Ajker Patrika

যুদ্ধ এবং যুদ্ধ

আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ১৯
যুদ্ধ এবং যুদ্ধ

লিকলিকে শরীরের এক ঢ্যাঙা ছেলে। গানের প্রতি আগ্রহ খুব। আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতাও তাঁর জীবনদর্শন। আঠারো বছর বয়সে যোগ দেন গণসংগীতের দল ‘ক্রান্তি’তে। একুশ বছর বয়সে যুদ্ধযাত্রা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানিরা যখন তছনছ করতে শুরু করল এই দেশ, তখন অন্য সব তরুণের মতো আজম খানের মনেও জেগে উঠল ক্ষোভ। এরপর একদিন পাকিস্তানি সেনারা এল বাড়িতে। বাবাকে জিজ্ঞেস করল ছেলেরা কোথায়? বোঝা গেল, তরুণ ছেলেদের ধরে নিয়ে যেতে চায় ওরা।

আজম খান সে খবর শুনে খুব রেগে গেলেন। মাকে বললেন, ‘যুদ্ধে যাব।’

মা বললেন, ‘বাবাকে বল।’

বাবাকে যুদ্ধে যাওয়ার কথা বললে তিনি কী উত্তর দেবেন, জানা ছিল না আজম খানের। বাবার উত্তর শুনে সত্যিই অবাক হলেন আজম। বাবা বললেন, ‘দেশ স্বাধীন না করে ঘরে ফিরবি না।’

সেই কথা শুনে আজম খানের হৃদয় গর্বে ভরে উঠল। কুমিল্লা সীমান্ত পার হয়ে গেলেন ত্রিপুরায়। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা হয়ে প্রশিক্ষণ নিতে গেলেন মেলাঘরে। প্রশিক্ষণ নিলেন ২ নম্বর সেক্টরে। এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন খালেদ মোশাররফ। মেজর এ টি এম হায়দারের কাছে প্রশিক্ষণ নিলেন দুই মাস। প্রশিক্ষণের সময় অবসরে আজম খান গাইতেন গান। গিটার ছিল না, ছিল থালা, বাটি, হাঁড়ি, ডিব্বা। এই যন্ত্রানুষঙ্গ গানকে মোটেই হালকা করত না; বরং মুক্তিযোদ্ধারা গোল হয়ে সেই গান শুনতেন। গণসংগীতগুলো অনুপ্রেরণা জোগাত গেরিলাদের মনে।

অস্ত্র হাতে কুমিল্লার সালদায় প্রথম সম্মুখসমরে অংশ নেন। সে যুদ্ধে জয়ী হন। এরপর তাঁকে একটি গেরিলা গ্রুপের সেকশন কমান্ডার করে ঢাকায় পাঠানো হয়। ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য হিসেবে বেশ কিছু অপারেশনে অংশ নেন তিনি।

স্বাধীনতার পর তিনি গানের জগতেই নিজেকে মেলে ধরেন। জীবনঘনিষ্ঠ গানগুলো তাঁকে নিয়ে আসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

সূত্র: জাহীদ রেজা নূর, সৃজন ছন্দে আজম খান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত