Ajker Patrika

ছুটিতে লাইব্রেরি বন্ধ!

সম্পাদকীয়
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ৫২
ছুটিতে লাইব্রেরি বন্ধ!

অধ্যাপক মো. আনিসুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার কয়েক মাস পরেই বিপদে পড়লেন। রমজান মাসের ছুটি চলছে। এ সময়টাকে কাজে লাগালে পড়াশোনাটা ভালো হয়। নিরবচ্ছিন্ন গবেষণার জন্য ছুটির সময় লাইব্রেরি ওয়ার্ক করা গেলে কাজ অনেকটা এগিয়ে যায়। দেশের বাইরে যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কথা জানতেন তিনি এবং যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন, সেসব জায়গায় দেখেছেন, শনি-রবিবার ছুটির দিনেও লাইব্রেরি খোলা থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা কি বন্ধ, তার সঙ্গে লাইব্রেরির কোনো সম্পর্ক নেই। যেকোনো দিন ছাত্র বা শিক্ষক যেন লাইব্রেরি ব্যবহার করতে পারেন, সেই সুযোগ ছিল তাঁদের।

কিন্তু সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ব্যবহার করতে গিয়ে তিনি দেখলেন পুরো রমজান মাসই লাইব্রেরি বন্ধ! এটা শিক্ষকেরাও মেনে নিয়েছিলেন। নিজেদের গবেষণার কাজ তাঁরা নিজেরাই নিজেদের মতো করে নিতেন।

রমজানেই একদিন আনিসুর রহমান দেখলেন উপাচার্যের অফিস খোলা। উপাচার্য বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তাঁর দপ্তরে কাজ করছেন।

অধ্যাপক আনিসুর রহমান উপাচার্যের ঘরে ঢুকে বললেন, ‘স্যার, এই যে আপনি কাজ করছেন, অথচ আমি কাজ করতে পারছি না!’

উপাচার্য অবাক হয়ে বললেন, ‘কী বললেন?’

আনিসুর রহমান বললেন, ‘স্যার, বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি বন্ধ। আমি আমার কাজ করতে পারছি না।’

উপাচার্য অবাক হয়েই বললেন, ‘আপনি দয়া করে একটু বসবেন?’

আনিসুর রহমান বসলেন। উপাচার্য তাঁকে বললেন, ‘আপনি যে কথাটা বললেন, সেটা আরেকবার বলবেন কি?’

আনিসুর রহমান এবার অবাক হলেন। পুনরাবৃত্তি করলেন। উপাচার্য বললেন, ‘এত দিন আমি এখানে ভাইস চ্যান্সেলর, কিন্তু কেউ আমাকে এ কথা কখনো বলেননি। আপনি একদিন আমার এই ঘরে সারা দিন বসে থাকুন, দেখবেন কত রকম দাবি-দাওয়া নিয়ে শিক্ষকেরা আসে। কিন্তু ছুটির দিন লাইব্রেরি খোলা চান, এমন কাউকেই তো দেখিনি!’

এরপর অবশ্য সমস্যার সমাধান হয়েছিল। এই ঘটনার পর ছুটিতে একজন স্কেলিটন স্টাফ রেখে উপাচার্য লাইব্রেরি খুলিয়েছিলেন।

সূত্র: মো. আনিসুর রহমান, পথে যা পেয়েছি, পৃষ্ঠা ৭৯-৮০

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত