তৌহিদুল হক
শিশুর শারীরিক ও মানসিক গঠন নির্ভর করে তার সুষ্ঠু ও সঠিক বিকাশের ওপর। এ ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর সুষ্ঠু পরিবেশে বড় হওয়া নির্ভর করে মা-বাবাসহ পরিবারের সব সদস্য ও আশপাশের মানুষের ওপর।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মা-বাবার উদাসীনতা শিশুদের সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এতে সুষ্ঠু পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হয় তারা। তাদের সঠিক পরিচর্যা ও মানসিক বিকাশের জন্য মা-বাবার সচেতনতা একান্ত প্রয়োজন। ছোটবেলা থেকে শিশুকে কীভাবে বড় করা হবে, এর ওপর নির্ভর করে তাদের ভবিষ্যৎ। সামাজিক পরিপক্বতা ও মানসিক সুস্থতার ক্ষেত্রে এটি গভীর প্রভাব বিস্তার করে।
সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণ
শিশুর সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে বিকাশের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরিবেশ মুখ্য ভূমিকা পালন করে। শিশুরা স্বভাবতই অনুকরণপ্রিয়। বোঝার বয়সের পর থেকে যে পরিবেশে সে বড় হবে, সেখান থেকে সে শিক্ষা গ্রহণ করবে। নেতিবাচক যেকোনো বিষয় শিশুমনে বেশি প্রভাব ফেলে। তাই শিশুকে যতটা সম্ভব পারিবারিক ও সামাজিক জটিলতা থেকে দূরে রেখে সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে হবে।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ না দেওয়াসন্তানকে ভালো শিক্ষার্থী বা ভালো ফলধারী হওয়ার জন্য মা-বাবা বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে থাকেন। এটি আমাদের সমাজের সাধারণ প্রবণতা। মনে রাখতে হবে, শিক্ষা মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও সবকিছু নয়।
একটি শিশুকে পরিপূর্ণভাবে বড় করে তুলতে তাকে সুশিক্ষিত করে তোলা জরুরি। সেটা চাপ দিয়ে করা যায় না। শিশুকে পারিপার্শ্বিক ইতি ও নেতিবাচক দিকগুলোর পার্থক্য শেখাতে হবে প্রথমে। খেয়াল রাখতে হবে, কোনো কিছু যেন তার মানসিক চাপের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়।
নৈতিকতা শিক্ষা
সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠতে নৈতিক শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুকে সবকিছুর ভালো-মন্দ দিক বোঝানোর পাশাপাশি তার মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। তাই প্রয়োজন পুঁথিগত শিক্ষার আগে তাকে নৈতিক শিক্ষা দেওয়া। শিশু যখন বুঝতে শেখে, তখন থেকেই মনুষ্যত্ব, নীতিবোধ, শিষ্টাচার, সামাজিকীকরণ—সবকিছু সম্পর্কে তাকে ধারণা দিতে হবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটি বাড়াতে হবে। কারণ, সুশিক্ষিত হওয়ার আগে মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন মানুষ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
বন্ধুসুলভ আচরণ
শিশুকে পরিপূর্ণ শৈশব দিতে হলে মা-বাবা বা অভিভাবককে তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে। সব সময় কঠোর শাসনে রাখলে শিশুর মনে ভয় দানা বাঁধে। আপনার সন্তান কার সঙ্গে মিশছে, কোন বন্ধুর সঙ্গে কোথায় যাচ্ছে, এগুলো জানার জন্য তার সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। তাহলে সে নিঃসংকোচে মা-বাবার সঙ্গে অনেক কিছু শেয়ার করতে পারবে।
শিশুদের মস্তিষ্ক বড়দের তুলনায় বেশি সচল থাকে। এ সময় যা কিছু সে অর্জন করে, সেটাই তার পরবর্তী জীবনে প্রভাব ফেলে। তাই শিশু বুঝতে শেখার পর থেকে তার কথা শোনা, তার সঙ্গে বেশি বেশি কথা বলা, খেলাধুলা করার পাশাপাশি অনুভূতি প্রকাশ করার সুযোগ করে দেওয়া মা-বাবার কর্তব্য।
সাংস্কৃতিক চর্চা
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিশুর প্রতিভা বিকাশের সুযোগ দিতে হবে। তাকে সাংস্কৃতিক নানা অঙ্গনে চর্চা করার সুযোগ করে দিতে হবে। শিশুতোষ গল্প, কবিতা, গান—এগুলোর মাধ্যমে শিশুর মানসিক বিকাশ আরও প্রসার লাভ করে। স্কুলের পড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রেফারেন্স বই, যেমন সাধারণ জ্ঞান, মজার গল্পের বই, শিক্ষামূলক গল্পের বই ইত্যাদি পড়তে দিন। এতে শিশু পারিপার্শ্বিক নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। তার কৌতূহলী মন তৈরি হবে।
শিশুর সার্বিক গঠনে পরিবার যেমন সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখে, তেমনি তার আশপাশের মানুষদের প্রভাবও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। একজন ভালো মানুষ হয়ে ওঠার ইচ্ছাশক্তি শিশুর মধ্যে জাগ্রত করতে হবে।
তৌহিদুল হকসহকারী অধ্যাপক, সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শিশুর শারীরিক ও মানসিক গঠন নির্ভর করে তার সুষ্ঠু ও সঠিক বিকাশের ওপর। এ ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর সুষ্ঠু পরিবেশে বড় হওয়া নির্ভর করে মা-বাবাসহ পরিবারের সব সদস্য ও আশপাশের মানুষের ওপর।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মা-বাবার উদাসীনতা শিশুদের সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এতে সুষ্ঠু পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হয় তারা। তাদের সঠিক পরিচর্যা ও মানসিক বিকাশের জন্য মা-বাবার সচেতনতা একান্ত প্রয়োজন। ছোটবেলা থেকে শিশুকে কীভাবে বড় করা হবে, এর ওপর নির্ভর করে তাদের ভবিষ্যৎ। সামাজিক পরিপক্বতা ও মানসিক সুস্থতার ক্ষেত্রে এটি গভীর প্রভাব বিস্তার করে।
সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণ
শিশুর সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে বিকাশের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরিবেশ মুখ্য ভূমিকা পালন করে। শিশুরা স্বভাবতই অনুকরণপ্রিয়। বোঝার বয়সের পর থেকে যে পরিবেশে সে বড় হবে, সেখান থেকে সে শিক্ষা গ্রহণ করবে। নেতিবাচক যেকোনো বিষয় শিশুমনে বেশি প্রভাব ফেলে। তাই শিশুকে যতটা সম্ভব পারিবারিক ও সামাজিক জটিলতা থেকে দূরে রেখে সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে হবে।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ না দেওয়াসন্তানকে ভালো শিক্ষার্থী বা ভালো ফলধারী হওয়ার জন্য মা-বাবা বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে থাকেন। এটি আমাদের সমাজের সাধারণ প্রবণতা। মনে রাখতে হবে, শিক্ষা মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও সবকিছু নয়।
একটি শিশুকে পরিপূর্ণভাবে বড় করে তুলতে তাকে সুশিক্ষিত করে তোলা জরুরি। সেটা চাপ দিয়ে করা যায় না। শিশুকে পারিপার্শ্বিক ইতি ও নেতিবাচক দিকগুলোর পার্থক্য শেখাতে হবে প্রথমে। খেয়াল রাখতে হবে, কোনো কিছু যেন তার মানসিক চাপের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়।
নৈতিকতা শিক্ষা
সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠতে নৈতিক শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুকে সবকিছুর ভালো-মন্দ দিক বোঝানোর পাশাপাশি তার মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। তাই প্রয়োজন পুঁথিগত শিক্ষার আগে তাকে নৈতিক শিক্ষা দেওয়া। শিশু যখন বুঝতে শেখে, তখন থেকেই মনুষ্যত্ব, নীতিবোধ, শিষ্টাচার, সামাজিকীকরণ—সবকিছু সম্পর্কে তাকে ধারণা দিতে হবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটি বাড়াতে হবে। কারণ, সুশিক্ষিত হওয়ার আগে মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন মানুষ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
বন্ধুসুলভ আচরণ
শিশুকে পরিপূর্ণ শৈশব দিতে হলে মা-বাবা বা অভিভাবককে তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে। সব সময় কঠোর শাসনে রাখলে শিশুর মনে ভয় দানা বাঁধে। আপনার সন্তান কার সঙ্গে মিশছে, কোন বন্ধুর সঙ্গে কোথায় যাচ্ছে, এগুলো জানার জন্য তার সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। তাহলে সে নিঃসংকোচে মা-বাবার সঙ্গে অনেক কিছু শেয়ার করতে পারবে।
শিশুদের মস্তিষ্ক বড়দের তুলনায় বেশি সচল থাকে। এ সময় যা কিছু সে অর্জন করে, সেটাই তার পরবর্তী জীবনে প্রভাব ফেলে। তাই শিশু বুঝতে শেখার পর থেকে তার কথা শোনা, তার সঙ্গে বেশি বেশি কথা বলা, খেলাধুলা করার পাশাপাশি অনুভূতি প্রকাশ করার সুযোগ করে দেওয়া মা-বাবার কর্তব্য।
সাংস্কৃতিক চর্চা
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিশুর প্রতিভা বিকাশের সুযোগ দিতে হবে। তাকে সাংস্কৃতিক নানা অঙ্গনে চর্চা করার সুযোগ করে দিতে হবে। শিশুতোষ গল্প, কবিতা, গান—এগুলোর মাধ্যমে শিশুর মানসিক বিকাশ আরও প্রসার লাভ করে। স্কুলের পড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রেফারেন্স বই, যেমন সাধারণ জ্ঞান, মজার গল্পের বই, শিক্ষামূলক গল্পের বই ইত্যাদি পড়তে দিন। এতে শিশু পারিপার্শ্বিক নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। তার কৌতূহলী মন তৈরি হবে।
শিশুর সার্বিক গঠনে পরিবার যেমন সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখে, তেমনি তার আশপাশের মানুষদের প্রভাবও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। একজন ভালো মানুষ হয়ে ওঠার ইচ্ছাশক্তি শিশুর মধ্যে জাগ্রত করতে হবে।
তৌহিদুল হকসহকারী অধ্যাপক, সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মারাত্মক সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে অধিকাংশ গরিব দেশের লোকজন প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক পায় না। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। এই গরিব দেশের তালিকায় আছে বাংলাদেশও। গবেষণায় বলা হয়েছে, গরিব দেশগুলোতে মারাত্মক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স বা ওষুধ-প্রতিরোধী সংক্রমণে আক্রান্ত মাত্র...
৩ ঘণ্টা আগেগৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্যে রয়েছে ‘থ্যালেটস’ (Phthalates) নামক রাসায়নিক পদার্থ। আর এই থ্যালেটস কোনো নির্বিরোধী রাসায়নিক উপাদান নয়। এর কারণে মৃত্যুর ঘটনা অনেক বেশি। থ্যালেটসের সংস্পর্শে আসার কারণে ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাপী ৩ লাখ ৫৬ হাজারেরও বেশি মানুষের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবর
১ দিন আগেপুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের সিটি স্ক্যান মেশিনের ফিল্মসংকট দেখা দিয়েছে। এতে সিটি স্ক্যান করার প্রয়োজন এমন রোগী ও তাঁদের স্বজনদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে যাঁদের জরুরি ভিত্তিতে সিটি স্ক্যান করা প্রয়োজন, তাঁরা পড়ছেন সবচেয়ে বেশি...
২ দিন আগেআশার কথা হলো, পরিবর্তন আসছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক যুগান্তকারী পরীক্ষায় দেখা গেছে, তীব্রভাবে চিনাবাদামের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত দুই-তৃতীয়াংশ প্রাপ্তবয়স্ককে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে চিনাবাদাম খাইয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আনা সম্ভব হয়েছে।
২ দিন আগে