মো. ইকবাল হোসেন
স্বাস্থ্যকর খাবার প্রসঙ্গে প্রথমে যে কথাটি আসে, তা হলো, চিনি দিয়ে তৈরি মিষ্টিজাতীয় খাবার এবং ডুবো তেলে ভাজা খাবার খাওয়া ঠিক হবে না। শুধু রমজান মাসে নয়, অন্য সময়েও খাওয়া যাবে না। বর্তমান সময়ে চিনি যেন আমাদের কাছে এক আতঙ্কের নাম। একে হোয়াইট পয়জন বলা হয়। আসলেই কি চিনি খাদ্য হিসেবে খুব খারাপ? যদি খারাপই হবে, তাহলে কেন? এক গ্রাম চিনিতে থাকে ৪ ক্যালরি। আবার ৩ দশমিক ২ গ্রাম সেদ্ধ ভাত থেকেও ৪ ক্যালরি পাওয়া যায়। অন্যদিকে ১ দশমিক ১৮ গ্রাম আটায়ও থাকে ৪ ক্যালরি। আবার এক গ্রাম রান্নার তেল থেকে চিনির দ্বিগুণের বেশি; অর্থাৎ ৯ ক্যালরি পাওয়া যায়। কিন্তু ভাত খাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো ভয় বা মাথাব্যথা না থাকলেও চিনি ও তেল নিয়ে অনেক ভয়। মজার বিষয় হলো, চিনি, আটা, ভাত—সবই শর্করাজাতীয় খাবার।
চিনির ক্ষতিকর দিক
হাই গ্লাইসেমিক ইনডেক্স
যে খাবার রক্তে যত দ্রুত সুগার ছাড়ে, তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তত বেশি। এ ক্ষেত্রে চিনির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সর্বোচ্চ। চিনি খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তে মিশে যায়। রক্ত থেকে প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করে এবং বাকি গ্লুকোজ চর্বি হিসেবে শরীরের বিভিন্ন অংশে জমা হয়। এর ফলে আমরা আবারও খুব দ্রুত ক্ষুধা অনুভব করি এবং আবার খাবার খাই। এভাবে বারবার খাওয়ার মাধ্যমে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করি। ফল হিসেবে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পায়, রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড, ফ্যাটি লিভারসহ অন্যান্য জটিলতা বাড়ে। এ কারণে চিনির স্বাস্থ্যঝুঁকি অন্য খাবারের চেয়ে বেশি।
খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে
আমাদের অন্ত্রে ভালো ও খারাপ—দুই ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে। খারাপ ব্যাকটেরিয়ার খাবার হলো ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত, চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার। সারা দিন রোজা রেখে শুরুতে ভাজাপোড়া ও মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে খারাপ ব্যাকটেরিয়া সেগুলোকে খাবার হিসেবে গ্রহণ করে। এর ফলে খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে এবং ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমে যায়। এতে বদহজম, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাসহ অন্যান্য সমস্যা বেড়ে যায়।
খাবারের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি
জিহ্বায় বেশি টেস্টবাড থাকে মিষ্টি খাবারের। তাই সারা দিন রোজা রেখে মিষ্টি খাবার খেলে অন্যান্য শর্করাজাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়। তখন চাইলেও আর নিজেকে খাবার খাওয়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। আবার অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ফলে নানান শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
ফ্যাটি লিভার
লিভার আমাদের শরীরের ব্যাংক হিসেবে কাজ করে। ডুবো তেলে ভাজা খাবারে অনেক বেশি তেল থাকে। শরীরের চাহিদার অতিরিক্ত তেল লিভারে চর্বি হিসেবে জমা হয়। এ ছাড়া অতিরিক্ত চিনি চর্বিতে রূপান্তরিত হয়ে লিভারে
জমা হয়। এর ফলে লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ব্যাহত হয়। এ ছাড়া ফ্যাটি লিভারসহ লিভার সিরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে।
উচ্চ রক্তচাপ
শরীরে চর্বির পরিমাণ বাড়লে তা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত তেল রক্তে মিশে রক্তের ঘনত্ব বাড়ায় এবং ধমনির দেয়ালের পুরুত্ব বাড়িয়ে দেয়। ফলে উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হয়। উচ্চ রক্তচাপের কারণে হৃদ্রোগ শুরু হয়।
হার্টের ব্লক
হার্টে ব্লক ধরা পড়লে সবার আগে দুধ, ডিম, গরু ও খাসির মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর চেয়ে বরং আগে রান্নায় ভোজ্যতেল ও চিনির ব্যবহার কমাতে হবে। অতিরিক্ত তেল ও চিনি খেলে রক্তে ট্রাইগ্লিসাইড ও এলডিএলের পরিমাণ বেড়ে যায়, ফলে হৃৎপিণ্ডে ব্লক তৈরি হয়। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
বিষণ্নতা ও স্নায়ুরোগ
অতিরিক্ত তেল ও চিনি খেলে বিষণ্নতা, পারকিনসন এবং আলঝেইমারের মতো রোগের আশঙ্কা বেশি বেড়ে যায়।
ক্যানসার
ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জটিলতাগুলো চিনি ত্বরান্বিত করে। এ ছাড়া এটি ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। কেমোথেরাপির সর্বোচ্চ কাজ করতে বাধা দেয় চিনি কিংবা এটি দিয়ে তৈরি খাবার।
নিজ নিজ স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনা করে চিনি এবং চিনি দিয়ে তৈরি খাবার গ্রহণের বিষয়ে সবাইকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। শুধু রোজার সময়ে নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা , চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
স্বাস্থ্যকর খাবার প্রসঙ্গে প্রথমে যে কথাটি আসে, তা হলো, চিনি দিয়ে তৈরি মিষ্টিজাতীয় খাবার এবং ডুবো তেলে ভাজা খাবার খাওয়া ঠিক হবে না। শুধু রমজান মাসে নয়, অন্য সময়েও খাওয়া যাবে না। বর্তমান সময়ে চিনি যেন আমাদের কাছে এক আতঙ্কের নাম। একে হোয়াইট পয়জন বলা হয়। আসলেই কি চিনি খাদ্য হিসেবে খুব খারাপ? যদি খারাপই হবে, তাহলে কেন? এক গ্রাম চিনিতে থাকে ৪ ক্যালরি। আবার ৩ দশমিক ২ গ্রাম সেদ্ধ ভাত থেকেও ৪ ক্যালরি পাওয়া যায়। অন্যদিকে ১ দশমিক ১৮ গ্রাম আটায়ও থাকে ৪ ক্যালরি। আবার এক গ্রাম রান্নার তেল থেকে চিনির দ্বিগুণের বেশি; অর্থাৎ ৯ ক্যালরি পাওয়া যায়। কিন্তু ভাত খাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো ভয় বা মাথাব্যথা না থাকলেও চিনি ও তেল নিয়ে অনেক ভয়। মজার বিষয় হলো, চিনি, আটা, ভাত—সবই শর্করাজাতীয় খাবার।
চিনির ক্ষতিকর দিক
হাই গ্লাইসেমিক ইনডেক্স
যে খাবার রক্তে যত দ্রুত সুগার ছাড়ে, তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তত বেশি। এ ক্ষেত্রে চিনির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সর্বোচ্চ। চিনি খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তে মিশে যায়। রক্ত থেকে প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করে এবং বাকি গ্লুকোজ চর্বি হিসেবে শরীরের বিভিন্ন অংশে জমা হয়। এর ফলে আমরা আবারও খুব দ্রুত ক্ষুধা অনুভব করি এবং আবার খাবার খাই। এভাবে বারবার খাওয়ার মাধ্যমে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করি। ফল হিসেবে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পায়, রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড, ফ্যাটি লিভারসহ অন্যান্য জটিলতা বাড়ে। এ কারণে চিনির স্বাস্থ্যঝুঁকি অন্য খাবারের চেয়ে বেশি।
খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে
আমাদের অন্ত্রে ভালো ও খারাপ—দুই ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে। খারাপ ব্যাকটেরিয়ার খাবার হলো ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত, চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার। সারা দিন রোজা রেখে শুরুতে ভাজাপোড়া ও মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে খারাপ ব্যাকটেরিয়া সেগুলোকে খাবার হিসেবে গ্রহণ করে। এর ফলে খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে এবং ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমে যায়। এতে বদহজম, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাসহ অন্যান্য সমস্যা বেড়ে যায়।
খাবারের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি
জিহ্বায় বেশি টেস্টবাড থাকে মিষ্টি খাবারের। তাই সারা দিন রোজা রেখে মিষ্টি খাবার খেলে অন্যান্য শর্করাজাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়। তখন চাইলেও আর নিজেকে খাবার খাওয়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। আবার অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ফলে নানান শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
ফ্যাটি লিভার
লিভার আমাদের শরীরের ব্যাংক হিসেবে কাজ করে। ডুবো তেলে ভাজা খাবারে অনেক বেশি তেল থাকে। শরীরের চাহিদার অতিরিক্ত তেল লিভারে চর্বি হিসেবে জমা হয়। এ ছাড়া অতিরিক্ত চিনি চর্বিতে রূপান্তরিত হয়ে লিভারে
জমা হয়। এর ফলে লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ব্যাহত হয়। এ ছাড়া ফ্যাটি লিভারসহ লিভার সিরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে।
উচ্চ রক্তচাপ
শরীরে চর্বির পরিমাণ বাড়লে তা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত তেল রক্তে মিশে রক্তের ঘনত্ব বাড়ায় এবং ধমনির দেয়ালের পুরুত্ব বাড়িয়ে দেয়। ফলে উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হয়। উচ্চ রক্তচাপের কারণে হৃদ্রোগ শুরু হয়।
হার্টের ব্লক
হার্টে ব্লক ধরা পড়লে সবার আগে দুধ, ডিম, গরু ও খাসির মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর চেয়ে বরং আগে রান্নায় ভোজ্যতেল ও চিনির ব্যবহার কমাতে হবে। অতিরিক্ত তেল ও চিনি খেলে রক্তে ট্রাইগ্লিসাইড ও এলডিএলের পরিমাণ বেড়ে যায়, ফলে হৃৎপিণ্ডে ব্লক তৈরি হয়। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
বিষণ্নতা ও স্নায়ুরোগ
অতিরিক্ত তেল ও চিনি খেলে বিষণ্নতা, পারকিনসন এবং আলঝেইমারের মতো রোগের আশঙ্কা বেশি বেড়ে যায়।
ক্যানসার
ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জটিলতাগুলো চিনি ত্বরান্বিত করে। এ ছাড়া এটি ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। কেমোথেরাপির সর্বোচ্চ কাজ করতে বাধা দেয় চিনি কিংবা এটি দিয়ে তৈরি খাবার।
নিজ নিজ স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনা করে চিনি এবং চিনি দিয়ে তৈরি খাবার গ্রহণের বিষয়ে সবাইকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। শুধু রোজার সময়ে নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা , চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
আশার কথা হলো, পরিবর্তন আসছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক যুগান্তকারী পরীক্ষায় দেখা গেছে, তীব্রভাবে চিনাবাদামের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত দুই-তৃতীয়াংশ প্রাপ্তবয়স্ককে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে চিনাবাদাম খাইয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আনা সম্ভব হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেঅতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার বা ‘আল্ট্রা প্রসেসড ফুড’ (ইউপিএফ) বেশি খাওয়ার কারণে শুধু স্থূলতা, হতাশা, ডায়াবেটিস কিংবা হৃদরোগই নয়, বাড়ছে অকালমৃত্যুর ঝুঁকিও। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু ঘটছে।
৯ ঘণ্টা আগেদেশের প্রায় পাঁচ লাখ শিশু সময়মতো টিকার সব ডোজ পাচ্ছে না। তাদের মধ্যে ৭০ হাজার শিশু কোনো টিকাই পায় না। টিকা না পাওয়ার হার শহরাঞ্চলে বেশি। টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও এসব তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)...
২১ ঘণ্টা আগেভিটামিন ‘ডি’-এর অভাবে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ছে; বিশেষ করে হৃদ্রোগ, কিডনি রোগ, বিষণ্নতাজনিত রোগ, রক্তে চর্বি বেড়ে যাওয়া, হাড় ক্ষয়, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসতন্ত্রের রোগ, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, কম ওজনে জন্ম নেওয়া, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। গতকাল সোমবার রাজধানীতে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব
১ দিন আগে