Ajker Patrika

অসময়েও ভাঙছে মহানন্দা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৫৬
অসময়েও ভাঙছে মহানন্দা

শীত মৌসুমের শুরুতেও ভাঙছে মহানন্দা নদী। ফলে আতঙ্ক বিরাজ করছে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে। স্রোত এবং ঢেউ ছাড়াই নদী ভাঙায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে পাঁচ শতাধিক নদীপাড়ের বাসিন্দা। কেউ কেউ বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।

গত বুধবার গভীর রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে পূর্ণিমা রানী নামের এক পরিবারের বসতবাড়ি। এ ছাড়াও ফাটল ধরেছে আরও অন্তত ৩০টি বাড়িতে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নদীর পানি যত কমছে, ভাঙন তত বাড়ছে। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চককির্তী ইউনিয়নে এ ভাঙনের ঘটনা ঘটছে। ভাঙন আতঙ্কে স্থানীয়রা আশ্রয় নিচ্ছেন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে।

সরেজমিনে গতকাল শুক্রবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার চককির্তী ইউনিয়নের চাঁদপুর কুমার এলাকায় দেখা গেছে, পূর্ণিমা রানীর রান্নাঘরসহ বেশকিছু আসবাব নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আর ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে রিতা রানী, কালু পাল, নয়ন পাল, মধু পাল, সুদেব হলদার, মদন পাল, সুকুমার পালেরসহ প্রায় ২৫০ বাড়ি।

জানতে চাইলে পূর্ণিমা রানী বলেন, ‘আমি বুধবার বিকেলে দেখি আমার রান্নাঘরের কিছু অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। কিন্তু আমি তেমন গুরুত্ব দিইনি। হঠাৎ রাত ১২টার দিকে একটা শব্দ পেলাম। উঠে দেখি নদীতে তলিয়ে গেছে আমার রান্নাঘরসহ বেশকিছু আসবাব। সকাল থেকে আমি বাড়ির সব আসবাব অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছি। আর ঠাঁই নিয়েছি পাশের আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে। আমার তিন বাচ্চাকে নিয়ে আমাকে কত দিন ঠাঁই দেবে? আর আমার অন্য কোনো জমি নেই যে গিয়ে বাড়ি করব।’

নদীর তীরবর্তী বাসিন্দা রিতা রানী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, একটু জমির ওপর খুপরি তুলে ৫টি গরু ও ৩টি ছাগলসহ নিজেদের বাচ্চা নিয়ে বসবাস করছি। কিন্তু গত রাত থেকে আমাদের সম্বলটুকুও নদীতে বিলীন হতে শুরু করেছে। এমন হলে আমরা কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিব। তাই সরকারের কাছে আমাদের আবেদন এই নদীর বাঁধটি যেন অতি দ্রুত বেঁধে দেয়।’

সুব্রত নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, ভাঙনে তলিয়ে যাওয়া পূর্ণিমা রানীর বাড়ি তাঁদের বাড়ির পাশেই। গত রাতে তাঁর বাড়ি ভেঙে গেছে। এ জন্য তিনিও আতঙ্কে রয়েছেন। কাল রাত থেকে তাঁদেরও ঘুম নেই। আতঙ্কে আছেন কখন যেন তাঁদের পাকা বাড়ি ভেঙে যায়।

চককির্তী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন আনু মিঞা বলেন, গতকাল সকালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ময়েজ উদ্দিনের কাছে। তিনি বলেন, ভাঙনের খবর শুনে গত বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মজুত করা জিও ব্যাগ রয়েছে। আজ শনিবার থেকেই ওইসব জায়গায় ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত