রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদন

চলতি বছরের জুনে হাইকোর্টের রায়ে ২০১৮ সালের কোটা বাতিল–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছায়। এ রায়ের পর কোটা সংস্কার দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনে সরকার বাধা দিলে তা সংঘাত ও সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত আন্দোলন সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়। এরই ফলস্বরূপ ৫ আগস্ট গণ–আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলের অবসান হয়। সরকার পতনের পরও সারা দেশে সংঘর্ষ, হত্যাকাণ্ড, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যেই ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।
এই অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে ভারতেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে ছড়ানো হচ্ছে একের পর এক গুজব। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে, রাষ্ট্রক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ১২ আগস্ট থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত অন্তত ১৩টি ভুয়া খবর পাওয়া গেছে। এমন ভুয়া খবর প্রচারের তালিকায় ভারতের অন্তত ৪৯টি গণমাধ্যমের নাম উঠে এসেছে। এর মধ্যে রিপাবলিক বাংলা সর্বাধিক পাঁচটি গুজব প্রচার করেছে। পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস, জি নিউজ এবং লাইভ মিন্ট, যারা প্রত্যেকে অন্তত তিনটি করে গুজব প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া, রিপাবলিক, ইন্ডিয়া টুডে, এবিপি আনন্দ এবং আজতক অন্তত দুটি করে গুজব প্রচার করেছে।

বাকি ৪১টি গণমাধ্যম অন্তত একটি করে গুজব প্রচার করেছে। সম্পূর্ণ তালিকা দেখুন এখানে।
এসব গুজবের মধ্যে ছিল: শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তাঁর নামে ভুয়া খোলা চিঠি, মুসলিম ব্যক্তির নিখোঁজ পুত্রের সন্ধানে মানববন্ধন করার ভিডিওকে হিন্দু ব্যক্তির দাবিতে প্রচার, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার ভুয়া খবর, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ভিত্তিহীন দাবি, ট্রাম্পের বিজয়ের পর ড. ইউনূস ফ্রান্সে পালিয়ে যাওয়ার ভুয়া দাবি, পাকিস্তানি জাহাজের মাধ্যমে অস্ত্র আনার মিথ্যা দাবি, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী হিসেবে প্রচার, বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ হওয়া গুজব, বাংলাদেশে মুসলিমদের হামলায় হিন্দু মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের দাবিতে ভারতের প্রতিমা বিসর্জনের ভিডিও প্রচার, শ্যামলী পরিবহনের বাসে হামলার মিথ্যা তথ্য চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবীর ওপর হামলার ভুয়া দাবি এবং বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা হতে পারে জানিয়ে যুক্তরাজ্য ভ্রমণ সতর্কতা জারির বিভ্রান্তিকর খবর।
৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর শেখ হাসিনা দিল্লি থেকে জনগণের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন এবং ওই চিঠিতে তাঁর ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। তবে জানা যায়, শেখ হাসিনা এমন কোনো চিঠি দেননি। রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উঠে আসে, এই চিঠিটি প্রথমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তী সময় ভারতের আগরতলাভিত্তিক দৈনিক ‘ত্রিপুরা ভবিষ্যৎ’ পত্রিকার প্রিন্ট সংস্করণে তারিখসহ প্রকাশিত হয়। এরপর, ওই পত্রিকার স্ক্রিনশটটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হতে থাকে এবং পরবর্তী সময় ভারতের ও বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমেও এটি প্রচারিত হয়।
৫ আগস্টের পর ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয়, একজন হিন্দু ব্যক্তি তাঁর নিখোঁজ পুত্রের সন্ধান দাবিতে মানববন্ধন করছেন। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই ব্যক্তি আসলে মুসলিম এবং তাঁর নাম বাবুল হাওলাদার। ২০১৩ সালে নিখোঁজ হওয়া ছেলের সন্ধানে মানববন্ধন করেছিলেন তিনি।
শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়। ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে ভর্তি হয়েছেন। এ দাবির সঙ্গে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তির ছবিও প্রকাশিত হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি ড. ইউনূসের নয়। ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের কিংবা বাংলাদেশেরও কোনো ছবি নয়। প্রকৃতপক্ষে, ড. ইউনূস সুস্থ রয়েছেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশে বেশকিছু নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে ভারতীয় গণমাধ্যম। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে এই দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্য ও প্রমাণ ছাড়া ভারতীয় গণমাধ্যমে এই মিথ্যা দাবি প্রচারিত হয়।
৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হন। ট্রাম্পের বিজয়ের পর, ভারতীয় গণমাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফ্রান্সে পালিয়ে গেছেন। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবি মিথ্যা। পালানোর প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত বিমানের ছবিটি ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে ফেরার সময়ের।
স্বাধীনতার পর গত ১৩ নভেম্বর প্রথমবারের মতো সরাসরি পাকিস্তানের করাচি থেকে কনটেইনার বহনকারী একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে। এ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের ‘সোয়াত’ নামের যে সামরিক জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে এসেছিল, সেই জাহাজ আবারও চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। আরও দাবি করা হয়, ওই জাহাজে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র আনা হচ্ছে। তবে, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এসব দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। জাহাজটির নাম ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’, এটি একটি বাণিজ্যিক জাহাজ এবং এর মাধ্যমে শিল্পের কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য আনা হয়েছে।
২৫ নভেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাঁকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করা হয়। এরপর আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে, চিন্ময়কে প্রিজন ভ্যানে তুলে কারাগারে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। এ সময় তাঁর অনুসারীরা বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিপেটা এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। সংঘর্ষের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন। ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, সাইফুল ইসলাম চিন্ময়ের আইনজীবী হওয়ায় তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এই দাবি সঠিক নয়। চিন্ময়ের আইনজীবী শুভাশীষ শর্মা, সাইফুল ইসলাম নয়।
ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে চ্যানেলগুলো এখনো সচল থাকতে দেখা যায়। একই সঙ্গে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং কেব্ল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বিষয়টি গুজব বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করে।
ভারতীয় কতিপয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় চিকেন নেকের কাছে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানঘাঁটি নির্মাণ করবে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবি পুরোপুরি মিথ্যা। লালমনিরহাটের বিমানবন্দর দীর্ঘ ছয় দশক ধরে বন্ধ রয়েছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে এর কার্যক্রম পুনরায় চালুর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি, বাংলাদেশে মুসলিমদের দ্বারা হিন্দু মন্দিরে হামলা করে প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। এই দাবি ভারতের কিছু গণমাধ্যমেও প্রচারিত হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি বাংলাদেশে নয়, বরং ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ সুলতানপুর গ্রামে প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্য। ভিডিওটি বাংলাদেশের হিন্দু মন্দিরে হামলার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-আগরতলা-ঢাকা রুটে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে বাংলাদেশি ট্রাকের সংঘর্ষ ঘটানোর দাবিতে ভারতের কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়। আরও দাবি করা হয়, শ্যামলী পরিবহনের বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীদের স্থানীয়রা প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং ভারতবিরোধী স্লোগান দেয়। তবে, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবিগুলোর কোনো সত্যতা নেই। ইচ্ছাকৃতভাবে নয়, দুর্ঘটনাটি মূলত ওভারটেকিংয়ের কারণে ঘটেছিল।
চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের চিকিৎসাধীন এক ব্যক্তির ছবি নিয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হয়। দাবি করা হয়, ওই ব্যক্তি রমেন রায়, যিনি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী। আরও বলা হয়, মুসলিমেরা তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করে এবং হামলা চালিয়ে তাঁকে আইসিইউতে ভর্তি করেছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা গেছে, রমেন রায় চিন্ময় দাসের আইনজীবী নন এবং তাঁর মামলার সঙ্গেও কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, ২৫ নভেম্বর শাহবাগে চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার বিরোধী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কর্মসূচিতে দুর্বৃত্তদের হামলায় রমেন রায় আহত হন। তবে তাঁর বাড়ি ভাঙচুরের খবর বা কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশে যেকোনো সময় জঙ্গি হামলা হতে পারে জানিয়ে যুক্তরাজ্য ভ্রমণ সতর্কতা দিয়েছে দাবিতে একটি তথ্য ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম প্রচারিত হয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ সতর্কতা কেবল বাংলাদেশে নয় বরং ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জার্মানি, স্পেন, শ্রীলঙ্কা, ফ্রান্সসহ বিশ্বের অনেক দেশের ক্ষেত্রেই একই ভ্রমণ সতর্কতা অনেক দিন ধরেই জারি করে রেখেছে যুক্তরাজ্য। তাই, এককভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে প্রচারণা বিভ্রান্তিকর। তা ছাড়া, যুক্তরাজ্য সাধারণত কোনো অঞ্চলে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করলে তা সবার জন্য প্রযোজ্য হয়। এবার সহিংসতার কারণে বিশেষভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে সতর্কতা জারি করা হলেও দেশের অন্য জেলাগুলোতে এ ধরনের বিশেষ কোনো সতর্কতা আরোপ করা হয়নি। পাশাপাশি, যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ সতর্কতা অনুযায়ী, বাংলাদেশের চেয়ে ভারত, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তানের মতো দেশে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা বেশি।

চলতি বছরের জুনে হাইকোর্টের রায়ে ২০১৮ সালের কোটা বাতিল–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছায়। এ রায়ের পর কোটা সংস্কার দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনে সরকার বাধা দিলে তা সংঘাত ও সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত আন্দোলন সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়। এরই ফলস্বরূপ ৫ আগস্ট গণ–আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলের অবসান হয়। সরকার পতনের পরও সারা দেশে সংঘর্ষ, হত্যাকাণ্ড, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যেই ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।
এই অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে ভারতেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে ছড়ানো হচ্ছে একের পর এক গুজব। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে, রাষ্ট্রক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ১২ আগস্ট থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত অন্তত ১৩টি ভুয়া খবর পাওয়া গেছে। এমন ভুয়া খবর প্রচারের তালিকায় ভারতের অন্তত ৪৯টি গণমাধ্যমের নাম উঠে এসেছে। এর মধ্যে রিপাবলিক বাংলা সর্বাধিক পাঁচটি গুজব প্রচার করেছে। পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস, জি নিউজ এবং লাইভ মিন্ট, যারা প্রত্যেকে অন্তত তিনটি করে গুজব প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া, রিপাবলিক, ইন্ডিয়া টুডে, এবিপি আনন্দ এবং আজতক অন্তত দুটি করে গুজব প্রচার করেছে।

বাকি ৪১টি গণমাধ্যম অন্তত একটি করে গুজব প্রচার করেছে। সম্পূর্ণ তালিকা দেখুন এখানে।
এসব গুজবের মধ্যে ছিল: শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তাঁর নামে ভুয়া খোলা চিঠি, মুসলিম ব্যক্তির নিখোঁজ পুত্রের সন্ধানে মানববন্ধন করার ভিডিওকে হিন্দু ব্যক্তির দাবিতে প্রচার, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার ভুয়া খবর, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ভিত্তিহীন দাবি, ট্রাম্পের বিজয়ের পর ড. ইউনূস ফ্রান্সে পালিয়ে যাওয়ার ভুয়া দাবি, পাকিস্তানি জাহাজের মাধ্যমে অস্ত্র আনার মিথ্যা দাবি, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী হিসেবে প্রচার, বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ হওয়া গুজব, বাংলাদেশে মুসলিমদের হামলায় হিন্দু মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের দাবিতে ভারতের প্রতিমা বিসর্জনের ভিডিও প্রচার, শ্যামলী পরিবহনের বাসে হামলার মিথ্যা তথ্য চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবীর ওপর হামলার ভুয়া দাবি এবং বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা হতে পারে জানিয়ে যুক্তরাজ্য ভ্রমণ সতর্কতা জারির বিভ্রান্তিকর খবর।
৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর শেখ হাসিনা দিল্লি থেকে জনগণের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন এবং ওই চিঠিতে তাঁর ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। তবে জানা যায়, শেখ হাসিনা এমন কোনো চিঠি দেননি। রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উঠে আসে, এই চিঠিটি প্রথমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তী সময় ভারতের আগরতলাভিত্তিক দৈনিক ‘ত্রিপুরা ভবিষ্যৎ’ পত্রিকার প্রিন্ট সংস্করণে তারিখসহ প্রকাশিত হয়। এরপর, ওই পত্রিকার স্ক্রিনশটটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হতে থাকে এবং পরবর্তী সময় ভারতের ও বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমেও এটি প্রচারিত হয়।
৫ আগস্টের পর ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয়, একজন হিন্দু ব্যক্তি তাঁর নিখোঁজ পুত্রের সন্ধান দাবিতে মানববন্ধন করছেন। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই ব্যক্তি আসলে মুসলিম এবং তাঁর নাম বাবুল হাওলাদার। ২০১৩ সালে নিখোঁজ হওয়া ছেলের সন্ধানে মানববন্ধন করেছিলেন তিনি।
শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়। ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে ভর্তি হয়েছেন। এ দাবির সঙ্গে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তির ছবিও প্রকাশিত হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি ড. ইউনূসের নয়। ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের কিংবা বাংলাদেশেরও কোনো ছবি নয়। প্রকৃতপক্ষে, ড. ইউনূস সুস্থ রয়েছেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশে বেশকিছু নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে ভারতীয় গণমাধ্যম। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে এই দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্য ও প্রমাণ ছাড়া ভারতীয় গণমাধ্যমে এই মিথ্যা দাবি প্রচারিত হয়।
৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হন। ট্রাম্পের বিজয়ের পর, ভারতীয় গণমাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফ্রান্সে পালিয়ে গেছেন। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবি মিথ্যা। পালানোর প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত বিমানের ছবিটি ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে ফেরার সময়ের।
স্বাধীনতার পর গত ১৩ নভেম্বর প্রথমবারের মতো সরাসরি পাকিস্তানের করাচি থেকে কনটেইনার বহনকারী একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে। এ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের ‘সোয়াত’ নামের যে সামরিক জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে এসেছিল, সেই জাহাজ আবারও চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। আরও দাবি করা হয়, ওই জাহাজে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র আনা হচ্ছে। তবে, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এসব দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। জাহাজটির নাম ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’, এটি একটি বাণিজ্যিক জাহাজ এবং এর মাধ্যমে শিল্পের কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য আনা হয়েছে।
২৫ নভেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাঁকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করা হয়। এরপর আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে, চিন্ময়কে প্রিজন ভ্যানে তুলে কারাগারে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। এ সময় তাঁর অনুসারীরা বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিপেটা এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। সংঘর্ষের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন। ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, সাইফুল ইসলাম চিন্ময়ের আইনজীবী হওয়ায় তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এই দাবি সঠিক নয়। চিন্ময়ের আইনজীবী শুভাশীষ শর্মা, সাইফুল ইসলাম নয়।
ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে চ্যানেলগুলো এখনো সচল থাকতে দেখা যায়। একই সঙ্গে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং কেব্ল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বিষয়টি গুজব বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করে।
ভারতীয় কতিপয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় চিকেন নেকের কাছে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানঘাঁটি নির্মাণ করবে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবি পুরোপুরি মিথ্যা। লালমনিরহাটের বিমানবন্দর দীর্ঘ ছয় দশক ধরে বন্ধ রয়েছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে এর কার্যক্রম পুনরায় চালুর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি, বাংলাদেশে মুসলিমদের দ্বারা হিন্দু মন্দিরে হামলা করে প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। এই দাবি ভারতের কিছু গণমাধ্যমেও প্রচারিত হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি বাংলাদেশে নয়, বরং ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ সুলতানপুর গ্রামে প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্য। ভিডিওটি বাংলাদেশের হিন্দু মন্দিরে হামলার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-আগরতলা-ঢাকা রুটে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে বাংলাদেশি ট্রাকের সংঘর্ষ ঘটানোর দাবিতে ভারতের কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়। আরও দাবি করা হয়, শ্যামলী পরিবহনের বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীদের স্থানীয়রা প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং ভারতবিরোধী স্লোগান দেয়। তবে, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবিগুলোর কোনো সত্যতা নেই। ইচ্ছাকৃতভাবে নয়, দুর্ঘটনাটি মূলত ওভারটেকিংয়ের কারণে ঘটেছিল।
চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের চিকিৎসাধীন এক ব্যক্তির ছবি নিয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হয়। দাবি করা হয়, ওই ব্যক্তি রমেন রায়, যিনি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী। আরও বলা হয়, মুসলিমেরা তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করে এবং হামলা চালিয়ে তাঁকে আইসিইউতে ভর্তি করেছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা গেছে, রমেন রায় চিন্ময় দাসের আইনজীবী নন এবং তাঁর মামলার সঙ্গেও কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, ২৫ নভেম্বর শাহবাগে চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার বিরোধী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কর্মসূচিতে দুর্বৃত্তদের হামলায় রমেন রায় আহত হন। তবে তাঁর বাড়ি ভাঙচুরের খবর বা কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশে যেকোনো সময় জঙ্গি হামলা হতে পারে জানিয়ে যুক্তরাজ্য ভ্রমণ সতর্কতা দিয়েছে দাবিতে একটি তথ্য ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম প্রচারিত হয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ সতর্কতা কেবল বাংলাদেশে নয় বরং ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জার্মানি, স্পেন, শ্রীলঙ্কা, ফ্রান্সসহ বিশ্বের অনেক দেশের ক্ষেত্রেই একই ভ্রমণ সতর্কতা অনেক দিন ধরেই জারি করে রেখেছে যুক্তরাজ্য। তাই, এককভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে প্রচারণা বিভ্রান্তিকর। তা ছাড়া, যুক্তরাজ্য সাধারণত কোনো অঞ্চলে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করলে তা সবার জন্য প্রযোজ্য হয়। এবার সহিংসতার কারণে বিশেষভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে সতর্কতা জারি করা হলেও দেশের অন্য জেলাগুলোতে এ ধরনের বিশেষ কোনো সতর্কতা আরোপ করা হয়নি। পাশাপাশি, যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ সতর্কতা অনুযায়ী, বাংলাদেশের চেয়ে ভারত, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তানের মতো দেশে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা বেশি।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
১১ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
২১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৬ দিন আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

চলতি বছরের জুনে হাইকোর্টের রায়ে ২০১৮ সালের কোটা বাতিল–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছায়। এ রায়ের পর কোটা সংস্কার দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনে সরকার বাধা দিলে তা সংঘাত ও সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটে...
০৬ ডিসেম্বর ২০২৪
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
২১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৬ দিন আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

চলতি বছরের জুনে হাইকোর্টের রায়ে ২০১৮ সালের কোটা বাতিল–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছায়। এ রায়ের পর কোটা সংস্কার দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনে সরকার বাধা দিলে তা সংঘাত ও সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটে...
০৬ ডিসেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
১১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৬ দিন আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

চলতি বছরের জুনে হাইকোর্টের রায়ে ২০১৮ সালের কোটা বাতিল–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছায়। এ রায়ের পর কোটা সংস্কার দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনে সরকার বাধা দিলে তা সংঘাত ও সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটে...
০৬ ডিসেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
১১ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
২১ ঘণ্টা আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

চলতি বছরের জুনে হাইকোর্টের রায়ে ২০১৮ সালের কোটা বাতিল–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছায়। এ রায়ের পর কোটা সংস্কার দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনে সরকার বাধা দিলে তা সংঘাত ও সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটে...
০৬ ডিসেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
১১ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
২১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৬ দিন আগে