Ajker Patrika

বাংলা কি সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭: ১৬
বাংলা কি সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওন। ৭১ হাজার ৭৪০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ দেশে বসবাস করে অন্তত ১৬টি জাতিগোষ্ঠী, যেগুলোর প্রতিটির আলাদা ভাষা ও রীতিনীতি আছে। সিয়েরা লিওনের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক, যার সূচনা হয় তিন দশকের বেশি আগের গৃহযুদ্ধের সূত্র ধরে। প্রায় এক যুগ পর ২০০২ সালে এই গৃহযুদ্ধের সময় শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং অবসানের পর দেশটির পুনর্গঠনে জাতিসংঘের অধীনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা অনন্য ভূমিকা পালন করে।

২০০২ সালের পর থেকে ফেব্রুয়ারি এলেই গণমাধ্যমে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়ে, তা হলো- সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা বা অন্যতম রাষ্ট্রীয় ভাষা বা দাপ্তরিক ভাষা বাংলা। দেশের বিভিন্ন স্তরের পাঠ্যপুস্তকেও এ তথ্য জায়গা পেয়েছিল। যেমন, সদ্যবিদায়ী শিক্ষাক্রমের নবম-দশম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বইয়ের ‘জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ’ অধ্যায়েও বাংলাকে সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উল্লেখ করা ছিল। 

আসলেই কি বাংলা দেশটির দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে আজকের পত্রিকা ফ্যাক্টচেক বিভাগ। 

সিয়েরা লিওনের ভাষা পরিস্থিতি
ইন্টারন্যাশনাল আফ্রিকান ইনস্টিটিউটের সৌজন্যে ২০১৪ সালে যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করে। ইন্টারন্যাশনাল আফ্রিকান ইনস্টিটিউটের জার্নালে মূল নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। এই নিবন্ধ থেকে জানা যায়, সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা ইংরেজি। এটি দেশটির আনুষ্ঠানিক শিক্ষা, সরকার, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, সংবাদ মাধ্যম, আন্তর্জাতিক যোগাযোগসহ সবক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এর বাইরে দেশটির স্বীকৃত, সংবাদ মাধ্যমে বহুল প্রচারিত এবং আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ও সাহিত্যে স্বল্পমাত্রায় ব্যবহৃত চারটি জাতীয় ভাষা হলো- ক্রিও, লিম্বা, মেন্দে এবং তেমনে। অর্থাৎ সিয়েরা লিওন একটি বহুভাষিক রাষ্ট্র।

সিয়েরা লিওনের ভাষাগত রাজনীতি নিয়ে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আফ্রিকান জার্নাল অব পলিটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনসে প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে জানা যায়, ১৯৬১ সালে ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতা লাভ করে দেশটি। ঔপনিবেশিক শাসনের সময় থেকেই সেখানে ইংরেজি একমাত্র সরকারি ও অভিজাত ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত। যদিও দেশটির জাতিগোষ্ঠীরা ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় কথা বলে। এসব ভাষার মধ্যে ক্রিও নামের ভাষা দেশটির রাজধানী ফ্রিটাউনে লিংগুয়া ফ্রাংকা হিসেবে ব্যবহৃত হয় অর্থাৎ শহরটির অধিকাংশ মানুষ এই ভাষায় কথা বলেন। দেশটিতে রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণয়ন ও শিক্ষা ব্যবস্থায় ইংরেজিকে ব্যবহার করা হয়। 

সিয়েরা লিওনে প্রচলিত ভাষাসমূহ। ছবি: আফ্রিকান জার্নাল অব পলিটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনসসিয়েরা লিওনের মাতৃভাষা নিয়ে ২০১০ সালের মার্চে টেইলর অ্যান্ড ফ্রান্সিস গ্রুপের জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে দেশটিতে ব্যবহৃত ভাষা নিয়ে আলোচনা পাওয়া যায়। ওই নিবন্ধে দেশটিকে বহুভাষিক রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশটির জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষাসহ বাইরের বেশকিছু ভাষাও দেশটিতে প্রচলিত। এর মধ্যে আছে ইংরেজি, ফরাসি ও আরবি। গবেষণাগুলো থেকে বাংলা ভাষা সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।

সম্ভাব্য সংঘাত, হুমকি চিহ্নিতকরণ এবং সমাধান, মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ ও প্রচার এবং সুশাসনের জন্য সংস্কার সুসংহত করার লক্ষ্যে সিয়েরা লিওন সরকারকে সহায়তা দিতে ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইউনাইটেড ন্যাশনস ইন্টিগ্রেটেড পিসবিল্ডিং অফিস ইন সিয়েরালিওন (ইউএনআইপিএসআইএল)।

ইউএনআইপিএসআইএলের ওয়েবসাইট থেকে সিয়েরা লিওনের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়। এখানে সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা হিসেবে কেবল ইংরেজির নাম উল্লেখ আছে। এর বাইরে ক্রিওকে বহুল ব্যবহৃত ভাষা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানেও বাংলা ভাষা সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। 

ট্রান্সলেটর উইথ আউট বর্ডারস নামে অনুবাদ নিয়ে কাজ করা একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালে দেশটিতে অনুষ্ঠিত আদম শুমারি অনুযায়ী, সিয়েরা লিওনে ১৮টি প্রধান ভাষা আছে। এর মধ্যে ক্রিও সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ভাষা। এটি দেশটিতে লিংগুয়া ফ্রাংকা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যদিও দেশটির মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ তাদের প্রধান ভাষা হিসেবে এটি ব্যবহার করে। এর বাইরে মেন্দে ও তেমনেও আছে। তবে সরকারি ভাষা হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রশাসন এবং সংবাদ মাধ্যমে ইংরেজি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

বাংলা ভাষা ও সিয়েরা লিওন 

শিক্ষামূলক জিওগ্রাফি ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাসে সিয়েরা লিওনের ভাষা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এ থেকে দেশটিতে অন্তত ২৩টি ভাষা প্রচলিত থাকার কথা জানা যায়। সিয়েরা লিওনের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য নিজস্ব ভাষা ব্যবহার করে।

সিয়েরা লিওনের ভ্রমণ বিষয়ক ওয়েবসাইট ভিজিট সিয়েরা লিওন থেকেও প্রায় একই তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা ইংরেজি। দেশটিতে ২৩টি ভাষা প্রচলিত আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত ভাষা হলো- মেন্দে, তেমনে, লিম্বা এবং ক্রিও। তবে এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ক্রিও। 

ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাসে উল্লেখ করা হয়, সাবেক ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক হিসেবে দেশটির সরকারি ভাষা ইংরেজি। ক্রিও দেশটিতে লিংগুয়া ফ্রাংকা হিসেবে বহুল ব্যবহৃত। এটি দেশটির প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ মানুষের মাতৃভাষা হলেও দেশটির জনসংখ্যার ৯৭ শতাংশ মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। তবে ভাষাটির কোনো সরকারি স্বীকৃতি নেই। দেশটিতে ব্যবহৃত অন্যান্য ভাষার মধ্যে আছে মেন্দে, তেম্নে এবং লিম্বা। 

এই ওয়েবসাইট থেকে সিয়েরা লিওনে বাংলা ভাষার উপস্থিতি সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়। ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়, সিয়েরা লিওন দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাকে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে দেশটির নাগরিকরা বাংলা ভাষা ব্যবহার করে না। কারণ, বাংলা ভাষাকে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি ‘অনারারি স্ট্যাটাস’ বা সম্মানসূচক।

বাংলা ভাষাকে সিয়েরা লিওনের সম্মানসূচক সরকারি ভাষা দাবি। ছবি: কমেনওয়েলথ চেম্বার অব কমার্সকমেনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সংগঠন কমেনওয়েলথ চেম্বার অব কমার্সের ওয়েবসাইট থেকে সিয়েরা লিওন সম্পর্কে একটি নিবন্ধ পাওয়া যায়। নিবন্ধটিতে সিয়েরা লিওনে গৃহযুদ্ধ এবং বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০২ সালের ডিসেম্বরে দেশটি বাংলাকে ‘অনারারি অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ’ বা সম্মানসূচক সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেয়।

দেশীয় সংবাদ মাধ্যমের তথ্যে যা ছিল
 
কমেনওয়েলথ চেম্বার অব কমার্সের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যের সূত্রে দেশের ২০০২ সালের সংবাদপত্রগুলোর আর্কাইভ খোঁজে দেখে আজকের পত্রিকা ফ্যাক্টচেক বিভাগ।

পুরোনো পত্রিকার সংগ্রহশালা সংগ্রামের নোটবুকের মাধ্যমে ২০০২ সালের ২৮ ডিসেম্বর দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার শেষ পাতায় ‘বাংলা সিয়েরা লিওনের অন্যতম সরকারি ভাষা’ শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সিয়েরা লিওন সরকার বাংলা ভাষাকে দেশটির অন্যান্য অফিসিয়াল ভাষার মত সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব আহমেদ তেজান কাব্বাহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক পুনঃনির্মিত একটি সড়ক উদ্বোধনকালে এই ঘোষণা দেন। একই তথ্য পাওয়া যায় একই দিনে দৈনিক প্রথম আলো, ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার থেকে। 

অর্থাৎ ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাস, কমেনওয়েলথ চেম্বার অব কমার্সের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির সরকারি বা দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। বরং এটি ছিল সম্মানসূচক স্বীকৃতি। বিপরীতে দেশীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিয়েরা লিওন দেশটির অন্যান্য অফিসিয়াল ভাষার মত সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে।

প্রকৃত তথ্য কি 
বাংলা ভাষাকে সিয়েরা লিওনের লিওনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতির দাবিটির সত্যতার খোঁজে ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত পশ্চিম আফ্রিকাভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান দুবাওয়ার একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। দুবাওয়া নাইজেরিয়া, ঘানা, সিয়েরা লিওন, লাইবেরিয়া এবং গাম্বিয়াতে কার্যক্রম পরিচালনা করে। সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি নিয়ে ২০২৩ সালের মার্চে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে দুবাওয়া। 

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীন হওয়া দেশটির মানুষ অনেকগুলো ভাষায় কথা বলে। তবে এগুলোর কোনোটিই দেশটির সরকারি ভাষা হিসেবে ব্যবহার হয় না। দেশটিতে রাষ্ট্রের স্বীকৃত ভাষা ইংরেজি। বাংলা ভাষার স্বীকৃতি নিয়ে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রয়াত আলহাজ্ব আহমেদ তেজান কাব্বাহর বক্তব্যের বিষয়ে কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায় না। 

বাংলাকে সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। ছবি: দুবাওয়া তথ্যটির সত্যতা যাচাইয়ে দুবাওয়া সিয়েরা লিওনের রাজধানী ফ্রি টাউন কেন্দ্রিক ভাষা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান দ্য ইনস্টিটিউট ফর সিয়েরা লিওনিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজেসের (টিআইএসএলএল) প্রোগ্রাম ডিরেক্টর লামিন এইচ কার্গবুয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি বলেন, বাংলা কখনোই সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা ব্যবহার হয়নি বা এমন কোনো স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। 

দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রয়াত আলহাজ্ব আহমেদ তেজান কাব্বাহর বাংলাকে সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ সম্পর্কে তিনি অবগত। প্রেসিডেন্ট কাব্বাহ বাংলাকে সিয়েরা লিওনের ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বা স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে বলেছিলেন। কিন্তু সেটি সরকারি ভাষা হিসেবে নয়।  

এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট কাব্বাহ দেশটির গৃহযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকার ও দেশটির জনগণের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এমন মন্তব্য করেছিলেন। তবে কখনোই বাংলাকে সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়নি। প্রেসিডেন্ট কাব্বাহ এমন স্বীকৃতি দিয়েছেন বলে যদি ধরেও নেই, তারপরও সিয়েরা লিওনের নাগরিকদের কাছে বাংলা স্বীকৃত ভাষা হিসেবে গৃহীত হয়নি এবং দেশটির কোথাও বাংলা ব্যবহৃত হয় না।’

তিনি দুবাওয়াকে আরও বলেন, সিয়েরা লিওনের একমাত্র সরকারি ভাষা ইংরেজি। ইংরেজির বাইরে দেশটিতে ব্যবহৃত অন্যান্য ভাষাগুলো ব্যবহৃত হয় কেবল অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের জন্য।

একই প্রসঙ্গে সিয়েরা লিওনের ২৫ বছরের বেশি শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে জড়িত সিয়া টেংবেহ নামের এক শিক্ষিকা দুবাওয়াকে বলেন, তাঁর ২৫ বছরের শিক্ষকতা পেশায় কোনো প্রেসিডেন্ট বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দেশটির সরকারি ভাষা পরিবর্তনের বিষয়ে কোনো ঘোষণা সম্পর্কে তিনি অবগত নন। সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা কেবল ইংরেজি।

প্রসঙ্গত, বাংলা ভাষার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট প্রয়াত আলহাজ্ব আহমেদ তেজান কাব্বাহ ২০০৩ সালের ২১ অক্টোবর তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন। ওই সময়ের পত্রিকাগুলোর আর্কাইভ বা পুরোনো সংস্করণ খুঁজেও সেই সময় তাঁর সফরকালে বাংলাকে দেশটির দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির বিষয়ে কোনো আলোচনা পাওয়া যায় না। 

উপরোক্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এটি স্পষ্ট, বাংলা সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির বিষয়টি সঠিক নয়। দেশটির একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ইংরেজি। দেশটিতে সংঘঠিত প্রায় ১১ বছরের গৃহযুদ্ধে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রেসিডেন্ট কাব্বাহ বাংলাকে সিয়েরা লিওনের ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বা স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে বলেছিলেন। কিন্তু সেটি সরকারি ভাষা হিসেবে নয়। পরে এটিই সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা বাংলা ঘোষণা করা হয়েছে দাবিতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২১
আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।

আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্যাক্টচেক /মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৫
মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।

বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’

ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি

বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।

বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ

এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত
এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।

এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।

একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।

ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্যাক্টচেক /অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫০
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।

ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই

ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র‍্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত

ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।

সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল

এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।

কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

কথিত জেসিকা র‍্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত