মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

স্বাস্থ্যসেবাকে জনমুখী করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রস্তাব দিতে গঠিত সংস্কার কমিশন ওষুধের প্রাপ্যতা, চিকিৎসা শিক্ষার মান ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কমিশন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে। আজকের পত্রিকাকে কমিশনের কয়েকজন সদস্য বলেছেন, বিদ্যমান কাঠামোর অনেক কিছুই ভেঙে নতুন করে গড়া কিংবা কিছু ক্ষেত্রে কাঠামো বহাল রেখে সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা—মূলত এ দুই ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হবে।
আজকের পত্রিকা সংস্কার কমিশনের ভাবনা ও কার্যক্রমের বিষয়ে তিনজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁরা জানিয়েছেন, সংস্কার কমিশন কাজ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ছয়টি বিভাগের স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, জেলা-উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ওষুধশিল্প, বেসরকারি মেডিকেল কলেজসহ স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করেছে। মাঠপর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সীমাবদ্ধতাগুলো চিহ্নিত করা এবং সেগুলোর সমাধানের সম্ভাব্য উপায় নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার কাজ চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছে কমিশন। গত ১৮ নভেম্বর গঠিত ১২ সদস্যের এ কমিশনকে গঠনের তারিখ থেকে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কমিশনের দুজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী থেকে শুরু করে বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে কিছু অগ্রাধিকার চিহ্নিত করেছেন তাঁরা। তাঁদের বিবেচনায় প্রয়োজন, প্রাপ্যতা ও সীমাবদ্ধতাগুলো গুরুত্ব পেয়েছে। বিবেচনায় নেওয়া ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসকদের মানোন্নয়ন, স্বাস্থ্যশিক্ষা, চিকিৎসক-রোগী সুরক্ষা, ওষুধ, পুষ্টি, চিকিৎসা ব্যয়সহ প্রাসঙ্গিক সবকিছু। গত তিন দশকে যেসব সমস্যার সমাধান করা যায়নি, সেসব থেকেও পরিত্রাণের পথ খোঁজা হচ্ছে।
কমিশন প্রান্তিক মানুষের কাছে ওষুধের দুষ্প্রাপ্যতা দূর করার প্রস্তাব করবে। সুলভ মূল্যে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, সরকারি হাসপাতালের দেওয়া ওষুধের তালিকা বড় করার মতো প্রস্তাব থাকবে। এতে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের বিদ্যমান তালিকার সংস্কার প্রয়োজন হবে।কমিশনের একজন সদস্য বলেছেন, ১৯৮২ সালে প্রথম ওষুধ নীতি প্রণয়নের সময় অত্যাবশ্যকীয় তালিকায় ছিল ১৫০টি ওষুধ। তবে তালিকায় শেষ পর্যন্ত থাকে ১১৭টি। ২০০৮ সালে দুই শর বেশি ওষুধকে জরুরি ওষুধের এই তালিকায় রাখা হয়। তবে ওষুধ কোম্পানিগুলোর চাপের কারণে তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। নিয়ম অনুযায়ী, সরকার অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম নির্ধারণ করে দেয়। তাতে ওষুধগুলো সাধারণ মানুষের জন্য সুলভ হয়। এসব ওষুধে লাভ কম হওয়ায় কোম্পানিগুলো আগ্রহ দেখায় না। রোগের ধরন এবং চিকিৎসাপদ্ধতির পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কমিশন তালিকা সময়োপযোগী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কমিশন জনস্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে স্থানীয় সরকার ও সরকারের মূল স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে ‘সমন্বয়ের সেতু স্থাপন’ করার কথাও বিবেচনা করছে। বিকল্প হিসেবে নগর স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ভেঙে পুরো ব্যবস্থাই স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার কথা বলবে। কমিশনের সদস্যরা বলছেন, স্থানীয় সরকার আইনের মাধ্যমে নগর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাকে আলাদা করা হলেও সেই স্বাস্থ্যসেবার প্রায় শতভাগই নিছক কাগজে-কলমে। নগরাঞ্চলে স্থানীয় সরকারের স্বাস্থ্য অবকাঠামো নেই। তাই সাধারণ মানুষ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনেও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রতিষ্ঠানে যেতে বাধ্য হয়।
তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্ব
কমিশনের সদস্যরা বলেছেন, দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার কিছু অবকাঠামো থাকলেও সেখানে সেবার যথাযথ আয়োজন নেই। প্রতিষ্ঠানের অর্গানোগ্রামে ত্রুটি রয়েছে। ফলে প্রান্তিক পর্যায়ে সুষ্ঠু স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। কমিশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে স্বাস্থ্যসেবার প্রথম রেফারেন্স পয়েন্ট করার প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে। এর সদস্যরা এই প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা বিবেচনায় নিচ্ছেন।
চিকিৎসা শিক্ষার মান ও অন্যান্য
একাধারে চিকিৎসক-সংকটের দিকে গুরুত্ব দিয়ে এবং বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গত কয়েক দশকে সরকারি ও বেসরকারি বহুসংখ্যক মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখন বছরে অন্তত ১০ হাজার চিকিৎসক তৈরি হচ্ছেন। পর্যবেক্ষকদের মতে, এ হারে চললে কয়েক বছর পর চিকিৎসকের তুলনামূলক আধিক্যও দেখা দিতে পারে। কমিশনের একাধিক সদস্য এদিকে ইঙ্গিত করে চিকিৎসা শিক্ষার মানের ওপর জোর দিয়েছেন। তাঁরা উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, নতুন চিকিৎসকদের একটি বড় অংশ মানহীন হয়ে তৈরি হচ্ছে।
কমিশনের এক সদস্য বলেছেন, ‘চিকিৎসক তৈরির সক্ষমতার সঙ্গে মানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কার্যত পেশাটা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। অথচ চিকিৎসকের ওপর মানুষের জীবন মরণ নির্ভর করে।’
চিকিৎসা শিক্ষার ক্ষেত্রে মানের পাশাপাশি আরও দুটি বিষয় সামনে এনেছে কমিশন। এগুলো হচ্ছে চিকিৎসক তৈরির সক্ষমতা অতিরিক্ত না হওয়া নিশ্চিত করা এবং চিকিৎসকদের নিবন্ধন বিষয়ে সংস্কার আনা। ডিগ্রি পাওয়ার পর একজন চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) থেকে নিবন্ধন পান। এরপর তাঁকে পেশাগত জীবনে আর কখনো যোগ্যতা ও পেশাগত উৎকর্ষের জন্য পরীক্ষা বা যাচাইয়ের সম্মুখীন হতে হয় না। কমিশন বিএমডিসি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কয়েক বছরের বিরতিতে যোগ্যতা যাচাইয়ের ব্যবস্থা রাখার সুপারিশ করবে বলে জানিয়েছেন এক সদস্য।
অন্য কয়েকটি বিষয়
কমিশনের পর্যবেক্ষণ, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা পুরোটাই চিকিৎসককেন্দ্রিক। তারা জনকল্যাণ নিশ্চিত করতে এই ‘চিকিৎসকনির্ভর’ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা থেকে বের হওয়ার উপায় খুঁজছে। স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের বণ্টন ও পদায়ন যথাযথভাবে না হওয়ার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে কমিশন। তারা উল্লেখ করে, দেখা যায় কোনো উপজেলায় অবেদনবিদ থাকলেও শল্যচিকিৎসক নেই। আবার কোথাও শল্যচিকিৎসক থাকলেও নেই অবেদনবিদ। প্রয়োজন অনুযায়ী নেই মেডিকেল অফিসার।
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন
জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, গত কয়েক দশকে দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার প্রতিটি শাখা কার্যত ভেঙে পড়েছে। সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ছাড়া স্বাস্থ্য খাতের কোনো ক্ষেত্রকেই এককভাবে শতভাগ কার্যকর করা যাবে না। তাঁদের মতে, সংস্কার কমিশনের উচিত হবে স্বাস্থ্যের প্রতিটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তাব তৈরি করা। কোনো বিষয়ে সংস্কার এবং কোনো বিষয়ে শক্তিশালীকরণে নজর দিতে হবে।
পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশে প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কাগজে-কলমে থাকলে বাস্তবে নেই। এর সঙ্গে প্রিভেনশন (প্রতিরোধমূলক) ও প্রমোটিভ (স্বাস্থ্য শিক্ষা, সচেতনতা) স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি রয়েছে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ও পরামর্শগুলো হওয়া উচিত জনকল্যাণমুখী। তাদের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা তেমনই।’
চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসকদের মানোন্নয়ন, ওষুধ, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা, জরুরি চিকিৎসাসহ সব বিষয় কমিশন তাদের সুপারিশে তুলে ধরবে বলে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে চিকিৎসা শিক্ষার মান খুবই খারাপ। যে হারে মানহীন চিকিৎসক তৈরি করা হচ্ছে, তার নজির বিশ্বের অন্য কোথাও নেই। চিকিৎসা শিক্ষার মান ঠিক করার বিষয়টি সুপারিশে অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। বেসিক সায়েন্স শিক্ষকের সংকট সমাধানের উপায় বের করতে হবে। দেশে আর নতুন মেডিকেল কলেজের প্রয়োজন নেই।’
চিকিৎসকদের বিএমডিসির নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে পরীক্ষার প্রয়োজনের দিকে ইঙ্গিত করে অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, বহু দেশে চিকিৎসকদের প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছর পর পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়। তিনি জরুরি চিকিৎসাকে নতুন কাঠামোর মধ্যে আনা, স্বাস্থ্যবিমার ওপর গুরুত্ব দেওয়া, সাধারণ মানুষের জন্য দুরারোগ্য এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসার অর্থায়নের উপায় নিয়ে ভাবার পরামর্শ দেন।

স্বাস্থ্যসেবাকে জনমুখী করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রস্তাব দিতে গঠিত সংস্কার কমিশন ওষুধের প্রাপ্যতা, চিকিৎসা শিক্ষার মান ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কমিশন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে। আজকের পত্রিকাকে কমিশনের কয়েকজন সদস্য বলেছেন, বিদ্যমান কাঠামোর অনেক কিছুই ভেঙে নতুন করে গড়া কিংবা কিছু ক্ষেত্রে কাঠামো বহাল রেখে সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা—মূলত এ দুই ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হবে।
আজকের পত্রিকা সংস্কার কমিশনের ভাবনা ও কার্যক্রমের বিষয়ে তিনজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁরা জানিয়েছেন, সংস্কার কমিশন কাজ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ছয়টি বিভাগের স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, জেলা-উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ওষুধশিল্প, বেসরকারি মেডিকেল কলেজসহ স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করেছে। মাঠপর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সীমাবদ্ধতাগুলো চিহ্নিত করা এবং সেগুলোর সমাধানের সম্ভাব্য উপায় নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার কাজ চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছে কমিশন। গত ১৮ নভেম্বর গঠিত ১২ সদস্যের এ কমিশনকে গঠনের তারিখ থেকে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কমিশনের দুজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী থেকে শুরু করে বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে কিছু অগ্রাধিকার চিহ্নিত করেছেন তাঁরা। তাঁদের বিবেচনায় প্রয়োজন, প্রাপ্যতা ও সীমাবদ্ধতাগুলো গুরুত্ব পেয়েছে। বিবেচনায় নেওয়া ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসকদের মানোন্নয়ন, স্বাস্থ্যশিক্ষা, চিকিৎসক-রোগী সুরক্ষা, ওষুধ, পুষ্টি, চিকিৎসা ব্যয়সহ প্রাসঙ্গিক সবকিছু। গত তিন দশকে যেসব সমস্যার সমাধান করা যায়নি, সেসব থেকেও পরিত্রাণের পথ খোঁজা হচ্ছে।
কমিশন প্রান্তিক মানুষের কাছে ওষুধের দুষ্প্রাপ্যতা দূর করার প্রস্তাব করবে। সুলভ মূল্যে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, সরকারি হাসপাতালের দেওয়া ওষুধের তালিকা বড় করার মতো প্রস্তাব থাকবে। এতে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের বিদ্যমান তালিকার সংস্কার প্রয়োজন হবে।কমিশনের একজন সদস্য বলেছেন, ১৯৮২ সালে প্রথম ওষুধ নীতি প্রণয়নের সময় অত্যাবশ্যকীয় তালিকায় ছিল ১৫০টি ওষুধ। তবে তালিকায় শেষ পর্যন্ত থাকে ১১৭টি। ২০০৮ সালে দুই শর বেশি ওষুধকে জরুরি ওষুধের এই তালিকায় রাখা হয়। তবে ওষুধ কোম্পানিগুলোর চাপের কারণে তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। নিয়ম অনুযায়ী, সরকার অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম নির্ধারণ করে দেয়। তাতে ওষুধগুলো সাধারণ মানুষের জন্য সুলভ হয়। এসব ওষুধে লাভ কম হওয়ায় কোম্পানিগুলো আগ্রহ দেখায় না। রোগের ধরন এবং চিকিৎসাপদ্ধতির পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কমিশন তালিকা সময়োপযোগী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কমিশন জনস্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে স্থানীয় সরকার ও সরকারের মূল স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে ‘সমন্বয়ের সেতু স্থাপন’ করার কথাও বিবেচনা করছে। বিকল্প হিসেবে নগর স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ভেঙে পুরো ব্যবস্থাই স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার কথা বলবে। কমিশনের সদস্যরা বলছেন, স্থানীয় সরকার আইনের মাধ্যমে নগর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাকে আলাদা করা হলেও সেই স্বাস্থ্যসেবার প্রায় শতভাগই নিছক কাগজে-কলমে। নগরাঞ্চলে স্থানীয় সরকারের স্বাস্থ্য অবকাঠামো নেই। তাই সাধারণ মানুষ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনেও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রতিষ্ঠানে যেতে বাধ্য হয়।
তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্ব
কমিশনের সদস্যরা বলেছেন, দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার কিছু অবকাঠামো থাকলেও সেখানে সেবার যথাযথ আয়োজন নেই। প্রতিষ্ঠানের অর্গানোগ্রামে ত্রুটি রয়েছে। ফলে প্রান্তিক পর্যায়ে সুষ্ঠু স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। কমিশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে স্বাস্থ্যসেবার প্রথম রেফারেন্স পয়েন্ট করার প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে। এর সদস্যরা এই প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা বিবেচনায় নিচ্ছেন।
চিকিৎসা শিক্ষার মান ও অন্যান্য
একাধারে চিকিৎসক-সংকটের দিকে গুরুত্ব দিয়ে এবং বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গত কয়েক দশকে সরকারি ও বেসরকারি বহুসংখ্যক মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখন বছরে অন্তত ১০ হাজার চিকিৎসক তৈরি হচ্ছেন। পর্যবেক্ষকদের মতে, এ হারে চললে কয়েক বছর পর চিকিৎসকের তুলনামূলক আধিক্যও দেখা দিতে পারে। কমিশনের একাধিক সদস্য এদিকে ইঙ্গিত করে চিকিৎসা শিক্ষার মানের ওপর জোর দিয়েছেন। তাঁরা উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, নতুন চিকিৎসকদের একটি বড় অংশ মানহীন হয়ে তৈরি হচ্ছে।
কমিশনের এক সদস্য বলেছেন, ‘চিকিৎসক তৈরির সক্ষমতার সঙ্গে মানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কার্যত পেশাটা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। অথচ চিকিৎসকের ওপর মানুষের জীবন মরণ নির্ভর করে।’
চিকিৎসা শিক্ষার ক্ষেত্রে মানের পাশাপাশি আরও দুটি বিষয় সামনে এনেছে কমিশন। এগুলো হচ্ছে চিকিৎসক তৈরির সক্ষমতা অতিরিক্ত না হওয়া নিশ্চিত করা এবং চিকিৎসকদের নিবন্ধন বিষয়ে সংস্কার আনা। ডিগ্রি পাওয়ার পর একজন চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) থেকে নিবন্ধন পান। এরপর তাঁকে পেশাগত জীবনে আর কখনো যোগ্যতা ও পেশাগত উৎকর্ষের জন্য পরীক্ষা বা যাচাইয়ের সম্মুখীন হতে হয় না। কমিশন বিএমডিসি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কয়েক বছরের বিরতিতে যোগ্যতা যাচাইয়ের ব্যবস্থা রাখার সুপারিশ করবে বলে জানিয়েছেন এক সদস্য।
অন্য কয়েকটি বিষয়
কমিশনের পর্যবেক্ষণ, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা পুরোটাই চিকিৎসককেন্দ্রিক। তারা জনকল্যাণ নিশ্চিত করতে এই ‘চিকিৎসকনির্ভর’ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা থেকে বের হওয়ার উপায় খুঁজছে। স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের বণ্টন ও পদায়ন যথাযথভাবে না হওয়ার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে কমিশন। তারা উল্লেখ করে, দেখা যায় কোনো উপজেলায় অবেদনবিদ থাকলেও শল্যচিকিৎসক নেই। আবার কোথাও শল্যচিকিৎসক থাকলেও নেই অবেদনবিদ। প্রয়োজন অনুযায়ী নেই মেডিকেল অফিসার।
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন
জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, গত কয়েক দশকে দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার প্রতিটি শাখা কার্যত ভেঙে পড়েছে। সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ছাড়া স্বাস্থ্য খাতের কোনো ক্ষেত্রকেই এককভাবে শতভাগ কার্যকর করা যাবে না। তাঁদের মতে, সংস্কার কমিশনের উচিত হবে স্বাস্থ্যের প্রতিটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তাব তৈরি করা। কোনো বিষয়ে সংস্কার এবং কোনো বিষয়ে শক্তিশালীকরণে নজর দিতে হবে।
পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশে প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কাগজে-কলমে থাকলে বাস্তবে নেই। এর সঙ্গে প্রিভেনশন (প্রতিরোধমূলক) ও প্রমোটিভ (স্বাস্থ্য শিক্ষা, সচেতনতা) স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি রয়েছে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ও পরামর্শগুলো হওয়া উচিত জনকল্যাণমুখী। তাদের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা তেমনই।’
চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসকদের মানোন্নয়ন, ওষুধ, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা, জরুরি চিকিৎসাসহ সব বিষয় কমিশন তাদের সুপারিশে তুলে ধরবে বলে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে চিকিৎসা শিক্ষার মান খুবই খারাপ। যে হারে মানহীন চিকিৎসক তৈরি করা হচ্ছে, তার নজির বিশ্বের অন্য কোথাও নেই। চিকিৎসা শিক্ষার মান ঠিক করার বিষয়টি সুপারিশে অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। বেসিক সায়েন্স শিক্ষকের সংকট সমাধানের উপায় বের করতে হবে। দেশে আর নতুন মেডিকেল কলেজের প্রয়োজন নেই।’
চিকিৎসকদের বিএমডিসির নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে পরীক্ষার প্রয়োজনের দিকে ইঙ্গিত করে অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, বহু দেশে চিকিৎসকদের প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছর পর পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়। তিনি জরুরি চিকিৎসাকে নতুন কাঠামোর মধ্যে আনা, স্বাস্থ্যবিমার ওপর গুরুত্ব দেওয়া, সাধারণ মানুষের জন্য দুরারোগ্য এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসার অর্থায়নের উপায় নিয়ে ভাবার পরামর্শ দেন।

দেশে প্রতিবছর স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, পক্ষাঘাতগ্রস্ত কিংবা শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে শুধু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এসব রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারছে না। মেডিসিনের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে তাদের সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
৬ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ফিলিপ মরিসের ‘নিকোটিন পাউচ’ তৈরির কারখানা স্থাপনের অনুমোদন বাতিলের দাবি জানিয়েছে নারী মৈত্রী। এ সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকারের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়াসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেছে তারা। একই সঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী ....
৭ ঘণ্টা আগে
দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী। আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ
১১ ঘণ্টা আগে
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আমাদের সুস্থ রাখার জন্য তৈরি হলেও, কখনো কখনো এই প্রতিরক্ষা ব্যূহই ‘বিশ্বাসঘাতক’ হয়ে ওঠে। যখন এই ব্যবস্থা ভুলবশত শরীরের নিজস্ব কোষ ও কলার ওপর আক্রমণ শুরু করে দেয়, তখন তাকে ‘অটোইমিউন রোগ’ বলা হয়। এই রোগ বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে। এর প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে।
১২ ঘণ্টা আগেজাতীয় ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবস
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে প্রতিবছর স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, পক্ষাঘাতগ্রস্ত কিংবা শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে শুধু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এসব রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারছে না। মেডিসিনের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে তাদের সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটি অব ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের গড় আয়ু বাড়ছে। ব্যথা-বেদনায় কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এতে শুধু ওষুধ দিয়ে কাজ হবে না। তিনটা রোগে ৭০ শতাংশ মানুষ মারা যায়। স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ও ক্রনিক ডিজিজ। এসবের সঠিক চিকিৎসাপদ্ধতি নির্ধারণ করতে পারলে রোগীকে আবার স্বনির্ভর ও কার্যকর জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’
মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন আরও বলেন, ‘ইউএন বলছে, বাংলাদেশে প্রতি সাতজনে একজনের মধ্যে কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। আমরা চাই, যে প্রতিষ্ঠানে এমন রোগীদের চিকিৎসা হবে, সেই একই প্রতিষ্ঠানে তাকে ফিজিওথেরাপি দিয়ে একেবারে সুস্থ করে বাড়ি ফিরতে দেওয়া হবে।’
মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে রিহ্যাবিলিটেশন নার্স তৈরি করা হবে—এমন কোনো কোর্সই নেই। শুধু চিকিৎসক থাকলে হবে না, ফিজিওথেরাপিস্ট থাকতে হবে। রিহ্যাবিলিটেশন নার্স তৈরি করতে হবে। এর জন্য আইন, পলিসি ও গভর্ন্যান্স দরকার। প্রত্যেক মানুষেরই এখন কোনো না কোনো সমস্যা থাকে, যা ফিজিওথেরাপির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সমন্বিত পুনর্বাসনে চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা’। দিবসটি উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে এম এ কে আজাদ বলেন, একটি দেশ তখনই প্রকৃত অর্থে উন্নত দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়, যখন সেখানে প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা কম, প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধের সব ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকে এবং যেসব ব্যক্তি প্রতিবন্ধী, তাঁদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্ণ সহায়তা ও সুযোগ নিশ্চিত করা হয়।
এ ছাড়া তিনি দেশের প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন ইউনিটকে শক্তিশালী করা; পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রিহ্যাবিলিটেশন জনবল নিয়োগ এবং জনসচেতনতা বাড়ানো; বিদ্যমান আইনকে কার্যকর, নতুন আইন প্রণয়ন ও নীতিমালা বাস্তবায়নে তৎপরতা বাড়ানো; সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, জেলা-উপজেলা প্রশাসন, এসএনজিও ও সিভিল সোসাইটির একসঙ্গে কাজ করা এবং স্কুল, কলেজ, কর্মক্ষেত্র, সড়ক-পরিবহন ইত্যাদি সর্বত্র প্রতিবন্ধীবান্ধব ইউনিভার্সাল ডিজাইনের মান মেনে তৈরির দাবি জানান।

দেশে প্রতিবছর স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, পক্ষাঘাতগ্রস্ত কিংবা শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে শুধু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এসব রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারছে না। মেডিসিনের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে তাদের সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটি অব ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের গড় আয়ু বাড়ছে। ব্যথা-বেদনায় কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এতে শুধু ওষুধ দিয়ে কাজ হবে না। তিনটা রোগে ৭০ শতাংশ মানুষ মারা যায়। স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ও ক্রনিক ডিজিজ। এসবের সঠিক চিকিৎসাপদ্ধতি নির্ধারণ করতে পারলে রোগীকে আবার স্বনির্ভর ও কার্যকর জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’
মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন আরও বলেন, ‘ইউএন বলছে, বাংলাদেশে প্রতি সাতজনে একজনের মধ্যে কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। আমরা চাই, যে প্রতিষ্ঠানে এমন রোগীদের চিকিৎসা হবে, সেই একই প্রতিষ্ঠানে তাকে ফিজিওথেরাপি দিয়ে একেবারে সুস্থ করে বাড়ি ফিরতে দেওয়া হবে।’
মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে রিহ্যাবিলিটেশন নার্স তৈরি করা হবে—এমন কোনো কোর্সই নেই। শুধু চিকিৎসক থাকলে হবে না, ফিজিওথেরাপিস্ট থাকতে হবে। রিহ্যাবিলিটেশন নার্স তৈরি করতে হবে। এর জন্য আইন, পলিসি ও গভর্ন্যান্স দরকার। প্রত্যেক মানুষেরই এখন কোনো না কোনো সমস্যা থাকে, যা ফিজিওথেরাপির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সমন্বিত পুনর্বাসনে চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা’। দিবসটি উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে এম এ কে আজাদ বলেন, একটি দেশ তখনই প্রকৃত অর্থে উন্নত দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়, যখন সেখানে প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা কম, প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধের সব ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকে এবং যেসব ব্যক্তি প্রতিবন্ধী, তাঁদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্ণ সহায়তা ও সুযোগ নিশ্চিত করা হয়।
এ ছাড়া তিনি দেশের প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন ইউনিটকে শক্তিশালী করা; পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রিহ্যাবিলিটেশন জনবল নিয়োগ এবং জনসচেতনতা বাড়ানো; বিদ্যমান আইনকে কার্যকর, নতুন আইন প্রণয়ন ও নীতিমালা বাস্তবায়নে তৎপরতা বাড়ানো; সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, জেলা-উপজেলা প্রশাসন, এসএনজিও ও সিভিল সোসাইটির একসঙ্গে কাজ করা এবং স্কুল, কলেজ, কর্মক্ষেত্র, সড়ক-পরিবহন ইত্যাদি সর্বত্র প্রতিবন্ধীবান্ধব ইউনিভার্সাল ডিজাইনের মান মেনে তৈরির দাবি জানান।

স্বাস্থ্যসেবাকে জনমুখী করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রস্তাব দিতে গঠিত সংস্কার কমিশন ওষুধের প্রাপ্যতা, চিকিৎসা শিক্ষার মান ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কমিশন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে।
২৭ জানুয়ারি ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ফিলিপ মরিসের ‘নিকোটিন পাউচ’ তৈরির কারখানা স্থাপনের অনুমোদন বাতিলের দাবি জানিয়েছে নারী মৈত্রী। এ সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকারের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়াসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেছে তারা। একই সঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী ....
৭ ঘণ্টা আগে
দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী। আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ
১১ ঘণ্টা আগে
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আমাদের সুস্থ রাখার জন্য তৈরি হলেও, কখনো কখনো এই প্রতিরক্ষা ব্যূহই ‘বিশ্বাসঘাতক’ হয়ে ওঠে। যখন এই ব্যবস্থা ভুলবশত শরীরের নিজস্ব কোষ ও কলার ওপর আক্রমণ শুরু করে দেয়, তখন তাকে ‘অটোইমিউন রোগ’ বলা হয়। এই রোগ বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে। এর প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ফিলিপ মরিসের ‘নিকোটিন পাউচ’ তৈরির কারখানা স্থাপনের অনুমোদন বাতিলের দাবি জানিয়েছে নারী মৈত্রী। এ সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকারের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়াসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেছে তারা। একই সঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী অবিলম্বে পাস করার দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে নারী মৈত্রী আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি মাসুমা আলম।
সংবাদ সম্মেলনে মাসুমা আলম বলেন, বিশ্বের বহু দেশ জনস্বাস্থ্যের হুমকি বিবেচনায় নিকোটিন পাউচ নিষিদ্ধ করেছে। ঠিক এমন সময়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ফিলিপ মরিসকে দেশে নিকোটিন পাউচ উৎপাদনে কারখানা স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে। এটি দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। তাই জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই অনুমোদন বাতিল করতে হবে।
মাসুমা আলম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (এফসিটিসি) চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী হলেও এখনো তামাক নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাস হলে এফসিটিসির মানদণ্ড অনুযায়ী আইনটি শক্তিশালী হবে এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তা হবে এক বড় পদক্ষেপ। তাই আমি বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাস করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
উইমেন জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি ফাহমিদা আহমেদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় দেশে ই-সিগারেট বা ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম (এন্ডস) যন্ত্র ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের কারখানা স্থাপনের অনুমতি প্রদান না করার নির্দেশনা দেওয়ার পরও এই নিকোটিন পাউচ কারখানা স্থাপনের অনুমোদন সরকারের নীতি ও সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের লঙ্ঘন। এটি দেশের তরুণ, নারী ও শিশুর স্বাস্থ্যকে আরও ঝুঁকির মুখে ফেলবে।
হেলথ রিপোটার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বী বলেন, সমাজ বদলের অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষমতায় আসীন হয়ে নীতিনির্ধারকেরা যখন নিকোটিন পাউচের মতো জীবনঘাতী পণ্য উৎপাদনের অনুমোদন দেয়, তখন সেটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়। এই প্রতারণার দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারকে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
উইমেন জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক লাবিন রহমান বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের ত্যাগে যে বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন আমরা দেখছি, তা ধূলিস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে। নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমোদন দিয়ে সরকার অনেক নিন্দনীয় কাজ করেছে। আমি অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করার আহ্বান জানাই।’
নারী মৈত্রী ইয়ুথ ফোরামের সদস্য আশরাফিয়া জান্নাত বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এখনো নিকোটিন পাউচকে চিকিৎসাগত বা নিরাপদ পণ্য হিসেবে অনুমোদন দেয়নি। বরং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এটিকে অন্যান্য তামাকজাত পণ্যের মতো ক্ষতিকর বিবেচনা করছে। সেখানে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া মানে জেনেবুঝে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করা। এই ক্ষতি করার অধিকার কারোরই নেই।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি এসআরও জারির মাধ্যমে ই-সিগারেট বা ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেমসংশ্লিষ্ট সব পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপর মে মাসে দেশে ই-সিগারেট বা ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম (এন্ডস) যন্ত্র ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের কারখানা স্থাপনের অনুমতি প্রদান না করার নির্দেশনা দেয় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। সেই নির্দেশনা লঙ্ঘন করে বৈশ্বিক তামাক কোম্পানি ফিলিপ মরিসকে ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জে নিকোটিন পাউচ উৎপাদনে কারখানা স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে বেজা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নারী মৈত্রী টিচার্স ফোরাম অ্যাগেইনস্ট টোব্যাকো, নারী মৈত্রী মাদারস ফোরাম অ্যাগেইনস্ট টোব্যাকো ও নারী মৈত্রী ইয়ুথ ফোরাম অ্যাগেইনস্ট টোব্যাকোর সদস্যরা।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ফিলিপ মরিসের ‘নিকোটিন পাউচ’ তৈরির কারখানা স্থাপনের অনুমোদন বাতিলের দাবি জানিয়েছে নারী মৈত্রী। এ সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকারের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়াসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেছে তারা। একই সঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী অবিলম্বে পাস করার দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে নারী মৈত্রী আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি মাসুমা আলম।
সংবাদ সম্মেলনে মাসুমা আলম বলেন, বিশ্বের বহু দেশ জনস্বাস্থ্যের হুমকি বিবেচনায় নিকোটিন পাউচ নিষিদ্ধ করেছে। ঠিক এমন সময়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ফিলিপ মরিসকে দেশে নিকোটিন পাউচ উৎপাদনে কারখানা স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে। এটি দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। তাই জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই অনুমোদন বাতিল করতে হবে।
মাসুমা আলম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (এফসিটিসি) চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী হলেও এখনো তামাক নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাস হলে এফসিটিসির মানদণ্ড অনুযায়ী আইনটি শক্তিশালী হবে এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তা হবে এক বড় পদক্ষেপ। তাই আমি বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাস করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
উইমেন জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি ফাহমিদা আহমেদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় দেশে ই-সিগারেট বা ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম (এন্ডস) যন্ত্র ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের কারখানা স্থাপনের অনুমতি প্রদান না করার নির্দেশনা দেওয়ার পরও এই নিকোটিন পাউচ কারখানা স্থাপনের অনুমোদন সরকারের নীতি ও সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের লঙ্ঘন। এটি দেশের তরুণ, নারী ও শিশুর স্বাস্থ্যকে আরও ঝুঁকির মুখে ফেলবে।
হেলথ রিপোটার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বী বলেন, সমাজ বদলের অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষমতায় আসীন হয়ে নীতিনির্ধারকেরা যখন নিকোটিন পাউচের মতো জীবনঘাতী পণ্য উৎপাদনের অনুমোদন দেয়, তখন সেটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়। এই প্রতারণার দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারকে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
উইমেন জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক লাবিন রহমান বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের ত্যাগে যে বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন আমরা দেখছি, তা ধূলিস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে। নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমোদন দিয়ে সরকার অনেক নিন্দনীয় কাজ করেছে। আমি অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করার আহ্বান জানাই।’
নারী মৈত্রী ইয়ুথ ফোরামের সদস্য আশরাফিয়া জান্নাত বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এখনো নিকোটিন পাউচকে চিকিৎসাগত বা নিরাপদ পণ্য হিসেবে অনুমোদন দেয়নি। বরং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এটিকে অন্যান্য তামাকজাত পণ্যের মতো ক্ষতিকর বিবেচনা করছে। সেখানে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া মানে জেনেবুঝে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করা। এই ক্ষতি করার অধিকার কারোরই নেই।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি এসআরও জারির মাধ্যমে ই-সিগারেট বা ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেমসংশ্লিষ্ট সব পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপর মে মাসে দেশে ই-সিগারেট বা ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম (এন্ডস) যন্ত্র ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের কারখানা স্থাপনের অনুমতি প্রদান না করার নির্দেশনা দেয় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। সেই নির্দেশনা লঙ্ঘন করে বৈশ্বিক তামাক কোম্পানি ফিলিপ মরিসকে ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জে নিকোটিন পাউচ উৎপাদনে কারখানা স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে বেজা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নারী মৈত্রী টিচার্স ফোরাম অ্যাগেইনস্ট টোব্যাকো, নারী মৈত্রী মাদারস ফোরাম অ্যাগেইনস্ট টোব্যাকো ও নারী মৈত্রী ইয়ুথ ফোরাম অ্যাগেইনস্ট টোব্যাকোর সদস্যরা।

স্বাস্থ্যসেবাকে জনমুখী করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রস্তাব দিতে গঠিত সংস্কার কমিশন ওষুধের প্রাপ্যতা, চিকিৎসা শিক্ষার মান ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কমিশন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে।
২৭ জানুয়ারি ২০২৫
দেশে প্রতিবছর স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, পক্ষাঘাতগ্রস্ত কিংবা শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে শুধু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এসব রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারছে না। মেডিসিনের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে তাদের সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
৬ ঘণ্টা আগে
দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী। আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ
১১ ঘণ্টা আগে
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আমাদের সুস্থ রাখার জন্য তৈরি হলেও, কখনো কখনো এই প্রতিরক্ষা ব্যূহই ‘বিশ্বাসঘাতক’ হয়ে ওঠে। যখন এই ব্যবস্থা ভুলবশত শরীরের নিজস্ব কোষ ও কলার ওপর আক্রমণ শুরু করে দেয়, তখন তাকে ‘অটোইমিউন রোগ’ বলা হয়। এই রোগ বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে। এর প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে।
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী।
আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৭৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৫, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২২৩, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৫৪, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৩৪, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৯, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮২, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৭৭ হাজার ৯৮৯ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
চলতি বছরের ১২ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১ হাজার ৭৭৩ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও দুজন নারী।

দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী।
আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৭৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৫, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২২৩, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৫৪, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৩৪, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৯, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮২, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৭৭ হাজার ৯৮৯ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
চলতি বছরের ১২ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১ হাজার ৭৭৩ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও দুজন নারী।

স্বাস্থ্যসেবাকে জনমুখী করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রস্তাব দিতে গঠিত সংস্কার কমিশন ওষুধের প্রাপ্যতা, চিকিৎসা শিক্ষার মান ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কমিশন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে।
২৭ জানুয়ারি ২০২৫
দেশে প্রতিবছর স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, পক্ষাঘাতগ্রস্ত কিংবা শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে শুধু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এসব রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারছে না। মেডিসিনের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে তাদের সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
৬ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ফিলিপ মরিসের ‘নিকোটিন পাউচ’ তৈরির কারখানা স্থাপনের অনুমোদন বাতিলের দাবি জানিয়েছে নারী মৈত্রী। এ সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকারের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়াসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেছে তারা। একই সঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী ....
৭ ঘণ্টা আগে
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আমাদের সুস্থ রাখার জন্য তৈরি হলেও, কখনো কখনো এই প্রতিরক্ষা ব্যূহই ‘বিশ্বাসঘাতক’ হয়ে ওঠে। যখন এই ব্যবস্থা ভুলবশত শরীরের নিজস্ব কোষ ও কলার ওপর আক্রমণ শুরু করে দেয়, তখন তাকে ‘অটোইমিউন রোগ’ বলা হয়। এই রোগ বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে। এর প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে।
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আমাদের সুস্থ রাখার জন্য তৈরি হলেও, কখনো কখনো এই প্রতিরক্ষা ব্যূহই ‘বিশ্বাসঘাতক’ হয়ে ওঠে। যখন এই ব্যবস্থা ভুলবশত শরীরের নিজস্ব কোষ ও কলার ওপর আক্রমণ শুরু করে দেয়, তখন তাকে ‘অটোইমিউন রোগ’ বলা হয়। এই রোগ বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে। এর প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে।
শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গকেই এই রোগ প্রভাবিত করতে পারে। যদিও নারীদের মধ্যে এর প্রবণতা চার গুণেরও বেশি। তবে শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক—যেকোনো বয়সী ব্যক্তিই এই রোগের শিকার হতে পারেন।
বর্তমানে অটোইমিউন রোগের চিকিৎসায় এক নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনকার গবেষণা শুধু রোগের লক্ষণ কমানোর পরিবর্তে, বিদ্রোহী হয়ে ওঠা ইমিউন সিস্টেমকে পুনরায় প্রোগ্রাম করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে।
নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ল্যাংগোন হেলথ-এর রিউমাটোলজিস্ট ড. অমিত সাক্সেনা এই সময়কে ‘অটোইমিউন গবেষণার জন্য সবচেয়ে উৎসাহব্যঞ্জক সময়’ বলে অভিহিত করেছেন। বর্তমানে লুপাস, মায়োসাইটিস-সহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় এই নতুন পদ্ধতিগুলোর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে এবং কিছু প্রাথমিক সাফল্যও দেখা গেছে। এ ছাড়া, গবেষকেরা টাইপ-১ ডায়াবেটিসের মতো রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার আগেই তা বিলম্বিত করার পথ খুঁজছেন।
অটোইমিউন রোগের প্রকৃতি
অটোইমিউন রোগগুলো সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয়। এর তীব্রতা হালকা থেকে মারাত্মক হতে পারে। এ ধরনের রোগের সংখ্যা ১০০ টিরও বেশি। এগুলো কোনো একটি শরীরের কোথায় এবং কীভাবে ক্ষতি করছে তার ওপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত।
যেমন, রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস গাঁটে আক্রমণ করে। সজোগ্রেনস রোগের প্রধান লক্ষণ চোখ ও মুখ শুকিয়ে যাওয়া। লুপাসের উপসর্গগুলো অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়—যার মধ্যে মুখমণ্ডলে প্রজাপতি-আকৃতির ফুসকুড়ি, গাঁটে ব্যথা এবং কিডনি, ফুসফুস ও হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি অন্যতম।
এই রোগগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, রোগী দীর্ঘকাল ভালো থাকার পরেও হঠাৎ করেই কোনো আপাত কারণ ছাড়াই রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
রোগ নির্ণয় কেন এত কঠিন?
এই রোগগুলো নির্ণয় করা কঠিন কারণ এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো প্রায়শই অস্পষ্ট হয়। লক্ষণগুলো অন্য অনেক সাধারণ অসুস্থতার সঙ্গে মিলে যায়। অনেক ক্ষেত্রে সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য বেশ কয়েকটি রক্ত পরীক্ষা এবং একাধিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে বছরখানেক সময় লেগে যেতে পারে।
কারণ ও ঝুঁকি
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই রোগগুলোর প্রধান কারণ কোনো একটি নির্দিষ্ট জিনগত ত্রুটি নয়। বরং, ইমিউন ফাংশনকে প্রভাবিত করে এমন একাধিক জিনের কারণে মানুষ সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। এরপর একটি ‘পরিবেশগত ট্রিগার’—যেমন কোনো সংক্রমণ, ধূমপান বা দূষণ—রোগটিকে সক্রিয় করে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, এপস্টাইন-বার ভাইরাস মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস (এমএস)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত।
নারীদের ঝুঁকি বেশি
অটোইমিউন রোগীদের প্রায় ৮০ শতাংশই নারী। বিজ্ঞানীদের ধারণা, হরমোন এবং নারীদের দুটি এক্স ক্রোমোজোম সংক্রান্ত কিছু অস্বাভাবিকতার কারণে নারীরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন। তবে পুরুষেরাও এই রোগে ভোগেন। যেমন, ভেক্সাস সিনড্রোম নামক একটি গুরুতর রোগ ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়।
চিকিৎসা পদ্ধতি ও খরচ
বিনিয়োগ গবেষণা সংস্থা মর্নিংস্টার অনুসারে, অটোইমিউন রোগের চিকিৎসার বৈশ্বিক বাজার বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। চিকিৎসা সাধারণত ব্যয়বহুল এবং জীবনভর চলতে থাকে।
অল্প কিছুদিন আগেও এই রোগগুলোর চিকিৎসার জন্য উচ্চ-ডোজের স্টেরয়েড এবং ব্যাপক ইমিউন-দমনকারী ওষুধ ব্যবহার করা হতো, যার ফলে সংক্রমণ বা ক্যানসারের মতো মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি ছিল। বর্তমানে নতুন কিছু ওষুধ এসেছে যা নির্দিষ্ট অণুগুলোকে লক্ষ্য করে কাজ করে, ফলে এটি কিছুটা কম ক্ষতিকারক। তবে এখনো অনেক অটোইমিউন রোগের ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা খুঁজে পেতে ‘ট্রায়াল অ্যান্ড এরর’ বা বারবার পরীক্ষা করার পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়।
তথ্যসূত্র: এপি

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আমাদের সুস্থ রাখার জন্য তৈরি হলেও, কখনো কখনো এই প্রতিরক্ষা ব্যূহই ‘বিশ্বাসঘাতক’ হয়ে ওঠে। যখন এই ব্যবস্থা ভুলবশত শরীরের নিজস্ব কোষ ও কলার ওপর আক্রমণ শুরু করে দেয়, তখন তাকে ‘অটোইমিউন রোগ’ বলা হয়। এই রোগ বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে। এর প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে।
শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গকেই এই রোগ প্রভাবিত করতে পারে। যদিও নারীদের মধ্যে এর প্রবণতা চার গুণেরও বেশি। তবে শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক—যেকোনো বয়সী ব্যক্তিই এই রোগের শিকার হতে পারেন।
বর্তমানে অটোইমিউন রোগের চিকিৎসায় এক নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনকার গবেষণা শুধু রোগের লক্ষণ কমানোর পরিবর্তে, বিদ্রোহী হয়ে ওঠা ইমিউন সিস্টেমকে পুনরায় প্রোগ্রাম করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে।
নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ল্যাংগোন হেলথ-এর রিউমাটোলজিস্ট ড. অমিত সাক্সেনা এই সময়কে ‘অটোইমিউন গবেষণার জন্য সবচেয়ে উৎসাহব্যঞ্জক সময়’ বলে অভিহিত করেছেন। বর্তমানে লুপাস, মায়োসাইটিস-সহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় এই নতুন পদ্ধতিগুলোর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে এবং কিছু প্রাথমিক সাফল্যও দেখা গেছে। এ ছাড়া, গবেষকেরা টাইপ-১ ডায়াবেটিসের মতো রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার আগেই তা বিলম্বিত করার পথ খুঁজছেন।
অটোইমিউন রোগের প্রকৃতি
অটোইমিউন রোগগুলো সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয়। এর তীব্রতা হালকা থেকে মারাত্মক হতে পারে। এ ধরনের রোগের সংখ্যা ১০০ টিরও বেশি। এগুলো কোনো একটি শরীরের কোথায় এবং কীভাবে ক্ষতি করছে তার ওপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত।
যেমন, রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস গাঁটে আক্রমণ করে। সজোগ্রেনস রোগের প্রধান লক্ষণ চোখ ও মুখ শুকিয়ে যাওয়া। লুপাসের উপসর্গগুলো অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়—যার মধ্যে মুখমণ্ডলে প্রজাপতি-আকৃতির ফুসকুড়ি, গাঁটে ব্যথা এবং কিডনি, ফুসফুস ও হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি অন্যতম।
এই রোগগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, রোগী দীর্ঘকাল ভালো থাকার পরেও হঠাৎ করেই কোনো আপাত কারণ ছাড়াই রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
রোগ নির্ণয় কেন এত কঠিন?
এই রোগগুলো নির্ণয় করা কঠিন কারণ এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো প্রায়শই অস্পষ্ট হয়। লক্ষণগুলো অন্য অনেক সাধারণ অসুস্থতার সঙ্গে মিলে যায়। অনেক ক্ষেত্রে সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য বেশ কয়েকটি রক্ত পরীক্ষা এবং একাধিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে বছরখানেক সময় লেগে যেতে পারে।
কারণ ও ঝুঁকি
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই রোগগুলোর প্রধান কারণ কোনো একটি নির্দিষ্ট জিনগত ত্রুটি নয়। বরং, ইমিউন ফাংশনকে প্রভাবিত করে এমন একাধিক জিনের কারণে মানুষ সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। এরপর একটি ‘পরিবেশগত ট্রিগার’—যেমন কোনো সংক্রমণ, ধূমপান বা দূষণ—রোগটিকে সক্রিয় করে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, এপস্টাইন-বার ভাইরাস মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস (এমএস)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত।
নারীদের ঝুঁকি বেশি
অটোইমিউন রোগীদের প্রায় ৮০ শতাংশই নারী। বিজ্ঞানীদের ধারণা, হরমোন এবং নারীদের দুটি এক্স ক্রোমোজোম সংক্রান্ত কিছু অস্বাভাবিকতার কারণে নারীরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন। তবে পুরুষেরাও এই রোগে ভোগেন। যেমন, ভেক্সাস সিনড্রোম নামক একটি গুরুতর রোগ ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়।
চিকিৎসা পদ্ধতি ও খরচ
বিনিয়োগ গবেষণা সংস্থা মর্নিংস্টার অনুসারে, অটোইমিউন রোগের চিকিৎসার বৈশ্বিক বাজার বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। চিকিৎসা সাধারণত ব্যয়বহুল এবং জীবনভর চলতে থাকে।
অল্প কিছুদিন আগেও এই রোগগুলোর চিকিৎসার জন্য উচ্চ-ডোজের স্টেরয়েড এবং ব্যাপক ইমিউন-দমনকারী ওষুধ ব্যবহার করা হতো, যার ফলে সংক্রমণ বা ক্যানসারের মতো মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি ছিল। বর্তমানে নতুন কিছু ওষুধ এসেছে যা নির্দিষ্ট অণুগুলোকে লক্ষ্য করে কাজ করে, ফলে এটি কিছুটা কম ক্ষতিকারক। তবে এখনো অনেক অটোইমিউন রোগের ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা খুঁজে পেতে ‘ট্রায়াল অ্যান্ড এরর’ বা বারবার পরীক্ষা করার পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়।
তথ্যসূত্র: এপি

স্বাস্থ্যসেবাকে জনমুখী করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রস্তাব দিতে গঠিত সংস্কার কমিশন ওষুধের প্রাপ্যতা, চিকিৎসা শিক্ষার মান ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কমিশন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে।
২৭ জানুয়ারি ২০২৫
দেশে প্রতিবছর স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, পক্ষাঘাতগ্রস্ত কিংবা শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে শুধু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এসব রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারছে না। মেডিসিনের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে তাদের সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
৬ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ফিলিপ মরিসের ‘নিকোটিন পাউচ’ তৈরির কারখানা স্থাপনের অনুমোদন বাতিলের দাবি জানিয়েছে নারী মৈত্রী। এ সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকারের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়াসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেছে তারা। একই সঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী ....
৭ ঘণ্টা আগে
দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী। আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ
১১ ঘণ্টা আগে