
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত সময়ে তৈরি হয়েছে করোনাভাইরাসের টিকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত টিকা হলো ফাইজার–বায়োএনটেক ও মডার্নার টিকা। দুটোতেই ব্যবহার করা হয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিকতম প্রযুক্তি ‘এমআরএনএ ভ্যাকসিন’।
‘এমআরএনএ’ বা মেসেঞ্জার আরএনএ–কে এককথায় বলা যায় বার্তাবাহী রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড। কোষে প্রোটিন তৈরির বার্তা বহন করে বলেই এ নাম দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী নেচার বলছে, মানবদেহে কোষের কার্যকারিতা বাড়াতে এই এমআরএনএ একজন বার্তাবাহকের মতোই কাজ করে।
মানুষের প্রতিটি কোষের নিউক্লিয়াসে জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া ট্রান্সক্রিপশনের মাধ্যমে ডিএনএ অনুসরণ করে তৈরি হয় আরএনএ বা রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড। সেখান থেকে ট্রান্সলেশন নামক প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় প্রোটিন। মূলত এসব প্রোটিনই জীবাণু বা ভাইরাসের কার্যক্রম রুখে দেয়। আর এসব প্রোটিনকে কার্যকর হিসেবে গড়ে তোলে মেসেঞ্জার রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড বা এমআরএনএ। এটি নিউক্লিয়াসে থাকা ডিএনএর কোডগুলো বহন করে প্রথমে সাইটোপ্লাজমে নিয়ে যায়। এরপর কোড অনুযায়ী একের পর এক অ্যামাইনো অ্যাসিড বসিয়ে তৈরি করে প্রোটিন। অনেকটা পুঁতির মালা, তসবি কিংবা লোহার শিকলের মতো। তাই একে চেইন বলা হয়। কোড বসানোর বার্তাটা এমআরএনএ–ই দেয়।
প্রচলিত ভ্যাকসিন কীভাবে কাজ করে
সব ধরনের ভাইরাসে প্রোটিনের আবরণে মোড়া ডিএনএ বা আরএনএ দিয়ে তৈরি জিনের একটি কোর থাকে। একটি নির্দিষ্ট সংক্রামক এজেন্টের জন্য ডিজাইন করা একটি ভ্যাকসিনের মূল লক্ষ্য, সেই ভাইরাসটি কেমন তা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে (রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা) শেখানো। কিছু সাধারণ টিকায় সংশ্লিষ্ট রোগের দুর্বল ভাইরাস ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য টিকায় সংশ্লিষ্ট ভাইরাসের প্রোটিন আবরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ব্যবহার করা হয়। কোভিড–১৯–এর ক্ষেত্রে, স্পাইক প্রোটিন নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে। মানুষের ইমিউন সিস্টেম একবার এই স্পাইক প্রোটিন সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেলে পরবর্তীতে প্রকৃত ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশ করলে সেটির বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে।
পোলিও এবং হামের মতো রোগের টিকা সারা বিশ্বে কোটি কোটি মানুষকে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে। সম্মিলিতভাবে টিকাগুলো সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় অগ্রগতির চেয়েও মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অভাবনীয় অবদান রেখেছে। কিন্তু ল্যাবরেটরিতে বিপুল পরিমাণে ভাইরাস উৎপাদন এবং পরে সেগুলোকে আবার দুর্বল করতে পারার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করতে অনেক সময় লাগে। ফলে প্রথাগত পদ্ধতিতে টিকা তৈরি কোভিডের মতো মহামারী মোকাবিলার জন্য উপযুক্ত নয়। এ কারণেই নতুন প্রযুক্তির খোঁজে নেমেছেন বিজ্ঞানীরা।
এমআরএনও ভ্যাকসিনের প্রাথমিক পদক্ষেপ
প্রায় ৩০ বছর আগে, হাতেগোনা কয়েকজন বিজ্ঞানী ভ্যাকসিন তৈরি আরও সহজ করার বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। দুর্বল ভাইরাস বা ভাইরাসের প্রোটিন আবরণের একটি অংশ শরীরে প্রবেশ করানোর পরিবর্তে, তাঁরা একটি বিকল্প পদ্ধতি বের করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁরা ভেবেছিলেন, শরীরে ভাইরাসের একটি অংশ সরাসরি প্রবেশ করানোর পরিবর্তে, যদি শরীরের কোষগুলোকেই ভাইরাসের সেই প্রোটিন অংশ তৈরি দেওয়া হয় তাহলে কেমন হয়! এই পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট ভাইরাসকে চিনতে ইমিউন সিস্টেমকে প্রশিক্ষিত করা যায়। ফলে প্রকৃত ভাইরাস শরীরের প্রবেশ করানো ছাড়াই সেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে আগাম প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব হবে।
এই পদ্ধতির কয়েকটি ধাপ রয়েছে—প্রথমত, এমআরএনও তৈরি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, শরীরে এমআরএনএ প্রবেশ করাতে হবে। এরপর সেটি শরীরের কোষে প্রবেশ করতে পারতে হবে।
একটি ভাইরাসের জিন মেসেঞ্জার আরএনএ (এমআরএনও) তৈরি করে। সেটি একাধিক প্রোটিন তৈরি করে যা এই আরএনএর আবরণ তৈরি করে। প্রতিটি এমআরএনএ প্রোটিন আবরণের একটি আলাদা অংশ তৈরি করে। একটি নির্দিষ্ট কাঠামোসহ একটি জিন নির্দিষ্ট কাঠামোর এমআরএনএ তৈরি করে। এই এমআরএনএ আবার নির্দিষ্ট কাঠামোর প্রোটিন তৈরি করে। এর মধ্যে একটি হলো—স্পাইক প্রোটিন।
নতুন প্রযুক্তিতে টিকা তৈরির প্রথম অংশ—এমআরএনএ তৈরি—অপেক্ষাকৃত সহজই ছিল। দ্বিতীয় অংশটি—নিরাপদে শরীরের কোষে সেই এমআরএনএ প্রবেশ করানো—এই পদ্ধতি বের করতে ৩০ বছর লেগে গেছে। শরীরে প্রবেশ করানো এমআরএনএকে রক্তে ইমিউন সিস্টেমের কোষগুলোতে প্রবেশ করতে হবে যা কাঙ্ক্ষিত প্রোটিনের অংশ তৈরি করতে শুরু করবে। এই প্রোটিনই ইমিউন সিস্টেমকে সেই ভাইরাস সম্পর্কে ধারণা দেবে, ফলে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে।
এমআরএনও ভ্যাকসিন তৈরিতে বাধা অতিক্রম
কোভিড কালে অবিশ্বাস্য গতিতে টিকা তৈরি হলেও এর আগে বিজ্ঞানীদের বেশ কয়েকটি বাধা অতিক্রম করতে হয়েছিল। প্রথমত, এমআরএনএকে মাইক্রোস্কোপিক (অতিক্ষুদ্র) ক্যাপসুলের ভেতর ঢুকানো যাতে এটি রক্তে রাসায়নিকের সংস্পর্শে গিয়ে ধ্বংস হয়ে না যায়। দ্বিতীয়ত, এমআরএনএকে পরিবর্তন করার কৌশল বের করতে হয়েছে যাতে, এটি ইমিউন সিস্টেম আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া তৈরি না করে। তৃতীয়ত, রক্তের মধ্যে প্রবাহিত এমআরএনএকে গ্রহণ করার জন্য ইমিউন সিস্টেমের কোষগুলোকে উৎসাহিত করা। অবশেষে, কোষগুলোকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন তৈরির জন্য উৎসাহিত করা, যাতে এটি ইমিউন সিস্টেমকে সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করে।
কোভিড–১৯
৩০ বছরের শ্রমসাধ্য গবেষণা ফাইজার–বায়োএনটেক এবং মডার্নার মতো কোম্পানিকে এমআরএনএ ভ্যাকসিন প্রযুক্তি বাস্তবে কাজে লাগানোর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। কোম্পানিগুলো তাত্ত্বিকভাবে এমন কৌশল উদ্ভাবন করেছে, যা যে কোনো সংক্রামক রোগের জন্য ভ্যাকসিন তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে।
এরপর আসে কোভিড–১৯। এই রোগের জন্য দায়ী ভাইরাস সনাক্ত করার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চীনের বিজ্ঞানীরা স্পাইক প্রোটিন তৈরিকারী জিনসহ এর সমস্ত জিনের গঠন শনাক্ত করেছিলেন এবং এই তথ্য তাঁরা ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছিলেন।
এর কয়েক মিনিটের মধ্যে ১০ হাজার মাইল দূরের বিজ্ঞানীরা একটি এমআরএনও ভ্যাকসিনের নকশা নিয়ে কাজ শুরু করেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাঁরা পশু এবং পরে মানুষের শরীরে এটি পরীক্ষা করার জন্য যথেষ্ট ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলেন।
সার্স–কোভ–২ ভাইরাস আবিষ্কারের মাত্র ১১ মাস পর যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো নিশ্চিত করে, কোভিড–১৯–এর জন্য একটি কার্যকর এবং নিরাপদ এমআরএনএ ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে। এর আগে, চার বছরের কম সময়ে কোনও নতুন ভ্যাকসিন তৈরি সম্ভব হয়নি।
এমআরএনএ ভ্যাকসিন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে অবদানের জন্য হাঙ্গেরি ও যুক্তরাষ্ট্রের দুই বিজ্ঞানী যৌথভাবে এবারের চিকিৎসাবিজ্ঞানের নোবেল জিতে নিয়েছেন। বিজয়ী হিসেবে কাতালিন ক্যারিকো ও ড্রিউ ওয়েইসম্যানের নাম আজ সোমবার বিকেলে ঘোষণা করে নোবেল কমিটি।
১৯৯০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটিতে একসঙ্গে কাজ করতেন কাতালিন ক্যারিকো ও ড্রিউ ওয়েইসম্যান। ১৯৫৫ সালে হাঙ্গেরিতে জন্মগ্রহণ করেন কাতালিন। ২০২১ সাল থেকে তিনি সিজড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। পেনসিলভানিয়ার সঙ্গেও যুক্ত আছেন। আর ওয়েইসম্যান ১৯৫৯ সালে আমেরিকার ম্যাসচুয়েটসে জন্ম নেন। তিনি আমেরিকার পেন ইনস্টিটিউট ফর আরএনএ ইনোভেশন কাজ করেন।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত সময়ে তৈরি হয়েছে করোনাভাইরাসের টিকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত টিকা হলো ফাইজার–বায়োএনটেক ও মডার্নার টিকা। দুটোতেই ব্যবহার করা হয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিকতম প্রযুক্তি ‘এমআরএনএ ভ্যাকসিন’।
‘এমআরএনএ’ বা মেসেঞ্জার আরএনএ–কে এককথায় বলা যায় বার্তাবাহী রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড। কোষে প্রোটিন তৈরির বার্তা বহন করে বলেই এ নাম দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী নেচার বলছে, মানবদেহে কোষের কার্যকারিতা বাড়াতে এই এমআরএনএ একজন বার্তাবাহকের মতোই কাজ করে।
মানুষের প্রতিটি কোষের নিউক্লিয়াসে জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া ট্রান্সক্রিপশনের মাধ্যমে ডিএনএ অনুসরণ করে তৈরি হয় আরএনএ বা রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড। সেখান থেকে ট্রান্সলেশন নামক প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় প্রোটিন। মূলত এসব প্রোটিনই জীবাণু বা ভাইরাসের কার্যক্রম রুখে দেয়। আর এসব প্রোটিনকে কার্যকর হিসেবে গড়ে তোলে মেসেঞ্জার রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড বা এমআরএনএ। এটি নিউক্লিয়াসে থাকা ডিএনএর কোডগুলো বহন করে প্রথমে সাইটোপ্লাজমে নিয়ে যায়। এরপর কোড অনুযায়ী একের পর এক অ্যামাইনো অ্যাসিড বসিয়ে তৈরি করে প্রোটিন। অনেকটা পুঁতির মালা, তসবি কিংবা লোহার শিকলের মতো। তাই একে চেইন বলা হয়। কোড বসানোর বার্তাটা এমআরএনএ–ই দেয়।
প্রচলিত ভ্যাকসিন কীভাবে কাজ করে
সব ধরনের ভাইরাসে প্রোটিনের আবরণে মোড়া ডিএনএ বা আরএনএ দিয়ে তৈরি জিনের একটি কোর থাকে। একটি নির্দিষ্ট সংক্রামক এজেন্টের জন্য ডিজাইন করা একটি ভ্যাকসিনের মূল লক্ষ্য, সেই ভাইরাসটি কেমন তা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে (রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা) শেখানো। কিছু সাধারণ টিকায় সংশ্লিষ্ট রোগের দুর্বল ভাইরাস ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য টিকায় সংশ্লিষ্ট ভাইরাসের প্রোটিন আবরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ব্যবহার করা হয়। কোভিড–১৯–এর ক্ষেত্রে, স্পাইক প্রোটিন নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে। মানুষের ইমিউন সিস্টেম একবার এই স্পাইক প্রোটিন সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেলে পরবর্তীতে প্রকৃত ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশ করলে সেটির বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে।
পোলিও এবং হামের মতো রোগের টিকা সারা বিশ্বে কোটি কোটি মানুষকে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে। সম্মিলিতভাবে টিকাগুলো সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় অগ্রগতির চেয়েও মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অভাবনীয় অবদান রেখেছে। কিন্তু ল্যাবরেটরিতে বিপুল পরিমাণে ভাইরাস উৎপাদন এবং পরে সেগুলোকে আবার দুর্বল করতে পারার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করতে অনেক সময় লাগে। ফলে প্রথাগত পদ্ধতিতে টিকা তৈরি কোভিডের মতো মহামারী মোকাবিলার জন্য উপযুক্ত নয়। এ কারণেই নতুন প্রযুক্তির খোঁজে নেমেছেন বিজ্ঞানীরা।
এমআরএনও ভ্যাকসিনের প্রাথমিক পদক্ষেপ
প্রায় ৩০ বছর আগে, হাতেগোনা কয়েকজন বিজ্ঞানী ভ্যাকসিন তৈরি আরও সহজ করার বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। দুর্বল ভাইরাস বা ভাইরাসের প্রোটিন আবরণের একটি অংশ শরীরে প্রবেশ করানোর পরিবর্তে, তাঁরা একটি বিকল্প পদ্ধতি বের করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁরা ভেবেছিলেন, শরীরে ভাইরাসের একটি অংশ সরাসরি প্রবেশ করানোর পরিবর্তে, যদি শরীরের কোষগুলোকেই ভাইরাসের সেই প্রোটিন অংশ তৈরি দেওয়া হয় তাহলে কেমন হয়! এই পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট ভাইরাসকে চিনতে ইমিউন সিস্টেমকে প্রশিক্ষিত করা যায়। ফলে প্রকৃত ভাইরাস শরীরের প্রবেশ করানো ছাড়াই সেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে আগাম প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব হবে।
এই পদ্ধতির কয়েকটি ধাপ রয়েছে—প্রথমত, এমআরএনও তৈরি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, শরীরে এমআরএনএ প্রবেশ করাতে হবে। এরপর সেটি শরীরের কোষে প্রবেশ করতে পারতে হবে।
একটি ভাইরাসের জিন মেসেঞ্জার আরএনএ (এমআরএনও) তৈরি করে। সেটি একাধিক প্রোটিন তৈরি করে যা এই আরএনএর আবরণ তৈরি করে। প্রতিটি এমআরএনএ প্রোটিন আবরণের একটি আলাদা অংশ তৈরি করে। একটি নির্দিষ্ট কাঠামোসহ একটি জিন নির্দিষ্ট কাঠামোর এমআরএনএ তৈরি করে। এই এমআরএনএ আবার নির্দিষ্ট কাঠামোর প্রোটিন তৈরি করে। এর মধ্যে একটি হলো—স্পাইক প্রোটিন।
নতুন প্রযুক্তিতে টিকা তৈরির প্রথম অংশ—এমআরএনএ তৈরি—অপেক্ষাকৃত সহজই ছিল। দ্বিতীয় অংশটি—নিরাপদে শরীরের কোষে সেই এমআরএনএ প্রবেশ করানো—এই পদ্ধতি বের করতে ৩০ বছর লেগে গেছে। শরীরে প্রবেশ করানো এমআরএনএকে রক্তে ইমিউন সিস্টেমের কোষগুলোতে প্রবেশ করতে হবে যা কাঙ্ক্ষিত প্রোটিনের অংশ তৈরি করতে শুরু করবে। এই প্রোটিনই ইমিউন সিস্টেমকে সেই ভাইরাস সম্পর্কে ধারণা দেবে, ফলে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে।
এমআরএনও ভ্যাকসিন তৈরিতে বাধা অতিক্রম
কোভিড কালে অবিশ্বাস্য গতিতে টিকা তৈরি হলেও এর আগে বিজ্ঞানীদের বেশ কয়েকটি বাধা অতিক্রম করতে হয়েছিল। প্রথমত, এমআরএনএকে মাইক্রোস্কোপিক (অতিক্ষুদ্র) ক্যাপসুলের ভেতর ঢুকানো যাতে এটি রক্তে রাসায়নিকের সংস্পর্শে গিয়ে ধ্বংস হয়ে না যায়। দ্বিতীয়ত, এমআরএনএকে পরিবর্তন করার কৌশল বের করতে হয়েছে যাতে, এটি ইমিউন সিস্টেম আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া তৈরি না করে। তৃতীয়ত, রক্তের মধ্যে প্রবাহিত এমআরএনএকে গ্রহণ করার জন্য ইমিউন সিস্টেমের কোষগুলোকে উৎসাহিত করা। অবশেষে, কোষগুলোকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন তৈরির জন্য উৎসাহিত করা, যাতে এটি ইমিউন সিস্টেমকে সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করে।
কোভিড–১৯
৩০ বছরের শ্রমসাধ্য গবেষণা ফাইজার–বায়োএনটেক এবং মডার্নার মতো কোম্পানিকে এমআরএনএ ভ্যাকসিন প্রযুক্তি বাস্তবে কাজে লাগানোর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। কোম্পানিগুলো তাত্ত্বিকভাবে এমন কৌশল উদ্ভাবন করেছে, যা যে কোনো সংক্রামক রোগের জন্য ভ্যাকসিন তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে।
এরপর আসে কোভিড–১৯। এই রোগের জন্য দায়ী ভাইরাস সনাক্ত করার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চীনের বিজ্ঞানীরা স্পাইক প্রোটিন তৈরিকারী জিনসহ এর সমস্ত জিনের গঠন শনাক্ত করেছিলেন এবং এই তথ্য তাঁরা ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছিলেন।
এর কয়েক মিনিটের মধ্যে ১০ হাজার মাইল দূরের বিজ্ঞানীরা একটি এমআরএনও ভ্যাকসিনের নকশা নিয়ে কাজ শুরু করেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাঁরা পশু এবং পরে মানুষের শরীরে এটি পরীক্ষা করার জন্য যথেষ্ট ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলেন।
সার্স–কোভ–২ ভাইরাস আবিষ্কারের মাত্র ১১ মাস পর যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো নিশ্চিত করে, কোভিড–১৯–এর জন্য একটি কার্যকর এবং নিরাপদ এমআরএনএ ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে। এর আগে, চার বছরের কম সময়ে কোনও নতুন ভ্যাকসিন তৈরি সম্ভব হয়নি।
এমআরএনএ ভ্যাকসিন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে অবদানের জন্য হাঙ্গেরি ও যুক্তরাষ্ট্রের দুই বিজ্ঞানী যৌথভাবে এবারের চিকিৎসাবিজ্ঞানের নোবেল জিতে নিয়েছেন। বিজয়ী হিসেবে কাতালিন ক্যারিকো ও ড্রিউ ওয়েইসম্যানের নাম আজ সোমবার বিকেলে ঘোষণা করে নোবেল কমিটি।
১৯৯০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটিতে একসঙ্গে কাজ করতেন কাতালিন ক্যারিকো ও ড্রিউ ওয়েইসম্যান। ১৯৫৫ সালে হাঙ্গেরিতে জন্মগ্রহণ করেন কাতালিন। ২০২১ সাল থেকে তিনি সিজড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। পেনসিলভানিয়ার সঙ্গেও যুক্ত আছেন। আর ওয়েইসম্যান ১৯৫৯ সালে আমেরিকার ম্যাসচুয়েটসে জন্ম নেন। তিনি আমেরিকার পেন ইনস্টিটিউট ফর আরএনএ ইনোভেশন কাজ করেন।

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৬ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
১৪ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে, তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাসপাতালটির আইসিইউ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।

এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. আরিফ মাহমুদ আজ শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে মিডিয়া ব্রিফের চেয়ে তার চিকিৎসার দিকেই আমাদের মনোযোগ বেশি। তার ভাই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। হাদির বর্তমান অবস্থা তার পরিবারকে আমরা ব্রিফ করেছি।’
মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত তুলে ধরে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, রোগীর মস্তিষ্ক ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল (স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের আঘাতের পর মস্তিষ্ককে আরও ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি ও যত্ন) অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে আবার ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে। হাদির ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব (বুকের ভেতর থেকে বাতাস, রক্ত বা অন্যান্য তরল বের করতে ব্যবহৃত নমনীয় নল) দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস (তীব্র শ্বাসকষ্ট সিন্ড্রোম ফুসফুসের একটি গুরুতর অবস্থা) প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হাদির কিডনির কার্যক্ষমতা ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখতে পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স (শরীরে প্রবেশ করা তরল এবং শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া তরলের মধ্যকার ভারসাম্য) যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে। পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা (ডিআইসি) দেখা দিলেও তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, হাদির মস্তিষ্কের নিচের অংশ বা গুরুমস্তিষ্কে আঘাতের (ব্রেন স্টেম ইনজুরি) কারণে রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংবেদনশীল; রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দনের ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে, তা চলমান থাকবে। যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাই রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। হৃৎস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার (হৃদপিণ্ডের স্পন্দনের ধীরগতি বা অনিয়মিত গতি ঠিক রাখতে অস্থায়ী চিকিৎসা যন্ত্র) স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শরীরে আপাতত নতুন কোনো অস্ত্রোপচার বা হস্তক্ষেপ করা হবে না, পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসাই চলবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
হাসপাতালে ভিড় না করতে; কোনো ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখতে এবং রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।
হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেন স্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ অবস্থায় কোনো ধরনের নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না। হাদি বর্তমানে ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা এখনও আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
১৪ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে, তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাসপাতালটির আইসিইউ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।

এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. আরিফ মাহমুদ আজ শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে মিডিয়া ব্রিফের চেয়ে তার চিকিৎসার দিকেই আমাদের মনোযোগ বেশি। তার ভাই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। হাদির বর্তমান অবস্থা তার পরিবারকে আমরা ব্রিফ করেছি।’
মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত তুলে ধরে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, রোগীর মস্তিষ্ক ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল (স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের আঘাতের পর মস্তিষ্ককে আরও ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি ও যত্ন) অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে আবার ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে। হাদির ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব (বুকের ভেতর থেকে বাতাস, রক্ত বা অন্যান্য তরল বের করতে ব্যবহৃত নমনীয় নল) দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস (তীব্র শ্বাসকষ্ট সিন্ড্রোম ফুসফুসের একটি গুরুতর অবস্থা) প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হাদির কিডনির কার্যক্ষমতা ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখতে পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স (শরীরে প্রবেশ করা তরল এবং শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া তরলের মধ্যকার ভারসাম্য) যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে। পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা (ডিআইসি) দেখা দিলেও তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, হাদির মস্তিষ্কের নিচের অংশ বা গুরুমস্তিষ্কে আঘাতের (ব্রেন স্টেম ইনজুরি) কারণে রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংবেদনশীল; রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দনের ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে, তা চলমান থাকবে। যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাই রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। হৃৎস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার (হৃদপিণ্ডের স্পন্দনের ধীরগতি বা অনিয়মিত গতি ঠিক রাখতে অস্থায়ী চিকিৎসা যন্ত্র) স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শরীরে আপাতত নতুন কোনো অস্ত্রোপচার বা হস্তক্ষেপ করা হবে না, পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসাই চলবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
হাসপাতালে ভিড় না করতে; কোনো ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখতে এবং রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।
হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেন স্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ অবস্থায় কোনো ধরনের নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না। হাদি বর্তমানে ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা এখনও আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত সময়ে তৈরি হয়েছে করোনাভাইরাসের টিকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত টিকা হলো ফাইজার–বায়োএনটেক ও মডার্নার টিকা। দুটোতেই ব্যবহার করা হয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিকতম প্রযুক্তি ‘এমআরএনএ ভ্যাকসিন’।
০২ অক্টোবর ২০২৩
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেমো. ইকবাল হোসেন

ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
মানুষের শরীরের গঠন অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবীর বেশির ভাগ প্রাণীর চেয়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য আলাদা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। যেমন চোখের যত্নে ভিটামিন এ, ত্বকের যত্নে ভিটামিন বি, হাড়ের যত্নে ভিটামিন ডি ইত্যাদি। এসব চাহিদা পূরণ করে খাবার খেলে শরীরে সুখের হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং আমাদের সুখানুভূতি হয়, মন শান্ত থাকে।
মন ভালো রাখার অন্যতম হরমোন ডোপামিন। এটি নিঃসরণে খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বাড়বে, ডোপামিনের নিঃসরণও তত বাড়বে। তাই অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে গুড ফ্যাট বা ভালো চর্বিসমৃদ্ধ, গাঁজানো এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
সে ক্ষেত্রে চমৎকার খাবার হতে পারে শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি। শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটিসহ অন্যান্য শাকসবজি ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে চমৎকার কাজ করে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল, অলিভ অয়েল, টক দই ইত্যাদি খাবারও পর্যাপ্ত খেতে হবে। আঁশের উৎস হিসেবে লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাক খেতে হবে। ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ডুবোতেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
আমাদের মন ভালো রাখার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হচ্ছে সেরোটোনিন। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন উৎপন্ন হয় অন্ত্রের এন্টেরোক্রমাফিন কোষের এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম থেকে। এ জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখা বেশি জরুরি। অন্ত্রের পেশি নড়াচড়ায় সেরোটোনিন সাহায্য করে। মাত্র ১ শতাংশ সেরোটোনিন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয়। এই ১ শতাংশ সেরোটোনিন মুড, ঘুম, স্মৃতি, ক্ষুধা, মন ভালো থাকা ইত্যাদির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন ডি সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। খাবারের পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে পরিমিত রেডমিট, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শিম, গাজরসহ সব ধরনের শীতকালীন সবজি এবং শীতের মিষ্টি রোদ দারুণ কাজ করে।
এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণসমৃদ্ধ খাবার, যেমন দারুচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।
শীতে শরীরে ব্যথার প্রকোপ কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। তবে এন্ডোরফিন নামক হরমোন প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশম করে। শারীরিক বা মানসিকভাবে আহত হলে এন্ডোরফিন সক্রিয় হয়ে আমাদের ব্যথা নিরাময় করে। অতিরিক্ত ওজন, বিষণ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ এন্ডোরফিনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। তবে কিছু খাবার আছে; যেগুলো খেলে এন্ডোরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবারগুলো শরীরে ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এন্ডোরফিন নিঃসরণে সহযোগিতা করে। তাই শীতে মন ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পাতিলেবু, মোসাম্বি, পেয়ারা, কলা, জাম্বুরা ও কমলা খেতে হবে।
এর পাশাপাশি টমেটো, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম ও পালংশাক শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর জোগান দিতে পারে; সঙ্গে মেটায় আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিও।
এ ছাড়া শীতকালীন প্রায় সব শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এবং ক্যানসার প্রতিরোধী গুণসমৃদ্ধ। এগুলো যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। শীতকালীন পালংশাক, গাজর, টমেটো, বিটরুট, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি হয়ে উঠতে পারে সুস্থ থাকার অন্যতম হাতিয়ার। শীতকালীন সবজি ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অত্যন্ত উপযোগী। তাই শীতকালে সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি হতে পারে এসব সবজি।
আমাদের শরীরের অবহেলিত অঙ্গ ক্ষুদ্রান্ত্র। আমরা বিভিন্ন রকমের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই। সেসবের প্রভাব পড়ে ক্ষুদ্রান্ত্রের ওপর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমতে থাকে।
ফলে গ্যাসের সমস্যা, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, কোষ্ঠকাঠিন্য বা কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। আবার বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও কমে যায় এসব ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা। তাই সুস্থ থাকতে এবং মন ভালো রাখতে শীতকাল হতে পারে আপনার জীবনের সেরা সময়।
খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে—
পুষ্টিবিদ ও জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
মানুষের শরীরের গঠন অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবীর বেশির ভাগ প্রাণীর চেয়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য আলাদা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। যেমন চোখের যত্নে ভিটামিন এ, ত্বকের যত্নে ভিটামিন বি, হাড়ের যত্নে ভিটামিন ডি ইত্যাদি। এসব চাহিদা পূরণ করে খাবার খেলে শরীরে সুখের হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং আমাদের সুখানুভূতি হয়, মন শান্ত থাকে।
মন ভালো রাখার অন্যতম হরমোন ডোপামিন। এটি নিঃসরণে খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বাড়বে, ডোপামিনের নিঃসরণও তত বাড়বে। তাই অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে গুড ফ্যাট বা ভালো চর্বিসমৃদ্ধ, গাঁজানো এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
সে ক্ষেত্রে চমৎকার খাবার হতে পারে শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি। শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটিসহ অন্যান্য শাকসবজি ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে চমৎকার কাজ করে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল, অলিভ অয়েল, টক দই ইত্যাদি খাবারও পর্যাপ্ত খেতে হবে। আঁশের উৎস হিসেবে লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাক খেতে হবে। ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ডুবোতেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
আমাদের মন ভালো রাখার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হচ্ছে সেরোটোনিন। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন উৎপন্ন হয় অন্ত্রের এন্টেরোক্রমাফিন কোষের এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম থেকে। এ জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখা বেশি জরুরি। অন্ত্রের পেশি নড়াচড়ায় সেরোটোনিন সাহায্য করে। মাত্র ১ শতাংশ সেরোটোনিন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয়। এই ১ শতাংশ সেরোটোনিন মুড, ঘুম, স্মৃতি, ক্ষুধা, মন ভালো থাকা ইত্যাদির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন ডি সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। খাবারের পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে পরিমিত রেডমিট, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শিম, গাজরসহ সব ধরনের শীতকালীন সবজি এবং শীতের মিষ্টি রোদ দারুণ কাজ করে।
এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণসমৃদ্ধ খাবার, যেমন দারুচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।
শীতে শরীরে ব্যথার প্রকোপ কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। তবে এন্ডোরফিন নামক হরমোন প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশম করে। শারীরিক বা মানসিকভাবে আহত হলে এন্ডোরফিন সক্রিয় হয়ে আমাদের ব্যথা নিরাময় করে। অতিরিক্ত ওজন, বিষণ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ এন্ডোরফিনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। তবে কিছু খাবার আছে; যেগুলো খেলে এন্ডোরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবারগুলো শরীরে ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এন্ডোরফিন নিঃসরণে সহযোগিতা করে। তাই শীতে মন ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পাতিলেবু, মোসাম্বি, পেয়ারা, কলা, জাম্বুরা ও কমলা খেতে হবে।
এর পাশাপাশি টমেটো, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম ও পালংশাক শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর জোগান দিতে পারে; সঙ্গে মেটায় আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিও।
এ ছাড়া শীতকালীন প্রায় সব শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এবং ক্যানসার প্রতিরোধী গুণসমৃদ্ধ। এগুলো যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। শীতকালীন পালংশাক, গাজর, টমেটো, বিটরুট, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি হয়ে উঠতে পারে সুস্থ থাকার অন্যতম হাতিয়ার। শীতকালীন সবজি ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অত্যন্ত উপযোগী। তাই শীতকালে সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি হতে পারে এসব সবজি।
আমাদের শরীরের অবহেলিত অঙ্গ ক্ষুদ্রান্ত্র। আমরা বিভিন্ন রকমের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই। সেসবের প্রভাব পড়ে ক্ষুদ্রান্ত্রের ওপর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমতে থাকে।
ফলে গ্যাসের সমস্যা, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, কোষ্ঠকাঠিন্য বা কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। আবার বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও কমে যায় এসব ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা। তাই সুস্থ থাকতে এবং মন ভালো রাখতে শীতকাল হতে পারে আপনার জীবনের সেরা সময়।
খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে—
পুষ্টিবিদ ও জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত সময়ে তৈরি হয়েছে করোনাভাইরাসের টিকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত টিকা হলো ফাইজার–বায়োএনটেক ও মডার্নার টিকা। দুটোতেই ব্যবহার করা হয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিকতম প্রযুক্তি ‘এমআরএনএ ভ্যাকসিন’।
০২ অক্টোবর ২০২৩
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৬ ঘণ্টা আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেডা. অবন্তি ঘোষ

চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
বীর্য পরীক্ষার পর শুক্রাণুর সংখ্যা, গতি, আকৃতি, পরিমাণ ইত্যাদি
দেখা হয়।
চিকিৎসা নির্ভর করে সমস্যা কেমন এবং কোন স্তরে রয়েছে, তার ওপর। সাধারণভাবে চিকিৎসা কয়েকটি ধাপে করা হয়।
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতি উন্নত করতে কিছু পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন দেওয়া হয়, যেমন:
ওষুধ শুরুর পর রোগীকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কারণ, নতুন শুক্রাণু তৈরিতে প্রায় ৭৫ দিন লাগে।
ওষুধে উন্নতি হলে স্বামী-স্ত্রী স্বাভাবিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডিম্বাণু উৎপাদন বাড়ানোর ওষুধ দেওয়া হয়।
ভেরিকোসিল কিংবা শুক্রনালির ব্লকেজ থাকলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
যাঁদের বীর্যে একেবারেই শুক্রাণু পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পার্মিয়া বলা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে সরাসরি শুক্রাণু সংগ্রহ করে আইসিএসআই করাই সবচেয়ে কার্যকর।
গাইনি, প্রসূতি ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০

চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
বীর্য পরীক্ষার পর শুক্রাণুর সংখ্যা, গতি, আকৃতি, পরিমাণ ইত্যাদি
দেখা হয়।
চিকিৎসা নির্ভর করে সমস্যা কেমন এবং কোন স্তরে রয়েছে, তার ওপর। সাধারণভাবে চিকিৎসা কয়েকটি ধাপে করা হয়।
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতি উন্নত করতে কিছু পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন দেওয়া হয়, যেমন:
ওষুধ শুরুর পর রোগীকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কারণ, নতুন শুক্রাণু তৈরিতে প্রায় ৭৫ দিন লাগে।
ওষুধে উন্নতি হলে স্বামী-স্ত্রী স্বাভাবিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডিম্বাণু উৎপাদন বাড়ানোর ওষুধ দেওয়া হয়।
ভেরিকোসিল কিংবা শুক্রনালির ব্লকেজ থাকলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
যাঁদের বীর্যে একেবারেই শুক্রাণু পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পার্মিয়া বলা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে সরাসরি শুক্রাণু সংগ্রহ করে আইসিএসআই করাই সবচেয়ে কার্যকর।
গাইনি, প্রসূতি ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত সময়ে তৈরি হয়েছে করোনাভাইরাসের টিকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত টিকা হলো ফাইজার–বায়োএনটেক ও মডার্নার টিকা। দুটোতেই ব্যবহার করা হয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিকতম প্রযুক্তি ‘এমআরএনএ ভ্যাকসিন’।
০২ অক্টোবর ২০২৩
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৬ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেডা. কাকলী হালদার

শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
সাধারণ সর্দি-কাশি: রাইনোভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং হালকা গলাব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সাধারণ সর্দির চেয়ে গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, শরীর ও পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্লান্তি এবং গাঢ় কাশি।
রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি: এটি শিশুদের মধ্যে ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো গুরুতর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়।
এ ধরনের রোগ নিউমোনিয়া অথবা স্ট্রেপটোকক্কাসজনিত গলাব্যথার মতো কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দিকে মোড় নিতে পারে, যা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
সংক্রমণ এড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কিছু সহজ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা: নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরে, অপরিচ্ছন্ন কিছু স্পর্শ করার পর হাত ধোয়া জরুরি। হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা এবং ব্যবহৃত টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পানি পান করা: পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল; যেমন লেবু, কমলা, আমলকী ইত্যাদি এবং শাকসবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে হবে। পানিশূন্যতা এড়াতে হালকা গরম পানি পান করুন।
উষ্ণতা বজায় রাখা: কান, মাথা ও গলা ঢেকে গরম জামাকাপড় পরুন। ঘর উষ্ণ রাখুন এবং সরাসরি ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন।
ভিড় এড়িয়ে চলা: অসুস্থতা চলাকালে যেকোনো ভিড় অথবা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
টিকা নেওয়া: শিশু, বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিতে পারেন।
সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
সাধারণ সর্দি-কাশি: রাইনোভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং হালকা গলাব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সাধারণ সর্দির চেয়ে গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, শরীর ও পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্লান্তি এবং গাঢ় কাশি।
রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি: এটি শিশুদের মধ্যে ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো গুরুতর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়।
এ ধরনের রোগ নিউমোনিয়া অথবা স্ট্রেপটোকক্কাসজনিত গলাব্যথার মতো কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দিকে মোড় নিতে পারে, যা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
সংক্রমণ এড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কিছু সহজ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা: নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরে, অপরিচ্ছন্ন কিছু স্পর্শ করার পর হাত ধোয়া জরুরি। হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা এবং ব্যবহৃত টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পানি পান করা: পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল; যেমন লেবু, কমলা, আমলকী ইত্যাদি এবং শাকসবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে হবে। পানিশূন্যতা এড়াতে হালকা গরম পানি পান করুন।
উষ্ণতা বজায় রাখা: কান, মাথা ও গলা ঢেকে গরম জামাকাপড় পরুন। ঘর উষ্ণ রাখুন এবং সরাসরি ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন।
ভিড় এড়িয়ে চলা: অসুস্থতা চলাকালে যেকোনো ভিড় অথবা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
টিকা নেওয়া: শিশু, বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিতে পারেন।
সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত সময়ে তৈরি হয়েছে করোনাভাইরাসের টিকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত টিকা হলো ফাইজার–বায়োএনটেক ও মডার্নার টিকা। দুটোতেই ব্যবহার করা হয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিকতম প্রযুক্তি ‘এমআরএনএ ভ্যাকসিন’।
০২ অক্টোবর ২০২৩
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৬ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে