Ajker Patrika

মানুষ মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করে: গালগল্প নাকি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে 

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০: ০৮
মানুষ মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করে: গালগল্প নাকি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে 

বহুল প্রচলিত একটি ধারণা, ‘মানুষ গড়ে মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করে। আর বাকি ৯০ শতাংশ আমৃত্যু অব্যবহৃতই থেকে যায়।’ এই ধারণা জায়গা পেয়েছে হলিউডের সিনেমাতেও। ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লুসি’ সিনেমাতেও বিখ্যাত অভিনেতা মরগ্যান ফ্রিম্যানকে বলতে দেখা যায়, ‘মানুষ গড়ে মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করে থাকে। যদি তারা শতভাগ মস্তিষ্ক ব্যবহার করতে পারত, তাহলে বিশ্বে আকর্ষণীয় জিনিস ঘটতে শুরু করত।’ অথবা আপনি শুনেছেন, আইনস্টাইন তাঁর মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করতে পেরেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ওয়েবসাইটে ধারণাটির সূত্রপাত সম্পর্কে কিছু সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানটির মতে, এ ধারণার সূত্রপাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের নামে ভুল উদ্ধৃতি থেকে অথবা ১৭ শতকে ফরাসি মনোবিজ্ঞানী পিয়েরে ফ্লোরেন্সের কাজের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়ার মাধ্যমে। আমেরিকান দার্শনিক ও মনোবিজ্ঞানী উইলিয়াম জেমসের ১৯০৮ সালে প্রকাশিত একটি বই থেকেও এ ধারণার সূত্রপাত হতে পারে। তিনি তাঁর ‘দ্য এনার্জিস অব ম্যান’ বইয়ে লিখেছিলেন, ‘আমরা আমাদের সম্ভাব্য মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতার অল্প কিছু অংশমাত্র ব্যবহার করি।’ 

অথবা আমেরিকান মনোবিজ্ঞানী কার্ল ল্যাশলির কাজ থেকেও এ ধারণার সূত্ৰপাত হতে পারে। ল্যাশলি ইঁদুরের মস্তিষ্কের একটি বড় অংশ সরিয়ে নেন। তারপরও তিনি দেখেন, ইঁদুরগুলো বিশেষ কিছু কাজ আয়ত্ত করতে পারছে। কিন্তু আমরা এখন জানি, মানবমস্তিষ্কের সামান্য অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেটি আচরণে কেমন মারাত্মক প্রভাব ফেলে। তবে যেভাবেই এই ধারণার উৎপত্তি হোক না কেন, পরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমও কোনো ধরনের বৈজ্ঞানিক তথ্যসূত্র ছাড়াই এই ধারণা প্রচার করে এসেছে। 

স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ধারণাটির সূচনা কীভাবে, তা সঠিকভাবে জানা যায় না। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ে মানুষ মস্তিষ্কের কোনো কোনো অংশ অপর অংশ থেকে বেশি কাজ করতে পারে। তবে এর মানে এই নয় যে মস্তিষ্কের বাকি ৯০% অব্যবহৃত থেকে যায়। মস্তিষ্কের প্রতিটি অংশ ভিন্ন ভিন্ন কাজের জন্য নিয়োজিত। একজন মানুষ সারা দিনে তার মস্তিষ্কের সব কটি অংশই ব্যবহার করতে পারে। 

বিজ্ঞানবিষয়ক ওয়েবসাইট লাইভ সায়েন্সে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মস্তিষ্কের ব্যবহারসংক্রান্ত ধারণাটি বেশ কয়েকজন স্নায়ু বিশেষজ্ঞের মত উল্লেখ করে ‘সঠিক নয়’ বলে চিহ্নিত করা হয়।

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বিবর্তনীয় নিউরোসায়েন্সের সহকারী অধ্যাপক এরিন হেচ্ট এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের সমস্ত মস্তিষ্ক সব সময়ই ব্যবহৃত হয়।’ হেচ্ট মস্তিষ্কের কার্যকলাপকে হৃদযন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন। যখন শরীর বিশ্রামে থাকে, তখন হৃদযন্ত্র যেভাবে রক্ত সরবরাহের জন্য সংকোচন-প্রসারণ অব্যাহত রাখে, তেমনি মানবমস্তিষ্কের কোষ যাকে বলে নিউরন—সর্বদা সক্রিয় থাকে।

টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রেইন হেলথ প্রকল্পের অপারেশন প্রধান ও স্নায়ুবিজ্ঞানী জুলি ফ্র্যাটান্টোনিও ধারণাটিকে মিথ বা কল্পকথা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। 

ইউনিভার্সিটি অব আরকানসাস ফর মেডিকেল সায়েন্সে প্ৰকাশিত এক প্রতিবেদনে এই ধারণার উৎপত্তি সম্পর্কে উইলিয়াম জেমসের ‘দ্য এনার্জিস অব ম্যান’ বইয়ে লেখা লাইনটি উল্লেখ করা হয়। একজন সুস্থ মানুষের মস্তিষ্ক সব সময়ই সক্রিয় থেকে শরীরের চেতন-অচেতন সব ধরনের কাজে অংশগ্রহণ করে। এমনকি মস্তিষ্ক দৈনন্দিন কাজের জন্য মানবদেহে উৎপাদিত ২০ শতাংশ শক্তি ব্যবহার করে। কারণ, মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ ভিন্ন ভিন্ন কাজে নিয়োজিত থাকে। যেমন দেখা, শোনা, পড়া, ঘ্রাণ নেওয়া ইত্যাদি শনাক্ত ও প্রক্রিয়াকরণের জন্য মস্তিষ্কের আলাদা অংশ রয়েছে। শরীরজুড়ে বিস্তৃত নিউরনের জাল বৈদ্যুতিক সংকেত মস্তিষ্কে বয়ে নিয়ে যায়, আবার মস্তিষ্ক থেকে নির্দেশ বয়ে আনে। নিরবচ্ছিন্নভাবে এ প্রক্রিয়া চলে। এ কারণেই মস্তিষ্কে এত শক্তির প্রয়োজন হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক একাডেমিক চিকিৎসাকেন্দ্র মায়ো ক্লিনিকের স্নায়ু বিশেষজ্ঞ জন হেনলি বলেন, মানুষ মস্তিষ্কের পুরোটাই ব্যবহার করে এবং এটির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। এমনকি মানুষ যখন ঘুমায়, তখনো মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল কর্টেক্স সক্রিয় থাকে। 

বাল্টিমোর জনস হপকিন্স স্কুল অব মেডিসিনের স্নায়ু বিশেষজ্ঞ ব্যারি গর্ডন বলেন, ‘১০ শতাংশের ব্যাপারটি শুধু ভুলই নয়, হাস্যকরও বটে। মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করে কোনো কাজই করা সম্ভব নয়।’ 

স্নায়ু বিশেষজ্ঞ ব্যারি ব্যায়ারস্টেইন সাত কারণে প্রচলিত এই ধারণাকে শুধুই শ্রুতিকথা হিসেবে প্রমাণ করেন। যথা: 

১. মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহৃত হয়ে থাকলে, কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তেমন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, মস্তিষ্কের কোনো অংশের সামান্য ক্ষতিতে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়।

২. মস্তিষ্কের আধুনিক স্ক্যান পদ্ধতিতে দেখা গেছে, মস্তিষ্ক সর্বদা সক্রিয় থাকে। তবে কিছু অংশ হয়তো কখনো অন্য অংশের চেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। এমনকি ঘুমের মধ্যেও মানুষের মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে। অবশ্য কোনো অংশ গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্কের নীরব এলাকার দেখা যেতে পারে।

৩. অক্সিজেন ও শক্তি খরচের দিক থেকে মস্তিষ্ক মানবশরীরের সবচেয়ে ব্যয়বহুল অঙ্গ। এটি শরীরের প্রায় ২০ শতাংশ শক্তি খরচ করে, যদিও ওজন সমগ্র শরীরের মাত্র ২ শতাংশ। যদি এ রকম একটি অঙ্গের শতকরা ৯০ ভাগই অকেজো থাকত, তাহলে বিবর্তনের ধারায় মস্তিষ্কের নিষ্ক্রিয় অংশগুলো অপ্রয়োজনীয় বিবেচনায় বাদ হয়ে যেত।  নৃতাত্ত্বিক প্রমাণ বলছে, বিবর্তনের শুরুর দিকে শিশুর বড় মস্তিষ্কের কারণে প্রসবের সময় বহু মায়ের ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। ৯০ শতাংশ অপ্রয়োজনীয় হলে বিবর্তনীয় ধারায় মানুষের মস্তিষ্ক হতো আকারে আরও ছোট।

৪. মস্তিষ্কের প্রতিটি অংশেরই আলাদা কাজ রয়েছে। পুরো মস্তিষ্ক এককভাবে কাজ না করে, বরং প্রতিটি অংশ একটি জটিল প্রক্রিয়ায় সমষ্টিগতভাবে কাজ করে। এই প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করে এমন কোনো অঞ্চল পাওয়া যায়নি, যার কোনো কার্যকর ভূমিকা নেই। 

৫. সিঙ্গেল ইউনিট রেকর্ডিং ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কে ক্ষুদ্র ইলেকট্রোড প্রবেশ করিয়ে প্রতিটি নিউরন পর্যবেক্ষণ করেন। যদি শতকরা ৯০ ভাগ নিউরন নিষ্ক্রিয় থাকত, তাহলে সেটি এই রেকর্ডিংয়ে ধরা পড়ার কথা।

৬. অব্যবহৃত থাকলে মস্তিষ্কের কোষের অবক্ষয়ের প্রবণতা রয়েছে। যদি শতকরা ৯০ ভাগ নিউরন কোষই অকার্যকর থাকত, তাহলে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মস্তিষ্কের অটোপসিতে বিশাল পরিসরে অবক্ষয় পরিলক্ষিত হতো। 

আইনস্টাইন তাঁর মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করতে পেরেছিলেন? 

বলা হয়ে থাকে, আলবার্ট আইনস্টাইন এক সাক্ষাৎকারে জনৈক সাংবাদিককে বলেছিলেন, তিনি তাঁর মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করতে পেরেছেন। কিন্তু আইনস্টাইনের এ বক্তব্যের কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র খুঁজে পাওয়া যায় না। এ প্রসঙ্গে আলবার্ট আইনস্টাইনের আর্কাইভ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, তাঁদের কাছে এমন কোনো রেকর্ড নেই। অর্থাৎ আইনস্টাইনের নামে কেউ মিথটা চালু করেছিল। 

সিদ্ধান্ত
মানুষ মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করতে পারে—এই ধারণার জন্ম আঠারো শতকের শেষভাগ থেকে। তবে ঠিক কীভাবে এই গালগল্পের শুরু হলো, এ সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। এ ধারণার জন্ম যেভাবেই বা যখনই হোক, এর যেকোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, তা বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২১
আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।

আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্যাক্টচেক /মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৫
মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।

বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’

ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি

বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।

বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ

এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত
এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।

এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।

একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।

ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্যাক্টচেক /অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫০
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।

ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই

ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র‍্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত

ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।

সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল

এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।

কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

কথিত জেসিকা র‍্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত