Ajker Patrika

ঝড়-বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ৩৪
ঝড়-বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি

ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে মেহেরপুর, ঝিনাইদহ এবং চুয়াডাঙ্গা জেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দমকা বাতাসে অনেক জমির ফসল নুয়ে পড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গম, কলাগাছ, ভুট্টা ও বরজে। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ঝিনাইদহ: গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে হঠাৎ ঝোড়ো বাতাস আর বৃষ্টি শুরু হয়। ঝড় অল্প সময় স্থায়ী হলেও কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হয় বৃষ্টিপাত। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গম ও কলাবাগানে।

গতকাল শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার নগরবাথান, যাদবপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাটিতে নুয়ে পড়েছে গম, ভেঙে গেছে বাগানের কলাগাছ। অনেক খেতের ভুট্টাগাছও ভেঙে পড়েছে। কোনো কোনো স্থানে পানের বরজের চালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বৃষ্টিতে পোকার আক্রমণে ফুলকপি, শিমসহ অন্যান্য ফসলেরও ক্ষতির শঙ্কা করছেন কৃষকেরা। তবে কী পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হয়েছে তা জানাতে পারেনি কৃষি বিভাগ।

সদর উপজেলার যাদবপুর এলাকায় কৃষক বাদল সরকার জানান, দুই বিঘা জমিতে ভুট্টা ছিল। রাতের ঝড়ে খেতের এক-তৃতীয়াংশ গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। কতটুকু ফলন আসবে জানি না।

নগরবাথান এলাকার কৃষক আজিজুর রহমান জানান, রাত ৯টার দিকে ঝড় শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে খেতের দুই শতাধিক গাছ ভেঙে গেছে। এতে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা লোকসান হবে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম বলেন, ‘বৃষ্টি বা ঝড় ক্ষণস্থায়ী হওয়ায় ফসলের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। কৃষক যদি সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারেন, তাহলে এখান থেকেও ভালো ফলন পাবেন।’

মেহেরপুর: দমকা হাওয়া ও রাতভর বৃষ্টিতে মেহেরপুরে উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সঙ্গে ছিল হালকা শীলা বৃষ্টি। অনেক জমিতে নুয়ে পড়েছে ফসল। ফলে কাঙ্ক্ষিত ফলন থেকে বঞ্চিত হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।

সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, নুয়ে পড়ে আছে উঠতি ফসল গম, ভুট্টা। ভেঙে পড়েছে পেঁপেগাছ, পানিতে রয়েছে আলু, পেঁয়াজ, মসুর ও লাল শাক। কৃষকেরা চেষ্টা করছেন জমি থেকে পানি বের করে দিতে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তামাক খেতের। হালকা শীলা বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে আম ও লিচুর মুকুলের।

সদর উপজেলার আমদাহ গ্রামের কৃষক মামুন বলেন, ‘৪৫ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করেছি। জমির আলু এখন পানির নিচে। ফলে অনেক আলুগাছে পচন ধরবে। আবার যে পরিমাণ আলু জমি থেকে তুলতে পারব, সেগুলো বীজ হিসেবে আর বিক্রি করা যাবে না। এ আলু উৎপাদন করতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এখন আলু বিক্রি করে অর্ধেকও উঠবে না।’

মুজিবনগর উপজেলার মানিকনগর গ্রামের চাষি দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, ‘৪ বিঘা জমিতে সুখসাগর জাতের পেঁয়াজের আবাদ করেছি। এমনিতে এ জাতের পেঁয়াজে পানির পরিমাণ বেশি থাকে। এখন উত্তোলনের সময়। এ বৃষ্টিতে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হাবে।’

কষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক স্বপন কুমার খাঁ বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের চেষ্টা করছেন। কয়েক দিন না গেলে ক্ষতির পরিমাণ বোঝা সম্ভব হবে না। সূর্যের দেখা মেলায় কিছুটা স্বস্তি। এতে ক্ষতি কিছুটা পোষানো সম্ভব হবে।’

চুয়াডাঙ্গা: ঝড়ের আঘাতে চুয়াডাঙ্গা শহরের বেশ কিছু ঘর-বাড়ি, দোকানপাট ও গাছপালার ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে পৌনে ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ৪৬ কিলোমিটার ও রাত ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ১৩ মিলিমিটার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত