Ajker Patrika

বালু তোলার মাশুল ভাঙন

মো. ফরিদ রায়হান, অষ্টগ্রাম
বালু তোলার মাশুল ভাঙন

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের কাটাগাঙের অবৈধভাবে বালু তোলার মহোৎসব চলছে। প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে কয়েক মাস ধরে প্রতিদিন দুটি ড্রেজিং মেশিনে তোলা হচ্ছে বালু। অবাধে বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙন দেখা দিয়েছে নদীতীরে। এতে হুমকির মুখে কৃষকের ফসলি জমি। বালু তোলায় জড়িত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁদের ভয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী মানুষের।

জানা গেছে, অষ্টগ্রাম উপজেলার খয়েরপুর-আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের দোয়েলপুর গ্রামের উত্তরে কাটাগাঙ (মেঘনা নদীতে) এলাকায় মেসার্স সততা ড্রেজিং প্রকল্প ও এমবি সজীব রোহান ড্রেজিং প্রকল্প নামে দুটি ড্রেজিং মেশিন বালু উত্তোলন করে। এতে নদীর পশ্চিম তীরের একাধিক স্থানে ভাঙন, ভাটিতে নদী ভরাট ও গতিপথ পরিবর্তনের অভিযোগ করেছে স্থানীয় সচেতন মহল।

গত শনিবার সকাল ৯টার দিকে এমবি রহমান-২ নৌকায় বালু বোঝাই করে আব্দুল্লাপুর বাজার ঘাটে ফিরতে দেখা যায় এমবি সততা ড্রেজিং প্রকল্প মেশিনকে। পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সততা ও সজীব রোহান দুটি নৌকায় বালু বোঝাই করে। বালু নিয়ে ফিরে যায় আরও দুটি নৌকা। তখন পাশে নদীর তীরে ও ড্রেজিং মেশিনে অপেক্ষায় ছিল আরও চারটি নৌকা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ড্রেজিংয়ের কাজে সংশ্লিষ্টরা জানান, দিনে ৮-১০টি নৌকা দিয়ে কাটাগাঙের বালু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। প্রতিটি নৌকায় প্রায় ৪ হাজার ফুট বালু বোঝাই করে বিক্রি করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক মাস ধরে আব্দুল্লাপুর গ্রামের শামসুদ্দিন, ওমর আলী ও মিঠামইন উপজেলার হাবিব নামের ৫-৭ জনের একটি চক্র দুটি মেশিন দিয়ে নিয়মিত কাটাগাঙ থেকে বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলন করছে। তারা বালুবাহী বিভিন্ন নৌকায় বালু তুলে নিয়ে যায়।

গত জুলাই মাসে উপজেলা প্রশাসন অবৈধ ড্রেজার মেশিনের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা দিলেও থামেনি বালুখেকোদের দৌরাত্ম্য। নিরুপায় সাধারণ মানুষ এ নিয়ে মুখ খুলতে ভয় পান। 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ওমর আলী বলেন, তেলের দাম বাড়ায় বালু আর তোলেন না। তবে মেসার্স সততা ড্রেজিং প্রকল্প নামে ড্রেজিং মেশিনটি পরিচালনা করেন সোহেল।

অন্য অভিযুক্ত ফরহাদকে ফোন করলে তিনি রং নম্বর বলে লাইনটি কেটে দেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শামসুদ্দিন বলেন, ‘আপনার সঙ্গে পুরো বিষয়ে কথা বলতে পারব না। সমস্যা আছে। সজীব রোহান ড্রেজিং মেশিন পরিচালনা করি। এটি মালিক মিঠামইনের হাবিব, আর মেসার্স সততা ড্রেজিং প্রকল্প পরিচালনা করেন সোহেল।’

খয়েরপুর আব্দুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বালু তুলে বিক্রি হচ্ছে। আমি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। এভাবে বালু তোলা হলে নদীভাঙন বাড়বে, কমবে ফসলি জমি। ইতিমধ্যে নদীর বুকে চর জেগেছে। দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধ করা দরকার।’ 
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘নদী থেকে বালু তোলার বিষয়টি আমি এখনই জানতে পারলাম। খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প: ইউএনও-উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে শুনানি কাল

চীন–রাশিয়া থেকে ভারতকে দূরে রাখতে কয়েক দশকের মার্কিন প্রচেষ্টা ভেস্তে দিচ্ছেন ট্রাম্প: জন বোল্টন

‘হানি ট্র্যাপের’ ঘটনা ভিডিও করায় খুন হন সাংবাদিক তুহিন: পুলিশ

আটজন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন’ দুর্নীতির প্রমাণ আছে: সাবেক সচিব

স্ত্রীকে মেরে ফেলেছি, আমাকে নিয়ে যান— ৯৯৯–এ স্বামীর ফোন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত