Ajker Patrika

সবকিছুতেই অযত্ন অবহেলার ছাপ

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর) 
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ৫০
সবকিছুতেই অযত্ন অবহেলার ছাপ

গাজীপুরের শ্রীপুর ও সদর উপজেলার ৪ হাজার ৯০০ একর জমি নিয়ে ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। দেশি ও বিদেশি প্রাণীর বিশাল এ সংগ্রহশালায় রয়েছে অযত্ন আর অবহেলার ছাপ। পার্কের মূল ফটক, সাফারি কিংডম, পশুপাখির বেষ্টনী, বাগান, নালা, লেক, অডিটরিয়ামসহ সবকিছুতেই অযত্ন আর অবহেলার ছাপ রয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পার্কে প্রবেশের মূল ফটকটি বিবর্ণ, ঝলসে গেছে সাইনবোর্ড। ভেতরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে চোখে পড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসংবলিত গাঢ় সবুজ রঙের প্রতিকৃতি। এটির গায়ে লেগে আছে শেওলা। পার্কের চারপাশে বাগানগুলোতে গজিয়েছে আগাছা। দেখে মনে হবে বহুদিন ধরে মালির হাতের ছোঁয়া পায়নি। বাগানগুলোর ভেতর যত্রতত্র পড়ে আছে শুকনো পাতা আর ছোট ছোট ডালপালা।

পার্কের নালাগুলো অপরিচ্ছন্ন। নিয়মিত ছিটানো হয় না রাস্তার দুপাশে শোভাবর্ধনকারী গাছের ডাল। প্রজাপতি পার্কের সামনে ফোয়ারাটি ছেয়ে আছে লতাপাতায়। ভেতরে নামমাত্র কয়েকটি প্রজাপতি আছে।

বিশাল মৎস্য অ্যাকোরিয়ামের এক পাশ অচল। পার্কের ভেতরে অনেক টাকা খরচ করে তৈরি করা রেস্তোরাঁর দরজায় তালা বহু বছর ধরে। রং বিবর্ণ হয়ে ঝলসে গেছে এর সামনে তৈরি করা বিশাল আকৃতির ডিমের প্রতিকৃতিটিও। রেস্তোরাঁর সামনে বাসা বেঁধেছে পোকামাকড়।

রেস্তোরাঁর পাশেই রয়েছে বিদেশি প্রজাতির রঙিন মাছের লেক। লেকের পানিতে ভাসছে ময়লা। লেকের প্যাডেল বোটগুলো দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে লেকের চারপাশ।

পশুপাখির শেডগুলোর লোহার তারে মরিচা ধরে বিবর্ণ হয়েছে বহু আগে। জরাজীর্ণ অবস্থায় খুলে পড়ছে বিভিন্ন শেডের নাট। উটপাখি, ইমুপাখি বেষ্টনীর পশ্চিম পাশে লেকের ওপর নির্মিত সেতুটি বহু বছর ধরে বিকল। কাঠের পাটাতনগুলো উঠে গেছে। সংরক্ষণের অভাবে ধ্বংস হচ্ছে সেতুটি।

পার্কের বাগানের বেঞ্চগুলো ভেঙে পড়ছে। দর্শনার্থীরা যাতে পার্কের পুরো অংশ দেখতে পারে, সে জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল বেশ কয়েকটি ওয়াচ টাওয়ার। সেগুলো ছেয়ে গেছে ঝোপঝাড়ে।

পার্কে থাকা ক্যাঙারু অনেক বছর হলো আর নেই। ক্যাঙারু রাখার শেড ঝোপঝাড় আর লতাপাতায় ছেয়ে গেছে। শিশুপার্কের বেশির ভাগ রাইড অচল। যে কয়টা সচল, সেগুলোও জরাজীর্ণ।

এদিকে গত ২ থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত পার্কের আফ্রিকান সাফারিতে নয়টি জেব্রা মারা যায়। ২৫ জানুয়ারি জেব্রা মৃত্যুর বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক বসে। ২৯ জানুয়ারি ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে আরও দুটি জেব্রার মৃত্যু হয়। ১১টি জেব্রার মৃত্যুর পরও কর্তৃপক্ষ জেব্রা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট করতে পারেনি।

এরপর একটি বাঘ ও সিংহী মারা যায়। ৬ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবেরা পার্ক পরিদর্শনে এসে জড়িত কর্মকর্তাদের খুঁজে বিচারের ঘোষণা দেন। তার আগেই প্রত্যাহার করা হয় পার্কের প্রকল্প পরিচালক, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ভেটেরিনারি কর্মকর্তাকে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পার্কে আমি নতুন এসেছি। পরিকল্পনা করে সব ধরনের সংস্কারকাজ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হোলি আর্টিজানের ঘটনায় ‘জঙ্গি সন্দেহে’ আটক ছিলেন অনিন্দ্য, রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটনের চাচাতো ভাই তিনি

রাবির অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন নিয়ম ভঙ্গের জন্য ট্রান্স নারী শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার, জানতে চান ১৬২ নাগরিক

টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি পেছাল, পাবে ৫ কোটি শিশু-কিশোর

রাশিয়া খুবই বড় শক্তি, চুক্তি ছাড়া ইউক্রেনের কোনো গতি নেই: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত