Ajker Patrika

ছানি হলে করণীয়

ডা. মো. আরমান হোসেন রনি
ছানি হলে করণীয়

চোখের মধ্যে কাচের মতো একটি স্বচ্ছ বস্তু আছে, যাকে লেন্স বলে। চোখের এই স্বচ্ছ লেন্স ধীরে ধীরে অস্বচ্ছ হয়ে যাওয়াকে ছানি বলে। ছানি হলে দৃষ্টিশক্তি ক্রমান্বয়ে কমে যেতে থাকে। পূর্ণবয়স্কদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ অন্ধত্বের কারণ হচ্ছে এই ছানি।

ছানির ধরন
পরিপক্বতার ওপর ভিত্তি করে ছানি তিন প্রকার

  • ইমম্যাচিউর বা হালকা ছানি—ধূসর রঙের হয়।
  • ম্যাচিউর বা পাকা ছানি—দেখতে মুক্তার মতো সাদা।
  • হাইপার ম্যাচিউর বা অতি পাকা ছানি—দুধের মতো সাদা।

কারণ
বিভিন্ন কারণে চোখে ছানি পড়তে পারে। এগুলোর মধ্যে বয়সজনিত ছানি একটি। এ ছাড়া রয়েছে আঘাতজনিত ছানি, চোখের প্রদাহ, বিভিন্ন ধরনের রেডিয়েশনের কারণে সৃষ্ট কমপ্লিকেটেড ছানি, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য মেটাবলিক ডিসঅর্ডারের কারণে ছানি এবং জন্মগত ছানি।

ছানির চিকিৎসা
যে কারণেই চোখে ছানি পড়ুক না কেন, ছানির একমাত্র চিকিৎসা অপারেশন। ওষুধ কিংবা চশমা দিয়ে ছানির চিকিৎসা সম্ভব নয়। ছানি অপারেশনে চোখের ভেতরের অস্বচ্ছ লেন্স বের করে তার জায়গায় কৃত্রিম লেন্স বসানো হয়।

অলংকরণ: মীম রহমানস্ফীতিশীল ছানির চিকিৎসা
কোনো কারণে পাকা ছানিযুক্ত লেন্সের ভেতরের চাপ বৃদ্ধি পেলে তাকে স্ফীতিশীল ছানি বলে। এই স্ফীতিশীল ছানির ঝুঁকির কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—ডায়াবেটিস, অত্যধিক অ্যালকোহল সেবন, তামাক, অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে আসা, দীর্ঘস্থায়ী স্টেরয়েডের ব্যবহার, পূর্ববর্তী বিকিরণ, কেমোথেরাপি চিকিৎসা, থ্যালাসেমিয়া ইত্যাদি।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০০ জনে ৩ জন থেকে ২৮ জন রোগীর এই জটিলতা দেখা যায়। সাধারণত চোখের লেন্স কাটার আগে লেন্সের আবরণ বা ক্যাপসুল ট্রাইপেন ব্লু নামক রঞ্জক পদার্থ দ্বারা নীল রং করা হয়। পাকা ছানি থাকলে লেন্সের ক্যাপসুল গোল করে কাটার সময় অনেক ক্ষেত্রে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ক্যাপসুলটি ছিঁড়ে যায়। তখন লেন্সটি দেখতে আর্জেন্টিনার পতাকার মতো (নীল-সাদা) মনে হয়। এ জন্য ছানি খুব বেশি পেকে যাওয়ার আগেই অভিজ্ঞ সার্জন দিয়ে অপারেশন করিয়ে নেওয়া উচিত।

ডা. মো. আরমান হোসেন রনি, চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত