Ajker Patrika

পোকায় মরছে নারকেল গাছ

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ০৪
পোকায় মরছে নারকেল গাছ

বাগেরহাটে নারকেল, পেঁপে, সুপারিসহ বিভিন্ন গাছের পাতায় হোয়াইটফ্লাই ও শূতিমূলের আক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এদের আক্রমণে একে একে মারা যাচ্ছে অনেক গাছ। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এলাকার কৃষক ও সাধারণ মানুষেরা।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হোয়াইটফ্লাই ও শূতিমূলের আক্রমণে গাছের পাতায় এক ধরনের কালো আবরণ পড়ে আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে আক্রান্ত গাছ। বাজারে থাকা বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগেও আক্রমণ কমছে না।

বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর, পদ্মনগরসহ বিভিন্ন এলাকাঘুরে দেখা গেছে, নারিকেল, সুপারি, পেঁপে, পেয়ারা, কলাসহ বিভিন্ন গাছের পাতার ওপর এক ধরনের কালো আবরণ পড়েছে। শূতিমূল নামের এক ধরনের ফাঙ্গাসের প্রভাবে পাতা এভাবে কালো হয়ে যাচ্ছে। পাতার নিচে রয়েছে তুলার মতো সাদা রঙের পোকা। এই পোকাগুলোই হচ্ছে হোয়াইটফ্লাই।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই পোকাগুলো প্রথমে পাতায় বসে। পরে ওই পাতার ওপর মাকড়সার জালের মতো আবরণ তৈরি করে। প্রতিদিন এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এগুলো হওয়ার ফলে ধীরে ধীরে আক্রান্ত গাছের সালোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে যায়। গাছের ফল দানের ক্ষমতা নষ্ট হতে থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে আক্রমণ অব্যাহত থাকলে আক্রান্ত গাছ মারাও যেতে পারে।

এ দিকে হোয়াইটফ্লাই ও শূতিমূল পোকার হাত থেকে চাষিদের বাঁচানোর উপায় খুঁজতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের একটি গবেষণা দল সরেজমিনে বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন ও পর্যালোচনা শেষে তাঁরা কৃষি বিভাগকে জানিয়েছেন হোয়াইটফ্লাই ও শূতিমূল খুবই ভয়ংকর পোকা। এই পোকা শুধু নারকেল, পেঁপে নয়, অন্তত ৫০ প্রকার গাছে বিস্তার লাভ করতে পারে। একটি গাছকে মেরে ফেলতেও সক্ষম এই পোকা। তবে নিয়ম অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োগ করতে পারলে এসব পোকা নির্মূল করাও সম্ভব।

খোকন শেখ নামের সদর উপজেলার এক কৃষক বলেন, ‘আমার চিংড়ি ঘেরের পাড়ের পেঁপে, পেয়ারা ও আম গাছের পাতার উপরের অংশ দিন দিন কালো হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না। এভাবে পাতা নষ্ট হয়ে গেলে গাছগুলো বাঁচার সম্ভাবনা খুব কম। এমন চলতে থাকলে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে।’

আরও কয়েকজন কৃষক বলেন, আগে মাঝে মাঝে কিছু গাছের পাতার ওপরে কালো প্রলেপ পড়ত। কিন্তু এ বছর এই কালো প্রলেপ পড়ার পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। সঙ্গে রয়েছে ছোট ছোট সাদা পোকের আগ্রাসন। এগুলো না ঠেকাতে পারলে এলাকার অনেক গাছ মারা যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোতাহার হোসেন বলেন, ‘এটা শুধু বাগেরহাটে নয়; দেশের বিভিন্ন জেলায় হোয়াইটফ্লাই ও শূতিমূলের আক্রমণের খবর পেয়েছি। এগুলোর আক্রমণ এত ভয়ানক যে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে আক্রান্ত গাছ মারাও যেতে পারে।’

তবে এ সমস্যা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘হোয়াইটফ্লাই ও শূতিমূলের আক্রমণ থেকে আক্রান্ত গাছকে বাঁচানো সম্ভব। এ জন্য ইমিডা ক্লোরোপিড গ্রুপের বিভিন্ন কীটনাশকের সঙ্গে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে গাছে নিয়মিত স্প্রে করতে হবে। প্রথম মাসে চার বার এবং পরবর্তী তিন মাসে একবার করে স্প্রে করতে পারলে এই সমস্যার প্রভাব কেটে যাবে। তা ছাড়া বাজারে এসব সমস্যার জন্য কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ বিভিন্ন কোম্পানির কিছু ওষুধও রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈপ্লবিক পরিবর্তন করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ডেলটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ফারুকসহ ১৫ জনের নামে মামলা

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

‘মুসলিম ফ্রন্টগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করুন, ইন্টেরিম ভেঙে দিন’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত