Ajker Patrika

পরিবারের বড়রা কেমন আছেন

অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহ্‌রিয়া
আপডেট : ১৫ মে ২০২২, ১২: ৫৫
পরিবারের বড়রা কেমন আছেন

আজ আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘ফ্যামিলিজ অ্যান্ড আরবানাইজেশন’, অর্থাৎ পরিবার ও নগরায়ণ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে নগরায়ণের ফলে যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে একক পরিবার গড়ে উঠতে শুরু করে পৃথিবীব্যাপী। তার অভিঘাত লাগে আমাদের শহরগুলোতেও। আর শহুরে জীবনে বর্তমানে অনেক পরিবারেই স্বামী-স্ত্রী দুজনই কর্মজীবী। ফলে পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠরা সেই পরিবারে থাকলেও দিনের বেশির ভাগ সময়ই তাঁরা একাকিত্বে ভোগেন। কারণ রাতের খাবারের টেবিল ছাড়া পারিবারিক জমায়েত তেমন একটা হয়ই না। নগরায়ণ আমাদের কি পরিবারের আন্তসম্পর্কে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে? বিশেষ করে বয়োজ্যেষ্ঠ মা-বাবার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে? আমাদের পরিবারের বয়স্কদের সঙ্গে সম্পর্কটি নিয়ে কখনো ভেবেছি কি? তাঁদের মনস্তত্ত্ব, বিনোদন—সবটা নিয়েই ভাবার সময় এসেছে এখন।

যেভাবে সময় দেবেন

  • বয়স্করা প্রথম যে জিনিসটা দাবি করেন, সেটা সম্মান। বয়স্কদের বর্তমান শারীরিক অক্ষমতাকে করুণা নয়, সম্মান দিতে হবে। সেটা খুব আড়ম্বরের সঙ্গে করতে গিয়ে একগাদা উপহার দেওয়ার প্রয়োজন নেই। উপহারের থেকে তাঁদের আসলে আরও বেশি দরকার স্বীকৃতি।
  • এটা ঠিক করেছেন, সেটা ভুল করেছেন—এ ধরনের জাজমেন্টাল মন্তব্য একদম করবেন না।
  • পরিবারে যদি এমন অসুস্থ বয়স্ক মানুষ থাকেন, তাহলে তাঁর যত্ন করতে হবে বিশেষভাবে। নিরাময়-অযোগ্য মানুষের সেবার ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক স্বাস্থ্য এবং আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যসেবাকে গুরুত্ব দিতে হবে।

বয়স্কদের সঙ্গে পরিবারের শিশুদের সম্পর্ক

  • প্যারেন্টিংয়ের ধারণা যুগের সঙ্গে পাল্টায়। বয়স্কদের প্যারেন্টিং আর আধুনিক প্যারেন্টিং আলাদা। কিন্তু ভালোবাসাটি তো মিথ্যা নয়? তাঁরা ভালোবাসা দিতে চাইলে শিশুদের সেই ভালোবাসাটা নিতে শেখান।
  • শিশুদের সামনে বয়স্কদের সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু বলবেন না। শিশুরা দেখে শেখে। সেই সুযোগ তাদের দেবেন না।

বয়স্কদের যেভাবে বোঝাবেন

  • একটা নির্দিষ্ট বয়সের পরে মানুষের ধৈর্য কমে যায়। বয়স্করা মাঝে মাঝে জেদ করবেন, অবুঝ আচরণ করবেন, এটাই স্বাভাবিক। এর কারণ ভয়। শারীরিক শক্তি, রোজগার ইত্যাদি কমে গেলে মানুষ স্বাভাবিকভাবে ভয় পায়। কাজেই তাঁর চাহিদাগুলো আপনার বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে কতটুকু মেটানো সম্ভব, সেটা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করুন।
  • কোনোভাবে কথা বলা বন্ধ করবেন না। সেটা হবে খুবই অস্বাস্থ্যকর। বয়স্করা প্রধানত জানতে চান, তাঁর কথাগুলো শোনা হচ্ছে কি না। তিনি গুরুত্ব পাচ্ছেন কি না। তিনি উপযুক্ত মর্যাদা পাচ্ছেন কি না। এই জায়গাগুলো যদি সতর্কভাবে খেয়াল রাখা যায়, সম্পর্কের ভিত মজবুত থাকে। বয়স্ক হলেও তাঁরা অবুঝ নন।

অবসরের ব্যবস্থা

অবসর যে নেওয়া প্রয়োজন, আমাদের দেশে এ ধারণাটি নেই। অবসর মানে হাত-পা গুটিয়ে বসা নয়। মানে নিজেকে সমাজে অপ্রয়োজনীয় বা অপাঙ্‌ক্তেয় 
ঘোষণা করা নয়। 

  • ইদানীং বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ছোট ছোট করে বিচ্ছিন্নভাবে চমৎকার কাজ করছে। সেগুলোর সঙ্গে তাঁদের যুক্ত করে দিন।
  • লেখালেখির কাজে পরিবারের বয়স্কদের উৎসাহিত করুন। 

লেখক: চিকিৎসক ও সাইকোথেরাপি প্র‍্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

অপারেশন সিঁদুরে নিহত প্রায় দেড় শ সেনার তালিকা প্রকাশ করে মুছে ফেলল পাকিস্তানি টিভি

মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত