রহমান মৃধা
শিশু তার জন্মের শুরুতেই মাকে জানিয়ে দেয় তার চাওয়া-পাওয়ার সংবাদ। সে তার ভূপৃষ্ঠে আগমনে এমনভাবে তৈরি হয়ে আসে যে সে আকারে-ইঙ্গিতে বা সংকেতের মধ্য দিয়ে জানিয়ে দেয় তার কী দরকার। ভূপৃষ্ঠে জন্মের পরপরই কিন্তু একটি শিশু খুব দ্রুততার সঙ্গেই নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করে। যেসব মা-বাবা শিশুকে তার মতো করে গড়ে উঠতে সাহায্য করেন, সেই সব শিশুই বড় হয়ে নিজের, সমাজের তথা দেশ-জাতির জন্য অবদান রাখে বেশি। যেসব শিশু জন্মের শুরুতে সোনার চামচের সঙ্গে পরিচিত হয়, তারা নিজেদের সুযোগ-সুবিধা ছাড়া অন্য কিছু অনুভব করা বা বোঝার ক্ষমতা, দক্ষতা অর্জন করতে পারে না। ফলে সমাজে এরা বড় হয়ে যখন দায়িত্বশীল হয়, সেটা একান্তই ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে থাকে।
অন্যান্য জীবজন্তুর মধ্যে মানুষ জাতি বেশি পিছিয়ে রয়েছে মনুষ্যত্বের সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটাতে। যে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে মানবজাতিকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে, সেই অনুপাতে মানবজাতি তথা আমাদের বিকাশ ঘটেনি। এই বিকাশ না ঘটার পেছনে যে মূল কারণ জড়িত তা হলো, বড়দের নেতৃত্ব এবং কর্তৃত্ব।
জন্মের শুরুতেই শিশুকে বড়দের তৈরি সিস্টেমের মধ্যে ঢুকিয়ে তাদের সিস্টেমের জালে আটকে বড়দের ইচ্ছেমতো তৈরি করা থেকে শুরু করে তাদের অনুকরণ, অনুসরণ করার কারণই দায়ী মানবজাতির অধঃপতনে।
স্রষ্টা যে পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আমাদের পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, আমরা তার এক অংশ সুযোগও সঠিকভাবে ব্যবহার করতে শিখিনি। তবে ধ্বংসাত্মক, হিংসাত্মক, ব্যক্তিকেন্দ্রিক, আত্মকেন্দ্রিক দিকগুলোর ওপর প্রচণ্ড জোরালো হয়েছি। ফলে গোটা বিশ্বের মানুষের মাঝে ঘৃণা, বিদ্বেষসহ ধ্বংসাত্মক মনোভাব বেশি বিরাজমান। এই অপ্রিয় সত্যের পেছনে যে কারণটি বেশি দায়ী সেটা হলো, আমাদের আচরণ।
আমরা যা জানি এবং ভালো মনে করি, সেটাই সারাক্ষণ শিশুকে শিক্ষা দিতে উঠেপড়ে লেগে আছি। ফলে শিশু কখনো তার নিজ সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারছে না। তারা কখনো নতুন কিছু উদ্ভাবন করার সুযোগ পাচ্ছে না। মা-বাবা থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে, তার সবকিছুই কেউ না কেউ জানে, তা নতুন কিছু নয় এবং অন্যের জানা জ্ঞানকেই মূলত শিশু থেকে শুরু করে মানুষের বৃদ্ধ জীবনের কর্মের শেষ অবধি পর্যন্ত শেখানো হচ্ছে, অথচ মানুষ সৃষ্টি হয়েছে তার নিজ নিজ গুণে। কিন্তু তার সঠিক বহিঃপ্রকাশ ঘটছে না। অতএব আমরা যেমনভাবে জন্মেছি, ঠিক তেমনই রয়ে গেছি।
অনেকে বলবেন, আমরা মহাশূন্য থেকে শুরু করে কত কিছু আবিষ্কার করেছি ইত্যাদি। আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই, আমাদের যেখানে থাকার কথা ছিল, সেখানে উপনীত হতে পারিনি এবং এই ব্যর্থতার জন্য আমরা আমাদের শিক্ষাপদ্ধতিকেই দায়ী করতে পারি। আমরা সারাক্ষণ অতীত জানতে জানতে ভবিষ্যৎ জানার সুযোগ হারিয়ে ফেলছি। আবার সারাক্ষণ অতীতের ভুল শোধরাতে সময় ব্যয় করছি। ফলে খুব অল্প সময় ভবিষ্যতের জন্য ব্যয় করার সুযোগ পাচ্ছি। এতে উন্নতির শীর্ষে যেভাবে ওঠার কথা, সেটা হচ্ছে না। এই অপ্রিয় সত্যকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে যে কাজটি করা দরকার তা হলো, শিশুশিক্ষায় হস্তক্ষেপ বন্ধ করা।
আমাদের আঙুলের ছাপই বলে দেয় আমরা প্রত্যেকে নিজ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। এখন সেই ব্যক্তিত্বকে বাধাবিঘ্ন ছাড়া গড়ার সুযোগ দিতে হবে। তাহলে প্রত্যেক ব্যক্তিত্ব তার মতো করে ফুটে উঠবে, যেমন ফুলের বাগানে ফুটন্ত ফুলগুলো ফুটে ওঠে। পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে আমরা শুধু পরের কথা শিখতে শিখতে জীবন পার করে দিচ্ছি, বিশেষ করে শিক্ষিত সমাজ; তাদের তো নিজস্ব বলে কিছু বলারই নেই।
সমাজে যারা কম শিক্ষায় শিক্ষিত, তাদের কারণে পৃথিবীর ন্যূনতম উন্নতি হয়েছে। কারণ, পুঁথিগত বিদ্যা তাদের মস্তিষ্ক ধোলাই দিতে পারেনি। তাই ভুলভ্রান্তির মধ্য দিয়ে সমাজের কিছু অশিক্ষিত তথা আমাদের মতো কিছু ‘মূর্খ’ মাঝেমধ্যে আজগুবি কিছু করে বা বলে। এর ফলে মূর্খের ভুল শোধরাতে পণ্ডিতেরা যখন ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখনই মূর্খের ভুল সত্যে প্রমাণিত হয়। যেমনটি হবে আমার কথার সত্য প্রমাণ, যেদিন শিশুশিক্ষায় হস্তক্ষেপ বন্ধ হবে।
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
শিশু তার জন্মের শুরুতেই মাকে জানিয়ে দেয় তার চাওয়া-পাওয়ার সংবাদ। সে তার ভূপৃষ্ঠে আগমনে এমনভাবে তৈরি হয়ে আসে যে সে আকারে-ইঙ্গিতে বা সংকেতের মধ্য দিয়ে জানিয়ে দেয় তার কী দরকার। ভূপৃষ্ঠে জন্মের পরপরই কিন্তু একটি শিশু খুব দ্রুততার সঙ্গেই নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করে। যেসব মা-বাবা শিশুকে তার মতো করে গড়ে উঠতে সাহায্য করেন, সেই সব শিশুই বড় হয়ে নিজের, সমাজের তথা দেশ-জাতির জন্য অবদান রাখে বেশি। যেসব শিশু জন্মের শুরুতে সোনার চামচের সঙ্গে পরিচিত হয়, তারা নিজেদের সুযোগ-সুবিধা ছাড়া অন্য কিছু অনুভব করা বা বোঝার ক্ষমতা, দক্ষতা অর্জন করতে পারে না। ফলে সমাজে এরা বড় হয়ে যখন দায়িত্বশীল হয়, সেটা একান্তই ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে থাকে।
অন্যান্য জীবজন্তুর মধ্যে মানুষ জাতি বেশি পিছিয়ে রয়েছে মনুষ্যত্বের সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটাতে। যে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে মানবজাতিকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে, সেই অনুপাতে মানবজাতি তথা আমাদের বিকাশ ঘটেনি। এই বিকাশ না ঘটার পেছনে যে মূল কারণ জড়িত তা হলো, বড়দের নেতৃত্ব এবং কর্তৃত্ব।
জন্মের শুরুতেই শিশুকে বড়দের তৈরি সিস্টেমের মধ্যে ঢুকিয়ে তাদের সিস্টেমের জালে আটকে বড়দের ইচ্ছেমতো তৈরি করা থেকে শুরু করে তাদের অনুকরণ, অনুসরণ করার কারণই দায়ী মানবজাতির অধঃপতনে।
স্রষ্টা যে পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আমাদের পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, আমরা তার এক অংশ সুযোগও সঠিকভাবে ব্যবহার করতে শিখিনি। তবে ধ্বংসাত্মক, হিংসাত্মক, ব্যক্তিকেন্দ্রিক, আত্মকেন্দ্রিক দিকগুলোর ওপর প্রচণ্ড জোরালো হয়েছি। ফলে গোটা বিশ্বের মানুষের মাঝে ঘৃণা, বিদ্বেষসহ ধ্বংসাত্মক মনোভাব বেশি বিরাজমান। এই অপ্রিয় সত্যের পেছনে যে কারণটি বেশি দায়ী সেটা হলো, আমাদের আচরণ।
আমরা যা জানি এবং ভালো মনে করি, সেটাই সারাক্ষণ শিশুকে শিক্ষা দিতে উঠেপড়ে লেগে আছি। ফলে শিশু কখনো তার নিজ সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারছে না। তারা কখনো নতুন কিছু উদ্ভাবন করার সুযোগ পাচ্ছে না। মা-বাবা থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে, তার সবকিছুই কেউ না কেউ জানে, তা নতুন কিছু নয় এবং অন্যের জানা জ্ঞানকেই মূলত শিশু থেকে শুরু করে মানুষের বৃদ্ধ জীবনের কর্মের শেষ অবধি পর্যন্ত শেখানো হচ্ছে, অথচ মানুষ সৃষ্টি হয়েছে তার নিজ নিজ গুণে। কিন্তু তার সঠিক বহিঃপ্রকাশ ঘটছে না। অতএব আমরা যেমনভাবে জন্মেছি, ঠিক তেমনই রয়ে গেছি।
অনেকে বলবেন, আমরা মহাশূন্য থেকে শুরু করে কত কিছু আবিষ্কার করেছি ইত্যাদি। আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই, আমাদের যেখানে থাকার কথা ছিল, সেখানে উপনীত হতে পারিনি এবং এই ব্যর্থতার জন্য আমরা আমাদের শিক্ষাপদ্ধতিকেই দায়ী করতে পারি। আমরা সারাক্ষণ অতীত জানতে জানতে ভবিষ্যৎ জানার সুযোগ হারিয়ে ফেলছি। আবার সারাক্ষণ অতীতের ভুল শোধরাতে সময় ব্যয় করছি। ফলে খুব অল্প সময় ভবিষ্যতের জন্য ব্যয় করার সুযোগ পাচ্ছি। এতে উন্নতির শীর্ষে যেভাবে ওঠার কথা, সেটা হচ্ছে না। এই অপ্রিয় সত্যকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে যে কাজটি করা দরকার তা হলো, শিশুশিক্ষায় হস্তক্ষেপ বন্ধ করা।
আমাদের আঙুলের ছাপই বলে দেয় আমরা প্রত্যেকে নিজ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। এখন সেই ব্যক্তিত্বকে বাধাবিঘ্ন ছাড়া গড়ার সুযোগ দিতে হবে। তাহলে প্রত্যেক ব্যক্তিত্ব তার মতো করে ফুটে উঠবে, যেমন ফুলের বাগানে ফুটন্ত ফুলগুলো ফুটে ওঠে। পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে আমরা শুধু পরের কথা শিখতে শিখতে জীবন পার করে দিচ্ছি, বিশেষ করে শিক্ষিত সমাজ; তাদের তো নিজস্ব বলে কিছু বলারই নেই।
সমাজে যারা কম শিক্ষায় শিক্ষিত, তাদের কারণে পৃথিবীর ন্যূনতম উন্নতি হয়েছে। কারণ, পুঁথিগত বিদ্যা তাদের মস্তিষ্ক ধোলাই দিতে পারেনি। তাই ভুলভ্রান্তির মধ্য দিয়ে সমাজের কিছু অশিক্ষিত তথা আমাদের মতো কিছু ‘মূর্খ’ মাঝেমধ্যে আজগুবি কিছু করে বা বলে। এর ফলে মূর্খের ভুল শোধরাতে পণ্ডিতেরা যখন ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখনই মূর্খের ভুল সত্যে প্রমাণিত হয়। যেমনটি হবে আমার কথার সত্য প্রমাণ, যেদিন শিশুশিক্ষায় হস্তক্ষেপ বন্ধ হবে।
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪