আলমগীর আলম
শীত চলে গেল প্রায়। আর কদিন বাদেই আসবে বসন্তকাল। এ ঋতু নিয়ে রোমান্টিকতার শেষ নেই। বসন্তে প্রকৃতি নবজীবনে পূর্ণ থাকে। পুরোনো পাতাগুলো ফেলে দিয়ে বৃক্ষরাজি যখন নিজেকে সাজাতে থাকে, তখন আমাদের শরীরেও কিছু পরিবর্তন আসে।
এই পরিবর্তনের ফলে কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমরা শীতকালে যে ধরনের শুষ্ক মৌসুম কাটিয়েছি, বসন্তে হবে তার উল্টো। আমরা ঠান্ডা থেকে গরম আবহাওয়ার সময়ে প্রবেশ করি এ সময়। ফলে কারও কারও শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এ সময়ের সঙ্গে শুরুতে খাপ খাওয়াতে পারবে না বা দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারবে না। এর মধ্যে গাছে গাছে ফুল ফোটা শুরু হয়েছে। ফুলের রেণুর কারণে অনেকের সমস্যা তৈরি হবে।
বসন্তকালে হওয়া কিছু শারীরিক সমস্যা
অ্যালার্জি
» পুষ্পরেণু অ্যালার্জি: বসন্তকালে ফুলের পরাগায়নের ফলে বাতাসে পরাগরেণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। যাদের অ্যালার্জির প্রবণতা আছে, তাদের নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, হাঁচি, কাশি, চোখ জ্বালা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
» ধুলাবালি অ্যালার্জি: শুষ্ক আবহাওয়ায় ধুলাবালির পরিমাণ বেড়ে যায়, যা অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
শ্বাসকষ্ট
» বসন্তকালে বাতাসে ধুলাবালি, পরাগরেণু এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যায়। দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে এ সময়।
» এ সময় ভাইরাসজনিত জ্বর, সর্দি-কাশি বেশি দেখা যায়। এসব রোগের ফলেও শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
ত্বকের সমস্যা
» শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এতে ত্বকে চুলকানি হতে পারে, ত্বক ফেটে বা লালও হয়ে যেতে পারে।
» বসন্তকালে রোদের তীব্রতা বেড়ে যায়। যারা রোদে বেশিক্ষণ থাকে, তাদের ত্বকে রোদে পোড়া, লাল হয়ে যাওয়া এবং ফোসকা পড়ার সমস্যা হতে পারে।
অন্যান্য সমস্যা
» বসন্তকালে দিনের বেলায় গরম ও রাতের বেলায় ঠান্ডা থাকে। এই আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে অনেকের জ্বর, মাথাব্যথা কিংবা শরীরে ব্যথা হতে পারে।
» এ সময় পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যায়। পোকামাকড়ের কামড়ে ত্বকে ফোলা, চুলকানি ও ব্যথা হতে পারে।
রক্ষা পাবেন যেভাবে
» বসন্তে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ভালো রাখতে রোজেলা টি পান করুন। এই রোজেলার দেশীয় নাম চুকাই বা চুকুর। এ ছাড়া এর আরও আঞ্চলিক নাম রয়েছে। রোজেলা ফুল শুকিয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া বাজারে শুকনা রোজেলা পাওয়া যায়। শুকনা ৫টি ফুল এক কাপ পানিতে চায়ের মতো ফুটিয়ে নিন। এর রং হবে গোলাপি। এই গোলাপি পানি দুপুরে ও বিকেলে কোনো কিছু না মিশিয়ে পান করতে পারেন। এতে ঠান্ডাজনিত সমস্যা হবে না, জ্বর ও গলাব্যথা কমে যাবে।
» দিনভর আধা ঘণ্টা পরপর এক কাপ করে কুসুম গরম পানি পান করুন। এতে শরীরে থাকা কফের চাপ কমে যাবে, কফ থাকলে বেরিয়ে যাবে, বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে শরীরের সমঝোতা তৈরি হবে।
» হলুদ চা হতে পারে বসন্তের দুর্ভোগ কমানোর সহজ নিদান। এক কাপ গরম পানিতে আধা চামচ হলুদের গুঁড়া (প্যাকেটের হলুদ গুঁড়া নয়) ও এক চিমটি গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে চায়ের মতো হালকা জ্বাল দিয়ে দিনে দুবার পান করুন।
সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করুন। গলায় সমস্যা থাকলে দিনে দুবার গরম পানি লবণ দিয়ে গার্গল করুন। নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন এবং সুষম খাবার খান। তাতে এই বসন্তে আপনার শরীর থাকবে সুস্থ।
বসন্তে আরেকটি সমস্যা হয়, তা হলো জ্বর থেকে জলবসন্ত। এটা হলে শুধু বিশ্রাম আর কুসুমগরম পানি হচ্ছে ভালো পথ্য। সেই সঙ্গে উল্লেখ করা চাগুলো খেলে ভালো ফল পাবেন। অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না।
রোমান্টিক বসন্তে রোমান্টিক থাকতে মৌসুমি ফ্লুর ধাক্কা রুখতে নিজের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী করা ছাড়া তেমন কোনো উপায় নেই।
লেখক: আলমগীর আলম, খাদ্যপথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
শীত চলে গেল প্রায়। আর কদিন বাদেই আসবে বসন্তকাল। এ ঋতু নিয়ে রোমান্টিকতার শেষ নেই। বসন্তে প্রকৃতি নবজীবনে পূর্ণ থাকে। পুরোনো পাতাগুলো ফেলে দিয়ে বৃক্ষরাজি যখন নিজেকে সাজাতে থাকে, তখন আমাদের শরীরেও কিছু পরিবর্তন আসে।
এই পরিবর্তনের ফলে কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমরা শীতকালে যে ধরনের শুষ্ক মৌসুম কাটিয়েছি, বসন্তে হবে তার উল্টো। আমরা ঠান্ডা থেকে গরম আবহাওয়ার সময়ে প্রবেশ করি এ সময়। ফলে কারও কারও শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এ সময়ের সঙ্গে শুরুতে খাপ খাওয়াতে পারবে না বা দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারবে না। এর মধ্যে গাছে গাছে ফুল ফোটা শুরু হয়েছে। ফুলের রেণুর কারণে অনেকের সমস্যা তৈরি হবে।
বসন্তকালে হওয়া কিছু শারীরিক সমস্যা
অ্যালার্জি
» পুষ্পরেণু অ্যালার্জি: বসন্তকালে ফুলের পরাগায়নের ফলে বাতাসে পরাগরেণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। যাদের অ্যালার্জির প্রবণতা আছে, তাদের নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, হাঁচি, কাশি, চোখ জ্বালা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
» ধুলাবালি অ্যালার্জি: শুষ্ক আবহাওয়ায় ধুলাবালির পরিমাণ বেড়ে যায়, যা অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
শ্বাসকষ্ট
» বসন্তকালে বাতাসে ধুলাবালি, পরাগরেণু এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যায়। দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে এ সময়।
» এ সময় ভাইরাসজনিত জ্বর, সর্দি-কাশি বেশি দেখা যায়। এসব রোগের ফলেও শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
ত্বকের সমস্যা
» শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এতে ত্বকে চুলকানি হতে পারে, ত্বক ফেটে বা লালও হয়ে যেতে পারে।
» বসন্তকালে রোদের তীব্রতা বেড়ে যায়। যারা রোদে বেশিক্ষণ থাকে, তাদের ত্বকে রোদে পোড়া, লাল হয়ে যাওয়া এবং ফোসকা পড়ার সমস্যা হতে পারে।
অন্যান্য সমস্যা
» বসন্তকালে দিনের বেলায় গরম ও রাতের বেলায় ঠান্ডা থাকে। এই আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে অনেকের জ্বর, মাথাব্যথা কিংবা শরীরে ব্যথা হতে পারে।
» এ সময় পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যায়। পোকামাকড়ের কামড়ে ত্বকে ফোলা, চুলকানি ও ব্যথা হতে পারে।
রক্ষা পাবেন যেভাবে
» বসন্তে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ভালো রাখতে রোজেলা টি পান করুন। এই রোজেলার দেশীয় নাম চুকাই বা চুকুর। এ ছাড়া এর আরও আঞ্চলিক নাম রয়েছে। রোজেলা ফুল শুকিয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া বাজারে শুকনা রোজেলা পাওয়া যায়। শুকনা ৫টি ফুল এক কাপ পানিতে চায়ের মতো ফুটিয়ে নিন। এর রং হবে গোলাপি। এই গোলাপি পানি দুপুরে ও বিকেলে কোনো কিছু না মিশিয়ে পান করতে পারেন। এতে ঠান্ডাজনিত সমস্যা হবে না, জ্বর ও গলাব্যথা কমে যাবে।
» দিনভর আধা ঘণ্টা পরপর এক কাপ করে কুসুম গরম পানি পান করুন। এতে শরীরে থাকা কফের চাপ কমে যাবে, কফ থাকলে বেরিয়ে যাবে, বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে শরীরের সমঝোতা তৈরি হবে।
» হলুদ চা হতে পারে বসন্তের দুর্ভোগ কমানোর সহজ নিদান। এক কাপ গরম পানিতে আধা চামচ হলুদের গুঁড়া (প্যাকেটের হলুদ গুঁড়া নয়) ও এক চিমটি গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে চায়ের মতো হালকা জ্বাল দিয়ে দিনে দুবার পান করুন।
সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করুন। গলায় সমস্যা থাকলে দিনে দুবার গরম পানি লবণ দিয়ে গার্গল করুন। নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন এবং সুষম খাবার খান। তাতে এই বসন্তে আপনার শরীর থাকবে সুস্থ।
বসন্তে আরেকটি সমস্যা হয়, তা হলো জ্বর থেকে জলবসন্ত। এটা হলে শুধু বিশ্রাম আর কুসুমগরম পানি হচ্ছে ভালো পথ্য। সেই সঙ্গে উল্লেখ করা চাগুলো খেলে ভালো ফল পাবেন। অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না।
রোমান্টিক বসন্তে রোমান্টিক থাকতে মৌসুমি ফ্লুর ধাক্কা রুখতে নিজের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী করা ছাড়া তেমন কোনো উপায় নেই।
লেখক: আলমগীর আলম, খাদ্যপথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের সিটি স্ক্যান মেশিনের ফিল্মসংকট দেখা দিয়েছে। এতে সিটি স্ক্যান করার প্রয়োজন এমন রোগী ও তাঁদের স্বজনদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে যাঁদের জরুরি ভিত্তিতে সিটি স্ক্যান করা প্রয়োজন, তাঁরা পড়ছেন সবচেয়ে বেশি...
৪ ঘণ্টা আগেআশার কথা হলো, পরিবর্তন আসছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক যুগান্তকারী পরীক্ষায় দেখা গেছে, তীব্রভাবে চিনাবাদামের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত দুই-তৃতীয়াংশ প্রাপ্তবয়স্ককে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে চিনাবাদাম খাইয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আনা সম্ভব হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগেঅতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার বা ‘আল্ট্রা প্রসেসড ফুড’ (ইউপিএফ) বেশি খাওয়ার কারণে শুধু স্থূলতা, হতাশা, ডায়াবেটিস কিংবা হৃদরোগই নয়, বাড়ছে অকালমৃত্যুর ঝুঁকিও। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু ঘটছে।
১৫ ঘণ্টা আগেদেশের প্রায় পাঁচ লাখ শিশু সময়মতো টিকার সব ডোজ পাচ্ছে না। তাদের মধ্যে ৭০ হাজার শিশু কোনো টিকাই পায় না। টিকা না পাওয়ার হার শহরাঞ্চলে বেশি। টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও এসব তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)...
১ দিন আগে