Ajker Patrika

বিসিবির নির্বাচক প্যানেলে চাই নতুন ‘মস্তিষ্ক’

রানা আব্বাস, পুনে থেকে
বিসিবির নির্বাচক প্যানেলে চাই নতুন ‘মস্তিষ্ক’

২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম দুটি ম্যাচ ছিল দিনে। আগামীকাল মুশফিকদের বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হচ্ছে সেই দিনের ম্যাচ দিয়েই। পুনেতে এই ম্যাচের আগে গতকাল বাংলাদেশ ঝালিয়ে নিয়েছে বিকেলে। পুনের রোদে এখন তেমন ঝাঁজ নেই। বরং শীতের আগমনীতে বিকেলের আবহাওয়াটা বেশ উপভোগ্য। এই উপভোগ্য বিকেলে বিসিবির নির্বাচক প্যানেল নিয়ে ঝাঁজাল অভিমত দিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল।

এবার আশরাফুল ভারত-বিশ্বকাপে এসেছিলেন একটা সম্প্রচারকারী চ্যানেলের বিশ্লেষক হিসেবে। দলের সঙ্গে পুরো ভারতবর্ষ চষে বেড়িয়েছেন সাবেক এ অধিনায়ক। কাছ থেকেই দেখলেন দলের পারফরম্যান্স। এবার বিশ্বকাপে বিপুল প্রত্যাশা নিয়ে এসে প্রায় ভরাডুবিই হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। ৮ ম্যাচে ২ জয় নিয়ে এই মুহূর্তে পয়েন্ট টেবিলের আটে আছে বাংলাদেশ। ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়। এই ব্যর্থতার দায়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে বড় ধরনের পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। দর্শক-সমর্থকেরা পরিবর্তন দেখতে চান নির্বাচক প্যানেলে।

আশরাফুলও চান, নির্বাচক প্যানেলে বড় পরিবর্তন আসুক। প্রায় এক যুগ ধরে প্রধান নির্বাচক হিসেবে থাকা মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে আর দেখতে চান না তিনি। কাল বিকেলে পুনেতে আশরাফুল বলেছেন, ‘অবশ্যই (পরিবর্তন হওয়া উচিত)। একটা মানুষ (প্রধান নির্বাচক) ১২ বছর ধরে আছেন। আমাদের সবশেষ তিনটি আইসিসির ইভেন্ট ভালো যায়নি। এবারও ভালো হয়নি। দুটি ম্যাচ জিতে আটে আছি। এ কারণে অবশ্যই নতুন ব্রেন (মস্তিষ্ক) দরকার। এটা লম্বা সময়ে থাকার পজিশন নয়, দুই থেকে চার বছর থাকার পজিশন। নতুন মানুষ এলে নতুন ভাবনা আসবে। গত ২৩ বছরে আমরা কেন ১০-১২ জন (প্রধান) কোচ পরিবর্তন করলাম। নতুন কিছু চিন্তার জন্যই তো পরিবর্তন করেছি।’

নান্নুর কাছ থেকে নতুন কোনো আইডিয়া বা ভাবনা আর পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন আশরাফুল, ‘ওই মানের কোনো খাতেই কোয়ালিটি জিনিস নেই। আপনাদের কাছে নাম জিজ্ঞেস করলে আপনারা নাম খুঁজে পাবেন না। এটাই আসলে সমস্যা। নাম না পেলেও এই লেভেলে যারা কিছু খেলেছে, তাদের সুযোগ দিলে হয়তো নতুন নতুন আইডিয়া আসবে। একই আইডিয়া নিয়ে ১২ বছর ধরে আছেন, এখন পরিবর্তন আসা উচিত।’

এর আগেও নান্নুর চেয়ারে পরিবর্তন চেয়েছিলেন আশরাফুল। সেটির পাল্টা হিসেবে নান্নু আশরাফুলের সেই ম্যাচ ফিক্সিং অপবাদ মনে করিয়ে ‘দেশদ্রোহে’র অভিযোগ তুলেছিলেন। আশরাফুল-নান্নুর কথার লড়াই যেটাই হোক, নির্বাচক প্যানেলে পরিবর্তন সময়ের দাবি। ২০১১ বিশ্বকাপের পর থেকেই নির্বাচক প্যানেলে আছেন নান্নু। ২০১৬ সালে ফারুক আহমেদ সরে গেলে সেই যে প্রধান নির্বাচকের পদে আছেন তিনি, সে যাত্রা এখনো শেষ হয়নি। মাঝে পরিবর্তনের দাবি জোরালো হলেও বিসিবির নীতিনির্ধারকেরা তাঁকে সরাতে চাননি। প্রধান নির্বাচক হিসেবে কিছু সাফল্য যেমন আছে নান্নুর, ব্যর্থতার পাল্লা সেটির চেয়ে অনেক ভারী। দীর্ঘ এই সময়ে তিনি ‘রাবার স্টাম্প মার্কা’ নির্বাচকের তকমাও পেয়েছেন।

আশরাফুল জানালেন, এরই মধ্যে তাঁকে নির্বাচক হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিসিবি পরিচালক আকরাম খান। তখন তিনি একটি কোচিং কোর্স নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সে প্রস্তাবে আর সাড়া দিতে পারেননি বলেই দাবি তাঁর। যদি আবারও নির্বাচক হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়, আশরাফুল কি সেটি লুফে নেবেন? সাবেক এ অধিনায়কের উত্তর, ‘যেহেতু আমি ২৬-২৭ বছর ধরে ক্রিকেট খেলছি। ভবিষ্যতেও আমি ক্রিকেটের সঙ্গে থাকতে চাই। এ ধরনের কোনো পরিস্থিতি যদি আসে, অবশ্যই আমি চিন্তা করব।’

নির্বাচক প্যানেলে থাকা আরেক সদস্য হাবিবুল বাশার সুমন আছেন প্রায় এক দশক। আর আবদুর রাজ্জাক যোগ দিয়েছেন ২০২১ সালের শুরুতে। নির্বাচক প্যানেলে আশরাফুল আসুন বা না আসুন, সেটির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, তিনি একটি নির্জলা বাস্তবতা সামনে এনেছেন। নতুন আইডিয়া পেতে হলে এ ধরনের পজিশনের মেয়াদ কিছুতেই এক দশক কিংবা এক যুগ হতে পারে না। বিশ্বের বেশির ভাগ ক্রিকেট বোর্ডে এ চিত্র দেখা যায় না বললেই চলে। এবার বিশ্বকাপের মধ্যে পাকিস্তানের বাজে পারফরম্যান্সের জেরে পিসিবির প্রধান নির্বাচক ইনজামাম-উল-হক পদত্যাগ করলেন, বাংলাদেশে যেটি বিরল। নান্নু-সুমনদের প্যানেলের ‘অতিরিক্ত মেয়াদ’ অবশ্য এই বিশ্বকাপ দিয়ে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু অতীতে তাঁদের মেয়াদ এ রকম ‘শেষ’ হয়েও না হওয়ায় এবারও নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

১৯৪৭ থেকে ২০২৫: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ও ফলাফল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত