাজেনযুক্ত খাবার খাওয়া।
  • কোলাজেন সংশ্লেষণ বৃদ্ধি করে এমন খাবার খাওয়া।

ত্বক ও চুলের জেল্লা ধরে রাখতে কী খাবেন
মূলত প্রাণিজ প্রোটিন কোলাজেনের ভালো উৎস। এমন কিছু শাকসবজি আছে, যেগুলো শরীরে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। যেসব খাবারে কোলাজেন থাকে:

  • নোনাজলের মাছের হাড় ও ত্বকে কোলাজেন পাওয়া যায়।
  • হাড়ের ঝোল বা নেহারি কোলাজেন-সমৃদ্ধ একটি স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে পরিচিত।
  • জেলাটিন হলো কোলাজেনের একটি রূপ, যা পশুর হাড়, তরুণাস্থি এবং ত্বককে কয়েক ঘণ্টা ধরে ফুটিয়ে তারপর তরলকে ঠান্ডা করা হয়। সংযোগকারী টিস্যুগুলোর ভাঙন জেলাটিন তৈরি করে।
  • বেশ কিছু উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মাছ, মুরগি, মাংস, ডিম, দুধ থেকে তৈরি খাবার, ডাল-বাদাম-বিচিজাতীয় খাবার, সয়া ইত্যাদি।
  • কোলাজেন উৎপাদনের জন্য জিংকের মতো পুষ্টিরও প্রয়োজন, যা শেলফিশ, ডাল, মাংস, বাদাম, বীজ এবং দানাজাতীয় শস্যে পাওয়া যায়।
  • কপার লাইসিল অক্সিডেস এনজাইমের জন্য একটি অপরিহার্য কো-ফ্যাক্টর, যা শরীরের প্রাকৃতিক স্থিতিস্থাপকতা এবং কোলাজেনের সঠিক কার্যকলাপে সহায়তা করে। গোটা শস্য, মটরশুঁটি, বাদাম, আলু, টোফু, শাক, চকোলেট এবং শুকনো ফল কপারের ভালো উৎস।

নাহিদা আহমেদ, পুষ্টিবিদ, ফরাজী হাসপাতাল, বারিধারা, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত