Ajker Patrika

আবুল কাশেম

সম্পাদকীয়
আবুল কাশেম

শিক্ষাবিদ, ভাষা আন্দোলনের পথিকৃৎ ও লেখক ছিলেন। ভাষা আন্দোলনের সূচনাপর্বে তিনি ছিলেন এই আন্দোলনের মধ্যমণি।তাঁর উদ্যোগে ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘পাকিস্তান তমদ্দুন মজলিশ’।

তিনি ছিলেন এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। এই সংগঠনের মাধ্যমেই প্রথম তিনি বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানের দাবি উত্থাপন করেন। সংগঠনটির উদ্যোগে ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা: বাংলা না উর্দু’ শিরোনামে একটি পুস্তিকা প্রকাশিত হয়।

মূল পুস্তিকায় তাঁর প্রণীত একটি সংক্ষিপ্ত প্রস্তাবনাও ছিল এবং তাতে ছিল বাংলাকে শিক্ষার মাধ্যম ও পূর্ব বাংলার অফিস-আদালতের ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার দাবি। তাঁরই উদ্যোগে তমদ্দুন মজলিশ ১৯৪৭ সালের ১ অক্টোবর সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনে নেতৃত্ব দেয়। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদই ভাষা আন্দোলন সংগঠিত করে। ১৯৪৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত প্রথম প্রতিবাদ সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ দেশব্যাপী ধর্মঘটে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল।

চট্টগ্রামের পটিয়ার বরমা ইউনিয়নের সেবন্দি গ্রামে আবুল কাশেমের জন্ম। ১৯৪১ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে আইএসসিতে মুসলিম ছাত্রদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। ১৯৪৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে বিএসসি অনার্স এবং এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৪৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন। ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।

পরবর্তী সময়ে ভাষা আন্দোলনের মূল চেতনাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের লক্ষ্যে তিনি ১৯৬২ সালে ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত বাংলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। দীর্ঘ উনিশ বছর এই কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে অধিকাংশ সময়ই তিনি কলেজ থেকে কোনো পারিশ্রমিক নেননি। সে সময় তিনি ‘প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম নামে’ পরিচিতি পান।

তিনি ১৯৯১ সালের ১১ মার্চ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত