Ajker Patrika

দেশি ফুটবলাররা গোলই পান না, হ্যাটট্রিক দূরের স্বপ্ন

নাজিম আল শমষের, ঢাকা
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২২, ১০: ৪৮
দেশি ফুটবলাররা গোলই পান না, হ্যাটট্রিক দূরের স্বপ্ন

ঘরোয়া ফুটবলে এখন স্থানীয় ফুটবলাররা একটা গোল পেলেই হয়ে যান খবরের শিরোনাম! যেখানে গোল পেতেই গলদঘর্ম অবস্থা, সেখানে গোলের হ্যাটট্রিক তো দূরের কল্পনা।

ঘরোয়া ফুটবলে শেষ কবে হ্যাটট্রিক পেয়েছেন দেশি ফুটবলাররা? এই প্রশ্নের উত্তরে এখন নিজেরাই খুঁজে পান না বাংলাদেশের ফুটবলার কিংবা কোচরা। সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় ফুটবলারদের গোল যেন সোনার হরিণে রূপ নিয়েছে। বিদেশি সতীর্থদের সহায়তা করেই অধিকাংশ সময়ে দেশের ফুটবলাররা তৃপ্ত থাকেন! সুযোগ অল্প কিছু যাও-বা আসে, বেশির ভাগই সেটা নষ্ট করেন বা কাজে লাগাতে চান না বলে অভিযোগ আছে দেশি ফরোয়ার্ডদের নিয়ে! আর গোল পান না বলে স্বাভাবিকভাবে হ্যাটট্রিকের দেখাও মেলে না তাঁদের কাছ থেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফুটবলার জানালেন, ক্লাবে তাঁরা ভীষণ চাপে থাকেন বিদেশিদের বল দিতে। শট নিতে ব্যর্থ হলে কোচদের বকাঝকা শুনতে হয়, যেটা বিদেশিদের শুনতে হয় না। এখন তাই তাঁরা খুব বেশি ঝুঁকিও নেন না গোলের জন্য!

দেশের ফরোয়ার্ডদের মধ্যে গত মৌসুমে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ১০ গোল করেছিলেন আবাহনীর উইঙ্গার জুয়েল রানা। আরামবাগের বিপক্ষে গত বছরের ৯ আগস্ট তাঁর হ্যাটট্রিকই হয়ে আছে দেশিদের মধ্যে সর্বশেষ হ্যাটট্রিক। ২০২০-২১ মৌসুমে হ্যাটট্রিকের সংখ্যা ছিল নয়টি, সেখানে শুধু ব্যতিক্রম জুয়েল। বাংলাদেশি ফুটবলারদের মধ্যে একমাত্র তিনিই করেছেন ১ ম্যাচে ৩ গোল।

হ্যাটট্রিকের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯-২০ মৌসুম ছিল দেশের ফুটবলারদের জন্য দারুণ এক মৌসুম। সেই মৌসুমে এক ম্যাচে তিন গোলের দারুণ মুহূর্ত উপহার দিতে পেরেছেন তিন ফুটবলার। আরামবাগের বিপক্ষে মোহামেডানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন একসময়ের প্রতিভাধর স্ট্রাইকার জাহিদ হোসেন। রহমতগঞ্জের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক ছিল আবাহনীর নাবীব নেওয়াজ জীবনের। ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে দেশিদের মধ্যে সেই মৌসুমে শেষ হ্যাটট্রিক করেছিলেন বসুন্ধরা কিংস উইঙ্গার মতিন মিয়া।

এবারের মৌসুমে প্রথম লেগ শেষ হওয়ার আগেই ছয়টি হ্যাটট্রিক দেখেছে দেশের ঘরোয়া ফুটবল এবং সবগুলোই করেছেন বিদেশি ফুটবলাররা। ম্যাচ জিততে যথারীতি বিদেশি ফরোয়ার্ড নির্ভরতায় ঝুঁকে আছে অধিকাংশ ক্লাব। আর সে কারণেই কমেছে দেশি ফুটবলারদের গোলসংখ্যাও। এবারের লিগে এখন পর্যন্ত দেশি ফুটবলাররা গোল পেয়েছেন ২২টি, যেখানে তিনটি করে গোল তিন ফুটবলারের।

দেশি ফুটবলারদের গোলে ফেরাতে বিদেশিদের সংখ্যা আর নির্ভরতা কমানোর প্রতি জোর দেওয়ার দাবি দেশের একসময়ের তারকা স্ট্রাইকার আলফাজ আহমেদের। মোহামেডানের হয়ে কোচিংয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকা সাবেক এই ফুটবলার বললেন, ‘এখন দেশিরা তো খুব বেশি ম্যাচই খেলার সুযোগ পায় না। আমাদের সময় ছোট দলগুলোর বিদেশি ফুটবলার আনার সামর্থ্য কম ছিল, তারা দেশিদের ওপর ভরসা রাখত। এখনকার ফুটবলাররা মূল স্ট্রাইকার হওয়ার চেয়ে উইং ধরে খেলতে চায়, তাই গোলের সংখ্যাও কমে গেছে।’

হ্যাটট্রিক না পাওয়ার কারণ হিসেবে দেশি ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাসের অভাবকেই দোষ দিচ্ছেন সাবেক ফরোয়ার্ড জাহিদ হাসান এমিলি। বর্তমান ফরোয়ার্ডদের ‘গড়পড়তা’ আখ্যা দিয়ে এমিলির দাবি বর্তমান ফুটবলাররা ম্যাচে ১ গোল পেলেই খুশি হয়ে যান যে কারণে গোল সংখ্যাটাও আর বাড়ছে না তাঁদের।

এমিলি বলেছেন, ‘এখনকার ফরোয়ার্ডরা ভাবে যে আমার এক গোল হয়ে গেছে, কাজ শেষ! গোল একটা অভ্যাসের বিষয়। গোল পেলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে, তখন যেকোনো অবস্থা থেকেই বল জালে জড়ানো যায়। এই মানসিকতা বলতে গেলে এখন একেবারেই নেই। জাতীয় দল কিংবা ক্লাবে ম্যাচের ছবি পাল্টে দেবে এমন কোনো খেলোয়াড়ই তো নেই!’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত