মো. ইকবাল হোসেন
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের প্রধানতম হলো ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির উল্লেখযোগ্য উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের প্রতিটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন এ, ত্বক সুরক্ষায় ভিটামিন বি এবং সি, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ডি প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল এবং প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ই-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।
এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পাই। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।
শাকসবজি কাটার পরে ধোয়া
আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পরে পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন বি ও সি পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা
ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
অনেক সময় ধরে রান্না করা
শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, এগুলোর পুষ্টিগুণ তত বেশি অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ।
ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।
শাকসবজির রং বজায় রাখুন
প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পরে লাল রং, শিম রান্নার পরে সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।
কাটার পরে দ্রুত রান্না করুন
অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দিই সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় শাকসবজি কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে কেটে দ্রুত রান্না করুন।
ধারালো বঁটি বা ছুরি ব্যবহার করুন
শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি বা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটলে অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
শাকসবজি বড় টুকরা করে কাটুন
সবজি ছোট টুকরো করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে পুষ্টিগুণ বেশি নষ্ট হতে পারে। কিন্তু বড় টুকরা করে কাটলে অধিক তাপেও বড় টুকরার ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।
খোসাসহ রান্না করতে হবে
গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে।
এসব সবজির খোসাতেও অনেক ভিটামিন মিনারেল থাকে।
ভাজা করবেন না
শাকসবজি ভাজা না করে রান্না করে খেলে অধিক পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই শাকসবজি ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
লেখক: জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের প্রধানতম হলো ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির উল্লেখযোগ্য উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের প্রতিটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন এ, ত্বক সুরক্ষায় ভিটামিন বি এবং সি, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ডি প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল এবং প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ই-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।
এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পাই। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।
শাকসবজি কাটার পরে ধোয়া
আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পরে পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন বি ও সি পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা
ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
অনেক সময় ধরে রান্না করা
শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, এগুলোর পুষ্টিগুণ তত বেশি অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ।
ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।
শাকসবজির রং বজায় রাখুন
প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পরে লাল রং, শিম রান্নার পরে সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।
কাটার পরে দ্রুত রান্না করুন
অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দিই সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় শাকসবজি কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে কেটে দ্রুত রান্না করুন।
ধারালো বঁটি বা ছুরি ব্যবহার করুন
শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি বা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটলে অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
শাকসবজি বড় টুকরা করে কাটুন
সবজি ছোট টুকরো করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে পুষ্টিগুণ বেশি নষ্ট হতে পারে। কিন্তু বড় টুকরা করে কাটলে অধিক তাপেও বড় টুকরার ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।
খোসাসহ রান্না করতে হবে
গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে।
এসব সবজির খোসাতেও অনেক ভিটামিন মিনারেল থাকে।
ভাজা করবেন না
শাকসবজি ভাজা না করে রান্না করে খেলে অধিক পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই শাকসবজি ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
লেখক: জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
শরীরের ব্যথায় কখনো ভোগেনি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজের এক গবেষণা বলছে, বিশ্বে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন শরীরে ব্যথার সমস্যায় ভুগছে। তাদের কারও গিরায় ব্যথা, কারও পেশিতে, আবার কেউ হাড়ের ব্যথায় আক্রান্ত। বাংলাদেশে ব্যথার সমস্যায় ভোগা রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি।
৪ ঘণ্টা আগেদেশে গত এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এক শিশুসহ (১৩) তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই সময়ে হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছে ৩২৫ জন ডেঙ্গু রোগী।
৯ ঘণ্টা আগেহাইপোগ্লাইসিমিয়া বা রক্ত শর্করার স্বল্পতা হলো এমন একটি অবস্থা, যখন রক্তের শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায়। এ পরিমাণ হয় সাধারণত ৩ দশমিক ৯ মিলিমোলস পার লিটার বা ৭০ মিলি গ্রামস পার ডেসিলিটারের কম। এ সময় কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। সেগুলো হলো—
১৯ ঘণ্টা আগেবর্ষাকাল এলেই বাড়ে সর্দি-কাশি, জ্বরের প্রকোপ। কিন্তু শুধু এসব নয়, এ সময়ে বাড়ছে হৃদ্রোগের সমস্যাও। আগের ধারণা ছিল, হৃদ্রোগ শহরের মানুষের সমস্যা। কিন্তু এখন গ্রামেও এতে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রামীণ জীবন ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আর মানসিক চাপের কারণে বাড়ছে এই ঝুঁকি।
২০ ঘণ্টা আগে