Ajker Patrika

কাজ শুরুর আগেই শেষ প্রকল্পের মেয়াদ

রংপুর ও তারাগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ৪২
কাজ শুরুর আগেই শেষ প্রকল্পের মেয়াদ

রংপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর হাইটেক পার্ক নির্মাণের তোড়জোড় শুরু হয় ২০১৭ সালের জুনে। দেড় শ কোটি টাকার এ প্রকল্পের জন্য প্রায় ৯ একর খাসজমির বন্দোবস্তও করেছিল জেলা প্রশাসন। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে সেই জমি ঘিরে সামনে টাঙানো হয় প্রকল্পের সাইনবোর্ড। সেই সাইনবোর্ডে চোখ রেখে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থানের স্বপ্ন বুনেছিলেন হাজারো তরুণ-তরুণী। ২০২০ সামলের জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও সেই স্বপ্ন এখনো পূরণ হয়নি।

কারণ, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও হাইটেক পার্কের নির্মাণকাজ এখনো শুরুই হয়নি। অ্যাপ্রোচ সড়কের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতার কারণে স্থবির হয়ে আছে প্রকল্পের কার্যক্রম। কাঁটাতারে ঘেরা জমিতে গত সাড়ে চার বছরে বহুতল ভবন ওঠেনি, ফিরেছে ধানের সবুজ খেত। অবশ্য জেলা প্রশাসনের দাবি, হাইটেক পার্ক নির্মাণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট তৎপর রয়েছে।

দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১২টি হাইটেক পার্ক নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। রংপুর হাইটেক পার্কের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় ১৫৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ।

সম্প্রতি রংপুর সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খলিশাকুড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হাইটেক পার্কের জন্য অধিগ্রহণ করা ৮ দশমিক ৫৯ একর জমিতে লাগানো কাঁটাতারের বেড়ায় মরিচা ধরেছে। কোনো কোনো স্থানে বেড়া উধাও হয়ে গেছে। সড়কের ধারে প্রকল্পের বিরাট এক সাইনবোর্ড। সাইনবোর্ডের পেছনে বোরো ধানের অবারিত খেত।

পার্কের জন্য অধিগ্রহণ করা জায়গায় বোরো খেত কেন? জানতে চাইলে খলিশাকুড়ি এলাকার শ্রমিক মিজানুর রহমান বলেন, ‘বহুত দিন হওচে। এটে সরকারি লোকজন আসি মাপযোগ করি, জমি ঘিরি থুইয়া গেইছে। একনা সুন্দর বড় বড় বিল্ডিংয়ের ফটোয়ালা সাইনবোর্ড নাগাইছে। ওনতোন (ছবির মতো) বিল্ডিং নাকি এটে হইবে। তা বিল্ডিং তো দূরের কথা, এটে একটা ঘরও হয় নাই। হামরা ধান খেতোত কাম করুছি। কদ্দিন কী হইবে, এইল্লা সউগ ধোঁকাবাজি।’

মজিবর রহমান নামের এক কৃষক বললেন, ‘এসব খাসজমিতে আগোত ধান, পাট হছলো। হঠাৎ শুননো সরকার এটে পার্ক বানাইবে। জমি দখল করিল। কিন্তু এত দিনেও কেনে পার্ক হইল না। পার্ক না হওয়ায় এলাকার লোকজন ফের আবাদ শুরু করছে।’ শুধু কৃষকেরাই নন, প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় তরুণ-তরুণীরাও।

মেয়াদ শেষেও প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরু করতে মন্ত্রণালয় ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষের তৎপরতা চলছে। পার্কের প্রবেশমুখে যাতায়াতের জন্য কিছু জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়ার নামে এ পার্কের নামকরণের প্রস্তাবনাও মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পাঁচ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। রংপুরের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে সফটওয়্যার-শিল্পের আরও বিকাশ ঘটবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আস্থায় বাজিমাত ইসলামী ব্যাংক

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত