Ajker Patrika

ফ্যাক্টচেক /শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম পাল্টাতে গিয়ে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজনের মৃত্যু—দাবিটি সত্য নয়

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক  
শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় জাককানইবিতে দুজন মারা যাওয়ার দাবিতে ছরিয়ে পড়া ভিডিওর দৃশ্য। থাম্ব: ছবি: স্ক্রিনশট
শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় জাককানইবিতে দুজন মারা যাওয়ার দাবিতে ছরিয়ে পড়া ভিডিওর দৃশ্য। থাম্ব: ছবি: স্ক্রিনশট

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। গতকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ছিল এই গণ-অভ্যুত্থানের ছয় মাসপূর্তির দিন। এদিন রাতে নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ থেকে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের ঘোষণার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহর ফ্যাসিবাদ নির্মূলের ডাক দেন। এরপর ফেসবুকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিল’ এবং ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচির ডাক আসে।

রাত ৮টার দিকে দলে দলে লোকজন ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর করেন এবং ১০টার দিকে আগুন দেওয়া হয়। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টদের বাসভবন ও স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার তথ্য গণমাধ্যমে এসেছে। পাশাপাশি, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও শেখ পরিবার ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টদের নাম পরিবর্তন ও মুর‍্যাল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় দুজন মারা গেছেন—এই দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, গ্রুপ ও পেজ থেকে প্রায় একই ক্যাপশনে ভিডিওটি ছড়ানো হয়েছে। ভিডিওটিতে একজন ব্যক্তিকে একটি বহুতল ভবনের কিছুটা ওপরে মই দিয়ে বেয়ে উঠে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা’ লেখার কাছে গিয়ে লেখাটি ভাঙার সময় পড়তে দেখা যায়। এই সময় আশপাশের লোকজনের চিৎকার শোনা যায় এবং পড়ে যাওয়া ব্যক্তিকে তুলে সাহায্য করতে দেখা যায়।

‘কেমিক্যাল আলি (Chemical Ali)’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে ৩টার দিকে প্রকাশিত পোস্টটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে দুইজন উপর থেকে সরাসরি আল্লাহর কোলে উঠে গেছে। আমিন।’ (বানান অপরিবর্তিত)

আজকে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ওই ভিডিওটি সাড়ে নয় লাখবার দেখা হয়েছে এবং পোস্টটিতে ৫ হাজার শেয়ার হয়েছে। পোস্টটিতে ৮৮টি কমেন্ট পড়েছে। কমেন্টে অনেকে সত্য মনে করে কমেন্ট করেছেন।

ফওজিয়া নিজাম তামান্না (Fowzia Nizam Tamanna) নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এই পোস্টটিতে লেখা হয়েছে, ‘শহীদ হয়েছে।’ (বানান অপরিবর্তিত)

মো. মজিদ (Md Mojid) লিখেছে, ‘আলহামদুলিল্লাহ। সীমা লংঘন কারীদের আললাহ তালা কখনো পছন্দ করেন না।’ (বানান অপরিবর্তিত)

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম ফলক ভাঙতে গিয়ে পড়ে গিয়ে একজন মারা গিয়েছে দাবিতে ওপর থেকে ধারণ করা প্রায় একই দৃশ্যের একটি ভিডিও ‘জয় বাংলা’ নামে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আজ সকাল ১০টার দিকে পোস্ট করা হয়।

‘আলহামদুলিল্লাহ। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে উপর থেকে পড়ে স্পট ডে*ড। নিজের চোখেই দেখেন প্রকৃতি কখনো ছেড়ে দেয়না।’—এই ক্যাপশনে ‘টেলেন্ট কান্তি দাস (Telent Kanti Das), প্রামানিক আব্দুল হাকিম’ এবং ‘আব্দুল আজিজ (Abdul Aziz)’ নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।

যাচাইয়ের শুরুতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের লোগো দেখা যায়।

শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় দুজন মারা যাওয়ার দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের লোগোর উপস্থিতি। ছবি: স্ক্রিনশট
শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় দুজন মারা যাওয়ার দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের লোগোর উপস্থিতি। ছবি: স্ক্রিনশট

এসব তথ্যসূত্রে ফেসবুকে সার্চ করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটি গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে পোস্ট করা হয়।

শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় দুজন মারা যাওয়ার দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সঙ্গে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের ফেসবুক পেজের ভিডিওর সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় দুজন মারা যাওয়ার দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সঙ্গে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের ফেসবুক পেজের ভিডিওর সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা, ‘বঙ্গমাতা হলের নেইম-প্লেট খোলার সময় মই থেকে পড়ে আ’হ’ত শিক্ষার্থী।’

অর্থাৎ, ভিডিওটি গতকাল বুধবার রাতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধারণ করা হয়েছে।

ঘটনার বিস্তারিত জানতে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের পক্ষ থেকে আজকের পত্রিকার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. ফাহাদ বিন সাঈদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, গতকাল বুধবার রাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণকে ঘিরে উত্তেজনা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়ে। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নামফলক মই বেয়ে ভাঙতে গিয়ে মই পিছলিয়ে পড়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের চারুকলা বিভাগের শাহজালাল আহমেদ জনি নামের এক শিক্ষার্থী আহত হন। তবে উক্ত ঘটনায় আর কেউ হতাহত হয়নি।

তিনিও জানান, শাহজালাল আহমেদ জনি আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শাহজালাল আহমেদ জনির সঙ্গে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী সাদ কবীরের ফোন নম্বর দেন।

সাদ কবীরের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগকে জানান, শাহজালাল আহমেদ জনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক্স সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে।

এই বিষয়ে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের পক্ষ থেকে সঙ্গে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রোকন বাপ্পীও একই কথা জানান।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শিক্ষার্থী মৃত্যুর বিষয়টি মিথ্যা। গতকাল মই থেকে পড়ে একজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। বর্তমানে সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

শাহজালাল আহমেদ জনির বিষয়ে খোঁজ নিতে মুঠোফোনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক্স সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মতিউর রহমানের সঙ্গে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের কথা হয়। তিনি জানান, শাহজালাল আহমেদ জনি মারা যান নি। সে ওপর থেকে পড়ে গিয়ে দুই হাত ও মাথায় ব্যাথা পেয়েছে। সে অর্থপেডিক্স সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে।

এ ছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিল’ এবং ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচিতে গিয়ে হতাহতের বিষয়ে গুগলে সার্চ করে কারও মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় দুজন মারা যাওয়ার দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, গতকাল বুধবার রাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণকে ঘিরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নামফলক মই বেয়ে ভাঙতে গিয়ে মই পিছলিয়ে পড়ে শাহজালাল আহমেদ জনি নামের এক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার দৃশ্য দুজনের মৃত্যুর দাবিতে ছড়িয়ে পড়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২১
আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।

আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফ্যাক্টচেক /মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৫
মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।

বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’

ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি

বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।

বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ

এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত
এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।

এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।

একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।

ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফ্যাক্টচেক /অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫০
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।

ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই

ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র‍্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত

ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।

সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল

এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।

কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

কথিত জেসিকা র‍্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত