Ajker Patrika

ফ্যাক্টচেক /জরায়ু ক্যানসারের ‘বিষাক্ত’ টিকা নিয়ে ভোলায় বহু শিক্ষার্থী অসুস্থ— দাবিটি সঠিক নয়

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৭: ১৪
জরায়ু ক্যানসারের ‘বিষাক্ত’ টিকা নিয়ে ভোলায় বহু শিক্ষার্থী অসুস্থ— দাবিটি সঠিক নয়

জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে কিশোরীদের গত বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছরও টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) থেকে ঢাকা বাদে সাতটি বিভাগে স্কুল ও স্কুলের বাইরে বিনা মূল্যে এক ডোজ হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ভোলার বোরহানউদ্দিনে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি চলাকালে অর্ধশত স্কুলছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, এ শিক্ষার্থীদের দেওয়া টিকাগুলো ‘বিষাক্ত’ ছিল। এর প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা

গতকাল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় ‘পুতুল জয় পরিষদ TNT’ নামের একটি পেজ থেকে এই দাবিতে ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। ভিডিওটি আজ বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত শেয়ার হয়েছে ৩ শতাধিক ও রিয়েকশন পড়েছে ৬ শতাধিক। ভিডিওটি দেখা হয়েছে ২৪ হাজারের বেশি। এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে ভিডিওটি ছড়ানো হচ্ছে।

ভোলায় জরায়ু ক্যানসারের ‘বিষাক্ত’ ভ্যাকসিনের প্রভাবে শিক্ষার্থী অসুস্থ হওয়ার দাবি। ছবি: ফেসবুক
ভোলায় জরায়ু ক্যানসারের ‘বিষাক্ত’ ভ্যাকসিনের প্রভাবে শিক্ষার্থী অসুস্থ হওয়ার দাবি। ছবি: ফেসবুক

দাবিটির সত্যতা যাচাই করে দেখেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।

আজকের পত্রিকার ভোলা প্রতিনিধি ও অন্য সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বোরহানগঞ্জ জ্ঞানদা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গতকাল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) ১৬২ ছাত্রীকে বিনা মূল্যে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়। টিকা নেওয়ার পর এক শিক্ষার্থী আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিক্ষক ও অভিভাবকেরা তাকে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ ঘটনার পর একের পর এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাত–পা জ্বালাপোড়া, বমিভাব, মাথা ব্যথা ও মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়।

এ অসুস্থতা কী ‘বিষাক্ত’ টিকার কারণে?

এ বিষয়ে জানতে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ যোগাযোগ করে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নিরুপম সরকার সোহাগের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন খারাপের কোনো ইস্যু ছিল না। প্রত্যেকটা ভ্যাকসিনের এক্সপায়ারি ডেট আছে এবং সবকিছুই ঠিক আছে। এসব ভ্যাকসিন বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসে। এরপর সরকার বিভিন্ন উপজেলায় পাঠায়। আমাদের এখানে যে ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে, সেটা তো একই বক্সের। তাই একটা খারাপ হবে আরেকটা ভালো হবে— বিষয়টা এমন না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ওখানে ২৭২ জনকে দেওয়ার কথা ছিল। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৬২ জনকে দেওয়া হয়। এদের মধ্যে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং একটা বাচ্চা কান্নাকাটি শুরু করে। পরে আরও একটা বাচ্চা কান্নাকাটি শুরু করে এবং আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এটি হয়েছে মূলত আতঙ্কের কারণে, ভ্যাকসিনের কারণে না। গত সাত–আট মাস আগেও ভোলায় এমন প্যানিক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছিল।’

হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গতকাল যাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তারা রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যেই বাসায় চলে গেছে। আমরা মোট ৫৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলাম। এদের মধ্যে টিকা না নিয়েও অসুস্থ হয়ে পড়ে এমন একজনও ছিল।’

একই প্রসঙ্গে ভোলার সিভিল সার্জন ডা. মনিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগকে বলেন, ‘ভ্যাকসিন খারাপ হওয়ার তথ্যটি সঠিক নয়। এই শিক্ষার্থীরা মূলত আতঙ্কের কারণে “মাস সাইকোজেনিক ইলনেস” থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে।’

তিনি আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগকে আরও জানান, গতকাল যাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তারা সবাই ইতিমধ্যে বাড়ি ফিরে গেছে।

হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ছবি: ইউনিসেফ
হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ছবি: ইউনিসেফ

উল্লেখ্য, মাস সাইকোজেনিক ইলনেসের আরেক নাম মাস হিস্টিরিয়া। শব্দটি সাধারণত দ্রুত ছড়িয়ে পড়া আতঙ্ক এবং ভয়ের অবস্থা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এর প্রকৃত সংজ্ঞা কিছুটা জটিল। বিশেষজ্ঞরা সাধারণত মাস হিস্টিরিয়াকে এক ধরনের ‘কনভারশন ডিসঅর্ডার’ হিসেবে বিবেচনা করেন। এটি একটি মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি। এতে মানসিক বা আবেগগত চাপের ফলে বিভিন্ন বাহ্যিক বা শারীরিক উপসর্গ দেখা যায়।

সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে মাস হিস্টিরিয়া সমষ্টিগত আচরণের মধ্যে পড়ে, যা সাধারণত একটি বড় জনগোষ্ঠীর স্বতঃস্ফূর্ত এমন সব কার্যক্রমকে বোঝায়, যেখানে তারা পরস্পরের ওপর প্রভাব ফেলে।

সাধারণত মাস হিস্টিরিয়া মৌখিক ও দৃশ্যগতভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে, আতঙ্কগ্রস্ত কাউকে দেখে বা কোনো আতঙ্কের খবর শুনে অন্যরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বা তাদের মধ্যে একই লক্ষণ দেখা দেওয়া শুরু করে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ এ শব্দটি আরও সাধারণভাবে ব্যবহার করেন এমন পরিস্থিতি বোঝাতে, যেখানে কোনো বাস্তব হুমকি ছাড়াই মানুষ সম্মিলিতভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

বিভিন্ন কারণে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। যেমন, ১৯৯৮ সালে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডানে ৮০০ স্কুল শিক্ষার্থী টিটেনাসের টিকা নেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। এদের মধ্যে ১০০ এর বেশি শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাদের দেহে টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখতে পাননি। বাংলাদেশেও মাঝে মধ্যে বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়া কিশোরীদের মধ্যে এ ধরনের ঘটনার খবর সংবাদমাধ্যমে আসে।

২০২১ সালে করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়ে গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় অর্ধ শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, টিকার সঙ্গে শ্রমিকদের অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্পর্ক নাও থাকতে পারে। এটি হতে পারে তাদের নার্ভাস সাইকোজেনিক সমস্যা।

টিকা দেওয়ার পর এমন সমস্যা আরও হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা সিভিল সার্জন সংবাদমাধ্যমটিকে জানান, অসুস্থ শ্রমিকেরা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তাঁদের কাউকেই দীর্ঘ সময় হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়নি।

এসব তথ্য ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বক্তব্যের ভিত্তিতে এটি নিশ্চিত যে, ভোলার বোরহানউদ্দিনে জরায়ুমুখ ক্যানসারের বিষাক্ত ভ্যাকসিনের প্রভাবে স্কুলছাত্রীদের অসুস্থ হওয়ার তথ্যটি সঠিক নয়।  

প্রসঙ্গত, এর আগেও ফেসবুকের বিভিন্ন ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে নারীদের এইচপিভি টিকা নেওয়া থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়ে বিভিন্ন দাবি প্রচার করা হয়েছে। এসব পোস্টে দাবি করা হয়, ‘এই টিকা নেওয়ার ফলে নারীদের বন্ধ্যাত্ব সৃষ্টি হবে। ফলে বেশির ভাগ বাচ্চা গর্ভপাত হবে এবং নারী গর্ভধারণে অক্ষম হবে।’ আরেকটি দাবি করা হচ্ছে, ‘এই টিকা কমবয়সীদের দেওয়া হয়। কারণ তাদের ভেতরে শারীরিক বৃদ্ধি দ্রুত হয়। যার ফলে টিকাটি দ্রুত বিস্তার করে বন্ধ্যাত্ব বা জরায়ুতে সমস্যা সৃষ্টিকে জোরালো করার সুযোগ পায়।’

আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে একাধিক গবেষণা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সূত্রে দাবিগুলোর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট নিজেদের ওয়েবসাইটে এইচপিভি টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানায়, এই টিকা গ্রহণ পরবর্তী টিকা গ্রহণের স্থানে ব্যথা, ফোলা ভাব, লাল ভাব এবং সেই সঙ্গে মাথা ব্যথা, ক্লান্তি এবং বমি বমি ভাব হতে পারে। এই টিকার সবচেয়ে সাধারণ গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো— মাথা ঘোরা এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২১
আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।

আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফ্যাক্টচেক /মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৫
মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।

বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’

ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি

বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।

বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ

এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত
এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।

এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।

একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।

ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফ্যাক্টচেক /অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫০
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।

ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই

ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র‍্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত

ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।

সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল

এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।

কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

কথিত জেসিকা র‍্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত